ঢাকা ৯ চৈত্র ১৪৩১, রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫
English

বঙ্কিমচন্দ্রের কলকাতার বাসভবনে নজরুল স্মরণ

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৭ পিএম
আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৯ পিএম
বঙ্কিমচন্দ্রের কলকাতার বাসভবনে নজরুল স্মরণ
ছায়ানটের (কলকাতা) কর্ণধার সোমঋতা মল্লিকের সঙ্গে সংগঠনের সদস্যরা

কথায়, গানে ও কবিতায় সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে যৌথভাবে স্মরণ করল ‘ছায়ানট’ (কলকাতা) এবং ‘সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র স্মৃতি গ্রন্থাগার’। অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়েছিল ৫ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেন, কলকাতা-১২ ঠিকানায় সাহিত্য সম্রাটের নামাঙ্কিত ঐতিহ্যমণ্ডিত গ্রন্থাগার ভবনে। অনুষ্ঠানের বিস্তারিত বিবরণে যাবার আগে অনুষ্ঠানস্থলের ঐতিহ্য ও ইতিহাস সম্পর্কে সংক্ষেপে একটু বলে নেওয়া যাক।

মধ্য কলকাতায় ৫ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেন এবং ৭ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেন- একই রাস্তায় সামান্য ব্যবধানে অবস্থিত এই দুটি বাড়িতেই একসময় বাংলা সংস্কৃতির গৌরবময় ইতিহাস রচিত হয়েছিল। কিছু মানুষ জানলেও, অনেকেরই হয়তো অজানা ব্যস্ত কলেজ স্ট্রিট অঞ্চলে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিপরীতে অবস্থিত এই দুটি বাড়ির মাহাত্ম্য। ৫ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেনের বাড়িটি ছিল সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনের শেষ সাত বছরের আবাসভূমি। আর ৭ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেনের বাড়িটিতে ছিল বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কিছুদিনের আবাস ও ধূমকেতু পত্রিকার অফিস। 

৫ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেনের বাড়িটি ছিল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনের শেষ সাত বছরের আবাসভূমি

আজ থেকে প্রায় ১৩৪ বছর আগে যখন বঙ্কিমচন্দ্র হাওড়ার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন তখন অর্থাৎ ১৮৮৭ সালে জানুয়ারি মাসে এই বাড়িটি সম্ভবত দুর্গাপ্রসন্ন ঘোষের কাছ থেকে কেনেন এবং জীবনের শেষ সাত বছর এখানে সপরিবারে ছিলেন। এই বাড়িতে বসেই তিনি ‘সীতারাম’ (১৮৮৭), ‘বিবিধ প্রবন্ধ’ (১৮৮৭), ‘ধর্মতত্ত্ব প্রথম ভাগ অনুশীলন’ (১৮৮৮), ‘কৃষ্ণচরিত্র’ (১৮৯২) প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। প্রকাশ করেছিলেন ‘প্রচার’ পত্রিকা। এ ছাড়া এখান থেকেই তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষার্থীদের রচনাসংগ্রহ সম্পাদনা করতেন। পরামর্শ দিতেন ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের সাংস্কৃতিক কাজকর্ম বিষয়ে। এভাবেই তিনি জীবনের শেষদিন পর্যন্ত কর্মব্যস্ত ছিলেন এবং তার ফলে ওই সময়টা নক্ষত্র সমাবেশে আলোকিত হয়ে থাকত এই বাড়ি, এই পাড়া। সেই নক্ষত্রদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বর্ণকুমারী দেবী, সুরেশ্চন্দ্র সমাজপতি, আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন প্রমুখ।

অপরদিকে ৭ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেনের বাড়িটিতে পার্টিশন করে একদিকে ছিল মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের মেস। অন্যদিকে ধূমকেতু পত্রিকার অফিস। পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর ‘নজরুল স্মৃতি’ গ্রন্থে বলেছেন, ‘বেশ আড্ডা জমতো ধূমকেতুর অফিসে। থাকতেন স্বয়ং নজরুল। তাঁর তো ওটাই বাসস্থান ছিল। এ ছাড়া‌ আসতেন মুজফ্‌ফর আহ্‌মদ, মানবেন্দ্রনাথ রায়, নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়, মোহিতলাল মজুমদার, ভূপতি মজুমদার প্রমুখ। আড্ডার সঙ্গে মুহুর্মুহু চায়ের ভাঁড় ঘুরতো অফিসের এদিক থেকে ওদিক। ক্রাউন ফোলিও সাইজের আট পৃষ্ঠার অর্ধ-সাপ্তাহিক কাগজ নিয়ম করে বেরতো। দাম ছিল এক আনা। গ্রাহকদের জন্য বছরে পাঁচ টাকা। কিন্তু কী ঝাঁঝ, কী বিপ্লবীয়ানা ছিল এই পত্রিকার। শুরু থেকেই গোটা বাংলা উজ্জীবিত তার দাপটে। বিশেষ করে তখনকার তরুণ শিক্ষিত সমাজ। ব্রিটিশদের কাছে এটাই ছিল উদ্বেগের। তাই সর্বক্ষণ তাদের নজর থাকত ওই বাড়িটির প্রতি।’ 

