ঢাকা ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪

লাভজনক হওয়ায় বাড়ছে আমড়ার চাষ

প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৯ এএম
লাভজনক হওয়ায় বাড়ছে আমড়ার চাষ
ঝালকাঠির ভিমরুলীর ভাসমান হাট থেকে আমড়া কিনে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন পাইকাররা। খবরের কাগজ

ঝালকাঠিতে মৌসুমের শুরু থেকেই আমড়ার বাজার জমে উঠেছে। ভিমরুলী ও আটঘর কুরিয়ানার ভাসমান হাটে এখন তাজা আমড়ার সমারোহ। জেলার কৃত্তিপাশা ইউনিয়নজুড়ে আমড়া চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এখানকার শিক্ষিত ও বেকার যুবকরা। কৃষি বিভাগ জানাচ্ছে, অন্যান্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় এ জেলায় দিনদিন আমড়ার চাষ বাড়ছে।

দেশব্যাপী বিপুল চাহিদা রয়েছে বরিশাল অঞ্চলের আমড়ার। সুস্বাদু এই ফলের বেশির ভাগ চাহিদা পূরণ হচ্ছে ঝালকাঠি থেকে। ভিমরুলী, শতদশকাঠি, খেজুরা, আতাকাঠিসহ প্রায় অর্ধশত গ্রামে এখন বাণিজ্যিকভাবে আমড়া চাষ হয়। অন্য জেলার আমড়ার তুলনায় মিষ্টি হওয়ায় এই জেলার আমড়ার চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন হাটে আমড়ার বেচাকেনা চলছে। এর মধ্যে ভিমরুলী গ্রামের ভাসমান হাটটি সবচেয়ে বড়। এ হাট থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে পুষ্টিকর এ ফল সরবরাহ করা হয়। বিপুল চাহিদা ও লাভজনক হওয়ায় এ জেলায় প্রতি বছরই আমড়ার আবাদ বাড়ছে। এ বছর আমড়ার ভালো ফলন হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকাররা ভিমরুলীর ভাসমান হাট থেকে আমড়া কিনছেন ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা মণ দরে। তবে মৌসুম শেষে আরও কিছু বেশি দামে আমড়া বিক্রির আশা করছেন চাষিরা।

প্রতি বছর ভিমরুলীতে অস্থায়ী ডজনখানেক আড়তে আমড়ার বেচা-কেনা চলে। সকাল ৮টার মধ্যে বাজার বসে, বেচাকেনা চলে দুপুর পর্যন্ত। প্রতিদিন ছোট ছোট নৌকায় করে আমড়া নিয়ে ভিমরুলীর ভাসমান হাটে হাজির হন চাষিরা। আড়তদাররা নৌকা থেকেই কিনে নেন আমড়া। এরপর বাছাই করে বস্তা ও ক্যারেটে সাজিয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যান পাইকাররা।

স্থানীয় আমড়া চাষি সবুজ হালদার জানান, তিনি ১০ কাঠা জমিতে আমড়ার চাষ করেছেন। এ বছর ৫০ মণের বেশি আমড়া বিক্রির আশা করছেন। সবুজ হালদার বলেন, ‘শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন এই তিন মাস আমড়ার ভরা মৌসুম। তাই এই সময়ে দামও ভালো থাকে। সুমিষ্ট হওয়ায় এখানকার আমড়ার সারা দেশে চাহিদা রয়েছে। এ কারণে প্রতি বছর এই এলাকায় আমড়ার আবাদ বাড়ছে।’

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. টি এম মেহেদী হাসান সানি বলেন, ‘আমড়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি, এ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাসসহ অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। আঁশ থাকার কারণে আমড়া হজমে সহায়তা করে। তাই মৌসুমে নিয়মিত আমড়া খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কাঁচা তো বটেই, সরষে মাখা, রান্না করে ও মোরব্বা করেও আমড়া খাওয়া যায়।’
 
