ঢাকা ২২ আশ্বিন ১৪৩১, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪

সাহিত্যপিডিয়ার বর্ষপূর্তিতে সাড়ে ১৬ হাজার বই বিনিময়

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৪, ১২:১২ পিএম
আপডেট: ০৯ জুন ২০২৪, ০৩:৪৫ পিএম
সাহিত্যপিডিয়ার বর্ষপূর্তিতে সাড়ে ১৬ হাজার বই বিনিময়
বই বিনিময় উৎসবে শুভেচ্ছা বিনিময়

রাজধানীর রমনা এলাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাহিত্যপিডিয়ার উদ্যোগে আয়োজিত বই বিনিময় উৎসবে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার বই বিনিময় হয়েছে।

শুক্রবার (৭ জুন) অনুষ্ঠিত এই বই বিনিময় উৎসবে দেশের বিভিন্ন জায়গার মানুষ এ উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। 

এই উৎসবে সাহিত্যপিডিয়ার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইব্রাহীম নিরব বলেন, ‘উৎসবে আমাদের ৩০ হাজারেরও অধিক বই বিনিময়ের লক্ষ্য ছিল। তবে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় তা সম্ভব হয়নি। বৃষ্টির কারণে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করতে হয়। তবুও প্রায় সাড়ে ১৬ হাজারের মতো বই বিনিময় হয়েছে। উৎসবে আমাদের নতুন সংযোজন ছিল লোকগান ও কাওয়ালি সংগীত, সাহিত্যের সঙ্গে সংস্কৃতির মিশেল ঘটানো।’

সাহিত্যপিডিয়ার প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এ উৎসবে প্রধান অতিথি কবি প্রাকৃতজ শামীমরুমি টিটন বলেন, ‘তরুণদের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। সাহিত্য, সংগীত ও সংস্কৃতি নিয়ে যে নতুন বোধোদয় তৈরি হচ্ছে তা ধরে রাখতে পারলে দ্রুতই বাংলাদেশের আমূল পরিবর্তন ঘটবে।’ 

এ অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তা ছিলেন অধ্যক্ষ আজিজুর রহমান মিন্টু। 

এ ছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন লেখক ও অধ্যাপক আসিফ নজরুল, বাউল প্রচার সমিতির সভাপতি আলম দেওয়ান, কবি ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক শাহজাহান সাজু, সাংবাদিক গবেষক ও কবি ইমরান মাহফুজ এবং লেখক ও সংগঠক নাজনীন মোসাব্বের।

নাজনীন মোসাব্বের বলেন, ‘যারা এ আয়োজন করেছে তারা একেকজন যোদ্ধা। তাদের এ আয়োজন আমার কৈশোরের স্মৃতি নাড়া দিয়েছে। এটা চলতে থাকলে আরও অগণিত পাঠক তৈরি হবে।’

উৎসবে আসা পাঠক সুরাইয়া সানজিদা বলেন, বইমেলার বাইরে এটা একটা দারুণ আয়োজন। যে বইগুলো আমি পড়ে ফেলেছি, সেগুলোর বিনিময়ে অন্য বই নিতে পারছি। এটা ভালো একটি উদ্যোগ। দেশের সাহিত্য, বই, শিল্প, সংস্কৃতি ইতিহাস, ধর্ম ও রাজনীতি বাঁচাতে সর্বস্তরের মানুষদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া খুবই প্রয়োজন। 

সাহিত্যপিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা বিপ্রতীপ শাহ তন্ময় বলেন, ‘মাত্র ১৫ দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজকের এ আয়োজন। এত দ্রুত এ আয়োজন করতে গিয়ে আমাদের অনেক বিপত্তি এসেছে, সেগুলো উতরে আমরা সফল একটি আয়োজন সাহিত্যপ্রেমীদের উপহার দিতে পেরেছি। এ আয়োজনে ৫০ জন তরুণ-তরুণী স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছে। এরা সবাই সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে ভালোবেসে কাজ করছে। সামাজিক মুক্তির অংশ হিসেবে এমন উদ্যোগে সবার সার্বিক সহযোগিতা এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে।’ 

সৃষ্টিশীল, বিচক্ষণ পাঠক তৈরির লক্ষ্যে সব শ্রেণির জন্য ২০২৩ সালের ২ জুন প্রতিষ্ঠিত হয় সাহিত্যপিডিয়া। 

সাহিত্যপিডিয়া এমন একটি সাহিত্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, যা গড়ে তোলা হয়েছে সাহিত্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব কার্যক্রম ও সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্মতত্ত্ব, রাজনীতি, অর্থনীতি, শিল্প, সংগীত, দর্শন, ইতিহাস ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করার উন্মুক্ত ও উদার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে। 

বই বিনিময় উৎসবে মূলত পঠিত বই দিয়ে অপঠিত বই বিনিময় করা হয়। এ উৎসবের মূল লক্ষ্য হলো পাঠক ধরে রাখা এবং পাঠককে নতুন বই সম্পর্কে ধারণা দেওয়া। 

