
ব্রাজিলের এক ব্যবসায়ী নিজ শহরে প্রায় ২০ বছর ধরে গাছ লাগিয়েছেন। তাও এক-দুই হাজার নয়। প্রায় ৪০ হাজার গাছ লাগিয়েছেন এই ব্যক্তি। ব্রাজিলের সাও পাওলো শহরে দুটি রাস্তার মাঝখানে প্রায় ৩.২ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১০০ মিটার প্রশস্ত জায়গায় সবুজের সমারোহ ঘটিয়েছেন তিনি। জীর্ণ এলাকা থেকে সবুজ পার্ক তৈরি হয়েছে জায়গাটিতে।
সাও পাওলো থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে প্রমিসাও শহরের বাসিন্দা হেলিও দা সিলভা বহু বছর ধরে একজন সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। কিন্তু অবসরগ্রহণের পর তিনি টিকাতিরা নদীর তীরকে সবুজ মরুদ্যানে রূপান্তরিত করার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। তিনি ২০০৩ সালে সেখানে গাছ লাগানো শুরু করেন এবং তার পর থেকে আর থামেননি।
৭৩ বছর বয়সী সিলভা কয়েক দশক আগে শহরটির জন্য কাজ শুরু করেন। তিনি তার উত্তরসূরিদের জন্য কিছু করে যেতে চেয়েছেন। তার এই মহাকাব্যিক প্রকল্পের প্রথম চার বছরের মধ্যে তিনি একাই এমন একটি এলাকায় ৫ হাজার গাছ রোপণ করেছিলেন, যা দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত ছিল এবং মাদক কারবারিদের আখড়া ছিল। গাছ লাগানোয় এই জায়গাটি একটি পার্কে পরিণত হয়।
২০২০ সালের মধ্যে সিলভা ৩.২ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় ২৫,০৪৭টিরও বেশি গাছ রোপণ করেছিলেন। প্রতি ১২টি গাছের মধ্যে তিনি তার সবুজ মরুদ্যানে পাখি এবং প্রাণীদের আকর্ষণ করার আশায় একটি ফলের গাছ রোপণ করেছিলেন। প্রায় ৪৫ ধরনের পাখি এখানে এসেছে। বর্তমানে সেখানে ৪১ হাজারের মতো গাছ আছে। এই কাজে তাকে সাহায্য করেছে তার পরিবার।
অবসরপ্রাপ্ত এই ব্যবসায়ীর হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সাল থেকে তিনি প্রতিবছর বৃক্ষরোপণ প্রচেষ্টায় প্রায় ৭ হাজার ডলার খরচ করেছেন। কিন্তু তিনি যেভাবে দেখেন- এটি তার, তার পরিবারের এবং সমগ্র সাও পাওলোর জন্য একটি মূল্যবান বিনিয়োগ ছিল। এ ছাড়া তিনি নিজে গাছ লাগিয়ে অনেক টাকা সাশ্রয় করেছেন।
এক সময় বেশির ভাগ মানুষ যে এলাকাকে এড়িয়ে চলতো, সেখানে গাছ লাগানোর জন্য বেশির ভাগ সময় ব্যয় করার জন্য পাগল হিসেবে চিহ্নিত সিলভা এখন স্থানীয় নায়ক হিসেবে সমাদৃত। মাঝে মাঝে তিনি সমমনা প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছ থেকে সাহায্য পান। প্রতি রবিবার তিনি আরও গাছ লাগানোর জন্য টিকাতিরা পার্কে আসেন।
তারেক