৭ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেনের বাড়িটিতে ছিল ধূমকেতু পত্রিকার অফিস

তবে ‘ধূমকেতু’র আয়ু বেশিদিন ছিল না। হঠাৎই আসা আর হঠাৎ ধূমকেতুর মতো মিলিয়ে যাওয়া। ১৯২২ সালের ১১ আগস্ট থেকে ১৯২৩-এর মার্চ। মাত্র সাত মাস চলেছিল। শুধু প্রথম মাস ধূমকেতুর অফিস ছিল ৩২ কলেজ স্ট্রিট। কিন্তু কাগজের এরকম আগুনে মেজাজ দেখে বাড়িওয়ালা পুলিশের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে তাদের বাড়ি থেকে তুলে দিল। তারপর থেকেই ধূমকেতুর ঠিকানা এই ৭ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি লেন। তখনকার দিনে কাগজটি বিপ্লবীদের হাতিয়ার ছিল বলা যায়। সমর্থন ছিল বুদ্ধিজীবী মহলেরও। রবীন্দ্রনাথ তো ধূমকেতুকে আশীর্বাদ করে লিখেই ফেললেন, ‘আয় চলে আয় রে ধূমকেতু/আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু …’।

১৯২২ সালের ১৩ অক্টোবর সংখ্যায় নজরুল লিখলেন, ‘স্বরাজ-টরাজ বুঝিনা, কেননা ওই কথার মানে এক একজন মহারথী এক এক রকম করে থাকেন। ভারতবর্ষের এক পরমাণু অংশও বিদেশিদের অধীনে থাকবে না …।’ এতেই ভয় পেয়ে গেল ইংরেজ সরকার। তারা বুঝেছিল এই পত্রিকা বেশিদিন থাকলে তাদের বিপদ অনিবার্য। তারা সুযোগের অপেক্ষায় দিন গুনছিল। অবশেষে এল সে সময়, যেদিন ধূমকেতুতে প্রকাশিত হলো নজরুলের আক্রমণাত্মক সেই কবিতা ‘আনন্দময়ীর আগমনে’। ‘আর কতকাল থাকবি বেটি মাটির ঢেলার মূর্তি আড়াল? স্বর্গ যে আজ জয় করেছে অত্যাচারী শক্তি চাঁড়াল’। সঙ্গে সঙ্গে  রাজরোষে বন্ধ হলো পত্রিকা। প্রথমে পুলিশ হানা দিল প্রতাপ চ্যাটার্জি লেনে ধূমকেতুর অফিসে। সম্পাদককে পাওয়া গেল না। তিনি তখন ফেরার। এর কিছুদিন পর অবশ্য তিনি কুমিল্লায় ধরা পড়লেন। বিচারে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছিল তার।

আবার ফিরে আসি ছায়ানট ও বঙ্কিম গ্রন্থাগারের অনুষ্ঠানের কথায়। বঙ্কিমচন্দ্র রচিত বন্দে মাতরম্ গান দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। তারপরে এদিনের অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তু সম্পর্কে দর্শক-শ্রোতাদের অবহিত করেন গ্রন্থাগারের অন্যতম সদস্য তথা সাহিত্যিক গোপাল দাস। অগ্রজ বঙ্কিমচন্দ্রের প্রতি নজরুলের যে শ্রদ্ধা- সেই সম্পর্কে আলোকপাত করেন ছায়ানটের কর্ণধার সোমঋতা মল্লিক। 

১৯৪১ সালের ২৭ জুন রাত ৯টায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিবার্ষিকী উপলক্ষে আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্র থেকে নজরুল রচিত ‘বঙ্কিমচন্দ্র’ কথিকাটি সম্প্রচারিত হয়। এই কথিকায় নজরুল সাহিত্য সম্রাটকে তাঁর পরবর্তী সমস্ত কবি, সাহিত্যিকের পিতামহ ব্রহ্মা বলে উল্লেখ করেছেন।