এখানে প্রায় ২০টি ক্যাটাগরি রাখা হয়েছিল উপন্যাস, ছোটগল্প, কবিতা, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সাইকোলজি, শিশুতোষসহ আরও অন্যান্য জনরা।

এ ছাড়া এ উৎসবের অনন্য সংযোজন ছিল বই প্রদর্শন ও বিক্রয়ের একটি বিশেষ পয়েন্ট, যেখান দর্শনার্থীরা চাইলেই পছন্দের বই কিনে নিয়েছেন। 

সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠানে সুলতান দেওয়ান ও তার দল পরিবেশন করেন লোকসংগীত এবং সিলসিলা ব্যান্ড পরিবেশন করে কাওয়ালি সংগীত।

পপি/অমিয়/

মুখর বাদল দিনে নগরে শরৎ-বন্দনা

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৩৫ পিএম
মুখর বাদল দিনে নগরে শরৎ-বন্দনা
বৃষ্টিমগ্ন শরতে ধানমন্ডির সংগীতায়ন ছায়ানটের শরৎ-বন্দনার আয়োজনে একদল শিল্পী সম্মেলক নৃত্য-গীতে বন্দনা করলেন ঋতু শরতের। ছবি: খবরের কাগজ

মধ্য আশ্বিনেও শ্রাবণের রাজত্ব চলছে দেশজুড়ে। ষড়ঋতুর দেশে শরৎ এলেও স্বীয় বৈশিষ্ট্যে এখনো প্রতিভাত হয়নি সে। মেঘমুক্ত আকাশ আর শিউল ফুলের ঘ্রাণে মগ্ন হওয়ার নাগরিক অপেক্ষা কেবল প্রলম্বিত হয়। তবু্ও সুখ ও সমৃদ্ধির বার্তা নিয়ে যে শরৎ এসেছে এই বঙ্গে, তাকে কী অগ্রাহ্য করা চলে! তাই তো বৃষ্টিমগ্ন দিনের শুরুতে নগরের একদল শিল্পী সম্মেলক নৃত্য-গীতে বন্দনা করলেন ঋতু শরতের।

রাজধানীর ধানমন্ডির সংগীতায়ন ছায়ানটের শরৎ-বন্দনার এই আয়োজনটি শুরু হয় শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ঠিক ৭টায়।

ছায়ানট মিলনায়তনে ছায়ানটের নিয়মিত শিল্পীদের পাশাপাশি এ সময়ের নন্দিত কণ্ঠশিল্পী ও বাচিকশিল্পীরাও এ আয়োজনে অংশ নেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা, কবিতা আর গানে সাজানো হয়েছিল ছায়ানটের শরৎ-উৎসব।

তুমুল বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিল্পীদের সঙ্গে এসেছিলেন তাদের পরিবার-পরিজন। শরৎ-বন্দনার আয়োজনকে সার্থক করতে একদল তরুণও কাকভেজা হয়ে এসেছিলেন ছায়ানটে।

অনুষ্ঠান শুরু হয় সম্মেলক নৃত্য-গীতে। রবীন্দ্রসংগীত 'ওগো শেফালি বনের মনের কামনা' গানের সঙ্গে সম্মেলক নৃত্য পরিবেশন করে ছায়ানটের শিল্পীরা।

এরপর একক সংগীত পর্বে সেমন্তী মঞ্জরী শোনান রবীন্দ্রসংগীত ‘আলোর অমল কমলখানি’। দীপ্র নিশান্ত, প্রিয়াঙ্কা ভট্টাচার্য পরিবেশন করেন ‘কার বাঁশি নিশিভোরে’ এবং ‘শরত আলোর কমলবনে’। এরপর আবার সম্মেলক নৃত্য। রবীন্দ্রনাথের ‘দেখো দেখো দেখো শুকতারা’ গানের সঙ্গে সম্মেলক নৃত্য নিয়ে মঞ্চে আসে ছায়ানটের ছোটদের দল। নৃত্যের পরে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিচারণ ‘ছেলেবেলার শরৎকাল’ থেকে পাঠ করেন ডালিয়া আহমেদ।

এরপর আবার একক গানের পর্ব। ‘আমার নয়ন ভুলানো এলে’ গানটি পরিবেশন করেন অমেয়া প্রতীতি। অর্ণব বড়ুয়া শোনান ‘আমায় ডাক দিলো কে’। সুতপা সাহা শোনান ‘কেন যামিনী না যেতে’। চঞ্চল কৃষ্ণ বড়াল শোনান ‘এই তো তোমার প্রেম ওগো’। একক গানের পরে ‘আমরা বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ’ গানের সঙ্গে সম্মেলক নৃত্য নিয়ে মঞ্চে আসে ছায়ানটের বড়দের দল। নগরে শরতের অপেক্ষার প্রহরই যেন ফুটে উঠে তাদের নৃত্যের মুদ্রায়।

এরপর আবার একক গানের পর্ব। ফারজানা আক্তার পপি শোনান ‘এবার অবগুণ্ঠন খুলো’। লাইসা আহমদ লিসা শোনান ‘বাজিল কাহার বীণা’। মাঝে বাচিকশিল্পী রফিকুল ইসলাম আবৃত্তি করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শরৎ’ কবিতাটি।