ঢাকা ১৯ বৈশাখ ১৪৩২, শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫
English

উড়ন্ত গাড়িতে প্রথম যাত্রী সংগীতশিল্পী জ্যঁ মিশেল জার

প্রকাশ: ১০ মে ২০২৪, ০২:৩৪ পিএম
উড়ন্ত গাড়িতে প্রথম যাত্রী সংগীতশিল্পী জ্যঁ মিশেল জার

বিশ্বে প্রথমবারের মতো যাত্রীসহ আকাশে উড়ে ইতিহাস গড়েছে উড়ন্ত গাড়ি ‘এয়ারকার’। এটি তৈরি করেছে স্লোভাকিয়ান উড়ন্ত গাড়ি তৈরি কোম্পানি ক্লাইনভিশন। সম্প্রতি এই উড়ন্ত গাড়িতে যাত্রী হিসেবে কিংবদন্তি ফরাসি সংগীতশিল্পী জ্যঁ মিশেল জার সফলভাবে প্রথম উড্ডয়ন সম্পন্ন করেছেন। ক্লাইনভিশনের তৈরি উড়ন্ত গাড়িতে করে স্লোভাকিয়ার আকাশে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন জার। এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত দেখে চমকে গেছেন দর্শকরাও।

এয়ারকার হলো ক্লাইনভিশনের তৈরি একটি দ্বৈত-মোডের যানবাহন, যা রাস্তায় গাড়ি ও আকাশে বিমান হিসেবে চালানো যায়। এটি দেখতে স্পোর্টস কারের মতো এবং এর চারটি চাকা ও ডানা রয়েছে। রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় ডানা ভাঁজ করা যায়। আবার আকাশে উড়ার সময় ডানা মেলানো যায়। এয়ারকারটিতে চালকসহ দুটি আসন রয়েছে।

লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে লেজার শোয়ে বিশ্বজোড়া মুগ্ধতা ছড়ানো জার সর্বদাই ইলেকট্রনিক এবং নিউ-এজ সংগীতধারার প্রথম সারির একজন শিল্পী। নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে ফরাসি এই সংগীতশিল্পী বেশ পরিচিত মুখ। সেই সুবাদেই স্লোভাকিয়ার কোম্পানি ক্লাইনভিশনের উড়ন্ত গাড়িতে প্রথম যাত্রী হিসেবে তিনি ছিলেন আদর্শ। এ কারণে স্লোভাকিয়ার পিস্ট্যানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রেকর্ড গড়ার মতো এ গাড়িতে দুবার উড্ডয়নের সুযোগ তিনি লুফে নেবেন, তা একরকম নিশ্চিত ছিল।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ জানিয়েছে, ইনস্টাগ্রামে এই অভিজ্ঞতার একটি ভিডিও শেয়ার করে জার বিস্তারিত লিখেছেন। তিনি লিখেছেন, তার কাছে এটি ছিল গৌরবের মুহূর্ত। এই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা তার আসন্ন ‘ব্রিজ ফ্রম দ্য ফিউচার’ কনসার্টের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। এই অসাধারণ অভিজ্ঞতা লাভ করার জন্য, তার ভক্তরাও তাকে ‘ভাগ্যবান’ বলে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।

পরীক্ষামূলক উড্ডয়নটি পিয়েস্টানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সম্পন্ন হয়। যেখানে এয়ারকারটি স্পোর্টস গাড়ি থেকে বিমানে রূপান্তর হয়। এই গাড়িটি উদ্ভাবন ও চালনা করেছেন অধ্যাপক স্টেফান ক্লেইন। স্কাই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘এক মুহূর্ত আপনি চালকের সঙ্গে কথা বলছেন, পরের মুহূর্তেই আপনি আকাশে উড়ছেন। অসাধারণ অভিজ্ঞতা!’ কোম্পানিটি এই দুর্দান্ত মুহূর্তটি তুলে ধরে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি মসৃণ ও ডানাযুক্ত স্পোর্টস গাড়ি রানওয়েতে চার চাকায় চলছে এবং তারপরই আকাশে উড়ে যাচ্ছে। সফল টেকঅফ ও ল্যান্ডিং পরীক্ষার পর ২০২২ সালে এয়ারকার ফ্লাইটের অনুমতি পায়।

