বহমান জীবনের নানা পর্বে সমস্যা ও সংকটের আবর্তে বিপর্যস্ত মানবসত্তার ভাবনার খোরাক জোগায় নতুন চিত্রকল্পের। প্রাত্যহিক মনস্তাত্ত্বিক অবক্ষয়ে শিল্পীর দুঃসহ মনোলোকে ধরা দেয় রূঢ় বাস্তবতা। শিল্পীমন তখন এই সংকটের মূল কারণ অনুসন্ধান করে, তীক্ষ্ণ রঙে সে আঁকতে চায় যাপিত জীবনের চালচ্চিত্র। রঙ-রেখার বিচিত্র কারুকার্যে জীবনবোধের সেই গল্পগুলো নিয়ে চিত্রশিল্পী উত্তম কুমার রায়ের ‘গল্পের বাস্তবতা’ শিরোনামের প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যায় ঢাকার ধানমন্ডিতে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার লা গ্যালারিতে এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাস্কর অলক রায়, আর্ট বাংলা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শিল্পী অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস এবং বুলবুল ললিতকলা একাডেমির সচিব ফজলুর রহমান।
প্রদর্শনীটি কিউরেট করেছেন মোস্তফা জামান।
প্রদর্শনী প্রসঙ্গে উত্তম কুমার রায় বলেন, ‘গল্পের বাস্তবতা-মূলত আমাদের সবার জীবনবোধ, পারিপার্শ্বিকতা, অভিজ্ঞতা অর্থাৎ বাস্তবতার প্রতিফলন। জীবনের যে চলমানতায় আমরা অবস্থান করছি সেই মুখরিত সময়ে আমাদের মনস্তাত্ত্বিক অবক্ষয়ের কথা বলতে চেয়েছি।’
‘গল্পের বাস্তবতা’ উত্তম কুমার রায়ের ১২তম একক চিত্র প্রদর্শনী। প্রদর্শনী চলবে ১৬ জুলাই পর্যন্ত। রবিবার ব্যতীত প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে প্রদর্শনীর দুয়ার।
উত্তম কুমার রায় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ২০১৭ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ২২তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীতে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার (নিউ মিডিয়া) এবং ২০০৭ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ১৭তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীতে জাতীয় শ্রেষ্ঠ পুরস্কারে ভূষিত হন। উত্তম কুমার রায় ২০১৫ সালে জাপানের কিয়োটোতে আর্টিস্ট রেসিডেন্সিতে অংশ নিয়েছিলেন।
‘মঞ্চকুঁড়ি’ ও ‘মঞ্চমুকুল’ পদক পেল ৩৯০ জন
সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততায় সারা দেশের ৩৯০ জন শিশুকে ‘মঞ্চকুঁড়ি’ ও ‘মঞ্চমুকুল’ পদক দিয়েছে পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশন। শুক্রবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় অনুষ্ঠিত হয় এই পদক প্রদান অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ড. মাহফুজা হেলালী এবং শিশুদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সামিয়া মুত্তাকিয়া মহুয়া। তাদের বক্তব্যের পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকটি মঞ্চায়িত হয়। লিয়াকত আলী লাকীর নির্দেশনায় নাটকটি পরিবেশন করে পিপলস লিটল থিয়েটার।
এরপর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি শিশু-কিশোর সংগীত দল মেলোডি পরিবেশন করে। তারপর শিল্পকলা একাডেমি শিশু নৃত্যদল পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘অবহেলার মৃত্যু আর নয়’।
এরপর সমবেত সংগীত ‘মুক্ত জীবন গড়ে তোলার মঞ্চ মোদের তরণী’ ও ‘এ মাটি নয় জঙ্গিবাদের, এ মাটি মানবতার’ পরিবেশিত হয়।
পরে লিয়াকত আলী লাকীর পরিকল্পনা, গ্রন্থনা ও নির্দেশনা নাট্যালেখ্য ‘বাংলার মুখ’ পরিবেশন করে পিপলস লিটল থিয়েটার।
এরপর পরিবেশিত হয় সমবেত নৃত্য ‘আমার পরিচয়’। মঞ্চকুঁড়ি সংগীত দল সমবেত কণ্ঠে পরিবেশন করে ‘আমরা সবাই মঞ্চকুঁড়ি নট নন্দনে ফুটব’; ‘মনের রঙ লেগেছে’।
পরে তারা ‘চলো বাংলাদেশ’ গানের সঙ্গে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করেন।