
আজ ৪ জুলাই স্বামী বিবেকানন্দের মৃত্যুবার্ষিকী। ১৮৬৩ সালের ১২ জানুয়ারি কলকাতায় তার জন্ম। স্বামী বিবেকানন্দের জন্মগত নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রিয়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হিন্দুধর্ম, তথা ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শনের প্রচারে প্রধান ভূমিকা রেখেছিলেন।
ভারতে হিন্দু পুনর্জাগরণের তিনি ছিলেন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ-ভারতে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ধারণাটি প্রবর্তন করেন। বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। ভারতে বিবেকানন্দকে ‘বীর সন্ন্যাসী’ নামে অভিহিত করা হয়। তার জন্মদিনটি ভারতে জাতীয় যুব দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১৯০২ সালে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে স্বামী বিবেকানন্দ মারা যান।
কলকাতার এক উচ্চবিত্ত হিন্দু বাঙালি পরিবারে জন্ম নেওয়া বিবেকানন্দ ছোটবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি আকর্ষিত ছিলেন। তার গুরু রামকৃষ্ণদেবের কাছ থেকে তিনি শেখেন, সব জীবই ঈশ্বরের প্রতিভূ; তাই মানুষের সেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর বিবেকানন্দ ভারতীয় উপমহাদেশ ভালোভাবে ঘুরে দেখেন এবং ব্রিটিশ ভারতের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করেন। পরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ১৮৯৩ সালে বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় ভারত ও হিন্দুধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। সে সময় শিকাগো বক্তৃতার মাধ্যমে তিনি পাশ্চাত্য সমাজে প্রথম হিন্দুধর্ম প্রচার করেন। যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ইউরোপে তিনি হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অসংখ্য বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং ক্লাস নিয়েছিলেন।
স্বামী বিবেকানন্দের লেখা বইগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: শিকাগো বক্তৃতা, কর্মযোগ, রাজযোগ, জ্ঞানযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেদান্ত, ভাববার কথা, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, বর্তমান ভারত ইত্যাদি।