
নিজেদের পছন্দের লোকদের বইমেলায় প্যাভিলিয়ন দেওয়ার জন্য ন্যক্কারজনক নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ অভিযোগ করেন তিনি।
ফরিদ আহমেদ লিখেন, ‘নিজেদের পছন্দের প্রিয় লোকদের বইমেলায় প্যাভিলিয়ন দেওয়ার জন্য ন্যক্কারজনক নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। উদাহরণসহ বলি- বর্তমানের স্বঘোষিত প্রকাশক নেতারা তাদের কিছু সহযোগী (কিছুটা জোর করে, কিছুটা ভয় দেখিয়ে) নিয়ে সম্মিলিতভাবে একাধিক সভা, মিছিল, অবস্থান ধর্মঘট করেছেন প্রধান দুটি দাবি নিয়ে- (১) প্যাভিলিয়ন বাতিল করতে হবে, (২) ভাড়া কমাতে হবে।
এই নেতারাই বইমেলা পরিচালনা কমিটিতে প্রকাশক প্রতিনিধি হয়েছেন, একাধিক মিটিং করেছেন কিন্তু প্যাভিলিয়ন বাতিল তো করেননি বরং আরও কিছু নতুন প্রকাশকদের প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দিয়েছেন, বইমেলার নীতিমালা অনুযায়ী যাদের অনেকের প্যাভিলিয়ন পাওয়ার যোগ্যতা নেই। নেতাদের পছন্দের ওই প্রকাশকদের স্থান করে দেওয়ার জন্য কিছু প্রগতিশীল প্রকাশককে একটি বিশেষ ট্যাগ দিয়ে তাদের প্যাভিলিয়ন বাতিল করেছেন। আর এখন স্টল ভাড়া কমাবার প্রসঙ্গে কথাই বলেন না। বরং বর্তমান নীতিমালায় প্যাভিলিয়নের চতুর্দিক খোলা না রাখার যে নিয়ম আছে সেটা কীভাবে বাতিল করা যায় সেই অঙ্ক কষছেন তারা। কাকে কীভাবে ম্যানেজ করা যায়, সেই যোগাযোগ করছেন।’
তিনি বলেন, ‘প্যাভিলিয়ন বাতিলের ব্যপারেও ওই নেতারা নিজেদের সুবিধা দেখেছেন/নিয়েছেন- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়ে ১৮/২০ জন প্যাভিলিয়ন পাওয়া প্রকাশকদের নামের পাশে ক্রস চিহ্ন দিয়ে বলেছিলেন, এদের প্যাভিলিয়ন বাতিল করতে হবে। কিন্তু ওই ক্রস চিহ্নের তিনজনকে ছোট প্যাভিলিয়ন আর বাকিদের ৪ ও ৩ ইউনিট স্টল দিয়েছেন। ওই তিনজন কেন প্যাভিলিয়ন পেলেন? এর কোনো ব্যখ্যা কি দিতে পারবেন? নাকি এর মধ্যেও আপনাদের কোনো অঙ্ক আছে?
ওই তিনজন কি বাকিদের চেয়ে কম সংখ্যক বঙ্গবন্ধু বা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বই প্রকাশ করেছেন? নাকি সরকারি বইক্রয় প্রকল্পে বাকিদের চেয়ে সর্বনিম্ন অঙ্কের বই বিক্রি করেছেন? বই প্রকাশ এবং বিক্রির বিষয়ে আরও কথা আছে- প্যাভিলিয়নের পূর্ণাঙ্গ তালিকায় এমন আরও দু’চারজন প্রকাশক আছেন যারা বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার লেখা বই প্রকাশ করেছেন এবং সরকারি বইক্রয় প্রকল্পে অনেকের চেয়ে অনেক বেশি টাকার বই বিক্রি করেছেন। তাদের প্যাভিলিয়ন কমাবার কথা কেন নেতারা ভাবলেন না?’
সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী বলেন, ‘যদি বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার লেখা বই প্রকাশ বা সরকারি বইক্রয় প্রকল্পে বই বিক্রি অপরাধ হয়, তবে অন্যদেরও এই শাস্তিপ্রাপ্য। বাপুস প্রকাশিত বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বইয়ের তালিকায় ৩৯৩ জন প্রকাশকের নাম আছে। আর সর্বশেষ সরকারি বইক্রয় এসইডিপি প্রকল্পে ৭০-৮০ জন প্রকাশক আছেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রিয় নেতা ভাই ও বন্ধুরা বেছে বেছে ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক হিংসায় আপনাদের জিঘাংসা চরিতার্থ করার কৌশল সবাই জেনে যাচ্ছে। তাই সবার বরাদ্দ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেন অথবা আপনাদের প্রিয় প্রকাশক যাদের নাম বাদ দিয়েছেন তাদেরও এই তালিকায় নিয়ে আসেন।’
সবশেষে তিনি আরও লিখেন, ‘আর প্রিয় সেইসব প্রকাশক, যারা প্যাভিলিয়ন বহাল আছে বলে বগল বাজাচ্ছেন এবং আমাদের দিকে তাকাচ্ছেন না, সামনে তাদের জন্য খুব সুদিন অপেক্ষা করছে না। এর চেয়েও ভয়াবহ ট্যাগ আপনাদের দেবে তারা। এখন আপনাদের শাস্তির বাইরে রাখা হয়েছে। আপনারা আমাদের সমব্যথী হচ্ছেন না, পরে আমরা আপনাদের সমব্যথী হব না। এই হচ্ছে তাদের সমঝোতা।’
সালমান/