ঢাকা ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

নূর হোসেন দিবসে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘিরে ভুয়া তথ্যের ছড়াছড়ি

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৯ এএম
আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৩ এএম
নূর হোসেন দিবসে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘিরে ভুয়া তথ্যের ছড়াছড়ি
ছবি : সংগৃহীত

শহিদ নূর হোসেন দিবসে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘিরে ছিল ভুয়া তথ্যের ছড়াছড়ি। তথ্য যাচাই সংস্থা রিউমর স্ক্যানার আলোচিত এই কর্মসূচি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ১৬টি দাবি যাচাই করে ১৫টি দাবি ভুয়া বলে চিহ্নিত করেছে। এগুলো মধ্যে প্রেস বিজ্ঞপ্তি, ছবি ও ভিডিও রয়েছে, যা সাম্প্রতিক বলে প্রচার করা হয়।

গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার তিন মাস পর আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম কর্মসূচির ডাক দেয় ১০ নভেম্বর। রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে দলটির বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আগের রাত (৯ নভেম্বর) থেকেই একাধিক অপতথ্যের প্রচার শুরু হতে দেখে রিউমর স্ক্যানার।

১০ নভেম্বর সারাদিন বিভিন্ন তথ্য, ছবি এবং ভিডিওর মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপতথ্যের ছড়াছড়ি দেখা যায়। রিউমর স্ক্যানার এ সংক্রান্ত ১৬টি দাবি যাচাই করে ১৫টি ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছে। এসব দাবির ক্ষেত্রে পুরোনো ছবি-ভিডিও যেমন ছিল, তেমনি ছিল সেনাবাহিনীকে জড়িয়েও ভুয়া তথ্যের প্রচার।

শহিদ নূর হোসেন দিবসে আওয়ামী লীগ যে কর্মসূচি দিচ্ছে তার আঁচ পাওয়া যায় গত ৮ নভেম্বর সামাজিক মাধ্যমে শেখ হাসিনার কথিত ফোনালাপ ফাঁসের মাধ্যমে। এই ফোনালাপে শেখ হাসিনার কণ্ঠের আদলে একজনকে ১০ নভেম্বর দলীয় নেতা-কর্মীদের ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি হাতে মিছিল করার নির্দেশ দিতে শোনা যায়। যদিও আওয়ামী লীগের দাবি, এটি ভুয়া কল রেকর্ড।

ট্রাম্পকে জড়িয়ে কথিত এই নির্দেশনার পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একই নির্দেশনার বিষয় উল্লেখ রেখে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে এমন একটি দাবির সঙ্গে দলটির দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার স্বাক্ষর সম্বলিত কথিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির একটি ছবিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। 

তবে যাচাই করে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ দলটির প্যাডে দপ্তর সম্পাদকের স্বাক্ষর সম্বলিত কোনো বিজ্ঞপ্তিই দেয়নি। ১০ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে আগের দিন দলটির ফেসবুক পেজে নেতা-কর্মীদের পরদিন গুলিস্তানে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিতে আহ্বান জানিয়ে একটি পোস্ট করা হলেও তাতে ট্রাম্প বিষয়ক কোনো নির্দেশনা ছিল না। 

আর ৯ নভেম্বর রাতেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্ল্যাকার্ডসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, অবৈধভাবে মিছিল ও সমাবেশের চেষ্টা করার সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

তাছাড়া সামাজিক যোগাযােগমাধ্যমে গ্রেপ্তারদের বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক্স-এ একটি পোস্ট করেছেন এমন স্কিনশট ছড়িয়ে পড়ে। আদতে নির্বাচনে জয়ের পর বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ট্রাম্প কোনো এক্স পোস্টই করেননি। রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, ট্রাম্পের নাম ব্যবহার করে তৈরি একটি ফ্যান অ্যাকাউন্টের স্ক্রিনশট ব্যবহার করে এই দাবি ছড়ানো হয়। 

সেদিন রাতেই ১০ নভেম্বর শহিদ নূর হোসেন দিবস ঘিরে আওয়ামী লীগের ঘোষিত কর্মসূচি উপলক্ষে মঞ্চ নির্মাণের দৃশ্য দাবিতে কিছু ছবি প্রচার হয় ফেসবুকে। তবে অনুসন্ধান বলছে, এগুলো পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের  জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে গত ৮ নভেম্বরে বিএনপির কর্মসূচির জন্য তৈরি মঞ্চের ছবি। 

এসবের মধ্যেই ৯ নভেম্বর রাত থেকে ইন্টারনেটে ভাইরাল একটি ভিডিওকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউসহ ঢাকার ভিন্ন ভিন্ন স্থানে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের মিছিলের দৃশ্য দাবি করা প্রচার করা হচ্ছিল। 

রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধানে দেখতে পায়, ২০২০ সালে কুষ্টিয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙ্গার প্রতিবাদে এবং জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ছাত্রলীগ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ভিডিও এটি।

