ঢাকা ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
English

সামাজিক বিপ্লব গড়তে বইয়ের ভূমিকা মুখ্য: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৭ পিএম
আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৩ পিএম
সামাজিক বিপ্লব গড়তে বইয়ের ভূমিকা মুখ্য: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউজ চত্বরে প্রকাশনা সংস্থা ঐতিহ্যের দুই যুগ পূর্তিতে ঐতিহ্য বই উৎসবে বক্তব্য রাখছেন ইমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম খান

পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থা হটিয়ে দেশের সম্পদের সর্বজনীন মালিকানা প্রতিষ্ঠায় দেশে সামাজিক বিপ্লব গড়ে তুলতে বইয়ের ভূমিকা মুখ্য বলে জানিয়েছেন ইমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। 

শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউজ চত্বরে প্রকাশনা সংস্থা ঐতিহ্যের দুই যুগ পূর্তিতে ‘ঐতিহ্য বই উৎসব-২০২৪’ উদ্বোধনের আগে তিনি এ কথা বলেন। 

২ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বই উৎসব চলবে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত। 

প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউজের পাশে ঐতিহ্যের স্টলে মিলবে বাংলা সাহিত্যের নানা আঙ্গিকের বই। 

উৎসব চলার সময়ে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ ছাড়ে ঐত্যিহ থেকে প্রকাশিত বইগুলো কিনতে পারবেন পাঠকরা। 

অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘ঔপনিবেশিক শাসকরা আমাদের দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করত। বাংলাদেশের ধনীরা এখন সেই কাজ করছে। বাংলাদেশ এখন ধনীদের উপনিবেশে পরিণত হয়েছে। পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় সমস্ত পৃথিবী রুগ্ন হয়ে পড়েছে। এ জায়গায় পরিবর্তন আনা দরকার। সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা দরকার। এই সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে বই মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।’ 

পৃথিবীজুড়ে পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে যে লড়াই চলছে সে লড়াই বাংলাদেশেও অব্যাহতভাবে পরিচালনা করতে গেলে সংস্কৃতি চর্চায় গুরুত্বারোপ করতে হবে বলে জানান তিনি। 

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশে এ লড়াই চালাতে হলে সংস্কৃতির চর্চাটা খুব জরুরি। সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে বইয়ের ভূমিকাই মুখ্য ভূমিকা। সেজন্য বইয়ের কাছে যেতে হবে, বাঁচার জন্য যেতে হবে। বাঁচার অর্থ মানুষের মতো বাঁচা, মানুষের মনুষ্যত্বকে রক্ষা করে বাঁচা।’  

বই পড়ার গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বইয়ের মধ্যে দিয়ে মানুষ সচেতন হবে, বইয়ের মধ্যে দিয়ে মানুষ পথ খুঁজে পাবে, বইয়ের মধ্যে মানুষের হৃদয় শিক্ষিত হবে। মানুষের যে বুদ্ধি সেই বুদ্ধি সংকীর্ণ থাকবে না, স্বার্থপর থাকবে না। সেই বুদ্ধি অন্যের বিরুদ্ধে শত্রুতায় লিপ্ত হবে না। সেই বুদ্ধি মানুষের সামগ্রিক উন্নতির জন্য চেষ্টা করবে।’

এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক-গবেষক শারমিন আহমেদ, তরুণ অনুবাদক মাহীন হক। 

এ সময় স্বাগত বক্তব্য দেন ঐতিহ্যের প্রধান নির্বাহী আরিফুর রহমান নাঈম। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা সাহিত্যের ২৪টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। 

জয়ন্ত/পপি/

জিয়াউর রহমানের জীবন নিয়ে আসছে প্রথম উপন্যাস ‘কমল’

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩০ পিএম
আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০১ পিএম
জিয়াউর রহমানের জীবন নিয়ে আসছে প্রথম উপন্যাস ‘কমল’
কমল উপন্যাসের লেখক আসিফ আহমদ