কৃষকদের প্রত্যাশা, সরকারিভাবে যদি সরাসরি আমড়া কেনা হয়, এতে চাষিরা লাভবান হবেন। 

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. মনিরুল ইসলাম জানান, ‘চলতি বছর ৬০০ হেক্টর জমিতে আমড়া চাষ করা হয়েছে। হেক্টরপ্রতি প্রায় ১২ টন আমড়া পাওয়া গেছে। এ থেকে মৌসুমজুড়ে মোট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়াবে ১৫ থেকে ১৭ কোটি টাকা। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় জেলায় প্রতি বছরই আমড়ার আবাদ বাড়ছে। এর ফলে শিক্ষিত ও বেকার যুবসমাজের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।’

বাঁশে সাবলম্বী হাজারও পরিবার

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫১ এএম
আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৬ এএম
বাঁশে সাবলম্বী হাজারও পরিবার
কুমিল্লার লালমাইতে বাঁশ দিয়ে গৃহস্থালি সামগ্রী তৈরি করছেন নারীরা। ছবি : সংগৃহীত

কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ে বাণিজ্যিকভাবে নানা প্রজাতির বাঁশের চাষ হচ্ছে। এতে পাহাড়ের দুই হাজারের বেশি পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছেন। ময়নামতি থেকে চণ্ডিমুড়া পর্যন্ত চাষ হওয়া এসব বাঁশ থেকে বছরে প্রায় ৫০ লাখ টাকার বাণিজ্য হয় বলে জানা গেছে। গৃহস্থালি সামগ্রী, বসতঘর, ফসলের খেতের মাচা, নির্মাণসামগ্রী ও মাছ ধরার ফাঁদ- এসব ক্ষেত্রে বাঁশের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষিরা আগের তুলনায় এতে অধিক ঝুঁকছেন। 

প্রায় ৪০০ বছর ধরে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে গুণগত মানের বিভিন্ন জাতের বাঁশ চাষ করা হচ্ছে। কৃষি বিভাগের মতে, চাষিরা লাভবান হওয়ায় প্রতি বছর লালমাই পাহাড়ে চাষের জমির পরিমাণ বাড়ছে।

জানা গেছে, বাঁশের কুলা, খাঁচা, উড়া, ঝুড়ি, ডালা ও মাছ ধরার নানান ফাঁদ তৈরি করছেন নারীরা। কুমিল্লার শহরতলির নমশূদ্র পল্লীর প্রায় ১ হাজার ৫০০ পরিবারের পেশা এ বাঁশ শিল্প ঘিরে। তাদের তৈরি করা প্রতিটি পণ্য মানভেদে বাজারে ৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করতে পারেন। তা দিয়ে সন্তানদের লেখাপড়া আনুষঙ্গিক খরচ মেটান তারা। নমশূদ্র পল্লী ছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য উদ্যোক্তা। যাদের কাঁচামাল হিসেবে লালমাই পাহাড়ের বাঁশেই নির্ভরতা রয়েছে।

জানা গেছে, কুমিল্লার ময়নামতি থেকে চণ্ডিমুড়া পর্যন্ত পাহাড়ের অন্তত ১০০ একর ভূমিতে বাণিজ্যিকভাবে বাঁশ চাষ হচ্ছে। সমতল থেকে পাহাড়ের চূড়া পর্যন্ত। চোখে পড়বে সারি সারি বাঁশ বাগান। এখানে রয়েছে তল্লা, মুলি, বরাক, কাঁটা বরাক, হিল বরাক, বোম, কনক, বারি ও পেঁচাসহ নানান জাতের বাঁশ। তবে সব থেকে বেশি বাঁশঝাড় চোখে পড়ে মধ্যম বিজয়পুর, ধনমুড়া, বড় ধর্মপুর, রাজারখলা, ভাঙামুড়া, জামমুড়া, বৈষ্ণবমুড়া, লালমতি, গন্ধমতি ও সালমানপুরে। চাষে খরচের বিপরীতে বিক্রয় মূল্য বেশি হওয়ায় স্থানীয় চাষিদের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে।

