
দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও লেখক আরজ আলী মাতুব্বরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৮৫ সালে আজকের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বরিশাল শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ছোট্ট গ্রাম লামচর। এই গ্রামেরই এক গরিব কৃষক পরিবারে ১৯০০ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে অভাব-অনটনের কারণে স্কুল ছেড়ে দিতে হলেও পরবর্তী জীবনে আরজ আলী মাতুব্বর স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠেন।
নিজের চেষ্টায় জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা শাখায় পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও আরজ আলী মাতুব্বর অতিথি শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিয়েছেন ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্বাধীনভাবে দর্শন, বিজ্ঞান ও ধর্ম বিষয়ে মত প্রকাশ করে আজীবন কুসংস্কার এবং গোঁড়ামির বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন। এ জন্য সমাজের এক শ্রেণির মানুষ, এমনকি অনেক সময় রাষ্ট্রীয় বাহিনীরও চক্ষুশূল হয়েছেন তিনি।
প্রথাবিরোধী এই লেখককে অনেক বাধা পেরিয়ে নিজের বই প্রকাশ করতে হয়েছে। ১৯৭৩ সালে তার প্রথম বই ‘সত্যের সন্ধানে’ প্রকাশিত হয়। জীবদ্দশায় প্রকাশিত তার উল্লেখযোগ্য চারটি গ্রন্থ হচ্ছে: ‘সত্যের সন্ধানে’ (১৯৭৩), ‘সৃষ্টির রহস্য’ (১৯৭৭), ‘অনুমান’ (১৯৮৩) ও ‘স্মরণিকা’ (১৯৮২)। মৃত্যুর কিছুকাল পরে প্রকাশিত হয় আরেকটি বই ‘মুক্তমন’ (১৯৮৮)।
তার বেশ কিছু লেখা ‘আরজ আলী মাতুব্বর রচনাবলী’ নামে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
আরজ আলী মাতুব্বর বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য ছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেহদানের অঙ্গীকার করে যান।