ফরাসি ইলেকট্রনিক শিল্পী জ্যঁ মিশেল জার স্লোভাকিয়ায় উড্ডয়ন করার পরে ক্লাইনভিশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যান্টন জাজ্যাক বলেছেন, ‘প্রযুক্তি উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা একে ব্যাটারিচালিত করে ফেলব। আমরা রাস্তা ও আকাশের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে আনছি। গাড়িগুলোকে সেই স্বাধীনতা দিচ্ছি, যেমন এটি স্বাধীনতার প্রতীক হয়েছিল ৫০ বছর আগে।’

আর এই স্বাধীনতার জন্য, কেবল চালকের লাইসেন্স ও পাইলটের লাইসেন্সই নয়, এয়ারকার নামের গাড়ি চালানোর জন্য দুই থেকে তিন মাসের বিশেষ ফ্লাইং কোর্সেরও প্রয়োজন হবে। জাজ্যাক আশা করেছেন, এটি এক বছরের মধ্যে বাজারে আসবে। ২০২২ সালে এয়ারকার একটি বিমান হিসেবে স্লোভাকিয়ায় চালানোর অনুমোদন পায়। অধ্যাপক স্টেফান ক্লেইন ও জাজ্যাক মিলে এটি তৈরি করেছেন।

গাড়িটিতে একটি ১৬০০ সিসির ‘বিএমডব্লিউ ইঞ্জিন’ রয়েছে। ২০২১ সালে এয়ারকার প্রথম আন্তঃনগর ফ্লাইট সম্পন্ন করে। স্লোভাকিয়ার নিত্রা থেকে ব্রাতিস্লাভায় ৩৫ মিনিট উড়ে যায়। ক্লাইনভিশন ২০২৫ সালের মধ্যে এয়ারকারের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করার পরিকল্পনা করছে। কোম্পানিটি বিশ্বাস করে এয়ারকার বিমানে ভ্রমণ ও যাতায়াতে পরিবর্তন আনতে পারে। এদিকে মার্চ মাসে ক্লাইনভিশনের গাড়িতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে তার স্বত্ব ‘হেবেই জিয়ানঝিন ফ্লাইং কার টেকনোলজি কোম্পানি’ নামের এক চীনা প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করেছে দিয়েছে।

এ.জে/জাহ্নবী

 

ঢাকায় চলছে দেশের সবচেয়ে বড় অটোমোটিভ প্রদর্শনী

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ০৫:১৭ পিএম
ঢাকায় চলছে দেশের সবচেয়ে বড় অটোমোটিভ প্রদর্শনী
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় শুরু হয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় অটোমোটিভ প্রদর্শনী ‘অটো সিরিজ অব এক্সিবিশনস বাংলাদেশ ২০২৫’।  যেখানে গাড়ি ও মোটরসাইকেলসহ নানা ধরনের অটোমোবাইল পণ্য প্রদর্শিত হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) তিন দিনব্যাপী এ আয়োজন শুরু হয়েছে। কনফারেন্স অ্যান্ড এক্সিবিশন ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস (সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ)-এর আয়োজনে এটি ১৮তম বারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এই বিশাল আয়োজনের অধীনে একই সঙ্গে চলছে ‘১৮তম ঢাকা মোটর শো ২০২৫’, ‘৯ম ঢাকা বাইক শো ২০২৫’, ‘৮ম ঢাকা অটো পার্টস শো ২০২৫’, ‘৭ম ঢাকা কমার্শিয়াল অটোমোটিভ শো ২০২৫’ এবং ‘২য় ইলেকট্রিক ভেহিকল (ইভি) বাংলাদেশ এক্সপো ২০২৫’।

সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ আয়োজিত ১৮তম ঢাকা মোটর শো চলবে আগামী শনিবার পর্যন্ত। দর্শনার্থীরা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত এ প্রদর্শনী উপভোগ করতে পারবেন।

আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এবারের আয়োজনে জাপান, চীন, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়াসহ ১৭টি দেশের ১৭৫টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের যানবাহন, যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তিপণ্য নিয়ে বসেছে ৬০০টিরও বেশি স্টল।