বাংলাদেশের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জীবন ও কর্ম নিয়ে লেখা প্রথম উপন্যাস ‘কমল’ প্রকাশিত হচ্ছে চলতি মাসে। বইটির লেখক আসিফ আহমদ। তিনি জিয়াউর রহমানের জীবন, রাজনীতি, মানবিকতা ও সংগ্রামকে কেন্দ্র করে কাহিনি বুনেছেন। ইতোমধ্যে ‘কমল’ উপন্যাসের প্রচ্ছদ প্রকাশিত হয়েছে। বইটি প্রকাশ করছে অনুজ প্রকাশন। প্রচ্ছদ করেছেন চিত্রশিল্পী জুলিয়ান। 

এ ছাড়া গত ১৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘কমল’ উপন্যাসের ট্রেলার রিলিজ অনুষ্ঠান হয়েছে। 

জানা যায়, বাংলাদেশে বইয়ের ট্রেলার রিলিজ এটিই প্রথম। তা ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বইয়ের ট্রেলারটি মুক্তি পায়। 

কমল উপন্যাসের লেখক আসিফ আহমদ বলেন, ‘আমি মনে করি জিয়াউর রহমানের জীবন ও কর্ম বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তার জীবন নিয়ে অনেক কিছুই লেখা হয়েছে, তবে উপন্যাসের মাধ্যমে তার জীবনকে আরও গভীরভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এ উপন্যাস লেখার মাধ্যমে আমি জিয়াউর রহমানের জীবনের অনেক অজানা দিক পাঠকদের সামনে তুলে ধরেছি। তিনি শুধু একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক যোদ্ধা।’ 

পাঠকদের উদ্দেশ্যে লেখক বলেন, ‘২০২১-এ উপন্যাসটি লেখার চিন্তা মাথায় আসে। তারপর থেকে লেখা শুরু করে বিভিন্ন প্রেক্ষাপট পেরিয়ে ২০২৪-এ বইটি আমি তৃপ্তি নিয়ে লেখা শেষ করেছি। বাকিটা আমার পাঠক বলবেন। আশা করি পাঠক মহলে সাড়া ফেলবে।’

প্রকাশক আশরাফুল ইসলাম তুষার বলেন, ‘উপন্যাসটি শিগগিরই প্রকাশিত হবে। আসিফ আহমদের ‘কমল’ উপন্যাস বাংলা সাহিত্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে বিবেচিত হতে যাচ্ছে। এই উপন্যাসটি পাঠকদের মধ্যে জিয়াউর রহমানের জীবন এবং কাজ সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করবে। আমরা আশা করি, এই উপন্যাসটি হবে ইতিহাস ও সাহিত্যপ্রেমী পাঠকদের জন্য একটি মূল্যবান উপহার।’

শফিকুল/পপি/

সাহিত্যের কাগজ সমধারার তৃতীয় আয়োজন ‘নবীজী’ অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১১ পিএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১৬ পিএম
সাহিত্যের কাগজ সমধারার তৃতীয় আয়োজন ‘নবীজী’ অনুষ্ঠিত
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মিলনায়তনে সিরাত অনুষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীত

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) স্মরণে সাহিত্যের কাগজ সমধারা ‘নবীজী’ শীর্ষক সিরাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সকল ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে তৃতীয়বারের মতো আয়োজনটি ভিন্নমাত্রা পেয়েছে।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনের প্রধান মিলনায়তনে এ সিরাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আয়োজনটি দুই পর্বে ভাগ করা হয়। প্রথম পর্বে মহানবীর (সা.) শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা নিয়ে আবৃত্তি প্রয়োজনা ‘দ্য লাইট’-৩। এর আগে প্রথম পর্বে নবী আগমনের পটভূমি, দ্বিতীয় পর্বে সত্যের উপলব্ধি, সত্যের প্রচার; নির্মম নির্যাতনেও বিশ্বাসে অটল; হিজরত: সোনালি সকালের সূচনা নবী জীবনের এ বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হয়েছে।