১০ নভেম্বর প্রথম প্রহরে আওয়ামী লীগ আরেকটি কথিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে পড়ে। এটিও রিউমর স্ক্যানারের নজরে আসে। বিপ্লব বড়ুয়ার স্বাক্ষর সম্বলিত কথিত এই বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, দলটির ১০ নভেম্বরের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের নামে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট বলে প্রমাণ পায় রিউমর স্ক্যানার। 

শহিদ নূর হোসেন দিবস ঘিরে অপতথ্যের এই প্রবাহ জারি থাকে পরদিনও। এর রেশ ধরে সেদিন সকাল থেকে প্রচার হতে থাকে, সেনাবাহিনী রাজনৈতিক সমাবেশে বাধা সৃষ্টি করবে না বলে ক্যান্টনমেন্টে ফিরে গেছে। এই দাবির সূত্র হিসেবে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) নাম উল্লেখ করা হয়৷

তবে আইএসপিআর রিউমর স্ক্যানারকে জানায়, সেনাবাহিনীর যে দায়িত্ব তাতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। আইএসপআর বলেছে, তাদের সূত্র দেখিয়ে যে দাবিটা প্রচার হচ্ছে তাও সঠিক নয়। আইএসপিআর এমন কোনো তথ্য দেয়নি। 

সেদিন সকালে আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের পোস্ট দাবিতে ‘কালকে সবাই ফোনের ওয়ালপেপারে ইউনুস এর ছবি দিয়ে রাখবেন’ শীর্ষক একটি স্ক্রিনশট ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে এমন কোনো পোস্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া হয়নি। ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধমে আলোচিত স্ক্রিনশটটি তৈরি করা হয়েছে।

দিনভর এই কর্মসূচি ঘিরে পুরোনো ভিডিওর ছড়িয়ে পড়াটা ছিল বেশ লক্ষ্যণীয়। কখনও আওয়ামী লীগের শোডাউনের সেদিনের দৃশ্য দাবিতে ২০২২ সালে নয়াপল্টনে ছাত্রলীগের মিছিল-শোডাউনের ভিডিও প্রচার, কখনও গত আগস্টে গোপালগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ মিছিলের দৃশ্যকে ঢাকা গণসমুদ্রে পরিণত হওয়ার দৃশ্য দাবি, কখনও আগস্টে ভারতে অবস্থান করা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে গোপালগঞ্জের বিক্ষোভ কর্মসূচির ভিডিওকে শহিদ নূর হোসেন চত্বরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ সমাবেশের ভিডিও দাবি, কখনও গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের গমনের দৃশ্যকে নারায়ণগঞ্জের পুরোনো ভিডিও প্রচার, কখনো-বা ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ছাত্রলীগের ছাত্র সমাবেশের ভিডিওকে জিরো পয়েন্টে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের যোগ দিতে যাওয়ার ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। এসব ভিডিও সেদিন মুহূর্তের ব্যবধানে অসংখ্য মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। 

ভিডিও ছাড়াও পুরোনো ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই কর্মসূচির অপপ্রচার চালানো হয়। চলতি বছরের ১ আগস্ট চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের ফেসবুক পেজে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সব শহিদের স্মরণে খতমে কোরআন ও দোয়া মাহফিল এবং শোক র‍্যালির আয়োজন করার ছবি প্রকাশ করা হয়। সেখান থেকে একটি ছবি নিয়ে দাবি করা হয়, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থল জিরো পয়েন্ট দখলে নেওয়ার দৃশ্য এটি। 

অপতথ্যের প্রচারে ইউটিউবও পিছিয়ে নেই। বিশেষ করে রাজনৈতিক অপতথ্যের প্রচারে সাম্প্রতিক বছরে ইউটিউব হয়ে উঠছে চিন্তার কারণ। আলোচিত কর্মসূচীতেও ইউটিউবে অপতথ্যের প্রচার দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। তাজা নিউজ নামের একটি চ্যানেল থেকে ১০ নভেম্বর একটি ভিডিও প্রকাশ করে দাবি করা হয়, সমন্বয়কদের পিটিয়ে সমাবেশস্থল দখলে নিয়েছে আওয়ামী লীগের লাখো নেতা-কর্মী। এই ভিডিওটি চার লক্ষাধিক বার দেখা হয়েছে। অথচ, এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার একাধিক পুরোনো ভিডিও ও ছবি যুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

১০ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কর্মসূচি প্রতিহত করতে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি ও এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের অবস্থান নেয়। এ দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করে সময় টেলিভিশন। গণমাধ্যমটির এই ফুটেজ ব্যবহার করে দাবি করা হয়, আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা মাঠে নেমেছে এবং নূর হোসেন চত্বরে জড়ো হচ্ছে। 