আইসিসিবির বিভিন্ন হলে সুবিন্যস্তভাবে গাড়ি, মোটরসাইকেল, বাণিজ্যিক যানবাহন, যন্ত্রাংশ এবং বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রদর্শন করা হচ্ছে। ১ নম্বর হলে বাণিজ্যিক যানবাহন, ২ নম্বর হলে দুই চাকার যান, আর ৩ ও ৪ নম্বর হলে চার চাকার যানবাহন প্রদর্শিত হচ্ছে। পাশাপাশি থাকছে অটো পার্টস, অ্যাকসেসরিজ, লুব্রিকেন্ট ও বৈদ্যুতিক যানবাহন সম্পর্কিত পণ্য।

প্রদর্শনীতে মিতসুবিশি, হোন্ডা, এমজি, প্রোটন, চাঙ্গান, সুজুকি, গ্যাক মোটরস ও ডিপালসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের নতুন গাড়ি দেখা যাবে। বাইকের ক্ষেত্রে অংশ নিয়েছে বাজাজ, স্পিডোজ, ডংজিন গ্রুপ, সালিদা ইভি-সহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

আজ সকালে প্রদর্শনীগুলোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিকের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহেরুন এন ইসলাম, সেমস-গ্লোবালের সিইও এস এস সারোয়ার এবং নির্বাহী পরিচালক তানভীর কামরুল ইসলামসহ বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজকেরা বলছেন, ২০০৬ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে আয়োজিত ‘ঢাকা মোটর শো’ বাংলাদেশের অটোমোটিভ খাতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন হয়ে উঠেছে। এটি শুধু গাড়িপ্রেমীদের মিলনমেলা নয়, বরং ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক প্ল্যাটফর্ম।

এই প্রদর্শনী আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ তৈরি করছে। এর মাধ্যমে দেশের মোটর, বাইক ও বৈদ্যুতিক যান শিল্পের অগ্রগতিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছেন আয়োজকেরা।

উল্লেখ্য, সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ নিউইয়র্কভিত্তিক একটি বহুজাতিক প্রদর্শনী ও সম্মেলন আয়োজক প্রতিষ্ঠান। এটি ৩২ বছরেরও বেশি সময় ধরে চারটি মহাদেশে সফলভাবে বাণিজ্য মেলা আয়োজন করে আসছে।

প্রোটন বাজারে আনল দেশেই সংযোজিত এসইউভি

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০০ পিএম
প্রোটন বাজারে আনল দেশেই সংযোজিত এসইউভি
প্রোটন এক্স৭০। ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো দেশে সংযোজিত ‘প্রোটন এক্স৭০’ এসইউভি গাড়ি বাজারে এনেছে র‍্যানকন কারস লিমিটেড। আজ (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রোটন বাংলাদেশের শোরুমে আনুষ্ঠানিকভাবে গাড়িটির উদ্বোধন করা হয়েছে।

গাজীপুরের কাশিমপুরে র‍্যানকন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে অবস্থিত র‍্যানকন অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে এই গাড়ি তৈরি হচ্ছে। মালয়েশিয়ার স্বনামধন্য ব্র্যান্ড প্রোটনের এই কমপ্যাক্ট এসইউভি এখন থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামের অনুমোদিত শোরুমে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিটি গাড়ির সঙ্গে থাকছে ৫ বছর বা ১ লাখ ৫০ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত ওয়ারেন্টি, যা প্রোটনের অনুমোদিত সার্ভিস সেন্টার থেকে নেওয়া যাবে। এটি ১৮তম ঢাকা মোটর শো ২০২৫-এ প্রদর্শিত হবে।

প্রোটন এক্স৭০ এসইউভির আকর্ষণীয় ডিজাইন এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য পরিচিত। এর সামনের অংশে রয়েছে প্রোটনের সিগনেচার ‘ইনফিনিট উইভ’ গ্রিল। গাড়িতে রয়েছে ইন্টেলিজেন্ট হাই বিম কন্ট্রোল (আইএইচবিসি) হেডল্যাম্প, ডে-টাইম রানিং ল্যাম্প (ডিআরএল), অটো রেইন-সেন্সিং ওয়াইপার এবং একটি প্যানোরামিক সানরুফ। ১৯ ইঞ্চি অ্যালয় রিম এবং ২০০ মিমি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স এটিকে বিভিন্ন রাস্তায় চলার উপযোগী করেছে।