পরবর্তী সময়ে সোমঋতার সুদক্ষ পরিচালনায় ছায়ানটের সদস্যরা সমবেত ও এককভাবে কাজী নজরুলের বিভিন্ন গান এবং কবিতা পরিবেশন করেন। পাশাপাশি আরও কিছু আমন্ত্রিত গুণীজন বঙ্কিমচন্দ্র ও কাজী নজরুলের বিষয়ে আলোচনা, সংগীত ও কবিতা পাঠ করেন। 

তাদের মধ্যে ছিলেন অভিনব গুপ্ত, মিঠু চক্রবর্তী, মায়া দাস, সুস্মিতা মুখার্জি, মুহাম্মদ হেলালউদ্দিন, সাবিনা ইয়াসমিন, দেবযানী বিশ্বাস, সুজল দত্ত, স্নেহাঙ্গনা ভট্টাচার্য্য, জি এম আবু বকর প্রমুখ বিশিষ্টজন।

সীমিত জায়গায় আড়ম্বরহীন আয়োজনে এদিনের অনুষ্ঠান ছিল প্রাণপ্রাচুর্য এবং আন্তরিকতায় ভরা। অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন গ্রন্থাগারের সচিব প্রবীর বসু।

বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির দুই মহান ব্যক্তির স্মৃতিবিজড়িত দুটি বাড়িকেই সরকার হেরিটেজ ঘোষণা করে। তার মধ্যে বঙ্কিমচন্দ্রের মূল বাড়িটি ভগ্নস্তূপে পরিণত হওয়ায় সেই জমিতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ২০০৪ সালে নির্মিত ও পরিচালিত ‘সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র স্মৃতি গ্রন্থাগার’ সাহিত্য সম্রাটের স্মৃতি বহন করছে। 

অপরদিকে কাজী নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত মূল বাড়িটি অর্ধজীর্ণ অবস্থায় আজও দাঁড়িয়ে আছে। বাড়িটির নিচতলায় চলছে একটি ছাপাখানা। উপরতলায় এক সময়কার সরগরম ধূমকেতুর কার্যালয় কক্ষটি এখন জনমানবহীন নৈঃশব্দের অন্ধকারে ডুবে আছে। আশা করি সরকার বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ এই বাড়িটির সংস্কারসাধন এবং রক্ষণাবেক্ষণে এগিয়ে আসবে। নাহলে অদূর ভবিষ্যতে এটি বিস্মৃতির গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

সালমান/

ছায়ানট-শরৎ পাঠচক্র পুরস্কার পাচ্ছেন ৩ গুণীজন

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১২:০৬ পিএম
আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৫ পিএম
ছায়ানট-শরৎ পাঠচক্র পুরস্কার পাচ্ছেন ৩ গুণীজন
বাচিকশিল্পী দেবাশিস বসু, কবি ঋজুরেখ চক্রবর্তী ও বাচিকশিল্পী চন্দ্রিমা রায়

ছায়ানট (কলকাতা) এবং শরৎ পাঠচক্রের যৌথ উদ্যোগে গত বছরের মতো এবারও তিন গুণীজনকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হবে।

বিশ্ব কবিতা দিবস উপলক্ষে আগামী ২৭ মার্চ, বৃহস্পতিবার কলকাতার শরৎচন্দ্র বাসভবনে সন্ধ্যা ৬টায় বিশেষ অনুষ্ঠান ‘কবিতাকে ভালোবেসে’র আয়ােজন করা হয়েছে।

এবার যাদের সম্মাননা দেওয়া হবে তারা হলেন- দুই গুণী বাচিকশিল্পী দেবাশিস বসু ও চন্দ্রিমা রায় এবং বর্তমান সময়ের বিশিষ্ট কবি ঋজুরেখ চক্রবর্তী।

দেবাশিস বসু একজন জনপ্রিয় প্রিয়জন। কথা কইতে কইতে পাঁচ দশক পার। রেডিও, টিভি, স্টেজ, ফিল্ম, ডকুমেন্টারি, রেকর্ড, ক্যাসেট, সিডি - সবেতেই তাঁর কণ্ঠস্বর। সুজন রসিক বলে ‘কথা তো নয়, যেন গান’। কানের আরাম, প্রাণের আরাম। ভালোবাসতে বড্ড ভালোবাসেন সহজিয়া কথক।