আলোচিত এই কর্মসূচি ঘিরে যে ১৫টি ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এর মধ্যে তথ্যকেন্দ্রিক দাবি ছিল দুইটি, ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি ছিল দুইটি, পুরোনো ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে একটি, পুরোনো ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে ৯টি এবং কর্মসূচির দিনের ভিডিওকে বিভ্রান্তিকর দাবিতে প্রচার করা হয়েছে একটি।

অমিয়/

ভুয়া তথ্য ছড়ানো অ্যাকাউন্টগুলোর ৭২ শতাংশই ভারতের

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম
আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১০ এএম
ভুয়া তথ্য ছড়ানো অ্যাকাউন্টগুলোর ৭২ শতাংশই ভারতের
ভুয়া ও অপতথ্য ছড়ানো অ্যাকাউন্টধারীর ৭২ শতাংশই ভারতের। ছবি : রিউমর স্ক্যানার

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর এবং ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্থবিরতার সুযোগে বেশ কিছু রাজনৈতিক হামলার ঘটনা ঘটে। সেই সময় সংখ্যালঘুরাও আক্রান্ত হন। তবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাজনৈতিক পরিচয় বা আক্রোশের বশবর্তী হয়ে এসব হামলার ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে প্রচার করা হয়। আর এসব অপপ্রচারে বড় ভূমিকা রেখেছে ভারত থেকে পরিচালিত এক্স অ্যাকাউন্ট ও ভারতীয় বেশ কিছু গণমাধ্যম। রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিটের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ভুয়া ও অপতথ্য ছড়ানো এসব অ্যাকাউন্টধারীর ৭২ শতাংশই ভারতে থাকেন।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) প্রকাশিত রিউমর স্ক্যানারের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। 

বাংলাদেশের তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানারের ইনভেস্টিগেশন ইউনিট ৫ থেকে ১৩ আগস্টের মধ্যে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে এমন ৫০টি অ্যাকাউন্ট খুঁজে বের করেছে, যেখানে আগস্টের ঘটনাবলির বিভিন্ন ছবি, ভিডিও ও তথ্যকে সাম্প্রদায়িক রূপ দিয়ে প্রচার করা হয়।

রিউমর স্ক্যানার ৪৯টি ভারতীয় গণমাধ্যমের তালিকা প্রকাশ করেছে, যারা ১২ আগস্ট থেকে ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে অন্তত ১৩টি ভুয়া খবর প্রচার করেছে।

গণমাধ্যমের পাশাপাশি অপতথ্যের এই প্রবাহে ভূমিকা রেখেছেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) রাজনীতিবিদ শুভেন্দু অধিকারী ও অগ্নিমিত্রা পাল, পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার দানিশ কানেরিয়া, সুইডেনে একাধিকবার কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় অভিযুক্ত সালওয়ান মোমিকা, দীর্ঘদিন ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখক তসলিমা নাসরিন, ভারতীয় গণমাধ্যম অপি ইন্ডিয়ার সম্পাদক নূপুর শর্মার মতো ব্যক্তিরা।

আগস্টে যেসব অপতথ্য ছড়ানো হয়েছে তার মধ্যে ৫৯টি শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। এ ছাড়া সেপ্টেম্বরে ৪টি, অক্টোবরে ৭টি এবং নভেম্বরে ৩১টি অপতথ্য শনাক্ত করেছে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানটি। ডিসেম্বরের ১০ তারিখ পর্যন্ত ১৯টিসহ এই সময়কালে মোট ১২০টি অপতথ্য শনাক্ত করা হয়েছে।

রিউমর স্ক্যানারের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক্স অ্যাকাউন্টগুলোর প্রতিটির অন্তত একটি পোস্টে সাম্প্রদায়িক অপতথ্য ও ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব অ্যাকাউন্টে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে প্রচারিত পোস্টগুলো ১ কোটি ৫৪ লাখের বেশি বার দেখা হয়েছে।

আরও একাধিক অ্যাকাউন্ট ও ভারতীয় গণমাধ্যমের কল্যাণে এসব অপতথ্য সেই সময় ১০ থেকে ১২ গুণ মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল বলে অনুমান করে রিউমর স্ক্যানার।

নিয়মিত ভুয়া তথ্যের প্রচারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাশাপাশি যোগ দেয় ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোও। ড. ইউনূসের শারীরিক অসুস্থতা কিংবা ট্রাম্পের জয়ে ড. ইউনূস দেশ ছেড়ে ফ্রান্সে পালিয়ে গেছেন শীর্ষক ভুয়া দাবি প্রচার করে ভারতের গণমাধ্যম।

এ ছাড়া ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে হিযবুত তাহরীরের নেতা হিসেবে গ্রেপ্তার আবদুল্লাহ আল মাহফুজকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। রিউমর স্ক্যানার পরবর্তী সময়ে নিশ্চিত করে যে দুজন ব্যক্তি আলাদা।

