
প্রাক্তন বিমান কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আলহাজ্ব এ কে এম বদরুদ্দোজা মারা গেছেন।
স্থানীয় সময় শনিবার (২৮ জুন) রাতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির পেন্ উইলিয়াম মেডিসিন হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন ।
বিমান কর্মকর্তা ছাড়াও তিনি ছিলেন সংগীতশিল্পী, গীতিকবি, সমাজসেবক ও একজন মানবিক চিন্তাধারার মানুষ। তার কর্ম ও অবদান যেন ছড়িয়ে আছে এদেশের আকাশ থেকে মাটির গভীর পর্যন্ত।
১৯৩৮ সালের ৯ নভেম্বর চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মিঠাছড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে এ কে এম বদরুদ্দোজা জন্মগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের জাতীয় বিমান সংস্থা 'বিমান'-এর শুরুর দিকের গর্বিত সঙ্গী ছিলেন তিনি। লন্ডন, ফ্রাঙ্কফুর্ট, জেদ্দা, কুয়ালালামপুর, কুয়েত, কাতার, সিঙ্গাপুরসহ বহু আন্তর্জাতিক গন্তব্যে স্টেশন ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে এসব প্রতিষ্ঠানসহ, দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন নিজের একাগ্রতা ও অসামান্য পেশাদারিত্বের মাধ্যমে। যে সময় বাংলাদেশ নবীন এক রাষ্ট্র, তখন বদরুদ্দোজার মতো নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা ছিলেন আস্থা ও সম্ভাবনার প্রতীক।
বাংলাদেশ বেতার ও বিটিভির প্রথম শ্রেণির সংগীতশিল্পী হিসেবে তার পদচারণাও ছিল শক্তিশালী। আধুনিক গান, নজরুলগীতি, রবীন্দ্রসংগীত কিংবা লোকসংগীত- প্রতিটি শাখায় ছিল তার সুরের স্নিগ্ধতা। গীতিকার ও সুরকার হিসেবেও ছিলেন প্রশংসিত। মঞ্চে তার উপস্থিতিই ছিল যেন এক আনন্দ-উল্লাসের উৎস।
ব্যক্তিজীবনে তিনি ছিলেন অতি সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত। কিন্তু তার কর্মজীবন ছিল অসাধারণ। নিজস্ব অর্থায়নে দেশে গড়ে তুলেছেন বহু স্কুল, কলেজ, মসজিদ ও মাদ্রাসা। দুস্থ মানবতার সেবায়, দরিদ্র শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নির্মাণে, গ্রামের জনপদের অবকাঠামোতে তার অবদান নিঃশব্দ এক বিপ্লবের মতো।
তার মৃত্যুতে এক প্রকৃত দেশপ্রেমিক, এক শিল্পমন, এক নীরব নির্মাতাকে হারালো দেশ।
মেহেদী/