বাঁশ কাটলে সেখান থেকে প্রতিবছর নতুন বাঁশ জন্মায়। বাঁশ বিক্রি করে বাঁশ কাঁটার সঙ্গে নিয়োজিত বদলিদের পরিবারও চলছে ওই অর্থ দিয়ে।

গৃহস্থালি সামগ্রী ছাড়াও নির্মাণকাজ, বসতঘর তৈরি ও জমিতে শাকসবজির মাচাতেও বাঁশের ব্যবহার বাড়ছে। স্থানীয় চাষিরা জানান, সরকারি সহায়তা পেলে বাঁশ চাষ বাড়ার পাশাপাশি বাড়বে রাজস্ব আয়ও।

লালমাই পাহাড়ের বাঁশ চাষি আবদুল হান্নান বলেন, ‘লালমাই পাহাড়ের বাঁশের চাহিদা আগের চেয় বেড়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে পাইকারি ক্রেতারা এখানে এসে বাঁশ কিনে নিয়ে যান।’

তিনি জানান, বড় আকারের প্রতি ১০০ বাঁশের দাম ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা। মাঝারি বাঁশের দাম প্রতি পিস ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আর ছোট বাঁশের দাম প্রতি পিস ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। বাঁশের চাহিদা বাড়ায় এ অঞ্চলে বাঁশ চাষে আগ্রহ বাড়ছে। 

সদর দক্ষিণ উপজেলার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির খান বলেন, ‘পাহাড়ে বাঁশ চাষ করে অনেকে লাভবান হচ্ছেন। বাঁশ থেকে নানা ধরনের পণ্য তৈরি হচ্ছে, যা কর্মসংস্থানের জন্য অনেক বড় উৎস। এখানে প্রতি বছর বাঁশ চাষ বাড়ছে। পাহাড়ের বাঁশ থেকে তৈরি করা পণ্যে বছরে ৫০ লাখ টাকারও বেশি আয় হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভারী বর্ষণসহ নানা দুর্যোগে পাহাড়ের মাটির ক্ষয়রোধে বাঁশের ভূমিকা অনেক।’

চুইঝাল চাষে ঝুঁকছেন কৃষক

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৮ এএম
আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৯ এএম
চুইঝাল চাষে ঝুঁকছেন কৃষক
নড়াইল পৌরসভার উজিরপুরে একটি বাগানে চুইঝাল গাছ পরিচর্যা করছেন এক নারী উদ্যোক্তা। সংগৃহীত

নড়াইলে দিন দিন চুইঝালের আবাদ বাড়ছে। ভৌগোলিক কারণে এই জেলার মাটি চুইঝাল চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। অন্যান্য ফসলের তুলনায় পরিশ্রম একেবারেই কম, রোগবালাইও নেই বললেই চলে। চাষাবাদের জন্য আলাদা জমির প্রয়োজন হয় না; বাড়ির আঙিনা কিংবা বাগানের যেকোনো গাছের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে সহজেই চাষ করা সম্ভব। স্বল্প ব্যয়ে অধিক লাভবান হওয়া যায়। চাহিদা থাকায় বিক্রিতেও ঝামেলা পোহাতে হয় না। এ কারণে দিন দিন মসলা জাতীয় চুইঝাল চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা।

