ঢাকা ২৫ মাঘ ১৪৩১, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১

পছন্দের লোকদের প্যাভিলিয়ন দিতে ন্যক্কারজনক নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে: ফরিদ আহমেদ

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪১ পিএম
পছন্দের লোকদের প্যাভিলিয়ন দিতে ন্যক্কারজনক নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে: ফরিদ আহমেদ
সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত

নিজেদের পছন্দের লোকদের বইমেলায় প্যাভিলিয়ন দেওয়ার জন্য ন্যক্কারজনক নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ অভিযোগ করেন তিনি।

ফরিদ আহমেদ লিখেন, ‘নিজেদের পছন্দের প্রিয় লোকদের বইমেলায় প্যাভিলিয়ন দেওয়ার জন্য ন্যক্কারজনক নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। উদাহরণসহ বলি- বর্তমানের স্বঘোষিত প্রকাশক নেতারা তাদের কিছু সহযোগী (কিছুটা জোর করে, কিছুটা ভয় দেখিয়ে) নিয়ে সম্মিলিতভাবে একাধিক সভা, মিছিল, অবস্থান ধর্মঘট করেছেন প্রধান দুটি দাবি নিয়ে- (১) প্যাভিলিয়ন বাতিল করতে হবে, (২) ভাড়া কমাতে হবে।

এই নেতারাই বইমেলা পরিচালনা কমিটিতে প্রকাশক প্রতিনিধি হয়েছেন, একাধিক মিটিং করেছেন কিন্তু প্যাভিলিয়ন বাতিল তো করেননি বরং আরও কিছু নতুন প্রকাশকদের প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দিয়েছেন, বইমেলার নীতিমালা অনুযায়ী যাদের অনেকের প্যাভিলিয়ন পাওয়ার যোগ্যতা নেই। নেতাদের পছন্দের ওই প্রকাশকদের স্থান করে দেওয়ার জন্য কিছু প্রগতিশীল প্রকাশককে একটি বিশেষ ট্যাগ দিয়ে তাদের প্যাভিলিয়ন বাতিল করেছেন। আর এখন স্টল ভাড়া কমাবার প্রসঙ্গে কথাই বলেন না। বরং বর্তমান নীতিমালায় প্যাভিলিয়নের চতুর্দিক খোলা না রাখার যে নিয়ম আছে সেটা কীভাবে বাতিল করা যায় সেই অঙ্ক কষছেন তারা। কাকে কীভাবে ম্যানেজ করা যায়, সেই যোগাযোগ করছেন।’

তিনি বলেন, ‘প্যাভিলিয়ন বাতিলের ব্যপারেও ওই নেতারা নিজেদের সুবিধা দেখেছেন/নিয়েছেন- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়ে ১৮/২০ জন প্যাভিলিয়ন পাওয়া প্রকাশকদের নামের পাশে ক্রস চিহ্ন দিয়ে বলেছিলেন, এদের প্যাভিলিয়ন বাতিল করতে হবে। কিন্তু ওই ক্রস চিহ্নের তিনজনকে ছোট প্যাভিলিয়ন আর বাকিদের ৪ ও ৩ ইউনিট স্টল দিয়েছেন। ওই তিনজন কেন প্যাভিলিয়ন পেলেন? এর কোনো ব্যখ্যা কি দিতে পারবেন? নাকি এর মধ্যেও আপনাদের কোনো অঙ্ক আছে?

ওই তিনজন কি বাকিদের চেয়ে কম সংখ্যক বঙ্গবন্ধু বা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বই প্রকাশ করেছেন? নাকি সরকারি বইক্রয় প্রকল্পে বাকিদের চেয়ে সর্বনিম্ন অঙ্কের বই বিক্রি করেছেন? বই প্রকাশ এবং বিক্রির বিষয়ে আরও কথা আছে- প্যাভিলিয়নের পূর্ণাঙ্গ তালিকায় এমন আরও দু’চারজন প্রকাশক আছেন যারা বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার লেখা বই প্রকাশ করেছেন এবং সরকারি বইক্রয় প্রকল্পে অনেকের চেয়ে অনেক বেশি টাকার বই বিক্রি করেছেন। তাদের প্যাভিলিয়ন কমাবার কথা কেন নেতারা ভাবলেন না?’

সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী বলেন, ‘যদি বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার লেখা বই প্রকাশ বা সরকারি বইক্রয় প্রকল্পে বই বিক্রি অপরাধ হয়, তবে অন্যদেরও এই শাস্তিপ্রাপ‍্য। বাপুস প্রকাশিত বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বইয়ের তালিকায় ৩৯৩ জন প্রকাশকের নাম আছে। আর সর্বশেষ সরকারি বইক্রয় এসইডিপি প্রকল্পে ৭০-৮০ জন প্রকাশক আছেন।’

তিনি বলেন, ‘প্রিয় নেতা ভাই ও বন্ধুরা বেছে বেছে ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক হিংসায় আপনাদের জিঘাংসা চরিতার্থ করার কৌশল সবাই জেনে যাচ্ছে। তাই সবার বরাদ্দ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেন অথবা আপনাদের প্রিয় প্রকাশক যাদের নাম বাদ দিয়েছেন তাদেরও এই তালিকায় নিয়ে আসেন।’

সবশেষে তিনি আরও লিখেন, ‘আর প্রিয় সেইসব প্রকাশক, যারা প্যাভিলিয়ন বহাল আছে বলে বগল বাজাচ্ছেন এবং আমাদের দিকে তাকাচ্ছেন না, সামনে তাদের জন্য খুব সুদিন অপেক্ষা করছে না। এর চেয়েও ভয়াবহ ট্যাগ আপনাদের দেবে তারা। এখন আপনাদের শাস্তির বাইরে রাখা হয়েছে। আপনারা আমাদের সমব্যথী হচ্ছেন না, পরে আমরা আপনাদের সমব্যথী হব না। এই হচ্ছে তাদের সমঝোতা।’

সালমান/

ছায়ানটের নৃত্য উৎসব শুরু

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম
ছায়ানটের নৃত্য উৎসব শুরু
ভরতনাট্যম, কত্থক, মণিপুরি, ওড়িশি নৃত্যের প্রথিতযশা শিল্পীদের অংশগ্রহণে নৃত্য উৎসবে নৃত্য করেছেন শিল্পীরা। ছবি: সংগৃহীত

ভরতনাট্যম, কত্থক, মণিপুরি, ওড়িশি নৃত্যের প্রথিতযশা শিল্পীদের অংশগ্রহণে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ছায়ানট মিলনায়তনে শুরু হয়েছে দুই দিনের নৃত্য উৎসব। উৎসবের প্রথম দিন সাজানো হয়েছিল একক ও সম্মেলক পরিবেশনায়।

নৃত্য উৎসবের প্রথম দিনের প্রথম পর্বে মঞ্চে আসেন মণিপুরি নৃত্যশিল্পীরা। শুরুতে ছায়ানটের শিল্পীরা সম্মেলকভাবে পরিবেশন করেন মণিপুরি নৃত্য ‘রাধানর্তন’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান তামান্না রহমান পরিবেশন করেন ‘রাধারূপ বর্ণন’। ফারহানা আহমেদ পরিবেশন করেন ‘লাস্য তাণ্ডব’। ছায়ানটের শিক্ষক সুদেষ্ণা স্বয়ংপ্রভা তাথৈ পরিবেশন করেন ‘ননী চুরি’। 

ভরতনাট্যমে নওগাঁ থেকে আসা শিল্পী লাবীবা আলম রায়তা পরিবেশন করেন ‘কীর্তানাম’, প্রান্তিক দেব পরিবেশন করেন ‘রুদ্র তাণ্ডব’। 

জুয়েইরিয়াহ মৌলি পরিবেশন করেন ‘দেবী স্তুতি’। পরে ছায়ানটের শিল্পীরা সম্মেলকভাবে পরিবেশন করেন ‘তিল্লানা’। ওড়িশি নৃত্যে আফিয়া ইবনাত হালিম পরিবেশন করেন ‘অভিনয়’। নৃত্যদল নৃত্যছন্দ পরিবেশন করে ‘হংসধ্বনিপল্লবী’।  নৃত্যাঞ্চল পরিবেশন করে ‘তারানা’। পরে কত্থকে এস এম হাসান ইশতিয়াক ইমরান তাল ধামারে পরিবেশন করেন ‘ছন্দ প্রসঙ্গ’। মুনমুন আহমেদ তাল ধামারে পরিবেশন করেন ‘শিব বন্দনা’। হাসান ইশতিয়াক ইমরানের কাথাকিয়া দ্য সেন্টার অব আর্টস-এর শিল্পীরা পরিবেশন করেন ‘তারানা’। 

শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় ছায়ানট মিলনায়তনে শুরু হবে নৃত্য উৎসবের দ্বিতীয় পর্ব। এদিন মণিপুরি নৃত্য পরিবেশন করবেন সুইটি দাশ, সামিনা হোসেন প্রেমা ও সিলেটের একাডেমি ফর মণিপুরি কালচার অ্যান্ড আর্টস। ভরতনাট্যম পরিবেশন করবেন অমিত চৌধুরী ও তার দল কায়াশ্রম; দলীয় পরিবেশনায় থাকবে আনিসুল ইসলাম হিরুর দল সৃষ্টি কালচারাল সেন্টার। ভরতনাট্যমে একক পরিবেশনায় থাকবেন বৃষ্টি বেপারী। 

শনিবার সন্ধ্যায় ওড়িশি নৃত্য পরিবেশন করেন চট্টগ্রামে প্রমা অবন্তী ও ঢাকার মো. জসিম উদ্দীন। কত্থক পরিবেশনায় থাকবেন মাসুম হুসাইন; রেওয়াজ পারফরমারস স্কুল; কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়; সুদেষ্ণা সাহা ও সমৃদ্ধা শামস ঐন্দ্রী।

কলকাতা বইমেলায় উদার আকাশ প্রকাশনীর ৯ গ্রন্থ প্রকাশিত

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৫০ পিএম
কলকাতা বইমেলায় উদার আকাশ প্রকাশনীর ৯ গ্রন্থ প্রকাশিত
কলকাতা বইমেলায় উদার আকাশ প্রকাশনীর গ্রন্থ প্রকাশনা অনুষ্ঠান

৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় উদার আকাশ প্রকাশনীর ৯টি গ্রন্থ বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এই গ্রন্থগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়।

এর মধ্যে ‘মোস্তাক হোসেন : জীবন ও ঐতিহ্য’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, কথাসাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ও সাহিত্যিক উজ্জ্বল সিনহা। 

বুধবার বইমেলার নারায়ণ সান্যাল সভাঘরে কবি সুবোধ সরকার, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. গৌতম পাল, সাবেক মন্ত্রী ও কলামিস্ট পূর্ণেন্দু বসু, সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রাবন্ধিক ড. মইনুল হাসান, কাজী মুহাম্মদ ইয়াসীন, রফিকুল ইসলাম, সুধাংশুশেখর দে প্রমুখের উপস্থিতিতে বইগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়। 

এ দিন সন্ধ্যায় ছায়ানটের (কলকাতা) সভাপতি সোম‍ঋতা মল্লিক ও তার সংস্থার শিল্পীরা কাজী নজরুল ইসলামের দেশাত্মবোধক সংগীতের মধ্য দিয়ে বই প্রকাশ অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন।

অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা কবিতা ‘প্রশ্ন’ ও ‘দুষ্টু’ আবৃত্তি করেন রাইসা নুর। 

যেসব গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন হয়, সেগুলো হলো কলামিস্ট ও অধ্যাপক ড. অর্ণব সাহার প্রবন্ধ সংকলন ‘রাজনৈতিক কলাম: কর্তৃত্ববাদ বনাম আজকের ভারত’, সামশুল আলমের গল্প সংকলন ‘রূপের বাতি’, আলমগীর রাহমানের কাব্যগ্রন্থ ‘ফেক প্রোফাইলের বাগান বাড়ি’, বৃন্দাবন দাসের কাব্যগ্রন্থ ‘সত্যি সত্যি’, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আফসার আলির প্রবন্ধ সংকলন ‘আমার সমাজ’, অধ্যাপক ড. সা’আদুল ইসলামের প্রবন্ধ সংকলন ‘জাতির বিবেক অন্নদাশঙ্কর’৷

