ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

আরজ আলী মাতুব্বরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম
আরজ আলী মাতুব্বরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও লেখক আরজ আলী মাতুব্বর। ছবি: সংগৃহীত

দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও লেখক আরজ আলী মাতুব্বরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৮৫ সালে আজকের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। 

বরিশাল শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ছোট্ট গ্রাম লামচর। এই গ্রামেরই এক গরিব কৃষক পরিবারে ১৯০০ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে অভাব-অনটনের কারণে স্কুল ছেড়ে দিতে হলেও পরবর্তী জীবনে আরজ আলী মাতুব্বর স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠেন।

নিজের চেষ্টায় জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা শাখায় পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও আরজ আলী মাতুব্বর অতিথি শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিয়েছেন ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্বাধীনভাবে দর্শন, বিজ্ঞান ও ধর্ম বিষয়ে মত প্রকাশ করে আজীবন কুসংস্কার এবং গোঁড়ামির বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন। এ জন্য সমাজের এক শ্রেণির মানুষ, এমনকি অনেক সময় রাষ্ট্রীয় বাহিনীরও চক্ষুশূল হয়েছেন তিনি। 

প্রথাবিরোধী এই লেখককে অনেক বাধা পেরিয়ে নিজের বই প্রকাশ করতে হয়েছে। ১৯৭৩ সালে তার প্রথম বই ‘সত্যের সন্ধানে’ প্রকাশিত হয়। জীবদ্দশায় প্রকাশিত তার উল্লেখযোগ্য চারটি গ্রন্থ হচ্ছে: ‘সত্যের সন্ধানে’ (১৯৭৩), ‘সৃষ্টির রহস্য’ (১৯৭৭), ‘অনুমান’ (১৯৮৩) ও ‘স্মরণিকা’ (১৯৮২)। মৃত্যুর কিছুকাল পরে প্রকাশিত হয় আরেকটি বই ‘মুক্তমন’ (১৯৮৮)।

তার বেশ কিছু লেখা ‘আরজ আলী মাতুব্বর রচনাবলী’ নামে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়েছে। 

আরজ আলী মাতুব্বর বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য ছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেহদানের অঙ্গীকার করে যান।

মঙ্গল শোভাযাত্রা স্বনামেই বহাল রয়েছে: ইউনেসকো

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৮ পিএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪০ পিএম
মঙ্গল শোভাযাত্রা স্বনামেই বহাল রয়েছে: ইউনেসকো

পয়লা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ হিসেবে উদযাপন করেছেন এ বছর৷ তবে ইউনেসকোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় এ শোভাযাত্রা ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ হিসেবে এখনো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনেসকো৷

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিভাগের একজন মুখপাত্র খবরের কাগজকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের এই অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের নাম পরিবর্তন করতে বাংলাদেশ সরকার এখনে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো আবেদন করেনি৷

তবে নাম পরিবর্তনের আবেদন করা হলেও তা ইউনেসকোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংক্রান্ত বিশেষ একটি কমিটির অনুমোদনে স্বীকৃতি পাবে৷ 

ইউনেসকোর সেই মুখপাত্র বলেন, ‘অপরিমেয়  সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গতিশীল ও জীবন্ত প্রকৃতিকে স্বীকৃতি দিয়ে, ইউনেসকোর এ তালিকায় কোনো উপাদানের নাম পরিবর্তনের জন্য একটি স্পষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে৷ এটি ওই কনভেনশনের পরিচালনাকারী সংস্থা — যা কি না ২৪টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত, সেই অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে কার্যকর করা হয়৷

পয়লা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গল শোভাযাত্রা ২০১৬ সাল থেকে ইউনেসকোর ‘মানবতার জন্য প্রতিনিধিত্বকারী’ তালিকায়  অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ইউনেসকোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ বিষয়ক কনভেনশনে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গতিশীল ও জীবন্ত প্রকৃতিকে সম্মান জানাতে বলা হয়েছে৷ অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কার্যক্রমকে বা এর চর্চাকারীদের প্রভাবিত করে এমন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কাজকে সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করতেও বলা হয়েছে৷

এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনের ইস্যুতে দেশ, বিদেশে নানা মহলে আলোচনা, সমালোচনা চলছে৷ চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শোভাযাত্রায় মঙ্গল শব্দটি থাকায় সমাজের নানা স্তরে ‘খারাপ প্রতিক্রিয়া’ হয়েছে৷ এছাড়াও ১৯৮৯ সালে চারুকলা অনুষদ ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ নামেই তা উদযাপন করত৷ তাই চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নাম পরিবর্তন নয়; কেবল পুরনো নামে ফিরে যাওয়া হয়েছে৷

তবে চারুকলা অনুষদের এ দাবি অগ্রাহ্য করেছেন শিক্ষার্থীদের একাংশ৷  তারা বলছেন, গণ-অভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের মতো এবারও রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হস্তক্ষেপে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে৷  তারা মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনের যৌক্তিক কারণ খোলাসা করতেও চারুকলা অনুষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷

জয়ন্ত সাহা/এমএ/

আমার জীবনটাই যুদ্ধের: জন্মদিনে হাশেম খান

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫১ পিএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫১ পিএম
আমার জীবনটাই যুদ্ধের: জন্মদিনে হাশেম খান
হাশেম খান

বরেণ্য চিত্রশিল্পী হাশেম খানের ৮৪তম জন্মদিন আজ ১৬ এপ্রিল। ১৯৪১ সালের এ দিনে তিনি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সেকদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। 

জন্মদিনের অনুভূতি জানাতে গিয়ে তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি গত ৫ বছর আগে আমার পরিবার পরিজন আর শুভাকাঙ্ক্ষীদের বলেছিলাম, কেউ যেন আমার জন্মদিন উদযাপন না করেন। জন্মদিন নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ নেই। আমি এটা উদযাপন করি না। কারণ বাবা-মাও আমার জন্মদিন উদযাপন করতেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৈশাখের ৩ তারিখ জন্মেছিলাম আমি। মায়ের যখন প্রসব বেদনা ওঠে তখন বাইরে প্রচণ্ড কালবৈশাখী বইছিল। যখন আমি ভূমিষ্ঠ হলাম, তখন ঝড় থেমে গেল। ছোটবেলা থেকেই কত ঝড়ঝাপ্টার সঙ্গে যুদ্ধ করে বেড়ে উঠলাম। সারাটা জীবন আমি যুদ্ধই করে গেলাম। যে যুদ্ধ নিজের সঙ্গে, অন্যের সঙ্গে।’ 

ষাটের দশক থেকে শিল্পচর্চা ও সংস্কৃতির বিকাশে হাশেম খান বাংলাদেশের অগ্রজ ব্যক্তিত্ব। ১৯৬৩ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত চারুকলা অনুষদে পড়িয়েছেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ইমেরিটাস অধ্যাপকের পদেও তিনি আসীন হয়েছেন। 

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে রাজপথ যখন উত্তাল, হাশেম খান তখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়তেন। সেই কিশোর বয়সে তিনি চাঁদপুর শহরে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর ১৯৬৬ সালে তিনি ঐতিহাসিক ছয়-দফার লোগো তৈরি করেছিলেন। তৎকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হোটেল ইডেনের সামনে যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন, তার নকশাও করেছিলেন হাশেম খান। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বৈষম্যের চিত্র তুলে তিনি আঁকেন ঐতিহাসিক পোস্টার ‘সোনার বাংলা শ্মশান কেন’। 

বাংলাদেশের সংবিধান গ্রন্থের প্রতি পৃষ্ঠায় যে নকশা খচিত রয়েছে, তাতে প্রধান শিল্পী হিসেবে তিনি কাজ করেন। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চিত্রের তিনটি অ্যালবাম ও বাংলাদেশ ব্যাংকের শিল্পকলা সংগ্রহ অ্যালবামের তিনি যুগ্ম সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি ঢাকা জাদুঘর বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। 

হাশেম খান ঢাকা নগর জাদুঘরের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মিত স্বাধীনতা স্তম্ভের জুরিবোর্ড ও বাস্তবায়ন বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করেন। তিনি ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি।

শিল্পকর্মে অসামান্য অবদানের জন্য হাশেম খান ১৯৯২ সালে একুশে পদক লাভ করেন। ২০১১ সালে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন। 

২০২৪ সালে একটি বেসরকারি ব্যাংকের সহায়তায় হাশেম খানের সারা জীবনের নানা চিত্রকর্ম নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘চিত্রকলা ভাস্কর্য ম্যুরাল ও ড্রইং ১৯৫৬-২০২৩’ শীর্ষক অ্যালবাম। 