১০ নভেম্বর আওয়ামী লীগ শহিদ নূর হোসেন দিবস পালনের ঘোষণা দিলে এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া এক হিন্দু নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে শীর্ষক একটি দাবি ভাইরাল হয় এক্সের অসংখ্য অ্যাকাউন্টে। পোস্টগুলো প্রায় আট লাখের বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। আসলে এমন কিছুই ঘটেনি বলে প্রমাণ পায় রিউমর স্ক্যানার।

নভেম্বরে চট্টগ্রাম বন্দরে অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে পাকিস্তানের জাহাজ আসার ভুয়া দাবি করে ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল রিপাবলিক বাংলা।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভুয়া খবর এবং সাম্প্রদায়িক প্রচারণার পদ্ধতিতে একটি স্বতন্ত্র প্যাটার্ন লক্ষ করেছে রিউমর স্ক্যানার। যার মধ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আক্রান্তের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক ঘটনা দাবি, রাজনৈতিক সহিংসতাকে সাম্প্রদায়িক আক্রমণ হিসেবে দেখানো, আক্রান্ত হওয়া মুসলিম বা তাদের সম্পত্তির ভিডিওকে হিন্দুদের ওপর হামলার ভিডিও হিসেবে প্রচার, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানকে একটি জঙ্গি বা ইসলামিক শাসনের উত্থান হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার দাবি উল্লেখযোগ্য।

অন্য যেকোনো কারণেই কোনো হিন্দু ব্যক্তি আক্রমণের শিকার হলে ইচ্ছাকৃতভাবেই সেটাকে সাম্প্রদায়িক রূপ দিয়ে প্রচার করা হচ্ছে।

রিউমর স্ক্যানার তাদের প্রতিবেদনে বলছে, এই অপতথ্যের প্রচার শুধু ভারতের সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোতে সীমাবদ্ধ ছিল, এমন বলা যাবে না। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদও এই প্রবাহে অবদান রেখেছে। তাদের রিপোর্ট প্রায়ই অতিরঞ্জিত বা বিভ্রান্তিকর হওয়ার পরও বিভিন্ন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া আউটলেটের জন্য তথ্যের সূত্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

গত সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই পরিষদ ৯টি সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ডের দাবি করে। নেত্র নিউজের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই দাবিকে অসত্য বলা হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে মৃত্যুর কোনো ঘটনাই ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। এর পরিবর্তে সাতটি ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিশোধ, জনতার সহিংসতা বা অপরাধমূলক বিরোধের জন্য দায়ী করা হয়েছিল।

রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণ বলছে, এক্সে আগস্ট-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশকে নিয়ে ছড়ানো অপতথ্যগুলো দেখা হয়েছে অন্তত ২০ কোটি বার। এসব অপতথ্য গণমাধ্যমের সামাজিক প্ল্যাটফর্ম ছাড়াও প্রচার করা হয়েছে টেলিভিশন ও প্রিন্ট সংস্করণেও। ফলে অগণিত মানুষের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল বার্তা গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমে ১৩টি ভুয়া খবর, প্রচার করেছে ৪৯টি গণমাধ্যম

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৭ পিএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪২ পিএম
ভারতীয় গণমাধ্যমে ১৩টি ভুয়া খবর, প্রচার করেছে ৪৯টি গণমাধ্যম

বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত ১২ আগস্ট থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে অন্তত ১৩টি ভুয়া খবর প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে। ভুয়া খবর প্রচারকারী হিসেবে ভারতের অন্তত ৪৯টি গণমাধ্যমের নাম উঠে এসেছে। রিউমর স্ক্যানার টিম গতকাল বিকেলে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভারতের রিপাবলিক বাংলা সর্বাধিক পাঁচটি ভুয়া খবর প্রচার করেছে। পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস, জি নিউজ এবং লাইভ মিন্ট, যারা প্রত্যেকে অন্তত তিনটি করে ভুয়া খবর প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া রিপাবলিক, ইন্ডিয়া টুডে, এবিপি আনন্দ এবং আজতক অন্তত দুটি করে ভুয়া খবর প্রচার করেছে। বাকি ৪১টি গণমাধ্যম অন্তত একটি করে মিথ্যা খবর প্রচার করেছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশ নিয়ে প্রচার করা  হচ্ছে একের পর এক ভুয়া খবর। অনুসন্ধানে জানা যায়, এ ধরনের গুজব প্রচারের পরে বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর শেখ হাসিনা দিল্লি থেকে জনগণের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন এবং ওই চিঠিতে তার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন এমন দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। তবে জানা যায়, শেখ হাসিনা এমন কোনো চিঠি দেননি। রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে উঠে আসে, এই চিঠিটি প্রথমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে ভারতের আগরতলা ভিত্তিক দৈনিক ‘ত্রিপুরা ভবিষ্যত’ পত্রিকার প্রিন্ট সংস্করণে তারিখসহ প্রকাশিত হয়। এরপর ওই পত্রিকার স্ক্রিনশটটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার হতে থাকে এবং পরবর্তী সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের কয়েকটি গণমাধ্যমে এটি প্রচারিত হয়।