এ দিন ‘উদার আকাশ আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা বিশেষ সংখ্যা’ উদ্বোধন করেন কবি সুবোধ সরকার ও অধ্যাপক ড. গৌতম পাল।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন লেখক-সম্পাদক-প্রকাশক ও গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে, সমাজকর্মী কাজী মুহাম্মদ ইয়াসীন, ছায়ানটের কর্ণধার সোমঋতা মল্লিক, অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম, রফিকুল ইসলাম, ডা. মো. আবেদ আলি, আকরাম খান, আলাউদ্দিন খান, সামিমা মল্লিক, আসিফ ইকবাল, সীমন্ত বসু, উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ফারুক আহমেদ, পত্রিকার সহ-সম্পাদক মৌসুমী বিশ্বাস ও রাইসা নুর।

এ দিন আল-আমিন মেমোরিয়াল মাইনরিটি কলেজের অধ্যক্ষ ড. নুরুল হককে সম্মাননা দেওয়া হয়। উপস্থিত বিশিষ্টজনরা উদার আকাশ প্রকাশনীর প্রশংসা করেন। প্রকাশক ফারুক আহমেদের বইমুখী কাজকর্মে সন্তোষ প্রকাশ করে সবাইকে বই কেনা ও বই পড়ার আহ্বান জানান।

সম্প্রতি উদার আকাশ প্রকাশনের গ্রন্থগুলোর জনপ্রিয়তা বেড়েছে। বইমেলায় হাতে-গোনা তরুণ প্রকাশকদের মধ্যে বর্তমানে অন্যতম হয়ে উঠেছেন ফারুক আহমেদ। তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত উদার আকাশ পত্রিকাটিও সাহিত্যজগতে বিপুল সাড়া ফেলেছে। প্রকাশন থেকে প্রকাশিত সব গ্রন্থ পাওয়া যাচ্ছে বইমেলার ৫৯৫ নম্বর স্টলে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কবি সুবোধ সরকার, অধ্যাপক ড. গৌতম পাল, লেখক পূর্ণেন্দু বসু, অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম, সমাজকর্মী কাজী মুহাম্মদ ইয়াসীন, সুধাংশুশেখর দে প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রকাশক ফারুক আহমেদ ও অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. মইনুল হাসান।

সালমান/

কথাসাহিত্যিক হাবিব আনিসুর রহমান আর নেই

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৪১ পিএম
আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৪৬ পিএম
কথাসাহিত্যিক হাবিব আনিসুর রহমান আর নেই
হাবিব আনিসুর রহমান

কথাসাহিত্যক হাবিব আনিসুর রহমান আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। 

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। হাবিব আনিসুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। 

বুধবার বাদ মাগরিব শাহবাগের কাঁটাবন সেন্ট্রাল মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। হাবিব আনিসুর রহমানের স্ত্রী কথাসাহিত্যিক নাসিমা আনিস মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

১৯৫৪ সালে মেহেরপুরের বল্লভপুর গ্রামে জন্ম নেন হাবিব আনিসুর রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে মাস্টার্স সম্পন্ন করে শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন তিনি। তিনি চট্টগ্রাম কলেজ, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ও যশোর সরকারি এম এম কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। পরে অধ্যাপক হিসেবে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন এবং সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন।

তার সাহিত্যকর্মের মূল উপজীব্য ছিল সমাজের উপেক্ষিত মানুষের জীবনসংগ্রাম। ‘গুলেনবারি সিনড্রোম ও অন্যান্য গল্প’, ‘অষ্টনাগ ষোলোচিতি’, ‘পোড়ামাটির জিলাপি ও অন্যান্য গল্প’, ‘রৌদ্র ও ত্রাতাগণ’ (মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস), ‘ছোটকু মোটকু’ (কিশোর গল্প) প্রভৃতি গ্রন্থে তিনি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের অন্তর্দহনকে তুলে ধরেছেন।

হাবিব আনিসুর রহমান সাহিত্য জগতে একজন নিভৃতচারী লেখক হলেও তার লেখার শক্তি ছিল অনবদ্য। কথাসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০১১ সালে ‘জীবননগর সাহিত্য পরিষদ সম্মাননা’ এবং ২০১৫ সালে ‘কাঙাল হরিনাথ মজুমদার’ পদক লাভ করেন।

বঙ্কিমচন্দ্রের কলকাতার বাসভবনে নজরুল স্মরণ

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৭ পিএম
আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৯ পিএম
বঙ্কিমচন্দ্রের কলকাতার বাসভবনে নজরুল স্মরণ
ছায়ানটের (কলকাতা) কর্ণধার সোমঋতা মল্লিকের সঙ্গে সংগঠনের সদস্যরা

