ঢাকা ১০ আষাঢ় ১৪৩২, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
English

সাহিত্যপিডিয়ার বর্ষপূর্তিতে সাড়ে ১৬ হাজার বই বিনিময়

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৪, ১২:১২ পিএম
আপডেট: ০৯ জুন ২০২৪, ০৩:৪৫ পিএম
সাহিত্যপিডিয়ার বর্ষপূর্তিতে সাড়ে ১৬ হাজার বই বিনিময়
বই বিনিময় উৎসবে শুভেচ্ছা বিনিময়

রাজধানীর রমনা এলাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাহিত্যপিডিয়ার উদ্যোগে আয়োজিত বই বিনিময় উৎসবে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার বই বিনিময় হয়েছে।

শুক্রবার (৭ জুন) অনুষ্ঠিত এই বই বিনিময় উৎসবে দেশের বিভিন্ন জায়গার মানুষ এ উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। 

এই উৎসবে সাহিত্যপিডিয়ার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইব্রাহীম নিরব বলেন, ‘উৎসবে আমাদের ৩০ হাজারেরও অধিক বই বিনিময়ের লক্ষ্য ছিল। তবে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় তা সম্ভব হয়নি। বৃষ্টির কারণে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করতে হয়। তবুও প্রায় সাড়ে ১৬ হাজারের মতো বই বিনিময় হয়েছে। উৎসবে আমাদের নতুন সংযোজন ছিল লোকগান ও কাওয়ালি সংগীত, সাহিত্যের সঙ্গে সংস্কৃতির মিশেল ঘটানো।’

সাহিত্যপিডিয়ার প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এ উৎসবে প্রধান অতিথি কবি প্রাকৃতজ শামীমরুমি টিটন বলেন, ‘তরুণদের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। সাহিত্য, সংগীত ও সংস্কৃতি নিয়ে যে নতুন বোধোদয় তৈরি হচ্ছে তা ধরে রাখতে পারলে দ্রুতই বাংলাদেশের আমূল পরিবর্তন ঘটবে।’ 

এ অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তা ছিলেন অধ্যক্ষ আজিজুর রহমান মিন্টু। 

এ ছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন লেখক ও অধ্যাপক আসিফ নজরুল, বাউল প্রচার সমিতির সভাপতি আলম দেওয়ান, কবি ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক শাহজাহান সাজু, সাংবাদিক গবেষক ও কবি ইমরান মাহফুজ এবং লেখক ও সংগঠক নাজনীন মোসাব্বের।

নাজনীন মোসাব্বের বলেন, ‘যারা এ আয়োজন করেছে তারা একেকজন যোদ্ধা। তাদের এ আয়োজন আমার কৈশোরের স্মৃতি নাড়া দিয়েছে। এটা চলতে থাকলে আরও অগণিত পাঠক তৈরি হবে।’

উৎসবে আসা পাঠক সুরাইয়া সানজিদা বলেন, বইমেলার বাইরে এটা একটা দারুণ আয়োজন। যে বইগুলো আমি পড়ে ফেলেছি, সেগুলোর বিনিময়ে অন্য বই নিতে পারছি। এটা ভালো একটি উদ্যোগ। দেশের সাহিত্য, বই, শিল্প, সংস্কৃতি ইতিহাস, ধর্ম ও রাজনীতি বাঁচাতে সর্বস্তরের মানুষদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া খুবই প্রয়োজন। 

সাহিত্যপিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা বিপ্রতীপ শাহ তন্ময় বলেন, ‘মাত্র ১৫ দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজকের এ আয়োজন। এত দ্রুত এ আয়োজন করতে গিয়ে আমাদের অনেক বিপত্তি এসেছে, সেগুলো উতরে আমরা সফল একটি আয়োজন সাহিত্যপ্রেমীদের উপহার দিতে পেরেছি। এ আয়োজনে ৫০ জন তরুণ-তরুণী স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছে। এরা সবাই সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে ভালোবেসে কাজ করছে। সামাজিক মুক্তির অংশ হিসেবে এমন উদ্যোগে সবার সার্বিক সহযোগিতা এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে।’ 

সৃষ্টিশীল, বিচক্ষণ পাঠক তৈরির লক্ষ্যে সব শ্রেণির জন্য ২০২৩ সালের ২ জুন প্রতিষ্ঠিত হয় সাহিত্যপিডিয়া। 