৫ আগস্টের পর ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দাবি করা হয়, একজন হিন্দু ব্যক্তি তার নিখোঁজ পুত্রের সন্ধান দাবিতে মানববন্ধন করছেন। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই ব্যক্তি আসলে মুসলিম এবং তার নাম বাবুল হাওলাদার। ২০১৩ সালে নিখোঁজ হওয়া ছেলের সন্ধানে মানববন্ধন করেছিলেন তিনি।

শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারানোর পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়। ভারতীয় গণমাধ্যম দাবি করে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস অসুস্থ হয়ে আইসিইউতে ভর্তি হয়েছেন। এ দাবির সঙ্গে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যক্তির ছবিও প্রকাশিত হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি ড. ইউনূসের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ড. ইউনূস সুস্থ রয়েছেন।

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশে বেশ কিছু নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে ভারতীয় গণমাধ্যম। এই দাবিরও কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হন। ট্রাম্পের বিজয়ের পর, ভারতীয় গণমাধ্যমে একটি খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফ্রান্সে পালিয়ে গেছেন। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দাবি মিথ্যা। পালানোর প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত ছবিটি ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশে ফেরার সময়ের।

স্বাধীনতার পর গত ১৩ নভেম্বর প্রথমবারের মতো সরাসরি পাকিস্তানের করাচি থেকে কনটেইনার বহনকারী একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করে। এ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের ‘সোয়াত’ নামের যে সামরিক জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে এসেছিল, সেই জাহাজ আবারও চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। আরও দাবি করা হয়, ওই জাহাজে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে অস্ত্র আনা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এসব দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। জাহাজটির নাম ‘এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং’, এটি একটি বাণিজ্যিক জাহাজ এবং এর মাধ্যমে শিল্পের কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্য আনা হয়েছে।

২৫ নভেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে জামিন নামঞ্জুর করা হয়। সেদিন চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে জেলা আদালতের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন। ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয় যে, সাইফুল ইসলাম চিন্ময়ের আইনজীবী হওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু এই দাবি সঠিক নয়। চিন্ময়ের আইনজীবী শুভাশীষ শর্মা, সাইফুল ইসলাম নন।

আইনজীবী রমেন রায়কে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে। রিউমর স্ক্যানার বলছে, রমেন রায় চিন্ময় দাসের আইনজীবী নন এবং তার মামলার সঙ্গেও কোনো সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে ২৫ নভেম্বর শাহবাগে চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে সোচ্চার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কর্মসূচিতে দুর্বৃত্তদের হামলায় রমেন রায় আহত হন। 

ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে ভারতীয় স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে। তবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ক্যাবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বিষয়টি গুজব বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছে।

ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী চীনের প্রযুক্তিগত সহায়তায়  ভারতের শিলিগুড়ির চিকেন নেকের কাছে লালমনিরহাটে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানঘাঁটি নির্মাণ করবে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, লালমনিরহাটের বিমানবন্দর দীর্ঘ ছয় দশক ধরে বন্ধ রয়েছে এবং সাম্প্রতিক এর কার্যক্রম পুনরায় চালুর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সম্প্রতি বাংলাদেশে মুসলিমরা হিন্দু মন্দিরে হামলা করে প্রতিমা ভাঙচুরের দাবি করা একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। এই দাবি ভারতের কিছু গণমাধ্যমেও প্রচারিত হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, বরং ভারতের পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ সুলতানপুর গ্রামের।
 
বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢাকা-আগরতলা-ঢাকা রুটে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসকে  বাংলাদেশি ট্রাক ধাক্কা দিয়েছে বলে ভারতের কিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়। আরও দাবি করা হয়, শ্যামলী পরিবহনের বাসে থাকা ভারতীয় যাত্রীদের স্থানীয়রা প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং ভারতবিরোধী স্লোগান দেয়। রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দাবিগুলোর কোনো সত্যতা নেই। ইচ্ছাকৃতভাবে নয়, দুর্ঘটনাটি মূলত ওভারটেকিংয়ের কারণে ঘটেছিল।

বাংলাদেশে যেকোনো সময় জঙ্গি হামলা হতে পারে জানিয়ে যুক্তরাজ্য ভ্রমণ সতর্কতা দিয়েছে দাবি করে একটি তথ্য ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম প্রচারিত হয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যের ভ্রমণ সতর্কতা কেবলমাত্র বাংলাদেশে নয় বরং ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জার্মানি, স্পেন, শ্রীলঙ্কা, ফ্রান্সসহ বিশ্বের অনেক দেশের ক্ষেত্রেই অনেকদিন ধরেই জারি করে রেখেছে যুক্তরাজ্য। তাই, এককভাবে বাংলাদেশকে নিয়ে খবর প্রচার করা বিভ্রান্তিকর।

