ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর সৃষ্টির ভুবন

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৯ পিএম
স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর সৃষ্টির ভুবন
গৌতম রায়

বাংলা কথাসাহিত্যে স্মরণজিৎ চক্রবর্তী এক বিস্ময়। গত শতকের নয়ের দশক থেকে যখন আমরা তার রচিত কথাসাহিত্য পড়তে শুরু করি, তার আগে তাকে মূলত আমরা জানতাম একজন কবি হিসেবে। বহু পত্রপত্রিকায় স্মরণজিতের কবিতা আমরা পড়েছি। মুগ্ধ বিস্ময়ে পড়েছি। পড়ে মন ভালো হয়েছে। দুঃখের তিমিরের উজানে বওয়া এক ফল্গুধারা মনে হয়েছে তার কবিতা।

মুগ্ধচিত্তে যখন তার ছোটগল্প এবং উপন্যাস পড়তে শুরু করলাম। তার গদ্য পড়ার প্রথম দিকেই আমরা ভেবেছিলাম, বাংলা কথাসাহিত্যের জগতে একটা নতুন ধারার সংযোজন হতে চলেছে। আমাদের সেই প্রত্যাশা আজ অবধি পূরণ করে চলেছেন স্মরণজিৎ। সময়োচিত বিন্যাসে সময়কে ধরার এক অদ্ভুত জাদুকাঠি লুকিয়ে আছে তার কলমে।

গত শতকের নয়ের দশকে স্মরণজিতের লেখা যখন আমরা প্রথম পড়ি, তখনো সময়ের বদলকে মেনে নেওয়ার ক্ষেত্রে সমাজের ভ্রুকুটি বেশ বড় রকমেরই ছিল। সাতের দশক বা আটের দশকেরও যে বাঙালি সমাজের প্রেম, বিশেষ করে শহুরে মানুষজনের প্রেম, সেখানে সমাজের ভাঙাগড়ার এক অদ্ভুত বিন্যাস ছিল। যে বাঙালিসমাজ নানা ধরনের আর্থ-সামাজিক ঘূর্ণাবর্তের মধ্যদিয়ে প্রেমের জয়গান গাইছে, কিন্তু সেই জয়গান গাওয়ার জন্য কুশীলবদের যে সংগ্রাম বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে হৃদয়বিদারক হয়ে ওঠা প্রেম বা শরীর-  এসব নিয়ে লিখতে গেলে সমাজ তখন নাক শিটকোচ্ছে। লেখককে দূর দূর করেছে। আদালত পর্যন্ত টানাটানি হয়েছে। বুদ্ধদেব বসু থেকে সমরেশ বসু- এই সময়কালটাও আমরা দেখেছি।

তাই যখন নয়ের দশকের গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক অদল-বদলের সমসাময়িকতায় আমরা স্মরণজিৎতের লেখা পাচ্ছি, যে খোলা হাওয়া স্পন্দন তার লেখার মধ্যদিয়ে আমাদের মনের গহিন কুঠুরিকে আনন্দে মাতাচ্ছে, তা যেন সত্যিই এক অভিনব। তখন মনে হচ্ছে; সময়ের বদলকে যদি লেখক ধরতে না পারেন, তাহলে তো সেই চার্লস ডিকেন্সে সময়ের বর্ণনার প্রেক্ষিত, লেখায় অনুল্লিখিতই থেকে যাবে।

সময়কে ধরতে পারাই তো লেখকের সব থেকে বড় মুনশিয়ানা। আর এই মুনশিয়ানা প্রকাশের ক্ষেত্রে সময়ে অবস্থান করে, সময়ের কুশীলবদের যদি উপলব্ধিতে লেখক না আনতে পারেন- তবে সেই লেখার মধ্যে ‘সময়’ নামক মহাকালটি আদৌ ধরা দেয় না। সময়ের প্রেক্ষিত ঘিরে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় যখন ‘সেই সময়’ বা ‘প্রথম আলো’র মতো মহাকাব্য রচনা করছেন, তখন তো পড়তে পড়তে আজও আমাদের মনে হয় লেখক বোধ হয় সেই সময়কালে অবস্থান করা কোনো ব্যক্তিত্ব।