কথায়, গানে ও কবিতায় সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে যৌথভাবে স্মরণ করল ‘ছায়ানট’ (কলকাতা) এবং ‘সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র স্মৃতি গ্রন্থাগার’। অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়েছিল ৫ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেন, কলকাতা-১২ ঠিকানায় সাহিত্য সম্রাটের নামাঙ্কিত ঐতিহ্যমণ্ডিত গ্রন্থাগার ভবনে। অনুষ্ঠানের বিস্তারিত বিবরণে যাবার আগে অনুষ্ঠানস্থলের ঐতিহ্য ও ইতিহাস সম্পর্কে সংক্ষেপে একটু বলে নেওয়া যাক।

মধ্য কলকাতায় ৫ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেন এবং ৭ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেন- একই রাস্তায় সামান্য ব্যবধানে অবস্থিত এই দুটি বাড়িতেই একসময় বাংলা সংস্কৃতির গৌরবময় ইতিহাস রচিত হয়েছিল। কিছু মানুষ জানলেও, অনেকেরই হয়তো অজানা ব্যস্ত কলেজ স্ট্রিট অঞ্চলে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিপরীতে অবস্থিত এই দুটি বাড়ির মাহাত্ম্য। ৫ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেনের বাড়িটি ছিল সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনের শেষ সাত বছরের আবাসভূমি। আর ৭ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেনের বাড়িটিতে ছিল বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কিছুদিনের আবাস ও ধূমকেতু পত্রিকার অফিস। 

৫ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেনের বাড়িটি ছিল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনের শেষ সাত বছরের আবাসভূমি

আজ থেকে প্রায় ১৩৪ বছর আগে যখন বঙ্কিমচন্দ্র হাওড়ার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন তখন অর্থাৎ ১৮৮৭ সালে জানুয়ারি মাসে এই বাড়িটি সম্ভবত দুর্গাপ্রসন্ন ঘোষের কাছ থেকে কেনেন এবং জীবনের শেষ সাত বছর এখানে সপরিবারে ছিলেন। এই বাড়িতে বসেই তিনি ‘সীতারাম’ (১৮৮৭), ‘বিবিধ প্রবন্ধ’ (১৮৮৭), ‘ধর্মতত্ত্ব প্রথম ভাগ অনুশীলন’ (১৮৮৮), ‘কৃষ্ণচরিত্র’ (১৮৯২) প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। প্রকাশ করেছিলেন ‘প্রচার’ পত্রিকা। এ ছাড়া এখান থেকেই তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষার্থীদের রচনাসংগ্রহ সম্পাদনা করতেন। পরামর্শ দিতেন ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের সাংস্কৃতিক কাজকর্ম বিষয়ে। এভাবেই তিনি জীবনের শেষদিন পর্যন্ত কর্মব্যস্ত ছিলেন এবং তার ফলে ওই সময়টা নক্ষত্র সমাবেশে আলোকিত হয়ে থাকত এই বাড়ি, এই পাড়া। সেই নক্ষত্রদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বর্ণকুমারী দেবী, সুরেশ্চন্দ্র সমাজপতি, আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন প্রমুখ।

অপরদিকে ৭ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেনের বাড়িটিতে পার্টিশন করে একদিকে ছিল মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের মেস। অন্যদিকে ধূমকেতু পত্রিকার অফিস। পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর ‘নজরুল স্মৃতি’ গ্রন্থে বলেছেন, ‘বেশ আড্ডা জমতো ধূমকেতুর অফিসে। থাকতেন স্বয়ং নজরুল। তাঁর তো ওটাই বাসস্থান ছিল। এ ছাড়া‌ আসতেন মুজফ্‌ফর আহ্‌মদ, মানবেন্দ্রনাথ রায়, নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়, মোহিতলাল মজুমদার, ভূপতি মজুমদার প্রমুখ। আড্ডার সঙ্গে মুহুর্মুহু চায়ের ভাঁড় ঘুরতো অফিসের এদিক থেকে ওদিক। ক্রাউন ফোলিও সাইজের আট পৃষ্ঠার অর্ধ-সাপ্তাহিক কাগজ নিয়ম করে বেরতো। দাম ছিল এক আনা। গ্রাহকদের জন্য বছরে পাঁচ টাকা। কিন্তু কী ঝাঁঝ, কী বিপ্লবীয়ানা ছিল এই পত্রিকার। শুরু থেকেই গোটা বাংলা উজ্জীবিত তার দাপটে। বিশেষ করে তখনকার তরুণ শিক্ষিত সমাজ। ব্রিটিশদের কাছে এটাই ছিল উদ্বেগের। তাই সর্বক্ষণ তাদের নজর থাকত ওই বাড়িটির প্রতি।’ 