বর্ষবরণে ডিএসসিসিতে নানা আয়োজন

প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১৪ পিএম
বর্ষবরণে ডিএসসিসিতে নানা আয়োজন
ছবি: খবরের কাগজ

তুমুল হর্ষে, আড়ম্বরে নববর্ষ বরণ করল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। বাংলা ভাষাভাষী ও বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর সদস্যরা এ আয়োজনে অংশ নেন। 

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে নগরভবন প্রাঙ্গণে বৈশাখী বর্ণাঢ্য র‍্যালি, পান্তা ইলিশ উৎসব এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ডিএসসিসির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী প্রধান অতিথি হিসেবে বৈশাখী আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন।  

এদিন সকাল ৮ টায় নগর ভবন থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ র‍্যালি বের হয়ে গোলাপশাহ মাজার প্রদক্ষিণ করে পুনরায় নগর ভবনে এসে শেষ হয়। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন মনোজ্ঞ পরিবেশনা উপস্থাপন করেন ডিএসসিসি পরিচালিত  বিভিন্ন সংগীত শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষার্থী প্রশিক্ষকরা। 

রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, আজকের এই আনন্দ র‍্যালিতে আমরা যেমন ধর্ম, বর্ণ,পদবি নির্বিশেষে সবাই অংশগ্রহণ করেছি, ঠিক তেমনিভাবে সবাই মিলে একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করব। 

পরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দশটি প্রশাসনিক অঞ্চলের ঐতিহ্য উপজীব্য করে নির্মিত প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন এবং পান্তা উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। উৎসবে স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড.জিল্লুর রহমান, সচিব মোহাম্মদ বশিরুল হক ভূঁঞা উপস্থিত ছিলেন।

জয়ন্ত/মেহেদী/ 

নববর্ষ বার্তা দেয় নবপ্রত্যয়ের: অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক

প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫২ পিএম
আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৮ পিএম
নববর্ষ বার্তা দেয় নবপ্রত্যয়ের: অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক
ছবি: খবরের কাগজ

জীর্ণ পুরাতনের পথ ছেড়ে এসে জাতীয় জীবনে শুভবোধ সঞ্চারের পথ অন্বেষণেই নববর্ষের সার্থকতা খুঁজে পান অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। শান্তি, সমৃদ্ধি ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেশ গঠনের কথা বলেছেন তিনি।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে বর্ষবরণ সংগীত, নববর্ষ বক্তৃতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।  এ আয়োজনে সভাপ্রধান ছিলেন একাডেমির সভাপতি আবুল কাসেম ফজলুল হক। 

তিনি  বলেন, নববর্ষ আমাদের নবপ্রত্যয়ে উদ্বুদ্ধ হওয়ার বার্তা দেয়। জীর্ণ পুরাতনের পথ পরিহার করে ব্যক্তিগত, সামাজিক ও জাতীয় জীবনে শুভবোধ সঞ্চারের কথা বলে। এবারের বাংলা নববর্ষ বাংলাদেশ ও বিশ্বে বয়ে আনুক শান্তি সমৃদ্ধি ও সম্প্রীতি।

আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। 'জাতিবাদের দ্বন্দ্ব সমাসে বাংলা বর্ষের ধর্ম পরীক্ষা' শীর্ষক নববর্ষ বক্তৃতা দেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ।

অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, আমরা জনগোষ্ঠী হিসেবে ভাগ্যবান যে, আমাদের নিজস্ব একটি নববর্ষ আছে, নিজস্ব একটি বর্ষপঞ্জি আছে। বাংলা নববর্ষ আমাদের ঋতুচক্রের সঙ্গে যেমন সম্পর্কিত তেমনি আমাদের উৎপাদনব্যবস্থার সঙ্গেও সম্পর্কিত। প্রাত্যহিক জীবনের অনুষঙ্গে বৈশাখকে আমরা নানাভাবে আবিষ্কার করে চলি। 

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, উৎসব মূলত তারুণ্যের প্রাণের শক্তিতে বেঁচে থাকে। আর তরুণেরা যুগে যুগে পুরাতনের মধ্যে নতুনকে মেশায় বলেই পুরাতনও বেঁচে থাকে নতুনের মধ্যে।  