আবার যখন ‘ছিন্নবাধা’ থেকে ‘যুগ যুগ জীয়ে’ হয়ে ‘প্রজাপতি’, ‘পাতক’, ‘বিবর’ রচনা করছেন সমরেশ বসু, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই আমাদের মনে হয় যেন স্বকালে অবস্থান করেই সেই সময়কে সাহিত্যের প্রতিবিম্বে বিম্বিত করছেন লেখক।

স্মরণজিৎ চক্রবর্তী

স্মরণজিৎ ভাবীকাল বা অতীতকাল ঘিরে খুব লেখেন না। তার লেখায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তার নিজের সময়টা নানা বর্ণিল রূপ নিয়ে ফুটে ওঠে। যেখানে দুঃখ আছে। যন্ত্রণা আছে। কষ্ট আছে। কিন্তু সব ছাপিয়ে আছে এক অপার আনন্দ। দুঃখের সাম্রাজ্যই যে মানুষের জীবনের শেষ কথা নয়, আগামীর দিকে এগিয়ে যাওয়া- সেটাই হলো দুঃখকে অতিক্রম করার মহৌষধ- স্মরণজিৎ তার প্রতিটি লেখাতেই যেন নিত্যনতুন করে সেই বার্তাই আমাদের সামনে তুলে ধরছেন। সে বার্তাটি যেমন কিশোর, তরুণ, সদ্য যুবকদেরও উদ্ভাসিত করছে। ঠিক তেমনিই যৌবন উপান্তে এসে কিংবা প্রৌঢ়ত্বে ভাসতে ভাসতে একজন মানুষ, নিজেকে কান্না-হাসির দোল দোলানোর মধ্যদিয়ে নতুন করে উপলব্ধি করবেন, জীবনযন্ত্রণাকে বইয়ে যাওয়ার মধ্যে ‘হতাশা’ এই শব্দটির কোনো জায়গা নেই। এই বোধ থেকেই যেন স্মরণজিৎ তার সৃষ্টির পাল তুলে দিয়েছেন।

নতুন প্রজন্মের যেন হৃদস্পন্দন উপলব্ধি করতে পারেন স্মরণজিৎ। তার লেখার প্রতিটি চরিত্রের মধ্যে সদর এবং মফস্বলের এক অদ্ভুত শব্দ যেন আমরা শুনতে পাই। শাকিন কলকাতা, মহানগরের একদম প্রাণকেন্দ্রে থাকা একজন কিশোর-তরুণ-যুবক, তার ভাবনার খেয়াতরী, আবার শহরতলির সমবয়স্ক মানুষের আঙ্গিকের সাদৃশ্য বা বৈসাদৃশ্য। আবার যেন একটি দূর কোন দিকশূন্যপুরের এক শ্যামলা কিশোরীর মনের কথা। বেঁচে থাকার লড়াই। আর সেই লড়াইয়ের মধ্যে সব সময় একটা প্রাণস্পন্দন। কোনো হতাশা নয়। হতাশাকে অতিক্রম করতে পারার এক অদ্ভুত মৃতসঞ্জীবনী সুধা- এটাই হলো স্মরণজিৎতের লেখার একটা নির্যাস।

যারা বেঁচে থাকার আনন্দে আনন্দ পান না- তাদের কারও কারও কাছে এই বেঁচে থাকার আনন্দের মধ্যে এক ধরনের পুনরুক্তির ধারণা মালুম হয়। আসলে বেঁচে থাকাটাই যে নিত্যনতুন আনন্দের আনাগোনার মধ্যদিয়ে, দিনের পরে দিনকে কাটিয়ে দেওয়া- এ উপলব্ধি যারা করতে পারেন না, তাদের মনে হয় সময়ের কথকথা হলো থোরবরি খাড়া। তারা সময়কে কল্পনার জগতে রঞ্জিত করে, সময়ের থেকে দূরে নিয়ে গিয়ে, এক ধরনের কৌতুকে করুণায় অবসর বিনোদনের উপকরণ হিসেবে নিজেকে দেখতে ভালোবাসেন। তাই তাদের কাছে মনে হয় স্মরণজিৎতের লেখায় রিপিটেশন।