ঋজুরেখ চক্রবর্তীর জন্ম ১৯৬৭ সালের ৬ জুলাই, কলকাতায়। লেখালিখি শুরু আটের দশকের মাঝামাঝি। স্কুল ও কলেজ ম্যাগাজ়িন বাদে প্রথম কবিতা প্রকাশ দেশ পত্রিকায় ১৯৮৬ সালে ১৯ বছর বয়সে। বর্তমানে সল্ট লেকের স্থায়ী বাসিন্দা ঋজুরেখর প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থের সংখ্যা ১৯। এছাড়া, ‘কবিতাসমগ্র’ প্রথম খণ্ডও প্রকাশিত হয়েছে। দ্বিতীয় খণ্ড প্রকাশের পথে। দে’জ পাবলিশিং থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’। তাছাড়া তাঁর পাঁচটি উপন্যাসও প্রকাশিত হয়েছে।

বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত ঋজুরেখ টানা ৩২ বছর রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের আধিকারিক হিসেবে কর্মজীবন অতিবাহিত করার পর সম্প্রতি স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে সাহিত্যচর্চা করছেন।

চন্দ্রিমা রায় মেধা এবং মননের এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ। তাঁর সমার্থক পরিচয় ‘কবিতায় কথালাপ’। চন্দ্রিমা একাধারে তার কর্ণধার এবং প্রতিষ্ঠাতা আবার অন্যদিকে তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং এর অধ্যাপক। গবেষণা করেছেন চেতনামূলক স্নায়ুবিজ্ঞান (Cognitive neuroscience) নিয়ে। কবিতা আবৃত্তি করেছেন দেশ-বিদেশের বহু মঞ্চে। পেয়েছেন ন্যাশনাল স্কলারশিপ এবং বহু পুরস্কার।

সৌভাগ্যের ঝুলিতে রয়েছে দুজন নোবেল লরিয়েট এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি ড. এ পি জে আব্দুল কালামের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সুযোগ। তাছাড়া তিনি প্রসার ভারতীর সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড এডুকেশেনের ন্যাশনাল করেসপন্ডেন্ট।

জাতীয় কবিতা পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ও ইফতার অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ১২:০৩ এএম
জাতীয় কবিতা পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ও ইফতার অনুষ্ঠিত
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় কবিতা পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিকেল ৪টায় সাওল হার্ট সেন্টারের ‘কাজল মিলনায়তন’-এ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ও ইফতার অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান।

তিনি বলেন, জাতীয় কবিতা পরিষদ এরশাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানেও কবিতা পরিষদ তার আন্দোলন, সংগ্রামের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। কবিতা চর্চার পাশাপাশি জাতীয় ও সামাজিক বিভিন্ন ইস্যুতে আমরা প্রতিবাদ ও আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছি। ভবিষ্যতেও রাখব।

আগামীতে কবিতা পরিষদের কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হবে, নতুন কাব্য আন্দোলন গড়ে তুলতে, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাষ্ট্রিক পরিবর্তনে জাতীয় কবিতা পরিষদ কী ভূমিকা পালন করবে সেসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা।

আলোচনায় অংশ নেন- জাতীয় কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রেজাউদ্দিন স্টালিন, সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ ফরায়েজী, সহ-সভাপতি এবিএম সোহেল রশীদ, সহ-সভাপতি মানব সুরত, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শাহীন রেজা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল জাকারিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুন্নবী সোহেল, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ করিম, অর্থ সম্পাদক ক্যামেলিয়া আহমেদ, প্রকাশনা সম্পাদক শওকত হোসেন, সেমিনার সম্পাদক মঞ্জুর রহমান, পরিবেশ ও প্রকৃতি বিষয়ক সম্পাদক মিতা অলী, দপ্তর সম্পাদক রোকন জহুর প্রমুখ।

সভায় উপস্থিত ছিলেন- প্রচার সম্পাদক আসাদ কাজল, জনসংযোগ সম্পাদক রফিক হাসান, শান্তি ও শৃঙ্খলা সম্পাদক ইউসুফ রেজা, সদস্য জমিল জাহাঙ্গীর, সদস্য আবীর বাঙালী প্রমুখ।

আলোচনা শেষে ইফতার পর্বের মধ্য দিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান। বিজ্ঞপ্তি 

আরজ আলী মাতুব্বরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম
আরজ আলী মাতুব্বরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও লেখক আরজ আলী মাতুব্বর। ছবি: সংগৃহীত

দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও লেখক আরজ আলী মাতুব্বরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৮৫ সালে আজকের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। 