সাহিত্যপিডিয়া এমন একটি সাহিত্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, যা গড়ে তোলা হয়েছে সাহিত্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব কার্যক্রম ও সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্মতত্ত্ব, রাজনীতি, অর্থনীতি, শিল্প, সংগীত, দর্শন, ইতিহাস ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করার উন্মুক্ত ও উদার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে। 

বই বিনিময় উৎসবে মূলত পঠিত বই দিয়ে অপঠিত বই বিনিময় করা হয়। এ উৎসবের মূল লক্ষ্য হলো পাঠক ধরে রাখা এবং পাঠককে নতুন বই সম্পর্কে ধারণা দেওয়া। 

এখানে প্রায় ২০টি ক্যাটাগরি রাখা হয়েছিল উপন্যাস, ছোটগল্প, কবিতা, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সাইকোলজি, শিশুতোষসহ আরও অন্যান্য জনরা।

এ ছাড়া এ উৎসবের অনন্য সংযোজন ছিল বই প্রদর্শন ও বিক্রয়ের একটি বিশেষ পয়েন্ট, যেখান দর্শনার্থীরা চাইলেই পছন্দের বই কিনে নিয়েছেন। 

সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠানে সুলতান দেওয়ান ও তার দল পরিবেশন করেন লোকসংগীত এবং সিলসিলা ব্যান্ড পরিবেশন করে কাওয়ালি সংগীত।

পপি/অমিয়/

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সাইফুল মাস্টারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ১০:১৬ পিএম
আপডেট: ২২ জুন ২০২৫, ১০:৫৪ পিএম
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সাইফুল মাস্টারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং কটিয়াদী উপজেলার মুমুরদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম মাস্টার

মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং কটিয়াদী উপজেলার মুমুরদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম মাস্টারের প্রথম  মৃত্যুবার্ষিকী আজ রবিবার (২২ জুন)। এ উপলক্ষ্যে তার পরিবারের পক্ষ থেকে বাড়িতে কোরআন খতম ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

এ ছাড়া রবিবার দুপুরে উপজেলার মুমুরদিয়ার নিজ এলাকায় মিলাদ ও দোয়ার পাশাপাশি এতিমখানায় খাবার বিতরণ করা হয়েছে। 

মরহুম সাইফুল ইসলাম মাস্টার গত বছরের ২২ জুন নিজ বাড়িতে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।

তিনি ১৯৪১ সালের ১ ডিসেম্বর কটিয়াদী উপজেলার বেথইর গ্রামের মাস্টারবাড়ি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ছিল রইছ উদ্দিন মাস্টার। যার নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে 'রইছ মাহমুদ উচ্চ বিদ্যালয়'।

বর্ণাঢ্য জীবনে তিনি কটিয়াদী উপজেলা মুক্তিবাহিনী কমিটির সাধারণ সম্পাদক, কটিয়াদী উপজেলা রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যান, কটিয়াদী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক কমিটির সভাপতি, কটিয়াদী সমবায় সমিতির সভাপতি ছিলেন।

তিনি কটিয়াদীর চাতল বাগহাটা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন।

এ ছাড়া তিনি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন এবং জীবনদ্দশায় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।

তার একমাত্র ছেলে কটিয়াদী পৌর মহিলা কলেজের প্রভাষক তরিকুল ইসলাম টিটু তার মরহুম বাবার রুহের মাগফেরাত কামনা করে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

সিলেটে সম্মিলিত নাট্য পরিষদের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন, প্রধান পরিচালক শেরো

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ০৪:২৫ পিএম
সিলেটে সম্মিলিত নাট্য পরিষদের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন, প্রধান পরিচালক শেরো
ছবি: খবরের কাগজ

সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট-এর দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

শুক্রবার (২০ জুন) সকাল ১০টায় রিকাবীবাজারে কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলন এবং সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।

দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে গোপন ভোটের মাধ্যমে সংগঠনের প্রধান পরিচালক পদে নির্বাচিত হন শামসুল বাসিত শেরো এবং পরিচালক পদে নির্বাচিত হন মঞ্জুর আহমদ চৌধুরী ও অচিন্ত্য কুমার দে।