চাষিরা জানান, বেলে-দোআঁশ মাটিতে চুইঝালের চারা রোপণ করলে সবচেয়ে ভালো ফলন পাওয়া যায়। একটি গাছ থেকে কাটিং পদ্ধতিতে নতুন করে চারা উৎপাদন করা যায়, ফলে বারবার চারা কেনার প্রয়োজন হয় না। গাছ রোপণের পর জৈব সার ও পর্যাপ্ত পানি দিলেই হয়; বাড়তি তেমন কোনো যত্নের প্রয়োজন হয় না। দুই বছর পর থেকে গাছ বিক্রি করা যায়। গাছের ওজন অনুযায়ী এর দাম নির্ধারণ করা হয়। এর দাম ২ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হয়। গাছের বয়স যত বাড়ে, দামও বাড়তে থাকে। ১০ বছর রাখলে একেকটি গাছ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়।

নড়াইল পৌরসভার উজিরপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সাড়ে তিন একর জায়গায় চুইঝালের চাষ করছেন নাজমুল মোল্যা ও স্বর্ণা ইয়াসমিন দম্পতি। তাদের বাগানে থাকা আম, কাঁঠাল, লিচু, নারিকেল, সুপারিসহ প্রতিটি গাছের সঙ্গে রয়েছে এক থেকে একাধিক চুই গাছ। 

স্বর্ণা ইয়াসমিন বলেন, ‘২০২১ সালে চার থেকে পাঁচটা গাছ লাগিয়ে ছিলাম। ওই গাছ থেকে ডগা কেটে পুনরায় লাগাতে থাকি। এভাবে বাড়তে বাড়তে বাগানে এখন প্রায় ৩ হাজারের মতো চুইঝাল গাছ রয়েছে। ইতোমধ্যে বিক্রি শুরু করেছি। খরচের তুলনায় এর দাম অনেক বেশি।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু চুইঝাল চাষে তেমন কোনো খরচ নেই, আলাদা জমিরও প্রয়োজন নেই, তাই এটা থেকে বেশি লাভ করা সম্ভব। আমাদের বাগানে আরও গাছ রয়েছে; আগামীতে সব গাছে চুইঝাল গাছ লাগাব।’

ফয়সাল আমিন নামে এক চুইঝাল চাষি বলেন, ‘প্রায় ১৫ বছর ধরে চুইঝাল চাষ করছি। এতে অতিরিক্ত কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না। পরিত্যক্ত জায়গায় এটি চাষ করা সম্ভব। খুবই লাভজনক একটি ফসল। বিক্রিতেও কোনো ঝামেলা নেই, ব্যাপারীরা বাড়িতে এসে কিনে নিয়ে যান।’

চম্পা খাতুন নামে এক নারী বলেন, ‘আমি ২০০৫ সালে ১০টা গাছ দিয়ে চুইঝাল চাষ শুরু করি। সেখান থেকে দেড় লাখ টাকার চুইঝাল বিক্রি করেছিলাম। আমাদের এলাকায় তখন অন্য কেউ করত না, এখন আশেপাশের সবাই চাষ করে।’

আগে চুইঝালের চারা নড়াইলের নার্সারিতে উৎপাদন হতো না। নার্সারি মালিকরা খুলনার ফুলতলা ও ডুমুরিয়া থেকে চারা পাইকারি কিনে এনে বিক্রি করতেন। তবে দিন দিন চাহিদা বাড়ায় গত দুই বছর ধরে নড়াইলে চারা উৎপাদন হচ্ছে। শহরের ভাদুলিডাঙ্গা এলাকায় আল্লাহর দান নার্সারি অ্যান্ড পলিনেট হাউসে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অন্যান্য গাছের চারার সঙ্গে ব্যাপক পরিসরে চুইঝালের চারা উৎপাদন করা হচ্ছে।