গাড়ির ভেতরে রয়েছে টাচস্ক্রিন ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম, যা ভয়েস কমান্ডে (“হাই প্রোটন” বলে) নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এতে অনলাইন ন্যাভিগেশন, মিউজিক স্ট্রিমিং, আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং স্মার্টফোন সংযোগের সুবিধা রয়েছে। এছাড়া আছে ৬টি ইউএসবি পোর্ট, কি-লেস এন্ট্রি, বিভিন্ন ড্রাইভ মোড এবং ৩৬০-ডিগ্রি ক্যামেরা ভিউ। আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য রয়েছে লেদারের আসন।

এক্স৭০ গাড়িতে ১.৫ লিটার টার্বোচার্জড টিজিডিআই পেট্রোল ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে, যা ৭-স্পিড ডুয়েল ক্লাচ ট্রান্সমিশন (ডিসিটি)-এর সঙ্গে যুক্ত। এতে ম্যানুয়াল মোডও রয়েছে।

নিরাপত্তার জন্য এতে রয়েছে অ্যাডভান্সড ড্রাইভার অ্যাসিস্ট্যান্স সিস্টেম (এডিএএস)। বাংলাদেশের ট্রাফিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে এতে অ্যাডাপটিভ ক্রুজ কন্ট্রোল (এসিসি) ও অটোনোমাস ইমার্জেন্সি ব্রেকিং (এইবি) যুক্ত করা হয়েছে, যা যানজটে গতি নিয়ন্ত্রণ ও জরুরি প্রয়োজনে গাড়ি থামাতে সহায়তা করে। এছাড়া ব্লাইন্ড স্পট ইনফরমেশন সিস্টেম (বিএলআইএস) এবং লেন ডিপারচার ওয়ার্নিং (এলডিডব্লিউ)-এর মতো ফিচার দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে। ৬টি এসআরএস এয়ারব্যাগ, হিল-হোল্ড অ্যাসিস্ট ও হিল ডিসেন্ট কন্ট্রোল এর নিরাপত্তা আরও বাড়িয়েছে। এর ডুয়াল-জোন অটোমেটিক ক্লাইমেট কন্ট্রোল সিস্টেমে থাকা এন-৯৫ ফিল্টার যাত্রীদের স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করে।

র‍্যানকন অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মো. বদিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে প্রোটন এক্স৭০ সংযোজনে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পেরে এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে পেরে অত্যন্ত গর্বিত। এখানে প্রস্তুতকৃত প্রতিটি গাড়ি দেশের অটোমোবাইল শিল্পে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

র‍্যানকন কারস লিমিটেডের পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রশিদ ভূঁইয়া বলেন, ‘প্রিমিয়াম এসইউভির চাহিদা বাড়ছে এবং প্রোটন এই বাজারে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। ভলভো ও লোটাসের মতো ব্র্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে প্রোটন এক্স৭০ উন্নত প্রযুক্তি ও ডিজাইন নিয়ে এসেছে। স্থানীয়ভাবে সংযোজন বিশ্বমানের এসইউভি আমাদের বাজারে আরও সহজলভ্য করে তোলার একটি বড় পদক্ষেপ।’

প্রোটন দাবি করেছে, এক্স৭০ শুধু পারফরম্যান্সে নয়, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির কারণেও উল্লেখযোগ্য। কম জ্বালানি খরচ ও কার্বন নিঃসরণ ছাড়াও তাদের উৎপাদন প্রক্রিয়াতেও টেকসই পন্থা অনুসরণ করা হচ্ছে।

/আবরার জাহিন

 

নিউইয়র্ক অটো শো নজর কেড়েছে যে গাড়িগুলো

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১১ পিএম
নজর কেড়েছে যে গাড়িগুলো
নিউইয়র্ক ইন্টারন্যাশনাল অটো শোতে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নতুন ও আকর্ষণীয় সব মডেল নিয়ে হাজির হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের জ্যাভিটস সেন্টারে চলছে ১২৫তম ‘নিউইয়র্ক ইন্টারন্যাশনাল অটো শো’। ১৮ এপ্রিল শুরু হওয়া এই মোটর গাড়ি প্রদর্শনী চলবে আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে পুরোনো ও বৃহত্তম গাড়ির মেলা হিসেবে পরিচিত। এবারের আয়োজনে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নতুন ও আকর্ষণীয় সব মডেল নিয়ে হাজির হয়েছে।

