শিশু-কিশোরদের মন ও মেধার বিকাশের পথ বিস্তৃত করতে আরও একবার বই পড়ায় গুরুত্বারোপ করেছেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ঢাকা মহানগরের স্কুল কর্মসূচির পুরস্কার বিতরণ উৎসবের উদ্বোধনী আয়োজনে তিনি শিশু-কিশোর ও তরুণদের সৃজনশীল বই পাঠে উদ্বুদ্ধ করেন।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘আমরা গত ৪৬ বছরে সোয়া দুই কোটি মানুষকে বই পড়িয়েছি। এত ছাত্রছাত্রীকে পড়ানোর চেষ্টা কেন করেছি? সেটা করেছিলাম, কারণ প্রত্যেক বাড়িতে পাঠ্যবইয়ের বাইরে অন্য বই পড়তে ছেলেমেয়েদের সমর্থন করা হতো না।’
প্রতিকূল সেই সময়ের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “স্কুল-কলেজের হেডমাস্টাররা বলতেন, ‘এইসব বই পইড়া কী হইব? এইসব পইড়া আসল পড়া নষ্ট।’ আমি তাদের বলেছিলাম, এসব বই পড়ে আসল পড়া নষ্ট হয় না। যারা শ্রেষ্ঠ মানুষদের লেখা সুন্দর স্বপ্নেভরা বইগুলো পড়ে, তাদের পড়া কখনো নষ্ট হয় না। সিলেবাসের বাইরে বইগুলো পড়লে তার মন খুলে যায়, পাঠ্যপুস্তকের পড়াগুলোও তাদের বুঝতে সহজ হয়, যেটা সাধারণ ছাত্রদের জন্য বেশ কঠিন।”
ভবিষ্যতের স্বপ্নবোনা তরুণদের উদ্দেশে অধ্যাপক আবু সায়ীদ বলেন, ‘স্বপ্ন দেখার মানে হলো তা বাস্তবায়নের জন্য যে কাজটি করা হয়। স্বপ্ন হলো গন্তব্যে যাওয়ার জন্য যে কাজটি করি, সেটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বড় হতে হলে একা একা বড় হওয়া যায় না। বড় মানুষ হতে হলে বড় চিন্তাও করতে হবে। তোমরা বড় হলে বাংলাদেশও বড় হবে।’
অনুষ্ঠানে সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বোর্ডের দুই সদস্য কথাসাহিত্যিক আমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া ও সমাজকর্মী পারভীন মাহমুদ, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শামীম আল মামুন বক্তব্য দেন।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের দেশভিত্তিক উৎকর্ষ (বই পড়া) কার্যক্রমের আওতায় প্রায় ১৭০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২ লাখ ৫০ হাজার ছাত্রছাত্রী অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল মহানগরের ৩১৫টি স্কুলের প্রায় ৫০ হাজার ছাত্রছাত্রী বই পড়া কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে। এসব স্কুলের ১৮ হাজার ৮২৬ ছাত্রছাত্রী মূল্যায়নপর্বে কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে, তাদের আজকের অনুষ্ঠানে পুরস্কার দেওয়া হয়।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের কর্মকর্তারা জানান, শুক্র ও শনিবার দুই দিনে ৮ পর্বে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তন থেকে ঢাকা মহানগরের ৬২টি স্কুলের ৫ হাজার ১৩৭ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কার দেওয়া হবে।
গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় দেশের ৫টি মহানগরে বর্ণাঢ্য পুরস্কার বিতরণ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল মহানগরের পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
জয়ন্ত/সালমান/