নার্সারির মালিক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দিন দিন নড়াইলের চুইঝালের চারার চাহিদা বাড়ছে। এক বছর আগে যে পরিমাণ চারা বিক্রি করতাম, এখন তার চারগুণ বেশি বিক্রি হচ্ছে। যা উৎপাদন করছি তা দিয়ে চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে চুইঝাল চাষে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার পরেই নড়াইলের অবস্থান। জেলার তিনটি উপজেলায় বর্তমানে ৭ হাজার ৪৩৭টি পরিবার চুইঝাল চাষে সম্পৃক্ত রয়েছেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেলায় মোট ১২ হেক্টর জমিতে চুইঝালের আবাদ হয়েছে, সেখান থেকে ৩০ টন চুইঝাল উৎপাদন হয়। এর আগের অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছিল ২৫ টন। এক বছরে আবাদ বেড়েছে ৫ টন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উৎপাদন ছিল মাত্র ৯ টন। অর্থাৎ ছয় বছরে উৎপাদন বেড়েছে ২১ টন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আশেক পারভেজ বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলে চুইঝালের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। বাজারে এর চাহিদা অনেক। এ অঞ্চলের যে কয়টি জেলায় চুইঝালের চাষ হয়, তার মধ্যে নড়াইল অন্যতম। স্বল্প খরচ ও অল্প পরিশ্রমে অধিক লাভবান হওয়ায় কৃষক এটি চাষে আগ্রহী হচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা কৃষকের চুইঝাল চাষ আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছি।’

জলবায়ু পরিবর্তন শামুক-ঝিনুকসংকটে দুর্দিনে চুনারুরা

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫১ পিএম
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫১ পিএম
শামুক-ঝিনুকসংকটে দুর্দিনে চুনারুরা
ঝালকাঠির পশ্চিম চাঁদকাঠিতে শামুক ও ঝিনুক দিয়ে চুন তৈরি করছেন এক কারিগর। খবরের কাগজ

ঝালকাঠির পশ্চিম চাঁদকাঠিতে শামুক ও ঝিনুক দিয়ে চুন তৈরির কারিগররা জলবায়ু পরিবর্তন ও অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের কারণে বিপন্ন। প্রাকৃতিক উপাদানের অভাবে পরিবারগুলো দুর্ভোগে পড়েছে। এদিকে মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে কাঁচামালের দাম বেড়েছে। ফলে তাদের পৈতৃক পেশা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারি সহযোগিতার আশা করছেন চুনারুরা।

ঝালকাঠি শহরের পশ্চিম চাঁদকাঠি (বাসন্ডা ব্রিজসংলগ্ন) এলাকায় শামুক ও ঝিনুক দিয়ে চুন তৈরির প্রক্রিয়ায় কারিগররা কাজ করেন। তাদের কর্মযজ্ঞ ও নান্দনিকতা দেখতে গেলে শিল্পের শৈল্পিক দিক ফুটে ওঠে। এ জন্যই চুন তৈরির সব প্রক্রিয়া মিলিয়ে চুনকে শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন ও অবাধে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের ফলে শামুক ও ঝিনুকের প্রজনন তো দূরের কথা, জীবনধারণই বিপন্ন হয়ে পড়ছে। বংশবিস্তার না হওয়ার কারণে সামুদ্রিক শামুক-ঝিনুকের ওপরেই নির্ভর করতে হচ্ছে চুনশিল্পীদের। অতিরিক্ত মূল্য, পরিবহন খরচ, মধ্যস্বত্বভোগীসহ কয়েক হাত ঘুরে চুন তৈরির কারিগরদের কাছে কাঁচামাল পৌঁছাচ্ছে। কারিগরদের পারিশ্রমিক এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য যে পরিমাণ খরচ হয়, সেভাবে বিক্রয়মূল্য পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পৈতৃক পেশা টিকিয়ে রাখতে তারা কোনোমতে জীবনযাপন করছেন।

প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি করা এই যুগী চুনের কদর আজও বাংলার ঘরে ঘরে রয়েছে। ঝালকাঠি শহরের পালবাড়ী ও বাউকাঠি এলাকার কিছু পরিবার আজও কারিগরদের নিয়ে এ পেশা ধরে রেখেছেন। চুনারুদের নানা অভাব-অনটনের মাঝেও প্রায় ২০টি পরিবার এখনো এ পেশায় টিকে আছেন। কারিগররা জানান, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কৃষিজমিতে কীটনাশক ব্যবহারের কারণে শামুক ও ঝিনুকের সংখ্যা কমে গেছে। কাঁচামালের দামও বেড়েছে। তাই লোকসানের মুখে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। যারা টিকে আছেন, তারাও কোনো রকমে এ পেশা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন চুনারুদের কয়েকজন।

