পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থা হটিয়ে দেশের সম্পদের সর্বজনীন মালিকানা প্রতিষ্ঠায় দেশে সামাজিক বিপ্লব গড়ে তুলতে বইয়ের ভূমিকা মুখ্য বলে জানিয়েছেন ইমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউজ চত্বরে প্রকাশনা সংস্থা ঐতিহ্যের দুই যুগ পূর্তিতে ‘ঐতিহ্য বই উৎসব-২০২৪’ উদ্বোধনের আগে তিনি এ কথা বলেন।
২ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বই উৎসব চলবে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত।
প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউজের পাশে ঐতিহ্যের স্টলে মিলবে বাংলা সাহিত্যের নানা আঙ্গিকের বই।
উৎসব চলার সময়ে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ ছাড়ে ঐত্যিহ থেকে প্রকাশিত বইগুলো কিনতে পারবেন পাঠকরা।
অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘ঔপনিবেশিক শাসকরা আমাদের দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করত। বাংলাদেশের ধনীরা এখন সেই কাজ করছে। বাংলাদেশ এখন ধনীদের উপনিবেশে পরিণত হয়েছে। পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় সমস্ত পৃথিবী রুগ্ন হয়ে পড়েছে। এ জায়গায় পরিবর্তন আনা দরকার। সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা দরকার। এই সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে বই মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।’
পৃথিবীজুড়ে পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে যে লড়াই চলছে সে লড়াই বাংলাদেশেও অব্যাহতভাবে পরিচালনা করতে গেলে সংস্কৃতি চর্চায় গুরুত্বারোপ করতে হবে বলে জানান তিনি।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশে এ লড়াই চালাতে হলে সংস্কৃতির চর্চাটা খুব জরুরি। সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে বইয়ের ভূমিকাই মুখ্য ভূমিকা। সেজন্য বইয়ের কাছে যেতে হবে, বাঁচার জন্য যেতে হবে। বাঁচার অর্থ মানুষের মতো বাঁচা, মানুষের মনুষ্যত্বকে রক্ষা করে বাঁচা।’
বই পড়ার গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বইয়ের মধ্যে দিয়ে মানুষ সচেতন হবে, বইয়ের মধ্যে দিয়ে মানুষ পথ খুঁজে পাবে, বইয়ের মধ্যে মানুষের হৃদয় শিক্ষিত হবে। মানুষের যে বুদ্ধি সেই বুদ্ধি সংকীর্ণ থাকবে না, স্বার্থপর থাকবে না। সেই বুদ্ধি অন্যের বিরুদ্ধে শত্রুতায় লিপ্ত হবে না। সেই বুদ্ধি মানুষের সামগ্রিক উন্নতির জন্য চেষ্টা করবে।’
এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক-গবেষক শারমিন আহমেদ, তরুণ অনুবাদক মাহীন হক।
এ সময় স্বাগত বক্তব্য দেন ঐতিহ্যের প্রধান নির্বাহী আরিফুর রহমান নাঈম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা সাহিত্যের ২৪টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।
জয়ন্ত/পপি/