ঢাকা ৩০ মাঘ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১

রকমারি বেস্ট সেলার অ্যাওয়ার্ড পেলেন ৪ লেখক ও ৪ প্রকাশনী

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৫ এএম
রকমারি বেস্ট সেলার অ্যাওয়ার্ড পেলেন ৪ লেখক ও ৪ প্রকাশনী
ছবি : খবরের কাগজ

অনলাইন বই বিপণন প্রতিষ্ঠান রকমারিডটকমের ‘রকমারি বইমেলা বেস্টসেলার অ্যাওয়ার্ড-২০২৪’ অনুষ্ঠানে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত রকমারি থেকে সর্বোচ্চ বিক্রিত বইয়ের চার লেখক এবং চার প্রকাশককে পুরস্কৃত করা হয়েছে। 

গত শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান হয়।

এতে ফিকশন, নন ফিকশন, ধর্মীয় এবং ক্যারিয়ার ও একাডেমিক- এ চার শাখায় রকমারিতে সর্বোচ্চ বিক্রি হওয়া বইয়ের চারজন লেখক ও চারটি বইয়ের প্রকাশনীকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। 

চার ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকরা হলেন- ইলমা বেহরোজ, মুহাম্মদ ইলিয়াস কাঞ্চন, শায়খ আহমাদুল্লাহ ও কিউএনএ পাবলিকেশন্স লেখক পরিষদ। 

আর চারটি প্রকাশনী হলো- অন্যধারা, হিয়া প্রকাশনা, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এবং কিউএনএ পাবলিকেশন। 

তাছাড়া একইসঙ্গে ২১টি ক্যাটাগরির ২১ জন লেখক ও ২১টি বইকেও সম্মাননা জানানো হয় এ অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সাদা মনের মানুষ বইবন্ধু জিয়াউল হক। 

এছাড়া আরও ছিলেন রকমারি ডট কমের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহাগ, সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক জুবায়ের বিন আমিন, সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক এহতেশামস রাকিব এবং রকমারি ডট কমের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল আনাম রনি।
 
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জের বটতলা গ্রামের বইবন্ধু ও সমাজসেবক জিয়াউল হক বলেন, ‘১৯৫৫ সালে আমি পঞ্চম শ্রেণিতে পড়তাম। টাকার অভাবে আমার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। পড়ালেখা ছেড়ে বাবার দইয়ের ব্যবসা শুরু করলাম। পরে এই টাকা থেকে বই কিনলাম পড়ালেখা থেকে ঝরে যাওয়া ছেলেদের জন্য। আমি ১২ হাজার ছেলেকে শিক্ষিত করেছি। কেউ হয়েছে ডাক্তার-পুলিশ, আবার কেউ হয়েছে আনসার-শিক্ষক।’
 
তিনি বলেন, ‘আমার গোলায় নেই ধান। ব্যাংকে নেই টাকা। তবু পড়ালেখা করিয়ে যেতে চাই। তৈরি করতে চাই নান্দনিক জিয়াউল হক পাঠাগার।’

সমাপনী বক্তব্যে রকমারি ডটকমের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহাগ বলেন, ‘৫৬ হাজার বর্গমাইল (সারাদেশ) বইয়ে বইয়ে সয়লাব করব। মানুষের কাছে বই পৌঁছে দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি বলছি না বই বিক্রি করে টাকা উৎপাদন করার কথা। অন্য কিছু বিক্রি করে আরও বেশি টাকা কামানো যেতে পারে। আমি বলতে চাচ্ছি বই বিক্রির গুরুত্বের বিষয়। বই বিক্রি ছড়িয়ে দিতে চাইলে টাকার একটি বিষয় চলে আসে। বই লেখার মাধ্যমে আমি যে অসাধারণ ভ্যালু তৈরি করলাম সেটার জন্য মেকানিজম বা পরিকল্পনা প্রয়োজন। বই বিক্রির মেকানিজম তৈরি করা প্রকাশক ও লেখকদের অন্যতম কাজ। এটা আসলে সবার কাজ। প্রকাশক, লেখক ও রকমারির কাজ।’