৭ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেনের বাড়িটিতে ছিল ধূমকেতু পত্রিকার অফিস

তবে ‘ধূমকেতু’র আয়ু বেশিদিন ছিল না। হঠাৎই আসা আর হঠাৎ ধূমকেতুর মতো মিলিয়ে যাওয়া। ১৯২২ সালের ১১ আগস্ট থেকে ১৯২৩-এর মার্চ। মাত্র সাত মাস চলেছিল। শুধু প্রথম মাস ধূমকেতুর অফিস ছিল ৩২ কলেজ স্ট্রিট। কিন্তু কাগজের এরকম আগুনে মেজাজ দেখে বাড়িওয়ালা পুলিশের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে তাদের বাড়ি থেকে তুলে দিল। তারপর থেকেই ধূমকেতুর ঠিকানা এই ৭ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেন। তখনকার দিনে কাগজটি বিপ্লবীদের হাতিয়ার ছিল বলা যায়। সমর্থন ছিল বুদ্ধিজীবী মহলেরও। রবীন্দ্রনাথ তো ধূমকেতুকে আশীর্বাদ করে লিখেই ফেললেন, ‘আয় চলে আয় রে ধূমকেতু/আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু …’।

১৯২২ সালের ১৩ অক্টোবর সংখ্যায় নজরুল লিখলেন, ‘স্বরাজ-টরাজ বুঝিনা, কেননা ওই কথার মানে এক একজন মহারথী এক এক রকম করে থাকেন। ভারতবর্ষের এক পরমাণু অংশও বিদেশিদের অধীনে থাকবে না …।’ এতেই ভয় পেয়ে গেল ইংরেজ সরকার। তারা বুঝেছিল এই পত্রিকা বেশিদিন থাকলে তাদের বিপদ অনিবার্য। তারা সুযোগের অপেক্ষায় দিন গুনছিল। অবশেষে এল সে সময়, যেদিন ধূমকেতুতে প্রকাশিত হলো নজরুলের আক্রমণাত্মক সেই কবিতা ‘আনন্দময়ীর আগমনে’। ‘আর কতকাল থাকবি বেটি মাটির ঢেলার মূর্তি আড়াল? স্বর্গ যে আজ জয় করেছে অত্যাচারী শক্তি চাঁড়াল’। সঙ্গে সঙ্গে  রাজরোষে বন্ধ হলো পত্রিকা। প্রথমে পুলিশ হানা দিল প্রতাপ চ্যাটার্জি লেনে ধূমকেতুর অফিসে। সম্পাদককে পাওয়া গেল না। তিনি তখন ফেরার। এর কিছুদিন পর অবশ্য তিনি কুমিল্লায় ধরা পড়লেন। বিচারে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছিল তার।

আবার ফিরে আসি ছায়ানট ও বঙ্কিম গ্রন্থাগারের অনুষ্ঠানের কথায়। বঙ্কিমচন্দ্র রচিত বন্দে মাতরম্ গান দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। তারপরে এদিনের অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তু সম্পর্কে দর্শক-শ্রোতাদের অবহিত করেন গ্রন্থাগারের অন্যতম সদস্য তথা সাহিত্যিক গোপাল দাস। অগ্রজ বঙ্কিমচন্দ্রের প্রতি নজরুলের যে শ্রদ্ধা- সেই সম্পর্কে আলোকপাত করেন ছায়ানটের কর্ণধার সোমঋতা মল্লিক। 