চুনশিল্প টিকিয়ে রাখতে চুনারুদের সার্বিক সহযোগিতার কথা জানান শিল্পনগরী (বিসিক) ঝালকাঠির কর্মকর্তা আল অমিন। তিনি বলেন, ‘চুন তৈরির কারিগররা যদি নিয়ম অনুযায়ী আমাদের কাছে আসেন, তাহলে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে পারি।’

চুনশিল্পের সঙ্গে জড়িত বিষ্ণু পদ ধর বলেন, ‘আগে গ্রামের খাল, বিল, নদীর পাড়ে, বর্ষাকালে ধানের মাঠে শামুক ও ঝিনুক কুড়িয়ে পাওয়া যেত। কিন্তু এখন এক দিকে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ, অন্যদিকে অবাধে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক সম্পদ শামুক ও ঝিনুক অস্তিত্ব হারাচ্ছে। এসবের কারণে গ্রামীণ পর্যায় থেকে শামুক ও ঝিনুক আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আমাদের শামুক ও ঝিনুক আনতে হচ্ছে সাগরকূল থেকে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পণ্য সরবরাহের খরচও অনেক বেড়েছে। তার ওপর প্রক্রিয়াজাত করে চুন তৈরিতে যে সময় ও শ্রম ব্যয় হয়, তাতে এ পেশায় টিকে থাকা খুবই মুশকিল। সব মিলিয়ে শুধু পূর্বপুরুষের পেশাটাকেই ধরে রেখেছি, না হলে এতদিনে সব বন্ধ করে অন্য পেশা বা ব্যবসায় চলে যেতাম।’

ড্রাগন চাষে খোরশেদের সাফল্য

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪৬ পিএম
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪৬ পিএম
ড্রাগন চাষে খোরশেদের সাফল্য
কুড়িগ্রাম সদরের পুরোনো হাসপাতালপাড়া নিজের ড্রাগনফল বাগানে খোরশেদ আলম। সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের খোরশেদ আলম প্রবাস থেকে ফিরে ড্রাগন চাষ শুরু করেন। প্রথমে ৩০টি গাছ লাগিয়ে এখন তার বাগানে ২ হাজার গাছ রয়েছে। এতে বছরে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় করছেন। কম খরচ ও সহজ পরিচর্যায় লাভজনক ড্রাগন চাষে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করছেন তিনি। কৃষি বিভাগও এই খাতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। খোরশেদ আলমের উদ্ভাবনী উদ্যোগ স্থানীয় যুবকদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

কুড়িগ্রাম পৌর শহরের রিভারভিউ উচ্চবিদ্যালয়সংলগ্ন পুরোনো হাসপাতালপাড়া গ্রামে খোরশেদ আলমের বাড়ি। তিনি মূলত একজন ব্যবসায়ী, তবে ড্রাগন চাষেও সময় দেন। এখন ড্রাগন ফল চাষ তার স্বপ্নের প্রকল্প।

খোরশেদ আলম জানান, একসময় তিনি থাইল্যান্ড বেড়াতে যান। সেখানে ড্রাগন ফলের বাগান দেখে তিনি মুগ্ধ হন। পরে সেখান থেকে ড্রাগনের কাটিং (চারা) নিয়ে আসেন। শুরুতে ছাদে একটি ড্রাগন ফলের চারা লাগান। ওই গাছে ফুল ও ফল আসতে দেড় বছর সময় লাগে। দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে ফুল ও ফল দেখে তিনি আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান। এতে তার ড্রাগন চাষে আরও আগ্রহ বাড়ে যায়। পরে দেশের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ৩০টির বেশি ড্রাগনের চারা সংগ্রহ করে জমিতে রোপণ করেন। আস্তে আস্তে বাগানের পরিধি বাড়তে থাকে। বর্তমানে ৫০ শতক জমিতে তার ড্রাগন বাগান রয়েছে। বাগানে ২ হাজারের বেশি ড্রাগন ফলের গাছ আছে।