মাহফুজ/এমএ/

মাতাল হয়ে গাড়ি চালানোর সময় আটকের ভিডিওটি ড. ইউনূসের মেয়ের নয়

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২১ পিএম
আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৭ পিএম
মাতাল হয়ে গাড়ি চালানোর সময় আটকের ভিডিওটি ড. ইউনূসের মেয়ের নয়
ছবি কৃতজ্ঞতা: রিউমর স্ক্যানার

২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সির একটি ঘটনা সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হচ্ছে। এই ভিডিওতে এক নারীকে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর সময় আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী নিজের নাম মনিকা ইউনূস বলে জানায়। সম্প্রতি দাবি করা হয়েছে, ভিডিওটি যে নারীকে দেখা যাচ্ছে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মেয়ে মনিকা ইউনূস এবং তিনি একজন সমকামী।

বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়েছে তথ্য যাচাইকারী সংস্থা রিউমর স্ক্যানার। তাদের অনুসন্ধানে যা বেরিয়ে এসেছে সেটাকে আমাদের দেশে ‘নামে নামে যমে টানে’ বলে।

প্রচারিত ভিডিওটিতে মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালাতে গিয়ে আটক নারীর নাম মনিকা ইউনূস হলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মেয়ে নন। মনিকা নামের অন্য এক নারীকে ড. ইউনূসের মেয়ে দাবি করে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে ‘Transparency Bodycam’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে চলতি বছরের গত ২৮ আগস্টে ‘Drunk Woman Crashes her Car After a Breakup in Verona, New Jersey’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ওই ভিডিওর শুরু থেকে প্রথম দিকের কিছু অংশের সঙ্গে প্রচারিত ভিডিওটি হুবহু মিলে যায়।

আর ইউটিউব চ্যানেলটিতে পুলিশের শরীরে পরিধানকৃত ক্যামেরায় ধারণ করা নানা ভিডিও প্রকাশ করে থাকে। এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার দেখেছে, আটক নারী তার নাম মনিকা ইউনূস বলে জানান। পাশাপাশি তিনি জানান, তার জন্ম নিউইয়র্কে এবং তিনি একজন পুয়ের্তো রিকান। তিনি তার প্রেমিকার সঙ্গে ব্রেকআপ করে মদ পান করেছেন। 

ভিডিওটির বর্ণনা অংশ থেকে জানা যায়, ঘটনাটি ২০২২ সালের ১৬ এপ্রিল রাত ২টা ৩১ মিনিটের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির ভেরোনাতে ধারণ করা। পরবর্তীতে ২০২২ সালের মে মাসে কোর্ট তাকে দোষী সাব্যস্ত করে জরিমানাসহ আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

তথ্য যাচাইকারী সংস্থাটি ড. ইউনূসের মেয়ে মনিকা ইউনূসের ওয়েবসাইট থেকে জানতে পেরেছে, তার জন্ম বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। সিএনএনকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারেও তিনি বলেছেন, তিনি আমেরিকার নাগরিক তবে তার জন্ম বাংলাদেশে। তার ওয়েবসাইটেও নিজেকে পুয়ের্তো রিকান বলে দাবি করার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

পুয়ের্তো রিকো কোনো সার্বভৌম দেশ বা ভূখণ্ড নয়, এটি একটি ইউএস টেরিটোরি। পুয়ের্তো রিকোতে জন্মগ্রহণ করা নাগরিকরা আমেরিকান নাগরিক বলে গণ্য হন। তবে সাংস্কৃতিক কারণসহ নানা কারণে অনেকেই নিজেকে পুয়ের্তো রিকোন বলেও দাবি করে থাকেন।

পুয়ের্তো রিকোনরা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডের নাগরিকের সমান অধিকার পান না। যেমন- পুয়ের্তো রিকো থেকে তারা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিতে পারে না।

মনিকা ইউনূস সমকামীর সমর্থক কিনা তা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি রিউমর স্ক্যানার।

নিউইয়র্ক টাইমসসহ একাধিক গণমাধ্যম ও ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তিনি ২০০৯ সাল থেকেই ব্র্যান্ডন ম্যাকরেনল্ডস নামে এক ওপেরা গায়ককে বিয়ে করেছেন। মনিকা ইউনূস নিজেও একজন ওপেরা গায়িকা।

মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর ভিডিওতে প্রদর্শিত মনিকা ইউনূসের সঙ্গে মুখমণ্ডলের তুলনা করলেও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মেয়ে মনিকা ইউনূসের কোনো মিল নেই।

সব বিষয় বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মেয়ে মনিকা ইউনূস মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাতে গিয়ে আটক হয়েছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