অনুষ্ঠানের প্রথম অধিবেশনে উদ্বোধক ছিলেন সিলেটের প্রবীণ নাট্যব্যক্তিত্ব মায়া কর। 

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়শ্রী দেব জয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের পরিচালক অনুপ কুমার দেব, অরিন্দম দত্ত চন্দন, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্য শামসুল বাসিত শেরো, পরিচালক অর্ধেন্দু কুমার দাশ, নাট্যজন আব্দুল কাইয়ুম মুকুল, প্রচার সম্পাদক দিবাকর সরকার শেখর, কার্যনির্বাহী সদস্য তন্ময় নাথ তনু, আব্দুল বাছিত সাদাফ, রেজাউল করিম রাব্বিসহ সিলেটের নাট্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

উদ্বোধনী পর্ব শেষে চা বিরতির পর সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন যুগ্ম সম্পাদক এখলাছ আহমেদ তন্ময়। 

এ সময় প্রয়াতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ সম্পাদকীয় প্রতিবেদন এবং কোষাধ্যক্ষ অচিন্ত্য কুমার দে অমিত আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

উভয় প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা করেন বিভিন্ন নাট্যদলের প্রতিনিধিরা।

মধ্যাহ্নভোজ শেষে দ্বিতীয় অধিবেশনে গোপন ভোটের মাধ্যমে সম্মিলিত নাট্য পরিষদের নতুন নীতিনির্ধারণী পরিষদ গঠন করা হয়। এতে প্রধান পরিচালক পদে নির্বাচিত হন শামসুল বাসিত শেরো এবং পরিচালক পদে নির্বাচিত হন মঞ্জুর আহমদ চৌধুরী ও অচিন্ত্য কুমার দে। 

নবনির্বাচিত নীতিনির্ধারণী পরিষদ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পরবর্তী নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।

অমিয়/

গানে গানে কবি সুফিয়া কামালকে স্মরণ

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ১১:৪৫ এএম
আপডেট: ২১ জুন ২০২৫, ১১:৪৬ এএম
গানে গানে কবি সুফিয়া কামালকে স্মরণ
ছবি: খবরের কাগজ

আষাঢ়ের বর্ষণমুখর সন্ধ্যা। রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের নিজের বাড়ির বারান্দায় একটা চেয়ারে বসে আছেন ‘জননী সাহসিকা’ কবি সুফিয়া কামাল। তার এক পাশে সর্বজনশ্রদ্ধেয় সংস্কৃতিজন ওয়াহিদুল হক, সনজীদা খাতুন।

অন্যপাশে ছায়ানটের অন্যতম সদস্য সারওয়ার আলী, মফিদুল হক, ইফফাত আরা দেওয়ানসহ আরও কয়েকজন। কেউ এনেছেন বেলি ফুলের মালা; কেউ এনেছেন বৃষ্টিস্নাত দোলনচাঁপা কিংবা একগুচ্ছ রজনীগন্ধা। সস্নেহে অনুজদের কাছে ডেকে বসিয়েছেন কবি সুফিয়া কামাল। অনুজদের কথা, কবিতা, গানে ভালোবাসায় সিক্ত হলেন সুফিয়া কামাল।

সুফিয়া কামালের জন্মদিনে তার স্নেহভাজনরা এভাবেই তাকে শুভেচ্ছা জানাতেন। গতকাল শুক্রবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় ছায়ানটের বর্ষার অনুষ্ঠানের সূচনায় সংগীতশিল্পী ইফফাত আরা দেওয়ান এভাবে সুফিয়া কামালকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।

কবি সুফিয়া কামালের ১১৪তম জন্মদিন ছিল গতকাল শুক্রবার (২০ জুন)। সন্ধ্যায় সংগীতায়ন ছায়ানট রাগপ্রধান, রাগাশ্রয়ী গানে স্মরণ করেছে প্রতিষ্ঠাতাকালীন সভাপতি কবি সুফিয়া কামালকে।

ইফফাত আরা দেওয়ান বলেন, ‘আমরা ছায়ানটকে কখনো খালাম্মাকে (সুফিয়া কামাল) ছাড়া ভাবতে পারতাম না। এখনো তিনি রয়েছেন আমাদের সঙ্গে।’ পরে তিনি গেয়ে শোনান রবীন্দ্রসংগীত ‘আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসারে’।