আসলে জীবনের রিপিটেশনকে বোঝার মতো মন যে সেই মানুষগুলোর থাকে না। যে সত্তর-উত্তীর্ণ বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা, শচীনকর্তার গান- ‘তুমি এসেছিলে পরশু, কাল কেন আসনি, তুমি কি আমায় বন্ধু, কাল ভালোবাসনি’, শুনে আর্থ্রাইটিসের ব্যথায় কোমর দোলাতে না পারলেও, মনটা দোলাতে পারেন, তিনি কিন্তু জীবনের রূপ-রস-গন্ধকে যথার্থভাবে অনুভব করতে পারেন। উপলব্ধি করতে পারেন।

এভাবেই আমরা স্মরণজিতের সামগ্রিক সৃষ্টিকে বর্ণনা করতে পারি। এখানেই স্মরণজিতের লেখকসত্তার সব থেকে বড় সাফল্য। টিনএজারদের কাছেও যেমন তার লেখা এক ধরনের মনের প্রাণের জিনিস হয়ে ওঠে, ঠিক তেমনিই আবার জীবন উপান্তে চলে আসা একজন মানুষের কাছেও স্মরণজিৎতের লেখা হয়ে ওঠে মনের আনন্দ, প্রাণের আরাম।

স্মরণজিৎতের সৃষ্টির আরেকটি বড় উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো শব্দের প্রয়োগ। সমসাময়িকতার সঙ্গে এত সাযুজ্যপূর্ণ শব্দ তার লেখায় গাঁথা হয় যে, লেখা পড়লে মনে হয় না আলাদা করে আমরা একটা কিছু দেখছি। আলাদা করে আমরা একটা কিছু পড়ছি। আমাদের মনে হয় যেন, চলমান জীবনের মধ্যদিয়ে একটি আলেখ্য একেবারে যেন স্লাইডের পর স্লাইড হিসেবে লেখক আমাদের সামনে তুলে ধরছেন। যে ভাষায় আমরা কথা বলি, যে ভাষায় আমরা ঝগড়া করি, যে ভাষায় আমরা স্বপ্ন দেখি, যে ভাষায় আমরা কাঁদি, আনন্দ করি, বিষণ্ন হই, রেগে যাই- তার প্রতিটির এত যথার্থ প্রতিফলন- এটা সমসাময়িক বাংলা ভাষায় কথাসাহিত্যের চর্চার ক্ষেত্রে স্মরণজিৎ চক্রবর্তী একটি নতুন ধারা সংযোজন করেছেন, একথা বললে মনে হয় না খুব ভুল হবে।

সমসাময়িকতাকে ধরতে পারাই তো একজন লেখকের সব থেকে বড় কৃতিত্ব। আর এ কৃতিত্ব প্রমাণের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিককালের বাংলা সাহিত্যের কথাকারদের মধ্যে স্মরণজিৎ যেভাবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন, তা এক কথায় বিশেষ রকমের উল্লেখের দাবি রাখে। স্মরণজিৎ এপার বাংলায় তার নিজের সমসাময়িক কিছু লেখকের মতো তত্ত্বনির্ভর, জীবনবিমুখ, অভিধান-নির্ভর শব্দাবলির ভারে আকীর্ণ সাহিত্য সৃষ্টি করেন না। নিজেকে পণ্ডিত হিসেবে দেখানোর কোনো মন-মানসিকতা স্মরণজিৎতের মধ্যে নেই। তাই তেমন দৃষ্টিভঙ্গি তিনি কখনোই নিজের সৃষ্টির মধ্যে জোর করে চাপিয়ে দেন না। এই যে বৈশিষ্ট্যটা স্মরণজিৎতের লেখার মধ্যদিয়ে ফুটে ওঠে, এটা এপার বাংলায়, নয়ের দশকের লেখক বা যাদের জন্ম সাতের দশকে বা পরবর্তী সময়ে, তাদের প্রায় সবার মধ্যেই দুর্লভ।

