লালনের গান হলো তত্ত্ব গান যা প্রয়োগ ও সাধনার সঙ্গে সংযুক্ত। লালন গানের তত্ত্ব হলো স্রষ্টাকে খুঁজে বেড়ানো। লালনের শিক্ষাই হলো অহিংস বাহাস। তার মানবধর্মের সাধনাই হচ্ছে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র নির্মাণের মূল মন্ত্র। জ্ঞানভিত্তিক আত্মজীবন কিভাবে রাষ্ট্র ও সমাজের কেন্দ্রে স্থাপিত হয় শিল্পকর্মের মাধ্যমে উনি তা দেখিয়েছেন।
রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে লালন-স্মরণোৎসবের দ্বিতীয় দিনে ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ শিরোনামের অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ জামিল আহমেদ।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) কার্তিকের বৃষ্টিস্নাত বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির নন্দনমঞ্চে আয়োজনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ।
মহাত্মা লালন সাঁইজির ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমির দ্বিতীয় দিনের আয়োজনে সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু হয় দৈন্য গান ‘এসো হে দয়াল কান্ডারী’ পরিবেশনায়। এরপর বাউল শিল্পী মুক্তার হোসেন পরিবেশন করেন ‘এনেছে এক নবীন গোড়া’। ‘সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে’ পরিবেশন করেন শিরিন সুলতানা। ‘সাইর লীলা বুঝবি ক্ষ্যাপা’ পরিবেশন করেন শ্রীকৃষ্ণ গোপাল। এছাড়াও পরিবেশিত হয় “দাসের যোগ্য নাই চরনে’, ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’, ‘কোন নামে ডাকিলে তারে’, ‘খাচার ভিতর অচিন পাখি’সহ লালনের বিখ্যাত ও জনপ্রিয় গান।
এই আয়োজনে পাগলা বাবলু, চন্দনা মজুমদার, রাবেয়া আক্তার, বাউল লতিফ শাহ্, রুমা আক্তার, ওমর আলী, আয়নাল হক, বিপ্লব ফকিরানী, বিপ্লব ফকির, আনোয়ার শাহ্, আরিফ বাউলসহ দেশের নানা প্রান্তের গুণী বাউল শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।
শনিবার সমাপনী দিনে বিকাল ৪টায় শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে ১ম পর্বে ‘জাতিসত্তার প্রশ্ন এবং বাউল-ফকির পরিবেশনার রাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। দ্বিতীয় পর্বে সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে দেশবরেণ্য শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে লালন স্মরণোৎসব 'ধরো মানুষ রূপ নেহারে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
জয়ন্ত সাহা/এমএ/