ভারতের ভিডিওকে বাংলাদেশের মন্দিরে হামলার ভুয়া দাবি

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১৮ পিএম
আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৩ পিএম
ভারতের ভিডিওকে বাংলাদেশের মন্দিরে হামলার ভুয়া দাবি
ছবি কৃতজ্ঞতা: রিউমর স্ক্যানার

সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। এই অসন্তোষের মধ্যেই বাংলাদেশে মুসলমানরা হিন্দুদের মন্দিরে হামলা করে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে এমন দাবি করে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছে তথ্য যাচাইকারী সংস্থা রিউমর স্ক্যানার।

এই সংস্থাটি অনুসন্ধানে দেখতে পায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশে মুসলিম কর্তৃক হিন্দুদের মন্দিরে হামলা করে প্রতিমা ভাঙচুরের তো নয়-ই, ভিডিওটি বাংলাদেশেরই নয়। এটি ভারতের পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ সুলতানপুর গ্রামে প্রতিমা বিসর্জনের দৃশ্য। 

অনুসন্ধানে ‘রঘুর সাথী’ নামে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৩০ নভেম্বর প্রচারিত একটি পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পোস্টের ভিডিওর দৃশ্যের সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

রঘুর সাথী তার আইডিতে এই পোস্টে হ্যাশট্যাগ হিসেবে ‘সুলতানপুর কালীমাতা নিরঞ্জন’ উল্লেখ করা হয়। 

এর সূত্রে অনুসন্ধান চালিয়ে ‘dey_raghu’ নামের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৩০ নভেম্বরই প্রচারিত আরেকটি ভিডিও পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পোস্টে বলা হয়, সুতলানপুর ১২ বছর অন্তর কালীমাতা নিরঞ্জনের দৃশ্য এটি।

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে ‘সুলতানপুর কিরনময়ী পাঠাগার’ নামে একটি ভারতীয় পেজ খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পেজ পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, গত ২৫ নভেম্বর ‘১২ বছর অন্তর ঐতিহ্যের কালীমাতা নিরঞ্জন ২০২৪’ আয়োজন করে ভারতের পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ সুলতানপুরের কিরণময়ী পাঠাগার এবং সুলতানপুর গ্রামবাসী।

এছাড়া, পল্লী দামোদর নামক একটি ভারতীয় স্থানীয় গণমাধ্যমের পেজে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, খণ্ডঘোষ সুলতানপুরের মণ্ডলবাড়িতে দীর্ঘ ১২ বছর পরপর অনুষ্ঠিত হয় কালীমাতা নিরঞ্জন। 

সুতরাং, ভারতের পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ প্রতিমা বিসর্জনের দৃশ্যকে বাংলাদেশে মুসলিম কর্তৃক হিন্দুদের মন্দিরে হামলার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

রিউমর স্ক্যানারের পরিসংখ্যান সরকার ও ড. ইউনূসকে নিয়ে অপতথ্যের ছড়াছড়ি

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৮ পিএম
সরকার ও ড. ইউনূসকে নিয়ে অপতথ্যের ছড়াছড়ি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ থেকে পরবর্তী ১০০ দিনে ৮৯৬টি অপতথ্য শনাক্ত করেছে ফ্যাক্টচেক বা সত্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার। সবচেয়ে বেশি অপতথ্য ছড়ানো হয় অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে। প্রধান উপদেষ্টা ও সেনাপ্রধানের দ্বন্দ্ব দাবি করে একাধিক অপতথ্য ছড়ানো হয়। বাস্তবে এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। অপতথ্য ছড়ানো হয়েছে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সম্পর্কেও।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে হিযবুত তাহরীরের সদস্য হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করে ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে। পরে জানা যায়, ২০১৯ সালে গ্রেপ্তার হিযবুত তাহরীরের মাহফুজ আর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ একই ব্যক্তি নন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমকে নিয়ে মোট ৪২টি অপতথ্য ছড়ানো হয় বলে রিউমর স্ক্যানারের যাচাইয়ে উঠে আসে। 

চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তান থেকে আসা জাহাজ ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপতথ্যের ছড়াছড়ি দেখা গেছে। ওই জাহাজ থেকে নিত্যপণ্য দ্রব্য এবং শিল্পের কাঁচামাল খালাস করা হলেও সেই জাহাজে অস্ত্র এসেছিল বলে গুজব ছড়ানো হয়। 

সরকারের ১০০ দিনের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি অপতথ্য ছড়ানো হয় সেপ্টেম্বর মাসে। প্রতিষ্ঠানটির হিসাব অনুযায়ী, আগস্ট মাসে (৮-৩১ তারিখ পর্যন্ত) ২৪৬টি, সেপ্টেম্বর মাসে ২৭৬টি, অক্টোবরে ২১৬টি এবং ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ১৫৮টি ভুল তথ্য শনাক্ত করা হয়। আর ক্যাটাগরিভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে ৯৯টি, রাজনীতি নিয়ে ২৮৮টি, জাতীয় ইস্যু নিয়ে ২৫১টি, ধর্মীয় ৭৮টি, পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে ৬২টি, আন্তর্জাতিক ইস্যুতে ৫৯টি, প্রতারণা নিয়ে ৩৮টি, বিনোদন নিয়ে ৩৫টি, খেলাধুলা নিয়ে ২৬টি, শিক্ষা নিয়ে ২০টি এবং অন্যান্য ক্যাটাগরিতে ৩৯টি অপতথ্য ছড়ানো হয়। 