এবারের পর্বে মহানবী (সা.) মদিনায় শুরু করলেন ঘর গোছানোর কাজ; সীমিত শক্তি ও উপকরণ নিয়ে বদরের প্রান্তরে বড় বিজয়ের উপাখ্যান; ধনীর সম্পদে দরিদ্রের অধিকার প্রতিষ্ঠা; নিশ্চিত বিজয় যেভাবে বিপর্যয়ে পরিণত হলো; ওহুদের প্রান্তরে বিপর্যয় থেকে বিজয় এই বিষয়গুলো ধরে ‘দ্য লাইট’-৩ তৈরি করা হয়েছে।

প্রযোজনায় যুক্ত হয়েছে কুরআনের বাণী, নবীর জীবনী অংশ বিশেষ, কাজী নজরুল ইসলাম রচিত নাত এবং নবীজীকে নিবেদিত কবিতা। কবিতাগুলো লিখেছেন-সমধারা পরিবারের সদস্য হাসান হাফিজ, আরিফ মঈনুদ্দীন, রেজাউদ্দিন স্টালিন, মানজুর মুহাম্মদ, আমিরুল মোমেনীন মানিক, স. ম. শামসুল আলম, জালাল খান ইউসুফী, মামুন মুস্তাফা, দাউদুল ইসলাম, তাহমিনা শিল্পী, মিজান ফারাবী, নজরুল ইসলাম আসলমী, ইশরাত জাহান ইউনিটি, বাদল মেহেদী, ফারজানা ইয়াসমিন, সাজ্জাদুর রহমান, ইফতেখার হালিম, তোফায়েল তফাজ্জল, ফকির ইলিয়াস, আবু তাহের মুহাম্মদ, সোহেল মল্লিক, মাশরুরা লাকি, ড. আবদুল আলীম তালুকদার ও সালেক নাছির উদ্দিন।

প্রযোজনায় অংশগ্রহণ করেন আসমা দেবযানী, মাসুম আজিজুল বাসার, শাহানাজ বেগম, মো. জাকির মোল্লা, মো. ইমামুল হুদা, মো. নাহিদ জুবায়ের, নাজহাতুল ত্বোয়া, আরিফা বেগম, জেবুন্নেছা মুনিয়া, ঋতুরাজ ফিরোজ, মোসফেকা নিপা, সিফাত সালাম, জেবুননাহার জনি, বাসুদেব নাথ, আবিদুর রহমান ফাহিম, আরিফ শামসুল, ফারিন তামান্না, মৃন্ময় চৌধুরী, রেজা শাহীন, আবদুল মালেক, আবদুল কুদ্দুস, জেরীন আফিয়া জিদনী, তানজিনা ফেরদৌস, সারাবান জামান সর্বত্র, আবদুল্লাহ আল মামুন, কনক ইসলাম, জান্নাত আরা মমতাজ, সালেক নাছির উদ্দিন এবং জান্নাতুল ফেরদৌস মুক্তা। গ্রন্থনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন সমধারা সম্পাদক সালেক নাছির উদ্দিন।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার বিষয় ‘মহানবী (সা.) মানব চরিত্রের সর্বোত্তম আদর্শ’। এ পর্বে সভা প্রধান ছিলেন- কোরআন গবেষক, ইসলামী চিন্তাবিদ চৌধুরী মনজুর লিয়াকত রুমি। আলোচনা করেন কবি সাংবাদিক আমিরুল মোমেনীন মানিক, কথাসাহিত্যিক দীপু মাহমুদ, কবি মরিয়ম বেগম, কবি সাংবাদিক মফিদা আকবর, কবি আরিফ মঈনুদ্দীন, লেখক এ এফ এম মাহবুবর রহমান, কবি প্রাবন্ধিক মনসুর আজিজ, মুক্তিযোদ্ধা লেখক আলী ইদরীস, কবি গোলাম নবী পান্না, কবি সায়েম অনিন্দ্য, লেখক আহমেদ মাহমুদ প্রমুখ।

