ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

জাপানে ইলেকট্রিক গাড়ির নতুন মডেল উন্মোচন করল বিওয়াইডি

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০২:৩৫ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০২:৩৬ পিএম
জাপানে ইলেকট্রিক গাড়ির নতুন মডেল উন্মোচন করল বিওয়াইডি
ছবি: সংগৃহীত

চীনের শেনঝেনভিত্তিক বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিল্ড ইয়োর ড্রিমস বা বিওয়াইডি চলতি সপ্তাহে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির নতুন মডেল উন্মোচন করেছে। এটি একটি সেডান গাড়ি, যা জাপানের বাজারে এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির সবচেয়ে দামি মডেল। জাপানে গ্রাহকরা দীর্ঘদিন ধরে দেশীয় ব্র্যান্ডগুলো পছন্দ করে আসছেন।

শেনঝেনভিত্তিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার থেকে জাপানে ফ্ল্যাগশিপ ‘সিল’ মডেলের ইভির জন্য অর্ডার নেওয়া শুরু করেছে। দেশটিতে এই গাড়ির রিয়ার-হুইল-ড্রাইভ সংস্করণের প্রস্তাবিত খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে জাপানি মুদ্রায় ৫২ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন, যা মার্কিন মুদ্রায় প্রায় ৩৩ হাজার ১১১ ডলার। চীনের বাজারে এই মডেলের দাম শুরু হয়েছে চীনা মুদ্রায় ১ লাখ ৭৯ হাজার ৮০০ ইউয়ান থেকে, যা মার্কিন মুদ্রায় প্রায় ২৪ হাজার ৭৫৯ ডলার।

জাপানে বিল্ড ইয়োর ড্রিমসের গাড়ির বাজার সম্প্রসারণ দেশীয় গাড়ি নির্মাতাদের জন্য উদ্বেগের বিষয় হতে পারে। কারণ জাপানি গাড়ির ব্র্যান্ডগুলো চীনের বাজারে বিওয়াইডি ও অন্যান্য চীনা ইভি ব্র্যান্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেছে। তবে জাপানের বাজারে শুধু ব্যাটারিচালিত গাড়িই বিক্রি করছে বিওয়াইডি। প্রতিষ্ঠানটি দেশটিতে প্লাগ-ইন হাইব্রিড গাড়ি বাজারজাত করেছে না। চীনের বাজারে প্লাগ-ইন হাইব্রিড গাড়ির বড় ধরনের প্রতিযোগী বিওয়াইডি। জাপানের রাজধানী টোকিওতে সিল মডেলের গাড়ি উন্মোচন কালে বিওয়াইডি অটো জাপানের প্রেসিডেন্ট আৎসুকি তোফুকুজি জানান, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন মাসে গত বছরের তুলনায় দেশটিতে তাদের গাড়ি বিক্রি কিছুটা কমেছে। জাপান সরকার ইলেকট্রিক গাড়ি উৎপাদনে ভর্তুকি কমিয়ে দেওয়ার ফলে গাড়ির বিক্রি হ্রাস পেয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা জাপানে রিয়ার-হুইল-ড্রাইভ এবং অল-হুইল-ড্রাইভ দুটি সংস্করণ বাজারজাত করবে। উভয় সংস্করণে ৮২ দশমিক ৫৬ কিলোওয়াট আওয়ারের ব্যাটারি থাকবে। রিয়ার-হুইল-ড্রাইভ সংস্করণের গাড়িটি একবার চার্জে ৬৪০ কিলোমিটার চলবে, অন্যদিকে অল-হুইল-ড্রাইভ সংস্করণের গাড়িটি চলবে ৫৭৫ কিলোমিটার।

এর আগে জাপানে অ্যাটো-থ্রি (Atto 3) ও ডলফিন (Dolphin) মডেলের ইলেকট্রিক গাড়ি বাজারে এনেছে বিওয়াইডি। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইয়োকোহামায় প্রথম গাড়ি বিক্রি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার ইউনিট গাড়ি বিক্রি হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। প্রতি বছর জাপানে অন্তত একটা নতুন মডেল যোগ করার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে তারা।

নজরকাড়া ডিজাইনের বৈদ্যুতিক এসইউভি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩৭ পিএম
নজরকাড়া ডিজাইনের বৈদ্যুতিক এসইউভি
হোনডে আইওনিক ৯। ছবি: সংগৃহীত