এবারের প্রদর্শনীতে ক্লাসিক গাড়ির পাশাপাশি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি), স্পোর্টস কার, বিলাসবহুল সেডান ও এসইউভি এবং ভবিষ্যতের কনসেপ্ট কারগুলো স্থান পেয়েছে। ফোর্ড, জেনেসিস, বেন্টলি, লুসিডসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড তাদের সেরা সব বাহন প্রদর্শন করছে।

জেনেসিস এক্স গ্র্যান ইকুয়েটর। ছবি: সংগৃহীত

জেনেসিস এক্স গ্র্যান ইকুয়েটর 
দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জেনেসিসের কনসেপ্ট কার ‘জেনেসিস এক্স গ্র্যান ইকুয়েটর’-কে অনেকে এবারের প্রদর্শনীর সেরা আকর্ষণ বলছেন। এটি একটি ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির অফ-রোডিং ঘরানার গাড়ি, যার দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন ও বিলাসবহুল ইন্টেরিয়ার সবার নজর কেড়েছে। জেনেসিস গাড়িটি উন্মোচন করেছে প্রদর্শনীর আগের রাতে।

ফোর্ড ব্রোঙ্কো স্ট্রোপ এডিশন। ছবি: সংগৃহীত

ফোর্ড ব্রোঙ্কো স্ট্রোপ এডিশন
যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফোর্ডের স্টলে বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করছে তাদের ‘ব্রোঙ্কো স্ট্রোপ এডিশন’। ষাট ও সত্তর দশকের বিখ্যাত মরুভূমির রেসিং কার বা ডেজার্ট রেসারগুলোর নকশা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি করা হয়েছে ফোর্ড ব্রোঙ্কোর এই বিশেষ সংস্করণটি।

এই গাড়িটির অন্যতম আকর্ষণ হলো এর ভিন্নধর্মী রঙের ব্যবহার। অ্যাটলাস ব্লু, অক্সফোর্ড হোয়াইট ও কোড অরেঞ্জ রঙের সমন্বয়ে এর বাহ্যিক নকশা ফুটে তোলা হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, ছবিতে এই রঙের বিন্যাস যতটা আকর্ষণীয় লাগে, বাস্তবে তা আরও বেশি মনোমুগ্ধকর।

দুই দরজার এই গাড়িটি দেখতে বেশ শক্তিশালী গড়নের হয়ে থাকে। প্রদর্শনীতে এটি পরিষ্কার ও ঝকঝকে অবস্থায় থাকলেও, এর ডিজাইন ও অনুপ্রেরণা মনে করিয়ে দেয়, ধুলাবালি ও কাদা মাখা অবস্থায় হয়তো এর আসল রূপ আরও ভালোভাবে ফুটে উঠবে। যেমনটা মরুভূমির রুক্ষ পথে ছুটে চলা রেসিং কারের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।

বেন্টলি কন্টিনেন্টাল জিটিসি ফার্স্ট এডিশন। ছবি: সংগৃহীত

বেন্টলি কন্টিনেন্টাল জিটিসি ফার্স্ট এডিশন
চলমান আন্তর্জাতিক অটো শোতে নিজেদের নতুন কন্টিনেন্টাল জিটিসি ফার্স্ট এডিশন প্রদর্শন করছে ব্রিটিশ বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বেন্টলি। নতুন এই মডেলটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী হাইব্রিড ভি-৮ ইঞ্জিন এবং সেই সঙ্গে এর আকর্ষণীয় ডিজাইন।

বেন্টলির নতুন কন্টিনেন্টাল গাড়ির পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন এনেছে এর হাইব্রিড ইঞ্জিন। বিশেষ করে এই গাড়ির ‘স্পিড’ সংস্করণটি ৭৭১ হর্সপাওয়ার পর্যন্ত শক্তি উৎপন্ন করতে পারে। এই হাইব্রিড প্রযুক্তি গাড়িটিকে শুধু শক্তিশালী করেনি, বরং আধুনিকতার ছোঁয়াও দিয়েছে।