এখানেই স্মরণজিৎ একটা বিশেষ ধরনের ব্যতিক্রম। নিজেকে বা নিজের সৃষ্টিকে অহেতুক বিতর্কিত করে তোলে, বইয়ের বিক্রি বাড়ানো বা টিআরপি বাড়ানোর সস্তা পথে স্মরণজিৎ কখনো হাঁটেন না। আর সেই কারণেই হয়তো সমসাময়িক কারও কারও তিনি চক্ষুশূল, তা সত্য! যে কথা বারবার বলতে হয়- সাম্প্রতিককালের বাংলা কথাসাহিত্যে এক ব্যতিক্রমী ধারার জনক স্মরণজিৎ চক্রবর্তী। যে ব্যতিক্রমী ধারার সব থেকে বড় বৈশিষ্ট্য হলো- শত দুঃখ-কষ্ট ও যন্ত্রণার মধ্যেও শেষ পর্যন্ত জীবন যে মৃত্যুর থেকেও অনেক অনেক বড়, বেঁচে থাকা যে হতাশার থেকে অনেক অনেক ধ্রুব সত্য- তা যেন একেবারে জীবন্ত হয়ে উঠেছে স্মরণজিৎতের সৃষ্টির মধ্যে।

লেখক: প্রাবন্ধিক ও গল্পকার
[email protected]

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ০২:০০ পিএম
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ও তার চিত্রকর্ম

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ২৮ মে। ১৯৭৬ সালের আজকের দিনে তিনি মারা যান। 

কিশোরগঞ্জ জেলায় ১৯১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন জয়নুল আবেদিন। তার ডাক নাম ছিল টুনু। ছোটবেলা থেকেই আঁকাআঁকির প্রতি ছিল তার দারুণ ঝোঁক। পাখি, পাখির বাসা, মাছ, গরু-ছাগল, ফুল-ফলসহ অনেক কিছুই অনায়াসে এঁকে ফেলতেন নিখুঁতভাবে। শিল্পশিক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে তিনি ভর্তি হন কলকাতার আর্ট স্কুলে। পূর্ববঙ্গ থেকে কলকাতার আর্ট স্কুলে পড়তে যাওয়া প্রথম বাঙালি মুসলিম ছাত্র জয়নুল আবেদিন। সেখানে তিনি ড্রইং ও পেইন্টিং বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষাজীবনের শেষবর্ষে সেখানেই শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। 

১৯৪৭ সালে ভারত উপমহাদেশ ভাগ হয়ে যাওয়ার পর জয়নুল আবেদিন ঢাকায় চলে আসেন। আরমানিটোলা নর্মাল স্কুলে শিল্পশিক্ষক হিসেবে চাকরি নেন। 

জয়নুল ১৯৪৮ সালে পুরান ঢাকার জনসন রোডের ন্যাশনাল মেডিকেল স্কুলের একটি জীর্ণ বাড়িতে ১৮ জন ছাত্র নিয়ে ‘গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব আর্টস্’ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন এই প্রতিষ্ঠানের প্রথম শিক্ষক। ১৯৫৬ সালে এটি পূর্ব পাকিস্তান চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত তিনি এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

স্বাধীনতার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে চারুকলা ইনস্টিটিউট এবং বর্তমানে চারুকলা অনুষদ হিসেবে অধিষ্ঠিত রয়েছে। ১৯৭৫ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে লোকশিল্প জাদুঘর এবং ময়মনসিংহে জয়নুল সংগ্রহশালা গড়ে তোলেন।

জয়নুল আবেদিনই বাংলাদেশের অন্যতম অগ্রণী খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী। তার বিখ্যাত ছবিগুলো হচ্ছে দুর্ভিক্ষ-চিত্রমালা, সংগ্রাম, সাঁওতাল রমণী, ঝড় ইত্যাদি। ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ নিয়ে আঁকেন তেতাল্লিশের মন্বন্তর। ১৯৬৯ সালে গ্রামবাংলার উৎসব নিয়ে আঁকেন ৬৫ ফুট দীর্ঘ ছবি ‘নবান্ন’। ১৯৭০ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে লাখো উপকূলবাসীর মৃত্যুতে ৩০ ফুট দীর্ঘ ‘মনপুরা’র মতো হৃদয়স্পর্শী চিত্র, ফিলিস্তিনি যুদ্ধক্ষেত্রের দৃশ্যাবলি, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্কেচের কালজয়ী শিল্পী তিনি। ১৯৭২ সালে তাকে বাংলা একাডেমির সভাপতি করা হয়। 