রাগ শুদ্ধসারং, দেশ, ছায়ানট, কেদার, জয়জয়ন্তী, দেশমল্লার, রামদাসীমল্লার, মিয়াকিমল্লার- এই আট রাগে সাজানো হয় ছায়ানটের সুফিয়া কামাল স্মারক বর্ষার আয়োজন। যথাক্রমে ঊষসী নাগ, সুদীপ্ত শেখর দে, স্বপ্না সাহা, সিরাজুম মুনিরা, সমুদ্র শুভম, রিফাত আহমেদ ইমন, মিনহাজুল হাসান ইমন, আফরোজা রূপা, অনন্যা আচার্য্য পরিবেশন করেন রাগপ্রধান এই গান। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের রাগাশ্রয়ী গানগুলোও পরিবেশিত হয়েছে এই আয়োজনে।

কবি নজরুলের ‘ঝরো ঝরো বারি ঝরে’ গানটি পরিবেশন করেন শ্রাবন্তী ধর। সেঁজুতি বড়ুয়া শোনান রবীন্দ্রনাথের ‘গোধূলি গগনে মেঘ’; সত্যম কুমার দেবনাথ শোনান কবিগুরুর ‘এসো শ্যামল সুন্দর’। শারমিন সাথী ইসলাস ময়না শোনান নজরুলের ‘চঞ্চল শ্যামল এলো গগনে’, সুস্মিতা দেবনাথ শুচি শোনান ‘বরষা ওই এল বরষা’।

সুফিয়া কামাল ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে এক সাহসী কণ্ঠ
কবি সুফিয়া কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে স্মারক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘সুফিয়া কামাল: বাধা পেরিয়ে নারীর অভিযাত্রা’ শীর্ষক এই স্মারক সভা  আয়োজন করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। 

অনুষ্ঠানে ‘সুফিয়া কামাল সম্মাননা’ গ্রহণ করেন দেশের বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ও ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুন নবী (রনবী)। সম্মাননা গ্রহণ করে তিনি বলেন, “সুফিয়া খালাম্মার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। তার চিন্তা-চেতনা আমার শিল্পচর্চায় প্রভাব ফেলেছে। ‘টোকাই’ কার্টুন চরিত্রটি কেবল বিনোদনের জন্য নয়, সমাজের অবহেলিত শ্রেণিকে বোঝানোর জন্যই সৃষ্টি করেছিলাম।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা বলেন, ‘সুফিয়া কামাল কেবল কবি ছিলেন না, তিনি ছিলেন আন্দোলনের মাঠের মানুষ। নারী অধিকারের প্রশ্নে তিনি ছিলেন সোচ্চার ও সুদৃঢ় কণ্ঠ।’

কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ১১:১২ এএম
কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
স্পর্ধিত তারুণ্যের কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

আজ ২১ জুন স্পর্ধিত তারুণ্যের কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। ‘আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই,/ আজো আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি,… এ দেশ কি ভুলে গেছে সেই দুঃস্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময়?’- ‘বাতাসে লাশের গন্ধ’ কবিতায় কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসের রক্তস্নাত দুঃসহ স্মৃতির কথা। বাংলা, বাঙালি ও বাংলাদেশের প্রশ্নে আপোষহীন কবি ‘মানুষের মানচিত্র’ কবিতায় এভাবেই সমাজ বাস্তবতার কথা তুলে ধরেছেন। দেশের কথা বলেছেন। 

গত শতকের আশির দশকে ‘ছোবল’, ‘গল্প’, ‘দিয়েছিলে সকল আকাশ’, ‘মৌলিক মুখোশ’, ‘একগ্লাস অন্ধকার’ কাব্যগ্রন্থে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন নাগরিক কূপমণ্ডূকতা আর সংগ্রামী জীবনের ছবি। ‘ভালো আছি, ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’- অব্যক্ত প্রেমের আকুতি এই গানে আজও তারুণ্যকে মুগ্ধ করে চলেছে। 