উত্তর আমেরিকার বাজারে আত্মপ্রকাশ করেছে হোনডের (হুন্দাই) বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) এসইউভি ‘হোনডে আইওনিক ৯’। আমেরিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় গাড়ির মধ্যে অন্যতম এসইউভি ঘরানার গাড়ি। রিভিয়ান আর১এস বা মার্সিডিজ-বেঞ্জ ইকিউএস এসইউভির মতো উচ্চমূল্যের মডেল ছাড়া এই ধরনের গাড়ি খুব বেশি ছিল না। তবে কিয়া ইভি৯ দিয়ে সেই শূন্যতা আংশিক পূরণ করেছে।

নজরকাড়া ডিজাইন
হোনডের নতুন আইওনিক যে বিশাল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ১৯৯ ইঞ্চি লম্বা এই গাড়িটি হোনডে পালিসেডের চেয়ে তিন ইঞ্চি বড়, যা এখন প্রতিষ্ঠানটির দ্বিতীয় বৃহত্তম এসইউভি। শুধু আকার নয়, নকশাতেও নজরকাড়া এক নতুনত্ব এনেছে হোনডে। গাড়িটির পেছনের অংশে রয়েছে সূক্ষ্ম টেপার আকৃতি, যা একদিকে বায়ুরোধ কমায়, অন্যদিকে গাড়িটিকে দেখতেও ছোট মনে হয়। বডির বায়ুরোধের মাত্রা ০.২৬৯, যা এমন বড় এসইউভির জন্য প্রশংসনীয়।

আরাম ও প্রযুক্তির সংমিশ্রণ
আইওনিক ৯-এ রয়েছে তিন সারির আসন। তৃতীয় সারিতে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যও পর্যাপ্ত মাথার ও পায়ের জায়গা আছে। প্রতিটি সারিতে ১০০ ওয়াট ইউএসবি-সি পোর্ট থাকায় যাত্রাপথে ডিভাইস চার্জ নিয়ে ভাবনার প্রয়োজন পড়বে না।

আইওনিক ৯ লিমিটেড বা ক্যালিগ্রাফি সংস্করণে থাকছে ছয় আসনের ক্যাপটেন চেয়ার ও ম্যাসাজ সুবিধাসহ দীর্ঘ যাত্রায় আরামের জন্য বাড়তি লেগ রেস্ট। গাড়ির ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেমে দুটি ১২.৩ ইঞ্চির ডিসপ্লে রয়েছে, যাতে অ্যান্ড্রয়েড অটো ও অ্যাপল কারপ্লে উভয়ই অন্তর্ভুক্ত।

ক্ষমতা ও চার্জিং প্রযুক্তি
আইওনিক ৯ নির্মিত হয়েছে হোনডের ই-জিএমপি প্ল্যাটফর্মে। এতে রয়েছে ৮০০ ভোল্ট আর্কিটেকচার ও ৩৫০ কিলোওয়াট পর্যন্ত দ্রুত চার্জিং ক্ষমতা। মাত্র ২৪ মিনিটে ১০ থেকে ৮০ শতাংশ চার্জ করা সম্ভব। এতে যুক্ত আছে টেসলা স্টাইলের এনএসিএস প্লাগ, যা সুপারচার্জার ব্যবহারের সুযোগ দেয়। যদিও টেসলার অনেক চার্জার এখনো এই গতিকে সমর্থন করে না।
গাড়িতে ব্যবহৃত হয়েছে ১১০.৩ কিলোওয়াট-আওয়ার ব্যাটারি, যার ১০৪ কিলোওয়াট-আওয়ার ব্যবহারযোগ্য। একবার চার্জে সর্বোচ্চ ৫৩৯ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে, যা নির্ভর করবে সংস্করণের ওপর। ডুয়েল মোটর সংস্করণে সর্বোচ্চ ৪২২ হর্সপাওয়ার শক্তি উৎপন্ন হয়।

প্রশান্তি ও সীমাবদ্ধতা
দৈনন্দিন শহুরে যাত্রায় আইওনিক ৯ বেশ আরামদায়ক। শহরের গতিতে কিছুটা শক্ত সাসপেনশন অনুভব হলেও গতিবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেটি মসৃণ হয়ে ওঠে। সাউন্ড-ইনসুলেটিং গ্লাস ও অ্যাকটিভ সাউন্ড ক্যানসেলিং প্রযুক্তি যাত্রাকে করে তোলে আরামদায়ক। তবে তৃতীয় সারিতে কিছুটা বাতাস ও মোটরের শব্দ প্রবেশ করতে পারে। পেছনে ২১.৯ ঘনফুট মালপত্র রাখার জায়গা থাকলেও, দুই সারি ভাঁজ করলে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬.৯ ঘনফুটে। সামনের ছোট ফ্রাংকে চার্জার ও টুলকিট রাখা হয়েছে।