খোরশেদ আলম বলেন, ‘ড্রাগন ফল একটি দীর্ঘমেয়াদি ও লাভজনক ফসল। শুরুতে একটু বেশি খরচ করতে হয়, তবে পরের দিকে খরচ কমে যায় এবং আয় শুরু হয়। অন্য ফসলের মতো গাছের যত্ন নিতে হয় না। সার-কীটনাশকের ব্যবহারও ড্রাগন চাষে কম থাকে।’ তার মতে, কম খরচে, কম পরিচর্যায় ড্রাগন ফল চাষ করে আয় করা সম্ভব।

তিনি বলেন, ‘আমি পাঁচ বছর আগে ড্রাগন চাষ শুরু করি। বর্তমানে আমার ৫০ শতক জমিতে বাগান বিস্তৃত করেছি। বাগানে তিনটি জাতের ড্রাগন গাছের সংখ্যা ২ হাজারের বেশি। দুই বছর ধরে ফল বিক্রি করা যাচ্ছে। এতে বছরে প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে। বাগানে দুই-তিনজন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন।’

শ্রমিক রিপন বলেন, ‘এই বাগানের খুব বেশি পরিচর্যার দরকার পড়ে না। ফুল আসার ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ফল ধরে। গত বছর প্রায় ৩ লাখ টাকার ফল বিক্রি করা হয়েছে। তবে চলতি বছর আবহাওয়া ভালো না থাকায় ফলন কিছুটা কম হয়েছে।’

প্রতিদিন বাগান দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে আসেন। কেউ কেউ বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করে সহযোগিতা চান। বাগান দেখতে আসা ইমরান বলেন, ‘বাজার থেকে ড্রাগন ফল কিনি। শুনেছিলাম এখানে একটি বাগান আছে। তাই ভাবলাম, একদিন বাগান দেখে ফল কিনব। খোরশেদ ভাইয়ের বাগানে এসে ফল কিনে ভালো লাগল।’

বাগান দেখতে আসা অনেকেই জানান, কৃষি বিভাগ যদি পূর্ণ সহযোগিতা করে, তাহলে ড্রাগন চাষ বাড়ানোর মাধ্যমে অনেক বেকার যুবক স্বাবলম্বী হতে পারবেন।

ড্রাগন ফল চাষ নিয়ে কৃষি বিভাগও আশাবাদী। তারা মনে করছেন, ব্যাপকভাবে চাষ করা সম্ভব। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাহিদা আফরিন বলেন, ‘সদর উপজেলায় চারটি ড্রাগন ফলের বাগান রয়েছে। এখান থেকে ভালো আয় ও  কর্মসংস্থান সৃস্টি করা সম্ভব। তবে জেলায় ড্রাগন ফলের চাহিদা এখনো সেভাবে তৈরি হয়নি। অন্য জেলায় চাহিদা থাকলেও, আমাদের এলাকায় আরও কাজ করতে হবে। এতে কৃষি বিভাগ সব ধরনের সহযোগিতা করবে।’

লালমনিরহাট বন্যায় ফসলের ব্যপক ক্ষতিগ্রস্ত

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪৩ পিএম
বন্যায় ফসলের ব্যপক ক্ষতিগ্রস্ত
লালমনিরহাট আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ধানখেত। খবরের কাগজ

উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টির ফলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে নদী পাড়ের হাজার হাজার কৃষকের ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি নেমে যাওয়ার পর ফসলের জমির ক্ষতচিহ্ন স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।