বেন্টলি এই গাড়ির কনভার্টিবল সংস্করণ প্রদর্শন করছে, যার রঙ ‘রেসিং গ্রিন’। এতে কালো রঙের বিশেষ ট্রিমস ব্যবহার করা হয়েছে। প্রচলিত গ্র্যান্ড ট্যুরারের ধারণাকে আরও বিলাসী ও আধুনিক রূপে উপস্থাপন করেছে এই মডেল। শক্তি ও সৌন্দর্যের এই সমন্বয় নতুন বেন্টলি কন্টিনেন্টাল জিটিসি-কে বিলাসবহুল গাড়ির বাজারে বিশেষ স্থান করে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফিয়াট টোপোলিনো। ছবি: সংগৃহীত

ফিয়াট টোপোলিনো 
ইতালির বিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা ফিয়াটের ক্লাসিক মডেল ‘টোপোলিনো’ নতুন রূপে ফিরেছে। এটি মূলত একটি ছোট্ট ইলেকট্রিক কোয়াড্রিসাইকেল বা চার চাকার বৈদ্যুতিক যান। এটি গাড়ির জগতে ফিরিয়ে এনেছে ১৯৩০-এর দশকের ইতালীয় ঐতিহ্য ও ফ্যাশন।

ইতালীয় ভাষায় ‘টোপোলিনো’ শব্দের অর্থ ‘ছোট্ট ইঁদুর’। এটি ডিজনির বিখ্যাত চরিত্র মিকি মাউসেরও ইতালীয় নাম। ১৯৩৬ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত উৎপাদিত মূল ফিয়াট টোপোলিনো গাড়িটি তার অত্যন্ত ছোট আকার ও সাশ্রয়ী দামের জন্য এই নাম পেয়েছিল। তৎকালীন বিশ্বের ক্ষুদ্রতম গাড়িগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল।
আধুনিক ফিয়াট টোপোলিনো মূলত সিট্রোয়েন অ্যামি এবং ওপেল রকস-ই গাড়িগুলোর মতো একই প্ল্যাটফর্মে তৈরি করা হয়েছে। এটি ইতালি, ফ্রান্স ও জার্মানির মতো ইউরোপীয় দেশগুলোর শহুরে রাস্তায় স্বল্প দূরত্বে চলাচলের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে।

গাড়িটি দৈর্ঘ্যে মাত্র ২.৫৩ মিটার (প্রায় ৮.৩ ফুট), যা এটিকে অত্যন্ত কমপ্যাক্ট করে তুলেছে। এতে রয়েছে ৫.৫ কিলোওয়াট-আওয়ারের একটি ছোট ব্যাটারি এবং ৮ বিএইচপি শক্তি উৎপাদনে সক্ষম একটি বৈদ্যুতিক মোটর। এটি প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৫ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে। একবার চার্জে এটি প্রায় ৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পাড়ি দিতে পারে। ব্যাটারি শূন্য থেকে ১০০ শতাংশ চার্জ হতে সময় লাগে প্রায় চার ঘণ্টা।

এর ছোট আকার, কম গতি এবং বৈদ্যুতিক বৈশিষ্ট্যের জন্য এটি বিকল্প হতে পারে স্কুটার বা গলফ কার্টের মতো ছোট বাহনের।
নিউইয়র্ক অটো শোতে ফিয়াট টোপোলিনোর মিন্ট-গ্রিন রঙের সংস্করণ প্রদর্শন করা হচ্ছে। এর গোল হেডলাইট, পুরোনো দিনের আদলে তৈরি চাকার হাবক্যাপস এবং সামগ্রিক ডিজাইন এর রেট্রো বা ক্লাসিক লুক ফুটিয়ে তুলেছে।

ফিয়াট টোপোলিনো দুটি প্রধান সংস্করণে পাওয়া যায়। এর একটি ‘ক্লোজড’ সংস্করণ, যাতে সাধারণ গাড়ির মতো দরজা ও স্থায়ী ছাদ রয়েছে। অন্যটি হলো ‘ওপেন’ ডলচে ভিটা সংস্করণ, যা দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে। এই সংস্করণে প্রচলিত দরজার পরিবর্তে রয়েছে দড়ির বেষ্টনী ও বড় ক্যানভাসের ছাদ, যা খোলা যায়।

আকারে ছোট হওয়ায় ফিয়াট টোপোলিনো এবারের অটো শোতে প্রদর্শিত সবচেয়ে ক্ষুদ্র গাড়ি হিসেবেও দর্শকদের বাড়তি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

