
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার চক কাঞ্চন গ্রামে পুষ্টিসমৃদ্ধ বিদেশি ফল স্ট্রবেরি চাষে বাজিমাত করেছেন তরুণ উদ্যোক্তা মাসুম বিল্লাহ। অল্প পুঁজি ও স্বল্প শ্রমে অধিক ফলন, বাজার চাহিদা এবং দাম ভালো হওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে স্ট্রবেরি চাষে আগ্রহ তৈরি হচ্ছে।
মাসুম বিল্লাহ চার শতক জমিতে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন কৃষি বিভাগের পরামর্শে। তার জমিতে প্রায় ৪০০ গাছ রয়েছে। স্ট্রবেরির বীজ, পরিচর্যা ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে মোট খরচ ছিল ২০-২৫ হাজার টাকা। মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘প্রতি গাছ থেকে এক মৌসুমে ৪-৫ বার ফলন পাওয়া যায়। একেকটি গাছ থেকে ৫০০-৬০০ গ্রাম স্ট্রবেরি আশা করছি। বাজারের বর্তমান পাইকারি দামে প্রতি কেজি স্ট্রবেরি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। সেই হিসাবে চার শতক জমিতে প্রায় ৭০-৭৫ হাজার টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি হবে।’
স্ট্রবেরি চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, অক্টোবরের প্রথম থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে মালচিং পদ্ধতিতে চারা রোপণ করা হয়। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে গাছে ফুল আসে এবং ডিসেম্বরের শেষ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ফল আহরণ ও বিক্রি করা যায়।
এ অঞ্চলে স্ট্রবেরি চাষের খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসী খেতে এসে স্ট্রবেরি দেখে এবং খেয়ে আনন্দিত হচ্ছেন। মুক্তার হোসেন নামে এক কৃষক বলেন, ‘আমাদের এলাকায় প্রথমবারের মতো স্ট্রবেরি চাষ হয়েছে। আগে বাজার থেকে কিনে খেতাম। কিন্তু মাসুম বিল্লাহর জমিতে এসে প্রথমবার স্ট্রবেরি খেয়ে দেখলাম। অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। আগামী বছর আমিও স্ট্রবেরি চাষ করতে আগ্রহী।’
স্থানীয় কৃষকদের জন্য স্ট্রবেরি চাষ একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। দেশের অন্য অঞ্চলে স্ট্রবেরি চাষে উৎসাহ ও সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। মাসুম বিল্লাহর সফলতা একদিকে যেমন নতুন কৃষি উদ্যোগের সম্ভাবনা দেখাচ্ছে, তেমনি অন্য কৃষকদের জন্য এটি একটি অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে।
খানসামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘স্ট্রবেরি পুষ্টিসমৃদ্ধ একটি বিদেশি ফল। অল্প বিনিয়োগে বেশি মুনাফা হওয়ার কারণে এটি চাষের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মাসুম বিল্লাহ এই ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন। আমাদের কৃষি বিভাগ সর্বদা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবে।’
স্ট্রবেরি চাষে সফলতার পর মাসুম বিল্লাহ ভবিষ্যতে বাণিজ্যিকভাবে বড় পরিসরে স্ট্রবেরি চাষ করার পরিকল্পনা করছেন। তিনি বলেন, ‘অল্প পুঁজি ও শ্রমে অধিক লাভ হওয়ায় আমি স্ট্রবেরি চাষকে আরও সম্প্রসারণ করতে চাই। এটি একটি লাভজনক ব্যবসা এবং বাজারে এর চাহিদা বাড়ছে।’