লালমনিরহাটের প্রায় ৮০ কিলোমিটার এলাকায় তিস্তা নদীর বাম তীরের অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল এলাকায় রোপা আমন, আগাম শীতের শাকসবজি, চীনাবাদাম, মাষকলাই, আখ ইত্যাদি ফসল পানিতে ডুবে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। পানি নেমে যাওয়ার পর প্লাবিত এসব ফসলের ওপর কাদামাটি জমে যাওয়ায় অনেক ফসল পচে যেতে শুরু করেছে। কৃষকরা ফসলের কাদামাটি ধুয়ে ফেলতে চেষ্টা করছেন। তবে এতে খুব বেশি সফল হওয়া যাচ্ছে না। অনেক স্থানে ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ফসলিখেত।

জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের বাহাদুরপাড়া, গরিবুল্লাপাড়া, কালমাটি, হরিণ চড়া, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, তাজপুর ও হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, সিংগীমারী, সিন্দুনা ডাউয়াবাড়ি, পাটিকাপাড়া এবং পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রামে কৃষকদের ক্ষতির পরিমাণ বেশি।

লালমনিরহাটের অধিকাংশ মানুষ কৃষি উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল। নদী এলাকা ছাড়াও উজানের বিভিন্ন স্থানে ভারী বর্ষণের ফলে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে জেলার ভেলাবাড়ি, কমালাবাড়ি, মুঘলঘাট, চাপারহাট এসব এলাকায় ব্যাপক সবজির আবাদ হয়। ভারী বৃষ্টির কারণে আগাম শীতের সবজিখেতের ক্ষতি হয়েছে, ফলে নতুন করে সবজি উৎপাদনের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে কৃষকদের। এ ছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা তাদের ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ধানখেতের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

লালমনিরহাটের কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় জেলার পাঁচ উপজেলায় ৯০ হাজার ২২ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৮৮১ হেক্টর অর্থাৎ ৬৩ দশমিক ৭ হেক্টর আবাদি ফসল নষ্ট হয়েছে। যার ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এতে ১১০৪ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

কৃষি বিভাগ জানাচ্ছে, এবারের রবি মৌসুমের জন্য পাঁচ উপজেলায় ১৯ হাজার ১০০ কৃষককে ৬টি ফসলের প্রণোদনা দেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে গম, ভুট্টা, চীনাবাদাম, পেঁয়াজ ও সরিষা।

হাতীবান্ধা উপজেলার ধুবনি গ্রামের কৃষক খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘তিস্তা নদীর পার্শ্ববর্তী জমিতে আমন ধান রোপণ করেছিলাম। বন্যায় জমিতে বালুর স্তূপ পড়ে ঢেকে গেছে। অনেক জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে।’

আদিতমারী এলাকার গোবর্ধন গ্রামের শরিফুল ইসলাম জানান, ‘নদীর পানি ঘোলা থাকায় ধানগাছের ডগায় মাটির স্তূপ জমেছে। বন্যার পানি দিয়েই কিছুটা ধুয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে তাতেও ধান চিটা হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।’

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কৃষক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘পাঁচ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়ে ছিলাম। বন্যায় সব নষ্ট হয়ে গেছে। এখন কীভাবে সংসার চালাব, এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক সৈয়দা সিফাত জাহান বলেন, রবি মৌসুম ১৫ অক্টোবর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত চলে। এ বছর লালমনিরহাটে ৬ হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমিতে শাকসবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলায় এখন পর্যন্ত ৩৯৩ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের শাকসবজি চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫ হেক্টর পানিতে নিমজ্জিত হয়ে প্রায় ২৭ হেক্টর ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. মো. সাইখুল আরিফিন বলেন, ‘চলমান বন্যায় আমনখেতসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা তালিকা করে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রণোদনার ব্যবস্থা করব।’