১৯৪১ সালের ২৭ জুন রাত ৯টায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিবার্ষিকী উপলক্ষে আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্র থেকে নজরুল রচিত ‘বঙ্কিমচন্দ্র’ কথিকাটি সম্প্রচারিত হয়। এই কথিকায় নজরুল সাহিত্য সম্রাটকে তাঁর পরবর্তী সমস্ত কবি, সাহিত্যিকের পিতামহ ব্রহ্মা বলে উল্লেখ করেছেন।

পরবর্তী সময়ে সোমঋতার সুদক্ষ পরিচালনায় ছায়ানটের সদস্যরা সমবেত ও এককভাবে কাজী নজরুলের বিভিন্ন গান এবং কবিতা পরিবেশন করেন। পাশাপাশি আরও কিছু আমন্ত্রিত গুণীজন বঙ্কিমচন্দ্র ও কাজী নজরুলের বিষয়ে আলোচনা, সংগীত ও কবিতা পাঠ করেন। 

তাদের মধ্যে ছিলেন অভিনব গুপ্ত, মিঠু চক্রবর্তী, মায়া দাস, সুস্মিতা মুখার্জি, মুহাম্মদ হেলালউদ্দিন, সাবিনা ইয়াসমিন, দেবযানী বিশ্বাস, সুজল দত্ত, স্নেহাঙ্গনা ভট্টাচার্য্য, জি এম আবু বকর প্রমুখ বিশিষ্টজন।

সীমিত জায়গায় আড়ম্বরহীন আয়োজনে এদিনের অনুষ্ঠান ছিল প্রাণপ্রাচুর্য এবং আন্তরিকতায় ভরা। অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন গ্রন্থাগারের সচিব প্রবীর বসু।

বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির দুই মহান ব্যক্তির স্মৃতিবিজড়িত দুটি বাড়িকেই সরকার হেরিটেজ ঘোষণা করে। তার মধ্যে বঙ্কিমচন্দ্রের মূল বাড়িটি ভগ্নস্তূপে পরিণত হওয়ায় সেই জমিতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ২০০৪ সালে নির্মিত ও পরিচালিত ‘সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র স্মৃতি গ্রন্থাগার’ সাহিত্য সম্রাটের স্মৃতি বহন করছে। 

অপরদিকে কাজী নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত মূল বাড়িটি অর্ধজীর্ণ অবস্থায় আজও দাঁড়িয়ে আছে। বাড়িটির নিচতলায় চলছে একটি ছাপাখানা। উপরতলায় এক সময়কার সরগরম ধূমকেতুর কার্যালয় কক্ষটি এখন জনমানবহীন নৈঃশব্দের অন্ধকারে ডুবে আছে। আশা করি সরকার বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ এই বাড়িটির সংস্কারসাধন এবং রক্ষণাবেক্ষণে এগিয়ে আসবে। নাহলে অদূর ভবিষ্যতে এটি বিস্মৃতির গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

সালমান/

সুনামগঞ্জে মঞ্চস্থ হলো বিপ্লবের বীরত্বগাথা নাটক হা হা কা র

প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৪১ পিএম
সুনামগঞ্জে মঞ্চস্থ হলো বিপ্লবের বীরত্বগাথা নাটক হা হা কা র
ছবি : খবরের কাগজ

মানসিক মানবিক সুখে সমৃদ্ধ একটি সুন্দর জনপদ। যেখানে মিলেমিশে বসবাস করেন নানা ধর্ম বর্ণের মানুষ। এক বাউলের সঙ্গে সেখানকার সবার সখ্যতা। সেখানে বসবাস করেন এক বাউলও। প্রায় প্রতিরাতেই সবাই মিলে বসান গানের আসর। বাউলের পাশাপাশি ছিল এক সুন্দর যুগল।

গ্রামের শিশুদেরকে গান আর নৃত্য শেখাতো ইসমাইল-জবা। হঠাৎ একদিন তাদের ওপর নজর পড়ে একদল মানুষ রুপী রাক্ষুসে মানুষের। জবার আর তাদের গ্রামের মেয়েদের রক্তে লাল হয়ে উর্বর হয় সবুজ জমি। সর্বস্ব হারিয়ে জবা বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ। জবার শোকে পাগল প্রায় তার প্রেমিক ইসমাইল বাউলের কাছে গিয়ে মনের শান্তনা খুঁজতে থাকে। রাক্ষুস রুপী মানুষদের বদ নজর থেকে বাউলও নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারেনি।