আয়োজনে নবীজীকে (সা.) নিবেদিত সমধারার ১০৩তম সংখ্যার পাঠ উন্মোচন করা হয়। সংখ্যায় প্রবন্ধ ও কবিতা স্থান পেয়েছে। সংখ্যার উল্লেখযোগ্য লেখকরা হলেন- ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন, হাসান হাফিজ, রোকেয়া ইসলাম,  মুহম্মদ নুরুল হুদা, ফরিদ আহমদ দুলাল, চৌধুরী মনজুর লিয়াকত রুমি, ড. আজিুজল আম্বিয়া, দীপু মাহমুদ, ড. মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন, আরিফ মঈনুদ্দীন, এ এফ এম মাহবুবর রহমান, মানজুর মুহাম্মদ, ফিরোজা সামাদ, আমিরুল মোমেনীন মানিক, ইফতেখার নাজিম, আলী ইদরীস, রেজাউল করিম খোকন, তাহমিনা কোরায়েশী, স. ম. শামসুল আলম, মো. আরিফুর রহমান, মফিদা আকবর, নুসরাত সুলতানা, গোলাম নবী পান্না, নীলা হারুন, তোফায়েল তফাজ্জল প্রমুখ।

গ্রেস কটেজে কবি নজরুল ও বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২১ পিএম
আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৩ পিএম
গ্রেস কটেজে কবি নজরুল ও বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান
গ্রেস কটেজে কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান। ছবি: ছায়ানট (কলকাতা)

পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগের নজরুল স্মৃতিবিজড়িত গ্রেস কটেজে সমমনা দুই কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যৌথভাবে অনুষ্ঠান করেছে ছায়ানট (কলকাতা) এবং কৃষ্ণনগর কথাশিল্প।

রবিবার (২৪ নভেম্বর) এই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে দুই কবি সম্পর্কে আলোচনা, গান ও আবৃত্তি পরিবেশন করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ছায়ানটের (কলকাতা) সভাপতি সোমঋতা মল্লিক। তিনি এই দুই কবিকে নিয়ে কেন এই আয়োজন, সে বিষয়ে আলোকপাত করেন।

এর আগে সোমঋতা মল্লিকের কণ্ঠে নজরুলের দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ হয়।

আলোচনা অনুষ্ঠানে সোমঋতা মল্লিক মানবতার কবি কাজী নজরুল ইসলামের কৃষ্ণনগর আসা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দিক আলোচনা করেন।

তিনি উল্লেখ করেন, ১৯২৬ সালের ৩ জানুয়ারি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর বন্ধু হেমন্ত সরকারের আমন্ত্রণে সপরিবারে কৃষ্ণনগরের গোলাপট্টিতে আসেন। ওই বছরেই নজরুল থাকতে শুরু করেন চাঁদ সড়কে অবস্থিত এই গ্রেস কটেজে। এখানে ছিলেন ১৯২৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সময়টুকু কবির সৃষ্টিশীল জীবনের অন্যতম গৌরবময় সময়। এখানেই রচিত হয় ‘মৃত্যুক্ষুধা’ উপন্যাস। আর বাংলা সঙ্গীতে সূচনা হয় ‘গজল’।

কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত এই গ্রেস কটেজ ২০১২ সালে হেরিটেজ বিল্ডিং হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সেখানে ‘সুজন বাসর’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে নজরুল পাঠাগার। নিয়মিত সেখানে নজরুল-বিষয়ক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬) সারাজীবন মানবতার জয়গান গেয়েছেন। মানুষের হয়েই কলম ধরেছেন। তিনি বারে বারে লিখেছেন - ‘মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান...’। 

পাশাপাশি কাজী নজরুল ইসলামের অনুজ কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯২০-১৯৮৫) তাঁর কবিতায় সমকালীন মানুষের দুঃখ, দুর্দশা, অভাব-অনটনের কথাই তুলে ধরেছেন। মানুষের দুঃখে তাঁর প্রাণ কেঁদেছে প্রতিনিয়ত। সে কারনেই হয়তো নজরুলের প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল হয়েছেন তাঁর কবিতায়। 

বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে কবি মনীন্দ্র রায় লিখেছেন, ‘বীরেন্দ্রর সব কবিতাই মানুষের জন্য, মানুষের যন্ত্রণার জ্বালা তীব্র হয়ে বাজে তাঁর কবিতায়...’।