উবারে মিলবে ওয়েমোর স্বচালিত ট্যাক্সি সেবা

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১৩ পিএম
উবারে মিলবে ওয়েমোর স্বচালিত ট্যাক্সি সেবা
আটলান্টায় উবার ব্যবহারকারীরা অ্যাপের মাধ্যমে ওয়েমোর রোবোট্যাক্সি ব্যবহার করতে পাবেন।

জনপ্রিয় রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম উবার ও গুগলের অটোনোমাস বা স্বচালিত গাড়ি প্রকল্প ওয়েমো তাদের রোবোট্যাক্সি সেবা যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি নতুন শহরে চালু করছে। এই রোবোট্যাক্সিগুলো চালকবিহীন হয়ে থাকে। নতুন এই পদক্ষেপে আটলান্টায় উবার ব্যবহারকারীরা অ্যাপের মাধ্যমে ওয়েমোর রোবোট্যাক্সি ব্যবহার করতে পাবেন।

স্বচালিত ট্যাক্সি সেবা খাতে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে উবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারত্ব করেছে, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ওয়েমোর সঙ্গে এই অংশীদারত্ব। ফলে ব্যবহারকারীরা চালকবিহীন গাড়িতে চড়ে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।

২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফিনিক্সে প্রথম উবার অ্যাপে ওয়েমোর চালকবিহীন জাগুয়ার আই-পেস গাড়ির (যা ‘ওয়েমো ড্রাইভার’ নামে পরিচিত) ব্যবহার শুরু হয়। ২০২৪ সালের শেষের দিকে এই অংশীদারত্ব আরও জোরদার হয়। এবার অস্টিন ও আটলান্টার নির্দিষ্ট অঞ্চলে একচেটিয়াভাবে উবারের মাধ্যমে ওয়েমোর সেবা চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই মায়ামিতেও এ সেবা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।

সিএনএন জানিয়েছে, আটলান্টায় উবার ব্যবহারকারীরা এখন ওয়েমোর রোবোট্যাক্সিতে চড়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করতে পারবেন। চলতি বছরের গ্রীষ্মে এই সেবা আরও ব্যাপকভাবে চালু হওয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে উবারের কর্মীরা পরীক্ষামূলকভাবে ওয়েমো ট্যাক্সি ব্যবহার করছেন।

এই সেবা নিতে হলে উবার অ্যাপ আপডেট করে অ্যাকাউন্ট > সেটিংস > রাইড প্রেফারেন্সেস > অটোনোমাস ভেহিকলস-এ গিয়ে ‘জয়েন ইন্টারেস্ট লিস্ট’-এ ক্লিক করতে হবে।

স্বচালিত যানবাহনকে অনেকে পরবর্তী প্রজন্মের যোগাযোগ ব্যবস্থার বড় উদ্ভাবন হিসেবে বিবেচনা করছেন। বিশেষ করে ট্যাক্সি পরিষেবায় চালকহীন প্রযুক্তি বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ট্যাক্সি সেবাগুলো এই প্রযুক্তি থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে পারে, কারণ চালকের প্রয়োজন না থাকায় পরিচালন ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। এছাড়া মুনাফা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ওয়েমো ও টেসলা স্বচালিত গাড়ি প্রযুক্তিতে এগিয়ে থাকলেও তাদের পদ্ধতি ভিন্ন। টেসলার রোবোট্যাক্সি সেবা যুক্তরাষ্ট্রের অস্টিনে জুন মাসে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, ওয়েমো বেশ কয়েক বছর ধরেই নির্দিষ্ট কিছু শহরে এই সেবা দিয়ে আসছে।

উবারের জন্য ওয়েমো একটি বড় সম্ভাবনা তৈরি করলেও, এটিই একমাত্র বিকল্প নয়। উবারের প্রধান নির্বাহী দারা খোসরোশাহী টেসলার আসন্ন রোবোট্যাক্সি সেবাও তাদের প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। যদিও প্রাথমিকভাবে টেসলা তাদের রোবোট্যাক্সি সেবা স্বাধীনভাবে পরিচালনা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে এ দুটি প্রতিষ্ঠান নিজেদের মতো করে অটোনোমাস ট্যাক্সি খাতে প্রতিযোগিতা চালিয়ে যাবে।

বিওয়াইডি ৫ মিনিটের চার্জে চলবে ৪০০ কিমি

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১৩ পিএম
৫ মিনিটের চার্জে চলবে ৪০০ কিমি
বিওয়াইডির নতুন সেডান ‘হ্যান এল’। ছবি: সংগৃহীত

