
নরসিংদীর বেলাব উপজেলার ভাবলা গ্রামের কাইয়ুম আফ্রাদ কৃষিতে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় কৃষিকাজ শুরু করে তিনি বর্তমানে ‘আনোয়ার হোসেন আফ্রাদ অ্যাগ্রো গ্রুপ’ পরিচালনা করছেন। তার প্রতিষ্ঠান জৈব সার, নার্সারি, কীটনাশক ও পোলট্রি ফার্মের খাবারের জোগান দেয়। কাইয়ুমের সাফল্য দেশের কৃষকদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। তার উদ্যোগে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
কাইয়ুম আফ্রাদ এখন তার বাবা আনোয়ার হোসেন আফ্রাদের প্রতিষ্ঠিত ‘আনোয়ার হোসেন আফ্রাদ অ্যাগ্রো গ্রুপ’ পরিচালনা করছেন। ২০ বছর বয়সী এই যুবক তার মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সফলভাবে চালাচ্ছেন। তার প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩০ জন নারী-পুরুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন। এ ছাড়া প্রয়োজনে আরও শ্রমিক নিয়োগ করা হয়।
অ্যাগ্রো গ্রুপের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে জৈব সার তৈরি, নার্সারি, কীটনাশক বিক্রি ও পোলট্রি ফার্মের খাবারের জোগান। কাইয়ুম আফ্রাদের প্রতিষ্ঠান নরসিংদীর জনপ্রিয় লটকন, সুপারি, আমগাছসহ বিভিন্ন ফলের গাছ বিক্রি করে। তার সবচেয়ে জনপ্রিয় পণ্যটি হচ্ছে অর্গানিক জৈব সার। সারা দেশে ১২ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে এই জৈব সার বিক্রি হচ্ছে।
কাইয়ুম আফ্রাদ বলেন, ‘আমাদের অর্গানিক জৈব সার অনেক জায়গায় চাহিদা পেয়েছে। সারা দেশে আমাদের সার ও কৃষি পণ্য বিক্রি হয়।’ তার মতে, কৃষকদের জন্য প্রাকৃতিক জৈব সার ব্যবহারের সুবিধা অনেক বেশি। কারণ এটি মাটির উর্বরতা ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং পরিবেশের জন্যও উপকারী। এ ছাড়া কাইয়ুম আফ্রাদ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মুরগির লিটার পাঠাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রতি চালানে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা আসে। যেটা আমাদের ব্যবসার জন্য খুবই লাভজনক।’ তার ব্যবসা মোটরসাইকেল দিয়ে তদারকি করা হয়। যেটা তাকে দ্রুতগতিতে কাজের অবস্থা মনিটর করতে সাহায্য করে।
কাইয়ুম আফ্রাদের মা-বাবা তার কৃষিকাজের প্রতি আগ্রহ দেখে একসময় একটু চিন্তিত ছিলেন। তবে এখন তারা সন্তুষ্ট। তার বাবা আনোয়ার হোসেন আফ্রাদ বলেন, ‘আমাদের পরিবার এক যুগ আগে যে অবস্থায় ছিল। এখন আর তা নেই। আজকের আমাদের পরিবার স্বাবলম্বী।’
অ্যাগ্রো গ্রুপের শ্রমিকরা জানান, কাইয়ুম আফ্রাদ সবার মধ্যে তার নেতৃত্বের গুণাবলি তুলে ধরেছেন। তার ব্যবস্থাপনায় তারা ভালোভাবে কাজ করছেন এবং উপার্জন করছেন।
বর্তমানে কাইয়ুম আফ্রাদ তার কৃষি উদ্যোগের মাধ্যমে সারা দেশে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। নতুন কৃষি উদ্যোক্তা তৈরিতে ভূমিকা রাখছেন। তিনি এখন একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত।
কৃষি অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল হাই বলেন, ‘নরসিংদীসহ বিভিন্ন জেলার কৃষকরা এখন জৈব সার ব্যবহার করছেন। এতে ফসলের উৎপাদন বাড়ছে। এতে মাটির উর্বরতা ঠিক থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কাইয়ুম আফ্রাদের মতো উদ্যোক্তা আমাদের জন্য উদাহরণ।’