অনুষ্ঠানে ‘মানুষের কবি নজরুল’ নিয়ে আলোচনা করেন দীপাঞ্জন দে। আর ‘মানুষের কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়’ নিয়ে আলোকপাত করেন পীতম ভট্টাচার্য।

শ্রদ্ধা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুজন পাঠাগার ও নজরুল গবেষণাকেন্দ্রের সম্পাদক ইনাস উদ্দীন। 

ছায়ানটের (কলকাতা) পক্ষে কবিতা আবৃত্তি করেন সুকন্যা রায়, দেবযানী বিশ্বাস, মিতালী মুখার্জী, ইন্দ্রাণী লাহিড়ী, রাজশ্রী বসু, দেবলীনা চৌধুরী এবং অপরাজিতা মল্লিক। 

আমন্ত্রিত আবৃত্তিশিল্পী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুব্রত গাঙ্গুলি, দীপংকর ঘোষ, শম্পা চৌধুরী নাগ, উপাসনা মুখার্জি। 

দলীয়ভাবে আবৃত্তি ও সঙ্গীত পরিবেশন করেন কথাশিল্প, উচ্চারণ, শিব কথোমাল্য আবৃত্তি ও শ্রুতিনাটক চর্চাকেন্দ্র এবং স্বরলিপি সঙ্গীত কেন্দ্রের শিল্পীরা।

একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন অন্বেষা মোদক।

অমিয়/

ময়মনসিংহে ইউরোপিয়ান আর্ট হাউস সিনেমা ডের নবম আসর অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৫ পিএম
আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৬ পিএম
ময়মনসিংহে ইউরোপিয়ান আর্ট হাউস সিনেমা ডের নবম আসর অনুষ্ঠিত
ময়মনসিংহে ইউরোপিয়ান আর্ট হাউস সিনেমা ডে অনুষ্ঠিত। ছবি: খবরের কাগজ

ময়মনসিংহে ইউরোপিয়ান আর্ট হাউস সিনেমা ডের নবম আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০টা ১০ মিনিটে নগরীর টাউন হলে অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও পরে বেলা পৌনে ১১টার দিকে নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে তা শুরু হয়। 

ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুই, বাংলাদেশে ইউনেসকোর প্রধান ড. সুসান ভাইজ, ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি ড. মো. আশরাফুর রহমান, জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মাহফিজুল আলম মাসুম এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ড. প্রদীপ চন্দ্র কর।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থার প্রধান ড. মিশাল ক্রিঝা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্লাইমেট চেঞ্জ দলের বাংলাদেশ প্রতিনিধি প্রধান হুবার্ট ব্লুম, স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা শুভাশীষ রায়, লেখক ও শিক্ষক উম্মে ফারহানা এবং জনপ্রিয় অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক মনোজ প্রামাণিক ।

দিনব্যাপী আয়োজনে সমসাময়িক ইউরোপীয়ান আর্ট হাউজ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের প্রিমিয়ার আয়োজনের পাশাপাশি সিনেমা নিয়ে আলোচনা, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক স্থানগুলো ভ্রমণের আয়োজন করা হয়।

১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল কনফেডারেশন অব আর্ট সিনেমাস (সিআইসিএই) মূলত একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। যা বিশ্বব্যাপী আর্ট সিনেমা বা বিকল্প চলচ্চিত্র প্রদর্শনে প্রেক্ষাগৃহ ও প্রদর্শনকারীদের প্রতিনিধিত্ব করে। 

আর্ট সিনেমা ও স্বাধীন চলচ্চিত্রের বিশ্ব বিপণন ও প্রদর্শনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সংস্থাটি। 

সিআইসিএই বর্তমানে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, এশিয়া এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সিনেমা হল ও ফিল্ম ফেস্টিভ্যালগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করেছে ও করে যাচ্ছে। যারা মূলত আর্ট ফিল্ম প্রদর্শনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