মূল্য ও বাজার সম্ভাবনা
আইওনিক ৯-এর প্রাথমিক দাম ধরা হয়েছে ৫৮ হাজার ৯৫৫ ডলার থেকে সর্বোচ্চ সংস্করণের দাম ৭৯ হাজার ৫৪০ ডলার পর্যন্ত গড়াতে পারে। কিয়া ইভি৯ তুলনামূলকভাবে সস্তা হলেও হোনডের বাড়তি নকশা ও ফিচার অনেককে আকৃষ্ট করবে বলেই ধারণা অটোমোবাইল বিশ্লেষকদের।

বৃষ্টিতে গাড়ির যত্ন

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫, ১০:৩০ এএম
বৃষ্টিতে গাড়ির যত্ন
ছবি: সংগৃহীত

বর্ষাকাল মানেই প্রকৃতিতে এক সতেজ আর স্নিগ্ধ পরিবেশ। তবে যারা গাড়ি ব্যবহার করেন, তাদের জন্য বৃষ্টি তৈরি করে বাড়তি কিছু চ্যালেঞ্জ। বৃষ্টির দিনে গাড়ির সঠিক যত্ন না নিলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা গাড়ির আয়ুষ্কাল কমিয়ে দেয় ও চালকের নিরাপত্তাঝুঁকি বাড়ায়। তাই বর্ষায় প্রিয় গাড়ির সুরক্ষায় কিছু বাড়তি মনোযোগ দেওয়া জরুরি হয়ে পড়ে।

টায়ারের দিকে বিশেষ নজর
বৃষ্টিভেজা রাস্তায় টায়ারের গ্রিপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্ষার আগে টায়ারের অবস্থা পরীক্ষা করুন। টায়ারের ট্রেড গভীরতা পর্যাপ্ত না থাকলে ভেজা রাস্তায় চাকার নিয়ন্ত্রণ হারানোর সম্ভাবনা থাকে। এ ছাড়া টায়ারের বায়ুচাপ সঠিক মাত্রায় আছে কি না, তা নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত। প্রয়োজনে চাকার অ্যালাইনমেন্ট ও ব্যালেন্স করিয়ে নিন। ভালো মানের টায়ার ভেজা রাস্তায় উন্নত গ্রিপ দেয়, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমায়।

ব্রেক সিস্টেমের কার্যকারিতা
বৃষ্টিতে ব্রেক ভেজা থাকার কারণে এর কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। ব্রেকপ্যাড ও ডিস্কের অবস্থা পরীক্ষা করুন। মরিচা পড়া বা ক্ষয়প্রাপ্ত ব্রেকপ্যাড পরিবর্তন করা প্রয়োজন। যদি ব্রেক করার সময় অস্বাভাবিক শব্দ হয় বা ব্রেক ধরতে বেশি সময় লাগে, তবে দ্রুত মেকানিকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। ভেজা রাস্তায় মসৃণ ও দ্রুত ব্রেক করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে।

ওয়াইপার ব্লেড পরিবর্তন
বৃষ্টির সময় ওয়াইপার ব্লেড অপরিহার্য হয়ে যায়। পুরোনো বা ফাটা ওয়াইপার ব্লেড কাচ পরিষ্কার করতে পারে না, যা দৃষ্টিসীমা সীমিত করে। বর্ষা শুরুর আগে ওয়াইপার ব্লেড পরীক্ষা করুন। প্রয়োজনে নতুন ভালো মানের ব্লেড লাগান। এ ছাড়া উইন্ডশিল্ড ওয়াশার ফ্লুইড ট্যাংক ভর্তি রাখুন এবং নিশ্চিত করুন যে ওয়াশার সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করছে।

গাড়ির বাইরের সুরক্ষা
বৃষ্টির পানি গাড়ির বডিতে লেগে মরিচা ধরতে পারে। গাড়িকে নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন এবং ভালো মানের ওয়াক্স বা পলিশ ব্যবহার করুন। এটি গাড়ির পেইন্টকে সুরক্ষা দেয় ও দাগ পড়তে দেয় না। গাড়ির নিচের অংশে যাতে কাদা বা পানি জমে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। কারণ এটি চেসিসের ক্ষতি করতে পারে।

ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেম পরীক্ষা
বৃষ্টির কারণে গাড়ির ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেমে সমস্যা হতে পারে। হেডলাইট, টেললাইট, ইন্ডিকেটর ও ফগলাইটগুলো ঠিকমতো কাজ করছে কি না, তা পরীক্ষা করুন। ভিজে যাওয়া তার বা ঢিলে সংযোগ শর্টসার্কিট ঘটাতে পারে। ব্যাটারি এবং তারের সংযোগগুলো পরীক্ষা করে দেখুন এবং প্রয়োজনে মরিচা পরিষ্কার করুন।

গাড়ির অভ্যন্তরের যত্ন
বৃষ্টির দিনে গাড়ির ভেতরে আর্দ্রতা বেড়ে যায়, যা দুর্গন্ধ বা ছাতা পড়ার কারণ হতে পারে। ম্যাট ও সিট কাভার পরিষ্কার রাখুন। এ ছাড়া নিয়মিত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করুন। প্রয়োজন হলে কার ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন। বৃষ্টির দিনে গাড়িতে ওঠার আগে জুতার কাদা পরিষ্কার করে নিন, এতে গাড়ির ভেতরটা পরিষ্কার থাকবে। বর্ষায় গাড়ির প্রতি এই বাড়তি মনোযোগ শুধু দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাবে না, বরং গাড়ির আয়ুষ্কালও বাড়াবে। 

নিউইয়র্কের রাস্তায় ওয়েমোর স্বচালিত গাড়ি

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম
নিউইয়র্কের রাস্তায় ওয়েমোর স্বচালিত গাড়ি
নিউইয়র্ক শহরে আবারও দেখা যাবে স্বচালিত গাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

নিউইয়র্ক শহরের রাস্তায় আবারও দেখা যাবে স্বচালিত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়েমোর গাড়ি প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দিয়েছে, চলতি মাস থেকে তারা নিউইয়র্কে নতুন করে পরীক্ষা চালাবে তবে এই পরীক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে গাড়িগুলো স্বচালিত না হয়ে মানুষের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে, অনেকটা ২০২১ সালে ওয়েমো পরিচালিত ম্যাপিং পরীক্ষার মতো

ওয়েমো জানিয়েছে, সান ফ্রান্সিসকো, ফিনিক্স লস অ্যাঞ্জেলেসের মতো নিউইয়র্কেও স্বচালিত রাইড-শেয়ারিং সেবা চালু করতে চায় তারা তবে পথে একটি বড় বাধা হচ্ছে নিউইয়র্কের বর্তমান আইন, যেখানে চালকবিহীন গাড়ি চালানোর অনুমতি নেই

ওয়েমো এই সমস্যার সমাধানে নিউইয়র্ক সিটি ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্টেশন-এর কাছে একটি পারমিটের আবেদন করেছে, যাতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অপারেটরের তত্ত্বাবধানে গাড়িগুলো স্বচালিতভাবে চালানো যায় অনুমোদন পেলে এটিই হবে নিউইয়র্ক শহরে প্রথমবারের মতো স্বচালিত গাড়ির পরীক্ষামূলক চলাচল

২০২১ সালের পরীক্ষায় ওয়েমোর মূল লক্ষ্য ছিল শহরের জটিল ট্রাফিক পরিস্থিতি এবং বরফ বা তুষারপাতের পরিবেশে গাড়ি চালানোর সক্ষমতা যাচাই করা প্রতিষ্ঠানটি আগে তুলনামূলকভাবে উষ্ণ শুষ্ক আবহাওয়ার শহরে সেবা দিয়েছে তবে নিউইয়র্কের মতো ঘনবসতিপূর্ণ বৈচিত্র্যপূর্ণ পরিবেশে স্বচালিত গাড়ির কার্যকারিতা প্রমাণ করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ

নিউইয়র্কের বাইরে ওয়েমোর কার্যক্রম সম্প্রসারণ অব্যাহত রয়েছে সম্প্রতি সান ফ্রান্সিসকো লস অ্যাঞ্জেলেসে সেবা এলাকা আরও বাড়ানো হয়েছে মার্চে উবারের সহযোগিতায় ওয়েমো অস্টিনেও প্রবেশ করেছে আগামী এক বছরের মধ্যে আরও কয়েকটি শহরে পরীক্ষামূলক চালনা বা অর্থের বিনিময়ে যাত্রী পরিবহনের পরিকল্পনা রয়েছে