বরিশাল শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ছোট্ট গ্রাম লামচর। এই গ্রামেরই এক গরিব কৃষক পরিবারে ১৯০০ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে অভাব-অনটনের কারণে স্কুল ছেড়ে দিতে হলেও পরবর্তী জীবনে আরজ আলী মাতুব্বর স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠেন।

নিজের চেষ্টায় জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা শাখায় পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও আরজ আলী মাতুব্বর অতিথি শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিয়েছেন ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্বাধীনভাবে দর্শন, বিজ্ঞান ও ধর্ম বিষয়ে মত প্রকাশ করে আজীবন কুসংস্কার এবং গোঁড়ামির বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন। এ জন্য সমাজের এক শ্রেণির মানুষ, এমনকি অনেক সময় রাষ্ট্রীয় বাহিনীরও চক্ষুশূল হয়েছেন তিনি। 

প্রথাবিরোধী এই লেখককে অনেক বাধা পেরিয়ে নিজের বই প্রকাশ করতে হয়েছে। ১৯৭৩ সালে তার প্রথম বই ‘সত্যের সন্ধানে’ প্রকাশিত হয়। জীবদ্দশায় প্রকাশিত তার উল্লেখযোগ্য চারটি গ্রন্থ হচ্ছে: ‘সত্যের সন্ধানে’ (১৯৭৩), ‘সৃষ্টির রহস্য’ (১৯৭৭), ‘অনুমান’ (১৯৮৩) ও ‘স্মরণিকা’ (১৯৮২)। মৃত্যুর কিছুকাল পরে প্রকাশিত হয় আরেকটি বই ‘মুক্তমন’ (১৯৮৮)।

তার বেশ কিছু লেখা ‘আরজ আলী মাতুব্বর রচনাবলী’ নামে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়েছে। 

আরজ আলী মাতুব্বর বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য ছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেহদানের অঙ্গীকার করে যান।

নানা আয়োজনে পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০২:৪৮ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০২:৫৪ পিএম
নানা আয়োজনে পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
ছবি : খবরের কাগজ

ফরিদপুরে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। 

শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০ টায় কবি কবরে ফুলেল শ্রদ্ধা, আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। 

এ সময় শহরের অম্বিকাপুরে কবির কবরে ফুলেল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক ও জসিম ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো. কামরুল হাসান মোল্লা, পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল, কবিপুত্র খুরশিদ আনোয়ারসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

পরে জেলা প্রশাসন ও জসিম ফাউন্ডেশনের আয়োজনে মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কবির বাড়ির আঙ্গিনায় আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিন্টু বিশ্বাস। 

কবি কে স্মরণীয় করে ধরে রাখতে তার গল্প, কবিতা, উপন্যাস চর্চার তাগিদ দেন ও কবির রুহের মাগফিরাত কামনায় করেন। 

উল্লেখ্য পল্লী কবি জসীমউদ্দীন ১৯০৩ সালের পহেলা জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৬ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

তিনি আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্য তার লেখনীর মধ্য দিয়ে নগর সভায় নিয়ে আসেন। কবর কবিতাসহ নকশী কাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট বাংলা ভাষার গীতিময় কবিতার অন্যতম নিদর্শন।

সঞ্জিব দাস/জোবাইদা/

পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১১:২৪ এএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১১:২৫ এএম
পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীন

পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১৪ মার্চ। ১৯৭৬ সালের এই দিনে তিনি মারা যান। ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি ফরিদপুর শহরতলির কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানা গ্রামে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। কবির পিতা আনছার উদ্দীন ও মা আমেনা খাতুন।

কবির শিক্ষাজীবন শুরু হয় ফরিদপুর শহরের হিতৈষী স্কুলে। সেখানে প্রাথমিকের পাঠ শেষ করে তিনি ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে ১৯২১ সালে এসএসসি, ১৯২৪ সালে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে এইচএসসি এবং একই কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। পরে তিনি ১৯৩১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন। তার কর্মজীবন শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে। ১৯৬১ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন তিনি।

কবি জসীমউদ্‌দীন ১৯৭৬ সালে ইউনেসকো পুরস্কার, ১৯৬৮ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি.লিট উপাধি এবং ১৯৭৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। কবির অমর সৃষ্টির মধ্যে রয়েছে ‘নকশী কাঁথার মাঠ’, ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’, ‘এক পয়সার বাঁশি’, ‘রাখালী’, ‘বালুচর’ প্রভৃতি।