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার ‘কংগ্রেস ফর ওয়ার্ল্ড ইউনিটি’র সদস্য নির্বাচিত হন। চিত্রকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৫৯ সালে পাকিস্তানের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার ‘প্রাইড অব পারফরম্যান্স’ পান। ১৯৭৪ সালে তার প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির অন্যতম উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাজধানী ঢাকার বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে তার ৭০০ ছবির বিশাল সংগ্রহশালার নাম রাখা হয়েছে ‘জয়নুল আবেদিন গ্যালারি’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদেও (পূর্বতন চারুকলা ইনস্টিটিউট) তার নামে একটি গ্যালারি রয়েছে। 

কলকাতায় মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে নজরুলের জন্মবার্ষিকী উদযাপন

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ০৪:২৭ পিএম
আপডেট: ২৭ মে ২০২৫, ০৪:৪৩ পিএম
কলকাতায় মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে নজরুলের জন্মবার্ষিকী উদযাপন
কলকাতার মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।

সোমবার (২৬ মে) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান ও পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান।

অনুষ্ঠানে ছায়ানট (কলকাতা)-এর পক্ষ থেকে নজরুলের ছবি ও তথ্য সম্বলিত স্মারক মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে প্রাণের কবি নজরুলকে ছায়ানটের শিল্পীরা স্মরণ করেন তাঁর গান ও কবিতায়।

ছায়ানটের সভাপতি সোমঋতার পরিচালনায় সমবেত সঙ্গীতে অংশগ্রহণ করেন - সোমা রায় বর্মন, গৌরী ধর, বিচিত্রা ঘোষ, প্রিয়াঙ্কা পাল, শ্রমণা বিশ্বাস, গোপা মজুমদার, কুহু সেনগুপ্ত, চম্পা মিত্র ও সুরূপা মল্লিক।

তাঁরা পরিবেশন করেন নজরুলের জাগরণমূলক গান।

কবিতা কোলাজ ‘সাম্যবাদী নজরুল’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন তিস্তা দে, দেবযানী বিশ্বাস, সুকন্যা রায়, ইন্দ্রাণী লাহিড়ী, অনিন্দিতা ঘোষ এবং দেবলীনা চৌধুরী।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পিয়ালী পাঠক।

১৯৩৪ সালে মহামেডান স্পোটিং ক্লাব লীগ চ্যাম্পিয়ান হওয়ায় ক্রীড়াপ্রেমী কাজী নজরুল ইসলাম ‘মোবারকবাদ’ কবিতাটি রচনা করেছিলেন। এই কবিতা শুধুমাত্র তাঁর ফুটবল-প্রীতির বহিঃপ্রকাশ নয়, তৎকালীন ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তরুণ সমাজকে উজ্জীবিত করেছিলেন নজরুল। নজরুলের ‘মোবারকবাদ’ কবিতাটিতে তারই ইঙ্গিত রয়েছে। এরপর মহামেডান ক্লাব পর পর ৫ বার লীগ জয় করে রেকর্ড তৈরি করে। নজরুল লিখলেন-

এই ভারতের অবনত শিরে তোমরা পরালে তাজ, সুযোগ পাইলে শক্তিতে মোরা অজেয়, দেখালে আজ!
এ কি অভিনব কীর্তি রাখিলে নিরাশাবাদীর দেশে, আঁধার গগনে আশার ঈদের চাঁদ উঠিল যে হেসে!