তবে নিউইয়র্কের মতো শহরে পূর্ণমাত্রায় স্বচালিত ট্যাক্সি সেবা চালু করা এখনো বড় এক ধাপ বাকি, যা আইনি অনুমোদন স্থানীয় ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করছে

হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য কিয়া ইভি ভ্যান

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৫, ১০:৩০ এএম
হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য কিয়া ইভি ভ্যান
কিয়া উন্মোচন করেছে তাদের প্রথম বৈদ্যুতিক ভ্যানের একটি বিশেষ সংস্করণ। ছবি: সংগৃহীত

সহজ ও টেকসই যাতায়াতের সুবিধা নিশ্চিত করতে দক্ষিণ কোরীয় গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কিয়া তাদের প্রথম বৈদ্যুতিক ভ্যানের একটি বিশেষ সংস্করণ উন্মোচন করেছে, যা হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি। ‘পিভি৫ ডব্লিউএভি’ নামের মডেলটিতে রয়েছে একাধিক সুবিধা, যা হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের ভ্রমণকে আরও নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলবে।

প্রবেশ ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা
পিভি৫ ডব্লিউএভি মডেলটিতে রয়েছে সাইড অ্যান্ট্রি সিস্টেম, যার মাধ্যমে হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীরা রাস্তার পাশ থেকে সরাসরি গাড়িতে উঠতে পারেন। এতে রয়েছে ৩০০ কেজি ভার বহনক্ষম দ্রুত ব্যবহারের উপযোগী র‌্যাম্প, যা ভাঁজ করে সহজে রাখা যায়।

তৃতীয় সারিতে একটি টিপ-আপ সিট সংযুক্ত করা হয়েছে, যাতে অন্য যাত্রীরা হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী যাত্রীকে পাশ থেকে সহায়তা করতে পারেন। এ ছাড়া যুক্ত হয়েছে বিশেষায়িত হুইলচেয়ার বেল্ট-ফাস্টেনিং সিস্টেম, যা চলাচলের সময় যাত্রীকে স্থির রাখতে সহায়তা করে।

পিভি৫ ডব্লিউএভি মডেলটি তৈরি হয়েছে যুক্তরাজ্যের মবিলিটি অপারেশনসের সহযোগিতায়। মবিলিটি অপারেশনস যুক্তরাজ্যের যানবাহন লিজ পরিকল্পনায় কিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। এটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সহজলভ্য পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।

কিয়ার পিবিভি বিভাগের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট সাং-ডে কিম বলেন, ‘অত্যাধুনিক পিবিভি প্রযুক্তিকে মানবিক ভাবনার সঙ্গে যুক্ত করে আমরা এমন একটি ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছি, যেখানে সবার জন্য টেকসই পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে। মবিলিটি অপারেশনসের সঙ্গে আমাদের অংশীদারি স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রমাণ।’ গত এক বছরে সিইএস ২০২৪-সহ কিয়ার বেশ কয়েকটি নতুন গাড়ির উন্মোচনের কেন্দ্রে ছিল এই পিবিভি প্রযুক্তি।

দাম
পিভি৫ মডেলের স্ট্যান্ডার্ড সংস্করণ যুক্তরাজ্যে প্রি-অর্ডার নেওয়া শুরু হয়েছে। যদিও ডব্লিউএভি সংস্করণের দাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে সাধারণ সংস্করণটির দাম শুরু হচ্ছে প্রায় ৪৪ হাজার ডলার থেকে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৩ লাখ ৭৭ হাজার টাকা।

সংশ্লিষ্টদের মতে, এ উদ্যোগ কিয়াকে বৈদ্যুতিক যানবাহনের বাজারে একটি সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল ও প্রযুক্তিনির্ভর ব্র্যান্ড হিসেবে আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাবে। 

শুরুতেই ধাক্কা রাস্তায় টেসলার রোবোট্যাক্সি

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ০৪:৫৩ পিএম
রাস্তায় টেসলার রোবোট্যাক্সি
যুক্তরাষ্ট্রের অস্টিন শহরে পরীক্ষামূলকভাবে এই স্বচালিত ট্যাক্সি সেবা শুরু করেছে টেসলা। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর স্বচালিত ‘রোবোট্যাক্সি’ সেবা চালু করেছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন ইভি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অস্টিন শহরে পরীক্ষামূলকভাবে এই স্বচালিত ট্যাক্সি সেবা শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রাথমিকভাবে সীমিত সংখ্যক গাড়ি দিয়ে সেবাটি চালু করা হয়েছে, যার কঠোর তত্ত্বাবধানে সড়কে ও গাড়ির ভেতরে থাকবে মানুষ। তবে যাত্রার শুরুতে এর প্রযুক্তিগত ত্রুটি ধরা পড়েছে।