সাংস্কৃতিক পর্বে সাঁঝ হিন্দোলের পরিবেশনা সবাইকে মুগ্ধ করে। পরে সংগীত পরিবেশন করেন  সাইদুর রহমান বয়াতী, পিয়াল হাসান, এটিএম আশরাফ হোসেন, আশরাফুজ্জামান, ড. মাহবুবা রহমান, এলাহী মাসুদ, নাসরিন ফেরদৌস চমন, মনিরুল ইসলাম, সাকিব সুলেরী ও আবীর বাঙালি।  

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে বাংলা একাডেমির উদ্যোগে একাডেমি প্রাঙ্গণে বিভিন্ন ছাড়ে বইয়ের আড়ং চলছে।  এখানে এসে স্বল্পমূল্যে মানুষ বই কিনতে পারবেন।

জয়ন্ত/মেহেদী/

আমরা নতুনের জয়গান গাইব: অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ

প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৫ পিএম
আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৪৬ পিএম
আমরা নতুনের জয়গান গাইব: অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
ছবি: খবরের কাগজ

বাঙালি যত মত ও পথেই বিশ্বাস করুক না কেন, বাংলা নববর্ষে এসে তারা পুরোপুরি বাঙালি হয়ে ওঠেন। আর সে বাঙালি সত্তার শক্তিতে ভর করেই পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায় বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে রবীন্দ্র সরোবরে সুরের ধারা ও চ্যানেল আইয়ের আয়োজনে 'হাজার কণ্ঠে বর্ষবরণ' অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে ভোর ৬টায় যন্ত্রসঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। এর পর শিল্পী স্বাতী সরকারের পরিচালনায় সুরের ধারার শিল্পীদের সম্মেলক পরিবেশনায় শুরু হয় এ বৈশাখী আয়োজন।

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, 'আমাদের সময়ে উদ্‌যাপন যে খুব আলাদা ছিল তা না। আমাদের সময়ে অনেক কিছু নিয়ে মতপার্থক্য ছিল। কিন্তু বাঙালির নববর্ষ নিয়ে মতপার্থক্য ছিল, এটা আমি দেখিনি। আমরা এভাবেই পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন করতাম। '

বাঙালি জাতীয় জীবনে পহেলা বৈশাখের তাৎপর্য তুলে ধরে তিনি বলেন, 'অনেক পথ আছে, অনেক মত আছে।অনেক জীবনের বিশ্বাস আছে এখানে। একটা জায়গায় বিশ্বাসের ব্যতিক্রম নেই, সেটা হল নববর্ষ। নববর্ষে আমরা পুরোপুরি বাঙালি হই।' 

বাঙালি সত্তার মাহাত্ম্য নিয়ে তিনি বলেন, 'আমরা যে পথেরই হই, যে বিশ্বাসেরই মানুষ হই না কেন, আজ আমরা সবাই বাঙালি হয়ে যাই।  বাঙালিকে যদি তার পায়ে দাঁড়াতে হয় তবে তাকে বাঙালি হয়েই দাঁড়াতে হবে। আমরা যেন চিরদিন বাঙালি হয়েই থাকি।' 

কৈশোরের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সর্বজন শ্রদ্ধেয় আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, 'তখন ঢাকা শহরে মানুষ কম ছিল।আমি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে একা একা আবৃত্তি করতাম, চলে যেতাম। তখন আমায় কেউ পাগল বলবে কি? সে মানুষই তো ছিল না। রাস্তায় এত কম লোক ছিল। সে স্বাধীনতা নিয়েছি।'

এখন দিন বদলেছে, রাজধানীতে নাগরিক উৎসব মানে লোকে লোকারণ্য। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন,  'এখন কোনো স্বাধীনতা নেই। শুধু শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা।' তবুও নগর জীবনে আজ যে উৎসব তাকে নানা উপচারে বরণ করে নিতে তো হবেই। 

তিনি বলেন, 'নব মানে নতুন, আমরা আজ নতুনের জয়গান গাইব।'

অনুষ্ঠানে হাজার কণ্ঠে বর্ষবরণ' অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন ফেরদৌস আরা, ফাহিম হোসেন, কিরণ চন্দ্র রায়, প্রিয়াংকা গোপ, অনন্যা আচার্য, শারমিন। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর পরিবেশনায় মুগ্ধতা ছড়িয়ে যায়।

জয়ন্ত/মেহেদী/