সওগাত সম্পাদক নাসিরুদ্দীন সাহেব মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সব খেলোয়াড়দের ফটো তুলে, খেলার বিবরণ ও ছবি সহযোগে সওগাতের বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করলেন। তখন মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের খেলোয়াড়রা কতটুকু জনপ্রিয় ছিলেন, তা জানা যায় তাঁর স্মৃতিকথায় -

‘বড় সাইজের আর্ট পেপারে সকল খেলোয়াড়ের ছবি ছাপালাম দেয়ালে রাখবার মত করে এবং তা দশ হাজার ছেপে বাজারে ছাড়লাম। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই সব বিক্রি হয়ে গেল। পুনরায় মুদ্রণ করলাম। হাজার হাজার লোকের গৃহসজ্জা হলো মহামেডান দলের এই দেয়াল ছবি। কিছুকাল পরে দেখলাম, আমার উক্ত ছবি হুবহু নকল করে রুমালের ওপর ছাপা হয়ে কলকাতায় এসেছে জাপান থেকে। জাপানে ছাপা এই রুমালগুলিও অসংখ্য পরিমাণে বিক্রি হয়েছিল।’ 

টানা বেশ কয়েক বছর এই দলের বিজয়ী হওয়ার ঘটনা মুসলমান সমাজে নবপ্রাণের সঞ্চার করল।

অমিয়/

ত্রিশালে বৃষ্টিতেও উৎসবমুখর নজরুলের জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠান

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ১০:৪৩ এএম
আপডেট: ২৭ মে ২০২৫, ১০:৪৬ এএম
ত্রিশালে বৃষ্টিতেও উৎসবমুখর নজরুলের জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠান
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ময়মনসিংহের ত্রিশালের দরিরামপুরে তিন দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজনের দ্বিতীয় দিন সোমবার (২৬ মে) বৃষ্টিতে বিড়ম্বনা উপেক্ষা করে শ্রোতা-দর্শনার্থীরা ভিড় করেন । খবরের কাগজ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ময়মনসিংহের ত্রিশালের দরিরামপুরে তিন দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

সোমবার (২৬ মে) বিকেলে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে দরিরামপুর নজরুল মঞ্চে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ। অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হায়দার আলী, ময়মনসিংহের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) তাহমিনা আক্তার, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জিয়া আহমেদ সুমন ও ত্রিশাল সরকারি নজরুল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। 

এদিকে একই জায়গায় উন্মুক্ত মাঠে বসেছে মেলা। অনুষ্ঠান ও মেলা শুরুর প্রথম দিন বিকেলে মেঘলা আকাশ আর বৃষ্টির ঘটনা ঘটে। এতে অনুষ্ঠানস্থলে পানি জমে যাওয়ায় দর্শনার্থী ও অতিথিদের মধ্যে কিছুটা বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়। তারপরও বিড়ম্বনা উপেক্ষা করেই আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলমান থাকে। মেলার মাঠে পানি জমার কারণেও দর্শনার্থী ও ব্যবসায়ীদের কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। তবে ধীরে ধীরে পানি সরে যাওয়ায় আবারও বেচাকেনার ধুম পড়ে।

শেরপুর থেকে এসে মেলায় প্লাস্টিকের ফুলের দোকান দিয়েছেন জহির মিয়া। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘মেলার প্রথম দিন বৃষ্টিপাতে বেচাকেনা তুলনামূলক কম হয়েছে। তবে দ্বিতীয় দিন সোমবার বেচাকেনা বেড়েছে। তিন দিনব্যাপী মেলা হবে। মেলার সময় বাড়িয়ে পাঁচ দিনব্যাপী করা হলে আমাদের জন্য ভালো হতো।’

পরিবারের পাঁচ সদস্যকে নিয়ে মেলায় এসেছেন মামুনুর রশীদ। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘কবি নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত এলাকা ত্রিশাল। এ জন্য নজরুলকে নিয়ে আমরা আরও বেশি গর্ববোধ করি। প্রতিবছর এ দিনটির জন্য আমরা অপেক্ষায় থাকি। অনুষ্ঠান আর মেলা উপভোগ করেন সব শ্রেণি-পেশার লোকজন। পরিবারের সবাই পছন্দের জিনিস কেনাকাটা করবে। তাই মেলায় নিয়ে এসেছি।’

