গল্প, কবিতা, ভ্রমণকাহিনি, কল্পবিজ্ঞান, অনুবাদসহ বাংলা সাহিত্যের সব শাখার সৃজনশীল গ্রন্থ প্রকাশে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে সময় প্রকাশন। প্রকাশনা শিল্পে তাদের পথচলার ৩৫ বছর পূর্তি হলো ১১ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার)। এই মাহেন্দ্রক্ষণটি উদযাপন করতে রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইসফেন্দিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে এক প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে এসেছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
সময় প্রকাশনের ৩৫ বছর পূর্তিতে ১০টি সংকলিত গ্রন্থের প্রকাশনায় অংশ নেন দেশের বরেণ্য ঔপন্যাসিক, কথাসাহিত্যিক, কবি, রম্য ও কল্পবিজ্ঞান লেখকরা। সাহিত্যের এই মুখর আয়োজনটি চলে সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী।
সময় প্রকাশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অণুগল্প সংকলন সম্পাদনা করেছেন শাহনাজ রানু, কিশোর গল্প সংকলন সম্পাদনা করেছেন কাইজার চৌধুরী, কিশোর ছড়া-কবিতা সংকলন সম্পাদনা করেছেন আমীরুল ইসলাম, রম্যগল্প সংকলন সম্পাদনা করেছেন সুমন্ত আসলাম, অণুকাব্য সংকলন সম্পাদনা করেছেন হাসান হাফিজ, ভ্রমণগদ্য সংকলন সম্পাদনা করেছেন ইফতেখারুল ইসলাম, গল্প সংকলন সম্পাদনা করেছেন মোহিত কামাল, স্কুলজীবনের প্রিয় স্মৃতি সংকলন সম্পাদনা করেছেন নিশাত সুলতানা, কল্পবিজ্ঞান-অনুবাদ গল্প সংকলন সম্পাদনা করেছেন দীপু মাহমুদ, সময়ের প্রেম-প্রেমপত্র/ব্যর্থ প্রেমের সংকলন সম্পাদনা করেছেন আবু রায়হান।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন কাইজার চৌধুরী, সুমন্ত আসলাম, ইফতেখারুল ইসলাম, মোহিত কামাল, দীপু মাহমুদ, আবু রায়হান।
অনুষ্ঠানে প্রকাশক ফরিদ আহমেদের সঞ্চালনা ও ইফতেখারুল ইসলামের সভাপতিত্বে উপস্থিত সম্পাদকরা নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি সংকলনে যাদের লেখা ঠাঁই পেয়েছে, তাদের হাতে বইয়ের একটি করে কপি তুলে দেওয়া হয়। এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদক মোস্তফা কামাল। তিনি তরুণ লেখকদের হাতে কিশোর ছড়া ও কবিতা সংকলনের কপি তুলে দেন।

আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদক মোস্তফা কামাল
প্রধান অতিথি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘এমন আয়োজন আমাদের শিল্প-সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করছে, শক্তিশালী করছে। এটা হতে থাকুক। নানা রকমের আইডিয়া উঠে আসছে ক্রমাগতভাবে।’
অনুষ্ঠানে আসা লেখকদের উদ্দেশে কথাসাহিত্যিক কাইজার চৌধুরী বলেন, ‘তরুণরা প্রাচীনকালের লেখকদের গল্প পড়বে, আগামীকালের লেখকদেরও গল্পও তারা পড়বে। এই গল্প পড়তে পড়তে তারা ভালো মানুষ হয়ে যাবে। আজকে যারা কচিকাঁচার মেলা করছে, খেলাঘর করছে, তারা পরবর্তী সময়ে কখনো চাঁদাবাজ হবে না, মাদক পাচারকারী হবে না। তারা ভালো মানুষ হবে। সেই ভালো মানুষ গড়ার অস্ত্র আছে আপনাদের কাছে। আপনাদের গল্প, কবিতা, ছড়াই সেই অস্ত্র।’
দীপু মাহমুদ বলেন, ‘আমি সায়েন্স ফিকশন গল্প লিখতে কেন উৎসাহিত হই সেটি বলি। সায়েন্স ফিকশনে লেখক একটি যুক্তি দেন, তার বিপরীতে পাঠকও একটি পাল্টা যুক্তি হাজির করেন। এই পাল্টাপাল্টি যুক্তি আমার কাছে একটি দুর্দান্ত অবস্থা বলে মনে হয়েছে।’
সভাপতির বক্তব্যে ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, ‘এই ১০টা বইয়ের সংকলন যেখানে রাখা হবে সেই জায়গাটা আলোকিত হয়ে উঠবে।’