ভুল পথে গাড়ি, ভিডিও ভাইরাল
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে রব মাউরার পোস্ট করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, বেশির ভাগ সময় নির্বিঘ্নে চলেছে টেসলার স্বচালিত গাড়ি। এটি সহজে মোড় ও লেন পরিবর্তন করেছে। তবে চলন্ত অবস্থায় গাড়িটি হঠাৎ করে ভুল লেনে চলে যায়। সাত মিনিটের মাথায় হঠাৎ সামনে-পেছনে ঝাঁকুনি দিতে শুরু করে। মুহূর্তের জন্য গাড়িটি রাস্তার ভুল দিকে চলে যায়।

ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘টেসলা যখন ডাবল-হলুদ লাইনের ওপর দিয়ে সঠিক লেনে পুনরায় প্রবেশ করে, তখন একটি হর্ন শোনা যায়।’

এটি গাড়ির স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংশোধন ছিল নাকি রিমোট অপারেটরের হস্তক্ষেপে হয়েছে, তা পরিষ্কার নয়। তবে গাড়ির ভেতরের তত্ত্বাবধায়ককে কোনো কিছু করতে দেখা যায়নি।

শুধু ভুল লেন নয়, গতিসীমা অতিক্রমের ঘটনাও সামনে এসেছে। কিছু রোবোট্যাক্সি গাড়ি আশপাশের যানবাহনের প্রভাবে অনুমোদিত গতিসীমা অতিক্রম করেছে বলে দাবি করেছেন প্রাথমিক যাত্রীরা। তবে তা নিজস্ব গতির প্রয়োজনে নয়। অন্যদিকে, অস্টিনে পরিচালিত ওয়েমো তাদের স্বচালিত গাড়িগুলোর গতি সীমা কঠোরভাবে মেনে চলে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, এই গাড়িগুলো শহরের জটিল ও দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলো এড়িয়ে চলবে। প্রয়োজনে রিমোট অপারেটরের মাধ্যমে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে গন্তব্যে পৌঁছানোর ব্যবস্থা রাখা হবে।

এর আগে মে মাসে সিএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক বলেছিলেন, প্রথম পর্যায়ে ডজনখানেক গাড়ি দিয়ে এই সেবা শুরু হবে।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুরুতে এই রোবোট্যাক্সি সেবা টেসলার কর্মী বা আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। সাধারণ ব্যবহারকারীদের এই সেবা পেতে আরও কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।

২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ‘সাইবারক্যাব’ নামে রোবোট্যাক্সি সেবার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন ইলন মাস্ক। তার মতে, ‘সব টেসলা গাড়িতে থাকা ক্যামেরা ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে যেকোনো টেসলা গাড়িকে রোবোট্যাক্সি হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব।’ তিনি এমন ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেন, যেখানে স্বচালিত ট্যাক্সি হবে গণপরিবহনের মতো সাশ্রয়ী অথচ মানুষের চালনার চেয়ে আরও নিরাপদ।

টেসলার রোবোট্যাক্সি চালু এবং পরবর্তী সময়ে স্টিয়ারিং বিহীন সাইবারক্যাবের সম্ভাব্য প্রবর্তনের প্রত্যাশায় প্রতিষ্ঠানটির ‘ফুল সেলফ ড্রাইভিং (এফএসডি)’ প্রযুক্তি নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে ‘দ্য ডন প্রজেক্ট’ প্রদর্শনীতে দেখা যায়, একটি স্বচালিত টেসলা গাড়ি টানা আটবার শিশু আকৃতির ম্যানিকিনের ওপর দিয়ে চলে যায়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হাইওয়ে ট্রাফিক সেফটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এই প্রযুক্তি নিয়ে বর্তমানে চারটি দুর্ঘটনার তদন্ত করছে।

টেসলা দাবি করছে, রোবোট্যাক্সি ভবিষ্যতের পরিবহন ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটাবে। তবে বাস্তব পরিস্থিতি বলছে, এখনো নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, রোবোট্যাক্সি প্রযুক্তিতে টেসলা এখনো প্রতিযোগীদের তুলনায় অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। তবে এই পরীক্ষামূলক যাত্রা হয়তো ভবিষ্যতের স্বয়ংক্রিয় পরিবহন ব্যবস্থার প্রথম ধাপ হয়ে উঠবে।