মাহমুদুল হাসান সোহাগ আরও বলেন, ‘আমরা বইয়ের সঙ্গে টুলস (অন্য কিছু) বিক্রি করি। বইটাকে সেন্টারে রেখে এই বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা চালাতে চাই। একটা সমাজ যদি জ্ঞানভিত্তিক হয়, সেই সমাজের কাছে সুন্দর কিছু আশা করতে পারি। বাংলাদেশ যে ট্রানজিশনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, গেল বা যাবে; আমরা যদি আমাদের না জানি বা আমাদের উপলব্ধি বা চিন্তায় মননশীলতা না থাকে, তাহলে বিশ্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টা থমকে থাকবে। আমাদেরকে প্রত্যেকটি ডাইমেনশনে যোগ্য হতে হবে। আশা করছি আমরা সবাই মিলে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখব।’

মাহমুদুল আলম/অমিয়/

কবি জসীমউদ্‌দীন ও সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:১৫ পিএম
কবি জসীমউদ্‌দীন ও সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা
কবি আল মুজাহিদী-অধ্যাপক হান্স হার্ডের ও কথাশিল্পী বর্ণালী সাহা

কবি জসীমউদ্‌দীন সাহিত্য পুরস্কার এবং সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা করেছে বাংলা একাডেমি।

এবার কবি জসীমউদ্‌দীন সাহিত্য পুরস্কার ২০২৫ পেয়েছেন কবি আল মুজাহিদী এবং সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ পেয়েছেন অধ্যাপক হান্স হার্ডের ও কথাশিল্পী বর্ণালী সাহা।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

জানা যায়, কবি জসীমউদ্‌দীন সাহিত্য পুরস্কারের অর্থমূল্য হিসেবে দুই লাখ টাকা এবং সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কারের অর্থমূল্য এক লাখ টাকা প্রদান করা হবে।

আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলা ২০২৫-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে বিকেল ৫টায় পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে অর্থ, সম্মাননাপত্র ও সম্মাননা-স্মারক তুলে দেওয়া হবে।

আরিফ জাওয়াদ/অমিয়/

সময় প্রকাশনের ৩৫ বছর ১০টি সংকলিত গ্রন্থের প্রকাশনা

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০৩ পিএম
১০টি সংকলিত গ্রন্থের প্রকাশনা
১০টি সংকলিত গ্রন্থের প্রকাশনায় অংশ নেন দেশের বরেণ্য ঔপন্যাসিক, কথাসাহিত্যিক, কবি, রম্য ও কল্পবিজ্ঞান লেখকরা

গল্প, কবিতা, ভ্রমণকাহিনি, কল্পবিজ্ঞান, অনুবাদসহ বাংলা সাহিত্যের সব শাখার সৃজনশীল গ্রন্থ প্রকাশে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে সময় প্রকাশন। প্রকাশনা শিল্পে তাদের পথচলার ৩৫ বছর পূর্তি হলো ১১ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার)। এই মাহেন্দ্রক্ষণটি উদযাপন করতে রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইসফেন্দিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে এক প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে এসেছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। 

সময় প্রকাশনের ৩৫ বছর পূর্তিতে ১০টি সংকলিত গ্রন্থের প্রকাশনায় অংশ নেন দেশের বরেণ্য ঔপন্যাসিক, কথাসাহিত্যিক, কবি, রম্য ও কল্পবিজ্ঞান লেখকরা। সাহিত্যের এই মুখর আয়োজনটি চলে সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী। 

সময় প্রকাশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অণুগল্প সংকলন সম্পাদনা করেছেন শাহনাজ রানু, কিশোর গল্প সংকলন সম্পাদনা করেছেন কাইজার চৌধুরী, কিশোর ছড়া-কবিতা সংকলন সম্পাদনা করেছেন আমীরুল ইসলাম, রম্যগল্প সংকলন সম্পাদনা করেছেন সুমন্ত আসলাম, অণুকাব্য সংকলন সম্পাদনা করেছেন হাসান হাফিজ, ভ্রমণগদ্য সংকলন সম্পাদনা করেছেন ইফতেখারুল ইসলাম, গল্প সংকলন সম্পাদনা করেছেন মোহিত কামাল, স্কুলজীবনের প্রিয় স্মৃতি সংকলন সম্পাদনা করেছেন নিশাত সুলতানা, কল্পবিজ্ঞান-অনুবাদ গল্প সংকলন সম্পাদনা করেছেন দীপু মাহমুদ, সময়ের প্রেম-প্রেমপত্র/ব্যর্থ প্রেমের সংকলন সম্পাদনা করেছেন আবু রায়হান।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ

আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন কাইজার চৌধুরী, সুমন্ত আসলাম, ইফতেখারুল ইসলাম, মোহিত কামাল, দীপু মাহমুদ, আবু রায়হান।

অনুষ্ঠানে প্রকাশক ফরিদ আহমেদের সঞ্চালনা ও ইফতেখারুল ইসলামের সভাপতিত্বে উপস্থিত সম্পাদকরা নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি সংকলনে যাদের লেখা ঠাঁই পেয়েছে, তাদের হাতে বইয়ের একটি করে কপি তুলে দেওয়া হয়। এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদক মোস্তফা কামাল। তিনি তরুণ লেখকদের হাতে কিশোর ছড়া ও কবিতা সংকলনের কপি তুলে দেন। 

আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদক মোস্তফা কামাল

প্রধান অতিথি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘এমন আয়োজন আমাদের শিল্প-সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করছে, শক্তিশালী করছে। এটা হতে থাকুক। নানা রকমের আইডিয়া উঠে আসছে ক্রমাগতভাবে।’ 

অনুষ্ঠানে আসা লেখকদের উদ্দেশে কথাসাহিত্যিক কাইজার চৌধুরী বলেন, ‘তরুণরা প্রাচীনকালের লেখকদের গল্প পড়বে, আগামীকালের লেখকদেরও গল্পও তারা পড়বে। এই গল্প পড়তে পড়তে তারা ভালো মানুষ হয়ে যাবে। আজকে যারা কচিকাঁচার মেলা করছে, খেলাঘর করছে, তারা পরবর্তী সময়ে কখনো চাঁদাবাজ হবে না, মাদক পাচারকারী হবে না। তারা ভালো মানুষ হবে। সেই ভালো মানুষ গড়ার অস্ত্র আছে আপনাদের কাছে। আপনাদের গল্প, কবিতা, ছড়াই সেই অস্ত্র।’ 

দীপু মাহমুদ বলেন, ‘আমি সায়েন্স ফিকশন গল্প লিখতে কেন উৎসাহিত হই সেটি বলি। সায়েন্স ফিকশনে লেখক একটি যুক্তি দেন, তার বিপরীতে পাঠকও একটি পাল্টা যুক্তি হাজির করেন। এই পাল্টাপাল্টি যুক্তি আমার কাছে একটি দুর্দান্ত অবস্থা বলে মনে হয়েছে।’

সভাপতির বক্তব্যে ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, ‘এই ১০টা বইয়ের সংকলন যেখানে রাখা হবে সেই জায়গাটা আলোকিত হয়ে উঠবে।’

সমধারা ১১তম কবিতা উৎসব ২২ ফেব্রুয়ারি

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩৩ পিএম
আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩৪ পিএম
সমধারা ১১তম কবিতা উৎসব ২২ ফেব্রুয়ারি

সমধারার উদ্যোগে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রধান মিলনায়তনে ‘ইপসা-সমধারা ১১তম কবিতা উৎসব-২০২৫’ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) বিকেল ৩টায়।

উৎসবটি উৎসর্গ করা হয়েছে প্রয়াত কবি হেলাল হাফিজকে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন খবরের কাগজের সম্পাদক, জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সাংবাদিক মোস্তফা কামাল। 

প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কবি ও সাংবাদিক আইয়ুব ভূঁইয়া। 

উৎসবটি উদ্বোধন করবেন প্রবাসী লেখক, গবেষক ও বিজ্ঞানী শিশুসাহিত্যিক ধনঞ্জয় সাহা। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- কবি মজিদ মাহমুদ; লেখক ও মোটিভেটর আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া; লেখক-প্রাবন্ধিক ও সাবেক ব্যাংকার ড. এম এ ইউসুফ খান; লেখক ও গবেষক মো. আরিফুর রহমান; লেখক-শিক্ষানুরাগী ও রাজনীতিবিদ ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম; কবি নজমুল হেলাল; কবি সাংবাদিক ও সংগীতশিল্পী আমিরুল মোমেনীন মানিক প্রমুখ।

সভাপতিত্ব করবেন কবি ও প্রাবন্ধিক ফরিদ আহমদ দুলাল।

উৎসবে দেশের দুই শ অগ্রজ ও অনুজ কবি-লেখক ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন সাংবাদিক ও কবিতাপ্রেমীরা। 