২০১৬ সালে সংস্থাটি ইউরোপের আরেকটি সংগঠন ইউরোপা সিনেমাসের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করে ইউরোপিয়ান আর্ট হাউস সিনেমা ডে। প্রতিবছর ইউরোপের প্রতিভাবান চলচ্চিত্র নির্মাতারা এই উদ্যোগের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে যুক্ত হন এবং তাদের সমসাময়িক সিনেমাগুলো প্রদর্শিত হয়।

কামরুজ্জামান/নাবিল/

কবি নজরুল ও বীরেন্দ্র স্মরণে কৃষ্ণনগরে ছায়ানট-কথাশিল্পের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান

প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০০ পিএম
আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৭ পিএম
কবি নজরুল ও বীরেন্দ্র স্মরণে কৃষ্ণনগরে ছায়ানট-কথাশিল্পের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান
কাজী নজরুল ইসলাম ও বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় স্মরণে কৃষ্ণনগরের গ্রেস কটেজে অনুষ্ঠিত হবে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান

কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মানবতাবোধ নিয়ে এক শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ছায়ানট (কলকাতা) ও কৃষ্ণনগর কথাশিল্প। 

আগামী রবিবার (২৪ নভেম্বর) বেলা ৩টায় নজরুল স্মৃতিবিজড়িত কৃষ্ণনগরের গ্রেস কটেজে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

কবি নজরুল ১৯২৬ সালের ৩ জানুয়ারি বন্ধু হেমন্ত সরকারের আমন্ত্রণে সপরিবারে কৃষ্ণনগরের গোলাপট্টিতে যান। ওই বছরেই তিনি থাকতে শুরু করেন চাঁদ সড়ক এলাকায় গ্রেস কটেজে। ছিলেন ১৯২৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এখানেই কবির সৃষ্টিশীল জীবনের অন্যতম গৌরবময় সময় কাটে। রচিত হয় ‘মৃত্যুক্ষুধা’ উপন্যাস, সূচনা হয় বাংলা সংগীতে ‘গজল’ গানের। 

কাজী নজরুলের স্মৃতি বিজড়িত এই গ্রেস কটেজ ২০১২ সালে হেরিটেজ বিল্ডিং হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। সেখানে ‘সুজন বাসর’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে নজরুল পাঠাগার। নিয়মিতভাবে সেখানে নজরুলবিষয়ক নানা অনুষ্ঠান হয়। কাজী নজরুল সারা জীবন মানবতার জয়গান গেয়েছেন। মানুষের হয়েই কলম ধরেছেন। তিনি বারেবারে লিখেছেন ‘মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান...’।

 

কাজী নজরুলের অনুজ কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ও তাঁর কবিতায় সমকালীন মানুষের দুঃখ, দুর্দশা, অভাব, অনটনের কথাই তুলে ধরেছেন। মানুষের দুঃখে তাঁর প্রাণ কেঁদেছে প্রতিনিয়ত। সে কারণেই হয়তো নজরুলের প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল হয়েছেন তাঁর কবিতায়। মনীন্দ্র রায় লেখেন, ‘বীরেন্দ্রর সব কবিতাই মানুষের জন্য, মানুষের যন্ত্রণার জ্বালা তীব্র হয়ে বাজে তার কবিতায়...’। 

শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে দুই কবিকে নিয়ে আলোচনা, গান, আবৃত্তি পরিবেশিত হবে। অনুষ্ঠানটির আয়োজক সংস্থা ছায়ানটের (কলকাতা) পক্ষে সোমঋতা মল্লিক প্রথমে এই দুই কবিকে নিয়ে কেন এই আয়োজন সে বিষয়ে আলোকপাত করবেন।

অনুষ্ঠানে ‘মানুষের কবি নজরুল’ বিষয়ে বলবেন দীপাঞ্জন দে, ‘মানুষের কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়’ বিষয়ে আলোকপাত করবেন পীতম ভট্টাচার্য। এ ছাড়া আমন্ত্রিত শিল্পীরা আবৃত্তি, সংগীত পরিবেশন করবেন।

সালমান/