ব্যক্তি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ৯০টি, শেখ হাসিনাকে নিয়ে ৭২টি, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে নিয়ে ১৫টি করে অপতথ্য ছড়ানো হয়। এ ছাড়া উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে নিয়ে ৮টি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমকে নিয়ে ২৪টি, হাসনাত আবদুল্লাহকে নিয়ে ১৮টি এবং সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ১১টি ভুল তথ্য ছড়ানো হয়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সর্বাধিক (৪৭টি) সেনাবাহিনী নিয়ে অপতথ্য প্রকাশ করা হয়। অন্যদের মধ্যে পুলিশ নিয়ে ১৬টি, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী নিয়ে ৫টি, বিজিবি নিয়ে ২টি এবং নৌবাহিনী ১টি অপতথ্য ছড়ানো হয়।

অন্যদিকে ইস্যুভিত্তিক ছড়ানো অপতথ্যের মধ্যে রয়েছে সাম্প্রদায়িক প্রোপাগান্ডা ৮৪টি, আগস্টের বন্যা নিয়ে ৮৯টি, সচিবালয়ে আনসার আন্দোলন নিয়ে ৪টি, সেপ্টেম্বরে উত্তরবঙ্গের বন্যা নিয়ে ৭টি, সেপ্টেম্বরে পাহাড়ে সংকট নিয়ে ১৮টি, জাতিসংঘ অধিবেশন নিয়ে ১৬টি, দুর্গাপূজা নিয়ে ১৫টি, সেন্ট মার্টিন নিয়ে ৫টি, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে ৭টি, ঢাকা ইসলামি মহাসম্মেলন নিয়ে ৬টি এবং শহিদ নূর হোসেন দিবস নিয়ে ১৭টি।

এই ১০০ দিনে রিউমর স্ক্যানারের আলোচিত প্রতিবেদনগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতার পটপরিবর্তনকে কেন্দ্র করে এক্সে সাম্প্রদায়িক অপতথ্যের ভয়াবহতা’, ‘আগস্টে এনায়েতপুর থানায় হামলায় কোনো গর্ভবতী নারী পুলিশ সদস্য নিহত হননি’, ‘গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বেড়েছে গণমাধ্যমকে জড়িয়ে অপতথ্য প্রচারের হার’, ‘প্রধান উপদেষ্টা ও সেনাপ্রধানের দ্বন্দ্বের দাবি ঘিরে অপতথ্য প্রবাহের এক রাত’, ‘২০১৯ সালে গ্রেপ্তার হিযবুত তাহরীরের মাহফুজ আর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ একই ব্যক্তি নন’, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তান থেকে আসা জাহাজ ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে অপতথ্যের ছড়াছড়ি।’

হিন্দু নয়, অনিয়মের কারণে অপসারণ দাবি করা হয় নওগাঁ মেডিকেলের অধ্যাপক কান্তাকে

হিন্দু হওয়ার জন্য নয়, বিভিন্ন অনিয়মের কারণে নওগাঁ মেডিকেল কলেজে নতুন নিয়োগ পাওয়া অ্যানাটমি বিভাগের অধ্যাপক ডা. কান্তা রায় রিমিকে অপসারণের দাবিতে ক্লাস এবং পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ায় তার অপসারণ দাবি করা হয় বলে অপতথ্য ছড়িয়ে পড়ে। রিউমর স্ক্যানার বিষয়টি যাচাই করে নিশ্চিত হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি তার প্রতিবেদনে ওই কলেজের দুজন সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীর বক্তব্য নিয়েছে। শিক্ষার্থী সৌভিক ধর চৌধুরী বলেন, ধর্মীয় কোনো ইস্যুতে অপসারণের দাবি করা হয়নি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি তথ্য। 

আরেক সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী প্রশ্মিতা বিশ্বাস বলেন, এখানে ধর্মের যে বিষয়টি বলা হচ্ছে এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

'), descriptionParas[2].nextSibling); } if (descriptionParas.length > 6 && bannerData[arrayKeyTwo] != null) { if (bannerData[arrayKeyTwo].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyTwo].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyTwo].file)), descriptionParas[5].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyTwo].custom_code), descriptionParas[5].nextSibling); } } if (descriptionParas.length > 9 && bannerData[arrayKeyThree] != null) { if (bannerData[arrayKeyThree].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyThree].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyThree].file)), descriptionParas[8].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyThree].custom_code), descriptionParas[8].nextSibling); } } });