এটি দেশের ইতিহাসে বৃহৎ পরিসরে কবিতা উৎসব।

অনুষ্ঠানে দুই শ কবির কবিতা নিয়ে ‘পদাবলীর যাত্রা-২০২৫’ নামে একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হচ্ছে। এটি ১১তম সংকলন। নিয়মিত সমধারার ১০৫তম সংখ্যাও প্রকাশিত হচ্ছে।

সাহিত্যবিষয়ক কাগজ সমধারা প্রতিবছর সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় গুণীদের পুরস্কার প্রদান করছে। এবার সমধারা সাহিত্য পুরস্কার ২০২৫ পাচ্ছেন চার প্রবাসী কবি। কবি মোহাম্মদ ইকবাল, শামীম আহমদ, সেলিম রেজা ও আজিজুল আম্বিয়া। এই চার কবিকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হবে। 

অনুষ্ঠানে আরও থাকছে সমধারা সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত চার কবির কবিতা নিয়ে আবৃত্তি প্রযোজনা ‘মাননীয় কবিতাপুত্রগণ’। এতে সমধারা পরিবারের শিল্পীরা অংশগ্রহণ করবেন।

আগের বছর ২০২৪ সালে কথাসাহিত্যে বিশ্বজিৎ চৌধুরী, কবিতা সাহিত্য মজিদ মাহমুদ ও শিশুসাহিত্যে ধ্রুব এষ সমধারা সাহিত্য পুরস্কার গ্রহণ করেন। 

২০২৩ সালে কথাসাহিত্যে হরিশংকর জলদাস, কবিতায় ফরিদ আহমদ দুলাল ও শিশুসাহিত্যে স. ম শামসুল আলম এ পুরস্কার গ্রহণ করেন। 

তাছাড়া ২০২২ সালে কথাসাহিত্যে আনোয়ারা সৈয়দ হক ও কবিতায় ওমর কায়সার, ২০২১ সালে কথাসাহিত্যে ইমদাদুল হক মিলন এবং কবিতায় সরোজ দেব, ২০২০ সালে কথাসাহিত্যে সেলিনা হোসেন এবং শিশুসাহিত্যে রহীম শাহ, ২০১৯ সালে কবি মৃণাল বসুচৌধুরী, ২০১৮ সালে মুহম্মদ নুরুল হুদা, ২০১৭ সালে নির্মলেন্দু গুণ, ২০১৬ সালে হেলাল হাফিজ এ পুরস্কার গ্রহণ করেন। 

উৎসবে সাহিত্যপ্রেমীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে সমধারা কর্তৃপক্ষ।

অমিয়/

ভাঙনের মুখে উদীচী

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৫৩ পিএম
ভাঙনের মুখে উদীচী
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী

সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর ২৩তম জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে শুরু হয়েছে নানা জটিলতা। ৫৭ বছরের পথচলায় বহু ভাঙনের শিকার উদীচী এবার বড় ধরনের ভাঙনের মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে আভাস মিলেছে।

গত শনিবার রাজধানীর শিশু একাডেমি মিলনায়তনে সংগঠনের নতুন কেন্দ্রীয় সংসদ গঠনের ঘোষণা আসে। এতে উদীচীর একটি পক্ষ সদ্য বিদায়ী কমিটির সহসভাপতি জামশেদ আনোয়ার তপনকে ও আরেকটি পক্ষ বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে-কে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে শিশু একাডেমিতে দুই পক্ষই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। ভার্চুয়াল মাধ্যমেও চলছে তর্কযুদ্ধ। 

গত শনিবারের ওই ঘটনার রেশ থেকে যায় গতকাল রবিবারও। শুরুতে উদীচীর সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান এক বিবৃতিতে উদীচী সদস্যদের ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানান। অন্যদিকে সংবাদ সম্মেলন করে নানা অভিযোগ তুলেছেন জামশেদ আনোয়ার তপন ও তার অনুসারীরা। 

বদিউর রহমান তার বিবৃতির শুরুতেই বলেন, ‘উদীচীর জাতীয় সম্মেলন ঘিরে একটি ষড়যন্ত্রের বিষয়ে আগে থেকেই আমাদের শঙ্কা ছিল; যার প্রতিফলন ঘটে সম্মেলনের বিষয় নির্বাচনি কমিটি গঠনের সময়।’ তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী ও কেন্দ্রীয় সংসদ সভায় এমন একটি বিষয়ে নির্বাচনি কমিটি গঠন করা হয়, যেখানে উদীচীর কর্মীদের যথাযথ প্রতিফলন হয়নি বলে আমার বিশ্বাস।’