বৈদ্যুতিক গাড়ির (ইভি) বাজারে টেসলার অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের অটোমোবাইল জায়ান্ট বিওয়াইডি। সম্প্রতি তারা এমন এক অত্যাধুনিক ব্যাটারি প্রযুক্তি সম্পন্ন গাড়ি এনেছে, যা মাত্র পাঁচ মিনিটের চার্জে ৪০০ কিলোমিটার (প্রায় ২৪৯ মাইল) পর্যন্ত পথ পাড়ি দিতে পারে। নিজেদের নতুন ‘হ্যান এল’ সেডান ও ‘ট্যাং এল’ এসইউভি মডেলে এই যুগান্তকারী প্রযুক্তি যুক্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই প্রযুক্তি বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জিং নিয়ে প্রচলিত ধারণাকে বদলে দিতে চলেছে।

চীনের এই অটোমোবাইল নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তাদের নতুন ‘সুপার ই-প্ল্যাটফর্ম’ প্রযুক্তিতে তৈরি ব্যাটারি এই দ্রুত চার্জিংয়ের সুবিধা দেবে। এর চার্জিং গতি ১ হাজার কিলোওয়াট, যা টেসলার ২৫০ কিলোওয়াটের সুপার চার্জারের চেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি। দ্রুত চার্জিংয়ের পাশাপাশি দামের দিক থেকেও নতুন মডেল দুটি বেশ সাশ্রয়ী।

বিওয়াইডির নতুন হ্যান এল সেডান গাড়ির দাম শুরু হচ্ছে ২ লাখ ১৯ হাজার ৮০০ ইউয়ান থেকে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা। এই দাম টেসলার সবচেয়ে সাশ্রয়ী মডেল থ্রি-এর চেয়েও প্রায় ১০ হাজার ডলার কম। অন্যদিকে বিওয়াইডির ট্যাং এল এসইউভি মডেলের দাম শুরু হচ্ছে ২ লাখ ৩৯ হাজার ৮০০ ইউয়ান থেকে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৯ লাখ ৬১ হাজার টাকা।

গত মাসে এই সুপার ই-প্ল্যাটফর্ম চার্জিং প্রযুক্তির ঘোষণা দিয়েছিল বিওয়াইডি। তখন তারা দাবি করেছিল, এই প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের ভ্রমণের সময় গাড়ির রেঞ্জ বা কত দূর চলবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা পুরোপুরি দূর করবে। কারণ, প্রচলিত পেট্রল বা ডিজেল গাড়িতে জ্বালানি ভরতে যে সময় লাগে, প্রায় একই সময়ে এই গাড়িগুলো চার্জ দেওয়া সম্ভব হবে। আপাতত এই দুটি নতুন মডেল শুধু চীনে পাওয়া যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে দ্রুত চার্জিংয়ের জন্য দেশটিতে ৪ হাজার ফাস্ট চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে।

বিওয়াইডি বর্তমানে চীনের সবচেয়ে জনপ্রিয় বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। দেশটির মোট ইভি বিক্রির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ তাদের দখলে রয়েছে। অভ্যন্তরীণ বাজারে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করার পর সংস্থাটি সম্প্রতি বৈশ্বিক সম্প্রসারণে জোর দিয়েছে। গত বছর তারা টেসলাকে পেছনে ফেলে বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রীত বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রস্তুতকারকের খেতাব অর্জন করে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কোনো কার্যক্রম নেই।

বৈশ্বিক বাজারের চাহিদা মেটাতে বিওয়াইডি বর্তমানে হাঙ্গেরিতে একটি কারখানা নির্মাণ করছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই বছরের শেষ নাগাদ কারখানাটি উৎপাদনে যাবে। এতে বছরে ৩ লাখ গাড়ি উৎপাদনের সক্ষমতা থাকবে বলে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপনের ঘোষণাও দিয়েছে বিওয়াইডি।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউরোপে টেসলার ইভি বিক্রি কমে যাওয়া এবং শেয়ারের দরপতনের মতো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিওয়াইডির এই অত্যাধুনিক চার্জিং প্রযুক্তিসম্পন্ন এবং তুলনামূলক কম দামের নতুন মডেলগুলো বাজারে আসায় বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।