১৯৯১ সালে আজকের এ দিনে তিনি ঢাকায় মারা যান। ১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর বরিশালে জন্ম রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮০ সালে বিএ অনার্স (বাংলা) এবং ১৯৮৩ সালে এমএ পাস করেন। ছাত্রজীবনেই তার দুটি কবিতা ‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ প্রকাশিত হয়। সমকালীন সমাজ ও রাজনীতির অস্থিরতায় সৃষ্ট হতাশা, সংকীর্ণতা, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব এবং সংঘাতময় জীবনের প্রতিচ্ছবি তার কবিতায় লক্ষণীয়।

সাহিত্য-সাধনার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮০ সালে তিনি ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ লাভ করেন। মৃত্যুর ৩৩ বছর পর ২০২৪ সালে বাংলাদেশ সরকার রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহকে একুশে পদকে ভূষিত করে।

আজ সকাল ৯টায় বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার মিঠাখালী বাজারে কবির সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবে বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন। রুদ্র স্মৃতি সংসদের সদস্যরা র‍্যালি বের করবেন। কবির সমাধিতে মোনাজাতের পর সকাল সাড়ে ১০টায় কবির বাড়িতে স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে।

প্রেম-দ্রোহের কবি নির্মলেন্দু গুণের ৮০তম জন্মদিন আজ

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ১০:২১ এএম
প্রেম-দ্রোহের কবি নির্মলেন্দু গুণের ৮০তম জন্মদিন আজ
কবি নির্মলেন্দু গুণ

প্রেম, রাজনীতি, দ্রোহ নিয়ে নিরন্তর লিখে চলেছেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। ‌আজ তার ৮০তম জন্মদিন। 

১৯৪৫ সালে নেত্রকোনার বারহাট্টার কাশবন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সুখেন্দু প্রকাশ গুণ ও বীণাপাণি দম্পতির তিন মেয়ে এবং দুই ছেলের মধ্যে নির্মলেন্দু গুণ সবার ছোট। মাত্র চার বছর বয়সে মাকে হারান তিনি। স্কুলে থাকতেই সাহিত্যে নিজের প্রতিভার পরিচয় দেন। নেত্রকোনা থেকে প্রকাশিত ‘উত্তর আকাশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় নির্মলেন্দু গুণের প্রথম কবিতা ‘নতুন কান্ডারী’। 

১৯৬৯-৭০ সালের উত্তাল গণ-আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তিনি লেখেন তার বিখ্যাত কবিতা ‘প্রেমাংশুর রক্ত চাই’। সেই সময়ে লেখা ‘হুলিয়া’ কবিতায় তুলে ধরেছেন সমকালীন সামাজিক, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কী করে আমাদের হলো’ তার একটি জনপ্রিয় কবিতা। বিভিন্ন সময়ের নানা আন্দোলন-সংগ্রামের কথাও উঠে এসেছে তার কবিতায়। 

একে একে ‘অমীমাংসিত রমণী’, ‘দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী’, ‘চৈত্রের ভালোবাসা’, ‘ও বন্ধু আমার’, ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’, ‘তার আগে চাই সমাজতন্ত্র’, ‘চাষাভুষার কাব্য’, ‘অচল পদাবলী’, ‘পৃথিবীজোড়া গান’, ‘দূর হ দুঃশাসন’, ‘নিরঞ্জনের পৃথিবী’, ‘চিরকালের বাঁশি’, ‘দুঃখ করো না, বাঁচো’- এমন অসংখ্য কাব্যগ্রন্থ রচনা করে তিনি সমৃদ্ধ করে চলেছেন বাংলা সাহিত্যকে। তার রচিত আত্মজীবনী ও স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থগুলোও পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে।

২০১৬ সালে সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য তিনি স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন। এর আগে ২০০১ সালে সাহিত্যে অবদানের জন্য একুশে পদক এবং ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

শুধু কবিতা রচনাতেই সীমাবদ্ধ নন নির্মলেন্দু গুণ। অবসরে ছবিও আঁকেন তিনি। ২০০৯ সালে শাহবাগে জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সামনে তার চিত্রকর্মের একটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছিল। 

নিজের সম্পর্কে কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেন, ‘আমার যা বলবার স্পষ্ট করেই আমি তা বলবার চেষ্টা করি। যা কঠিন, আমার মন তাতে সহজে সাড়া দেয় না, সহজ করে পাওয়ার মধ্যে একটা আনন্দ আছে। চারপাশের কঠিনের ভিড়ে আমি তাই সহজ করে বলতে জানি।’