সাংগঠনিক অধিবেশনের শুরু থেকেই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয় বলে জানান তিনি। গুরুত্বপূর্ণ পদে সদস্যদের নাম মনোনয়নের আহ্বান জানান নির্বাচনি কমিটির আহ্বায়ক হাবিবুল আলম। এ নিয়ে কাউন্সিল হাউস ক্রমশ উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং একপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। 

বদিউর রহমান বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি একবার কথা বলা শুরু করতে পেরেছিলাম। সঙ্গে সঙ্গেই হাবিবুল আলম আমার কাছ থেকে মাইকটি নিয়ে নেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমি কথা বললে হয়তো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যেত। কিন্তু আমি সেই সুযোগ না পেয়ে মঞ্চের ডান পাশে একটি চেয়ারে বসে পড়ি।’ 

জানা যায়, শনিবার এমন ঘটনার পর সভাপতি বদিউর রহমান শিশু একাডেমি থেকে উদীচী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। সেখানে জামশেদ আনোয়ার তপন, হাবিবুল আলমরা তাকে ঘিরে নব নির্বাচিত কমিটির প্রথম সভা আয়োজনের দাবি জানান। কিন্তু বদিউর রহমান পুরো বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সভা করতে রাজি হননি। এরপর তিনি অসুস্থতার কথা বলে বাসায় চলে যান। 

বিবৃতিতে এসব ঘটনার কথা উল্লেখ করে বদিউর রহমান গতকাল তার বিবৃতিতে বলেন, ‘সম্মেলনস্থলে উপস্থিত বেশির ভাগ প্রতিনিধি, পর্যবেক্ষক স্বাক্ষর দিয়ে একটি নতুন কেন্দ্রীয় সংসদ গঠন করেছেন। এ পরিস্থিতিতে শান্ত থাকার জন্য সবাইকে বিনীত অনুরোধ জানাই। আমি আহ্বান জানাই, উদীচীতে যেন কোনো ধরনের বিভাজন সৃষ্টি না হয়।’ 

এদিকে গতকাল বিকেলে উদীচী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জামসেদ আনোয়ার তপন বলেন, ‘দেশে সংস্কৃতি কর্মীদের বিভ্রান্ত করার জন্য উদীচীর ক্ষুদ্র একটি অংশ পাল্টা কমিটি ঘোষণা করেছে। এটা স্পষ্টত ষড়যন্ত্র। কাউন্সিল অধিবেশনের অনুমোদন ছাড়া তারা কমিটি কীভাবে ঘোষণা করেন? তারা অবৈধ। এখন কাউন্সিলে হেরে নিজেরা কমিটি ঘোষণা করেছে।’

উদীচীর বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে, সহসভাপতি মাহমুদ সেলিম ও তাদের অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তপন বলেন, ‘ওই অংশটি গত জুলাই থেকে সংগঠনে অভ্যুত্থানবিরোধী তৎপরতা চালাচ্ছিল। তারা ৭১ বনাম ২৪-এর দ্বন্দ্ব প্রচার করে উদীচী কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়েছে। ২৪-কে একাত্তরের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া আওয়ামী লীগ ও জামায়াত-শিবিরের কৌশল। উদীচী এ কৌশলে গা ভাসাবে না।’

শিল্পী নাজমুন নাহার রহমানের ‘ক্যানভাসে বিমূর্ত নারী মন’ একক প্রদর্শনী

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৯ পিএম
আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৫ পিএম
শিল্পী নাজমুন নাহার রহমানের ‘ক্যানভাসে বিমূর্ত নারী মন’ একক প্রদর্শনী
শিল্পী নাজমুন নাহার রহমান অ্যাক্রেলিক ও মনোপ্রিন্টের ক্যানভাসে চিত্রিত করেছেন শহুরে নারীর মন৷ ছবি: খবরের কাগজ

