পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান ও পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান।
অনুষ্ঠানে ছায়ানট (কলকাতা)-এর পক্ষ থেকে নজরুলের ছবি ও তথ্য সম্বলিত স্মারক মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
.jpg)
অনুষ্ঠানে প্রাণের কবি নজরুলকে ছায়ানটের শিল্পীরা স্মরণ করেন তাঁর গান ও কবিতায়।
ছায়ানটের সভাপতি সোমঋতার পরিচালনায় সমবেত সঙ্গীতে অংশগ্রহণ করেন - সোমা রায় বর্মন, গৌরী ধর, বিচিত্রা ঘোষ, প্রিয়াঙ্কা পাল, শ্রমণা বিশ্বাস, গোপা মজুমদার, কুহু সেনগুপ্ত, চম্পা মিত্র ও সুরূপা মল্লিক।
তাঁরা পরিবেশন করেন নজরুলের জাগরণমূলক গান।

কবিতা কোলাজ ‘সাম্যবাদী নজরুল’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন তিস্তা দে, দেবযানী বিশ্বাস, সুকন্যা রায়, ইন্দ্রাণী লাহিড়ী, অনিন্দিতা ঘোষ এবং দেবলীনা চৌধুরী।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পিয়ালী পাঠক।

১৯৩৪ সালে মহামেডান স্পোটিং ক্লাব লীগ চ্যাম্পিয়ান হওয়ায় ক্রীড়াপ্রেমী কাজী নজরুল ইসলাম ‘মোবারকবাদ’ কবিতাটি রচনা করেছিলেন। এই কবিতা শুধুমাত্র তাঁর ফুটবল-প্রীতির বহিঃপ্রকাশ নয়, তৎকালীন ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তরুণ সমাজকে উজ্জীবিত করেছিলেন নজরুল। নজরুলের ‘মোবারকবাদ’ কবিতাটিতে তারই ইঙ্গিত রয়েছে। এরপর মহামেডান ক্লাব পর পর ৫ বার লীগ জয় করে রেকর্ড তৈরি করে। নজরুল লিখলেন-
এই ভারতের অবনত শিরে তোমরা পরালে তাজ, সুযোগ পাইলে শক্তিতে মোরা অজেয়, দেখালে আজ!
এ কি অভিনব কীর্তি রাখিলে নিরাশাবাদীর দেশে, আঁধার গগনে আশার ঈদের চাঁদ উঠিল যে হেসে!

সওগাত সম্পাদক নাসিরুদ্দীন সাহেব মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সব খেলোয়াড়দের ফটো তুলে, খেলার বিবরণ ও ছবি সহযোগে সওগাতের বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করলেন। তখন মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের খেলোয়াড়রা কতটুকু জনপ্রিয় ছিলেন, তা জানা যায় তাঁর স্মৃতিকথায় -
‘বড় সাইজের আর্ট পেপারে সকল খেলোয়াড়ের ছবি ছাপালাম দেয়ালে রাখবার মত করে এবং তা দশ হাজার ছেপে বাজারে ছাড়লাম। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই সব বিক্রি হয়ে গেল। পুনরায় মুদ্রণ করলাম। হাজার হাজার লোকের গৃহসজ্জা হলো মহামেডান দলের এই দেয়াল ছবি। কিছুকাল পরে দেখলাম, আমার উক্ত ছবি হুবহু নকল করে রুমালের ওপর ছাপা হয়ে কলকাতায় এসেছে জাপান থেকে। জাপানে ছাপা এই রুমালগুলিও অসংখ্য পরিমাণে বিক্রি হয়েছিল।’
টানা বেশ কয়েক বছর এই দলের বিজয়ী হওয়ার ঘটনা মুসলমান সমাজে নবপ্রাণের সঞ্চার করল।
অমিয়/