
ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন পহেলা ফাল্গুন। ন্যাড়া গাছগুলোতে আসতে শুরু করেছে নতুন পাতা। শিমুল আর পলাশের আগুন রঙের ফুলের সঙ্গে বসন্তে যোগ হয়েছে ভালোবাসা দিবস। হালকা শীত আর তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে ভালোবাসা দিবসে মুখর হয়ে উঠেছিল ইট-পাথরের শহর। বসন্তকে বরণ করতে বরাবরের মতো সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো আয়োজনের কমতি রাখেনি।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বসন্তের প্রথম দিন সকাল ৮টায় চসিক মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে চট্টগ্রাম বোধন আবৃত্তি পরিষদ ২০তম ‘বোধন বসন্ত উৎসব ১৪৩১’ আয়োজন করে।
আবৃত্তিশিল্পী ও সংগঠনের সহসভাপতি শিমুল নন্দীর একক আবৃত্তির মধ্য দিয়ে শুরু হয় বসন্ত উৎসব। এরপর সদারঙ্গ উচ্চাঙ্গ সংগীত পরিষদের শিল্পীদের ‘রাগ ইমন’ পরিবেশনা, তালতীর্থ তবলা শিক্ষাকেন্দ্রের তবলা লহড়া শেষে গান, নৃত্যানুষ্ঠান, আবৃত্তি চলে বেলা ১২টা পর্যন্ত।
এদিকে নগরের আমবাগান এলাকায় শহিদ ওয়াসিম পার্কে আরেকটি বসন্তবরণ উৎসবের আয়োজন করে বোধন আবৃত্তি পরিষদ। দিনব্যাপী এই উৎসবে বরাবরের মতো এবারও নাচ-গান, আবৃত্তি-কথামালাসহ ছিল নানা আয়োজন।
উৎসব উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাও করা হয়।
বোধনের পাশাপাশি অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন যেমন- সুরপঞ্চম, ধ্রুপদ সংগীত নিকেতন, আর কে মিউজিক একাডেমি, আন্তর্জাতিক বিশ্বতান, কিল অব ক্ল্যাসিক্যাল অ্যান্ড ফোক ড্যান্স, ওডিশি অ্যান্ড টেগোর ড্যান্স মুভমেন্ট সেন্টার, মাধুরী ড্যান্স একাডেমি, নৃত্য নিকেতন, নৃত্যরূপ একাডেমি, সুরাঙ্গন বিদ্যাপীঠ, নৃত্যেশ্বর নৃত্যালয়, বাগেশ্বরী সংগীতালয়সহ বিভিন্ন সংগঠন তাদের পরিবেশনায় অংশ নেয়।
নগরের আমবাগান এলাকায় শহিদ ওয়াসিম পার্কে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বোধনের সভাপতি সোহেল আনোয়ার, উৎসবের সহযোগী প্রতিষ্ঠান নিপ্পন পেইন্টের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মানব কুমার সাহা ও কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের কর্ণধার বাসুদেব সিনহা।
এ সময় তারা বলেন, বসন্ত আমাদের মনে দোলা দিয়ে যায়। আমাদের নতুন করে বাঁচতে শেখায়। আমাদের প্রাণোচ্ছল করে তোলে। একটি মানবিক, অসাম্প্রদায়িক ও শোষণহীন সমাজ গঠনের জন্য বাঙালির এসব উৎসব-পার্বণগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।
এদিকে ফুলের দোকানগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। চেরাগী পাহাড় এলাকায় স্থায়ী ও ভ্রাম্যমাণ ফুলের দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে গোলাপ, গাঁদাসহ নানান ফুল।
চেরাগী পাহাড় মোড়, ডিসি হিল, সিআরবি শিরিষ তলা, বইমেলা, শিল্পকলা একাডেমি, কাজীর দেউড়ি স্টেডিয়াম, জামালখান মোড়, ফয়’স লেক, জাতিসংঘ পার্ক, পাহাড়তলী আমবাগান শহিদ ওয়াসিম পার্ক তরুণ-তরুণীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়।