শিল্পী নাজমুন নাহার রহমান অ্যাক্রেলিক ও মনোপ্রিন্টের ক্যানভাসে চিত্রিত করেছেন শহুরে নারীর মন৷ নগরনাব্যের নতুন অধ্যায়ে কাঠামোবদ্ধ নগর জীবনে একজন নারী তার প্রকৃতিকে আবিস্কার করেন। প্রকৃতির সঙ্গে নারীর অবিচ্ছেদ্য যোগসূত্র ধরা দেয় আলোছায়ার বিচিত্র খেয়ালে৷ কখনো সুরেলা পাখি, কখনো শহরতলি ছুঁয়ে যাওয়া ছোট্ট নদী কিংবা শহর শেষে খোলা প্রান্তর; শহুরে নারী বিমুগ্ধ হন প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গে৷

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির সফিউদ্দিন শিল্পালয়ে শুরু হয়েছে তার প্রথম একক চিত্র প্রদর্শনী 'প্রবাহমান দৃষ্টিভঙ্গি।' 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী নাজমুন নাহার খবরের কাগজকে বলেন, এ প্রদর্শনীর আয়োজন নিয়ে গত দুই বছর থেকে ভাবছিলাম৷ এর আগে ভারত, জাপান, ফ্রান্স, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্রে দলীয় প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছিলাম৷ এবার ভাবলাম, একক প্রদর্শনী করা যাক৷

'প্রবাহমান দৃষ্টিভঙ্গি' প্রদর্শনী নিয়ে শিল্পী বলেন, আমার বেড়ে উঠার সবটুকু এই শহরে৷ গ্রামের খুব স্মৃতি নেই৷ এ শহরে এত দিন ধরে আছি৷ এখানেই আমার মাতৃত্বের শুরু৷ তাই এ শহরে আমার দেখা জীবনটাকে রঙিন ক্যানভাসে চিত্রিত করতে চেষ্টা করেছি৷

নাজমুন নাহার ২০টি ছবি অ্যাক্রেলিকের ক্যানভাসে ও চারটি ছবি মনোপ্রিন্টের ক্যানভাসে এঁকেছেন৷ কিউবিজম ও ইমপ্রেশেনিলিজম- এ দুই ফর্মে তিনি এঁকেছেন 'উইমেন উইথ চিলড্রেন', 'উইমেন উইথ ফ্লাওয়ার', 'ফ্রিডম অব উইমেন', 'লকড ড্রিমস', বিহাইন্ড দ্য মাইন্ডস',  'লাভ ফর আরবানস' ছবিগুলো৷

নাজমুন নাহার বলেন, উনিশ শতকের শুরু থেকে মডার্ন আর্টের শুরু৷ তখন চিত্রকলায় আধুনিকতা ফুটিয়ে তুলতে শিল্পীরা কিউবিজমের চর্চা শুরু করেন৷ সমসাময়িক ঘটনাবলী ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলতে তখন এ ফর্মের আশ্রয় নিয়েছি আমি৷

নাজমুন নাহারের এই প্রদর্শনী দেখতে এসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক সৈয়দ আবুল বারক আলভী ও শান্ত মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোস্তাফিজুল হক৷

শিল্প সমালোচক জাহিদ মুস্তাফা বলেন, লোকনকশার নানা জ্যামিতিক গড়নের প্রতি নাজমুন নাহারের ঝোঁক লক্ষ্য করা গেছে। চিত্রপটে রং প্রয়োগেও লোকশিল্পীর পছন্দসই বর্ণলেপনেই তার অধিক আস্থা। এ প্রদর্শনীর কাজগুলো লোকজ অঙ্কনরীতিতে তিনি এঁকেছেন নারী অবয়ব, মা ও শিশুর ফর্ম, পাখ-পাখালি, মাছ, কুলসহ ফুলগাছ প্রভৃতি। আদিযুগের শিল্পরূপের সঙ্গে তার কাজের অন্তমিলও পাওয়া যায়। দৃশ্যমান শিল্পের সঙ্গে বসবাসের মধ্য দিয়ে একপ্রকার আত্মকথন তার কোনো কোনো কাজে প্রতিভাত হয়েছে। আবার প্রকৃতির ছন্দকে তিনি নকশার বুননে তুলে এনেছেন বর্ণিল রূপে। এক্ষেত্রে তার নকশাপ্রধান কাজগুলো সিন্দময় রৈখিক ও পরিচ্ছন্ন।

আগামী বুধবার পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত  উন্মুক্ত থাকবে প্রদর্শনী৷

জয়ন্ত সাহা/এমএ