এক রাতে মুখোশ পরা হায়নারা এসে তার চুল কেটে লাঞ্চিত করে। ভেঙে গুড়িয়ে দেয় সব বাদ্যযন্ত্র। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে বাউলও নিজেকে আত্মহুতি দেন। এই দৃশ্য দেখেছিলেন সেখানকার এক সাংবাদিক। তিনি তার কলমে এই ঘটনা ফুটিয়ে তুলতে সম্পাদকের টেবিলে গেলে সংবাদ প্রকাশ করতে অনীহা জানালে চাকরি ছেড়ে দেন সাংবাদিক। অন্য আরেকজন সম্পাদকের কাছে গেলে তিনি ছাপার ব্যবস্থা করলে নিখোঁজ হয়ে যায় ওই সাংবাদিক। এরপর শুরু হয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। তাদের দমাতে চালানো হয় গুলি। তবুও থামেনি আন্দোলন। এক পর্যায়ে অসংখ্য প্রাণের বিনিময়ে বিজয় অর্জিত হয় শিক্ষার্থীদের। 

সেই আন্দোলনে মারা যায় প্রেমিক ইসমাইল। তার মরদেহ নিয়ে শোকে কাতর তার গ্রামবাসী। খোঁজ মিলে গুম হওয়া সেই সাংবাদিকদেরও। এভাবেই শেষ হয় দেশব্যাপী প্রযোজনা কেন্দ্রিক নাট্যকর্মশালার নাটক হাহাকার। মূলত নাটকে জুলাই বিপ্লবের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরা হয়। একই সঙ্গে ৫২ ও ৭১ সালের ঘটনাও আনা হয় নাটকে। 

জুলাই বিপ্লবের চেতনায় মুনীর চৌধুরী ১ম নাট্য উৎসবে রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাছনরাজা মিলনায়তনে সানি ঘোষ রবির রচনা ও নির্দেশনায় নাটকটি পরিবেশিত হয়।

নাটকটির সহাকারী নির্দেশনায় ছিলেন নাজমুল সরকার নিহাত, অথৈ দাস মেঘলা, নাফিসা নূর নোভা। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ, সাংবাদিক বিজন কুমার সেন, খলিল রহমান, জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী পাভেল, সাংস্কৃতি কর্মী তপন কুমার, মঞ্জু তালুকদার, সামিনা চৌধুরী মনী। 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল সকলের অভিনয়ের প্রশংসা করে বলেন, 'আমরা সবাই বলি সুনামগঞ্জ সংস্কৃতির শহর। শান্ত সুন্দর শহর আমাদের সুনামগঞ্জ। এখানের পথে ঘাটে অসংখ্য মেধাবীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। যেমন ছিলেন বাউল সম্রাট আব্দুল করিম, হাছন রাজা, রাধারমণ, পাগল হাসানসহ আরও অনেকে। আমরা বিশ্বাস করি আগামীতেও এই চর্চা অব্যাহত থাকবে।' 

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, 'আমরা যা দেখেছি নাটকে তা আমাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাস। ৫২ থেকে ২৪ ফুটে উঠেছে। কখন যে নাটক শুরু হলো আর শেষ হলো বোঝাই যায়নি। নাটকের কলাকৌশলীদের অভিনয় ছিল বাস্তবমুখী। কলাকৌশলী ও রচয়িতা সবাইকে ধন্যবাদ এমন নাটক উপহার দেওয়ার জন্য।'

নাটকে অভিনয় করেন সামির পল্লব, পল্লব ভট্টাচার্য, দৃষ্টি তালুকদার, বায়েজিদ, জিৎ দালুকদার, পার্থ সাহা, অলিদ হাসান তানবির, তৌহিদুর রহমান, দিব্যজিৎ চন্দ, সায়মন হাসান, আমান চৌধুরী, কাব্য, বর্ষা, পৌষি, পূজা, ঝর্না, প্রমি, শিপা, একুশ, রাজ, নিসান, রাইম, অহি, অমিত বর্মন, ঝুমা দাস, নাজমুল ইসলাম, মৌলি তালুকদার, সৃজন চন্দ, আমজাদ হোসেন, ফারদিন হাসান, মেহেদী, হাসান, দেওয়ান গিয়াস, মঞ্জু তালুকদার।

দেওয়ান গিয়াস/জোবাইদা/