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, ‘তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান ও মেলার আয়োজন করা হয়েছে। বৃষ্টির কারণে প্রথম দিন কিছুটা বিড়ম্বনার সৃষ্টি হলেও অনুষ্ঠান চলমান ছিল। দ্বিতীয় দিনেও অনুষ্ঠান দেখতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এসেছেন। মেলায়ও দর্শনার্থী বাড়ছে।’

এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান: কাজী নজরুলের উত্তরাধিকার’। গত রবিবার ২৫ মে থেকে শুরু হওয়া অনুষ্ঠান ও মেলা ২৭ মে পর্যন্ত চলবে। সমাপনী অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

জমকালো আয়োজনে আমরা কুঁড়ি’র ৩৪ বছর উদযাপন

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ০৮:৪৫ এএম
জমকালো আয়োজনে আমরা কুঁড়ি’র ৩৪ বছর উদযাপন
আমরা কুঁড়ি’র ৩৪ বছর পূর্তি উদযাপন

শিশুদের কলকাকলি ও আনন্দঘন পরিবেশে জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন আমরা কুঁড়ি’র ৩৪ বছর পূর্তি উদযাপন করা হয়েছে।

গত শুক্রবার (২৩ মে) বিকেল ৫টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী।

আমরা কুঁড়ি’র পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান এএসএম কামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারর্সনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম।

প্রধান আলোচক ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারর্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ আলমগীর।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ ও জিয়া শিশু-কিশোর সংগঠনের সভাপতি রাশেদা ওয়াহিদ মুক্তা।

বক্তব্য রাখেন সংগঠনের চেয়ারম্যান মুশতাক আহম্মদ লিটন ও মহাসচিব ফেরদৌস আরা বন্যা।

মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মানস করের পরিচালনায় আমরা কুঁড়ি কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার গীতিনৃত্য নাট্য ‘তুষার মালা’ ও জাতীয় নৃত্য প্রতিযোগিতা বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণের মধ্যে দিয়ে চমৎকার এ আয়োজন শেষ হয়।

কিশোরগঞ্জের প্রতিযোগী নুসাইবা অনাদি তিসমি সাধারণ, লোক ও দলীয় নৃত্যে প্রথম স্থান লাভ করে।

অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন তাছলিমা জাহান রিবা ও নূর ই নাজনীন তৃপ্তি।

অমিয়/

ফরিদপুরে কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মোৎসব উদযাপন

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৫, ০৩:৫৭ পিএম
আপডেট: ২৫ মে ২০২৫, ০৪:০৯ পিএম
ফরিদপুরে কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মোৎসব উদযাপন
ফরিদপুরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মোৎসব পালিত হয়েছে। ছবি: খবরের কাগজ

ফরিদপুরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মোৎসব উদযাপন হয়েছে। এ সময় তার জীবনী ও লেখা নিয়ে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

শনিবার (২৪ মে) বিকেলে সাহিত্য পরিষদের আয়োজনে ফরিদপুর জেলা পরিষদের হল রুমে নজরুল জন্মোৎসব পালিত হয়। 

উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। 

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমান সমাজে একান্ত নজরুল আবশ্যক, কারণ নজরুল বৈশ্বিক মানবিকতার কথা বলেছেন। বর্তমান বিশ্ব বিবেকের উপস্থিতি নেই। গাজায় যে অমানবিকতা চলছে, বিনা কারণে মানুষ হত্যা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে কথা না বলে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ব্যবসার প্রসার করছে। অস্ত্র ও আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র কেনা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। বিশ্ব ভয়ানক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। পারমাণবিক বোমার ভয়াবহতার শঙ্কা প্রকাশ করছে। এজন্য আমাদের নজরুলকে প্রয়োজন। কারণ নজরুল দেশ ও আন্তর্জাতিক মানবিকতার কথা বলেছেন।’ 

ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এম এ সামাদ, সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মফিজ ইমাম মিলন ও সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক তালুকদার আনিসুল ইসলাম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে কাজী নজরুল ইসলামের রচিত কবিতা ও গান দর্শক-শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। 

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলামকে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

সঞ্জিব দাস/সুমন/