ঢাকা ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
English
বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

গাড়িতে কোন ধরনের হেডলাইট ব্যবহার করবেন?

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১০ এএম
গাড়িতে কোন ধরনের হেডলাইট ব্যবহার করবেন?
অন্ধকার রাস্তায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করে হেডলাইট। ছবি: সংগৃহীত

গাড়ির হেডলাইট রাতের আঁধারে নিরাপদ যাত্রার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। হেডলাইট কেবল আলো দেয় না, এটি গাড়ি চালানোর সময় নিরাপত্তাও নিশ্চিত করে। আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে হেডলাইটের কার্যকারিতা ও ডিজাইন দিন দিন উন্নত হচ্ছে। বর্তমান বাজারে প্রধানত চার ধরনের হেডলাইট পাওয়া যায়। এগুলো হলো- হ্যালোজেন, এলইডি, এইচআইডি ও লেজার হেডলাইট। প্রতিটি প্রযুক্তিরই আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা আলোর উজ্জ্বলতা, বিদ্যুৎ খরচ ও স্থায়িত্বের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যায়। তবে বাজারে এত ধরনের হেডলাইট থাকায় কোনটি ব্যবহার করবেন, তা নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। আজ তুলে ধরব গাড়ির হেডলাইটের বিস্তারিত তথ্য।

হ্যালোজেন হেডলাইট

দীর্ঘসময় ধরে হেডলাইট হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়ে আসছে হ্যালোজেন হেডলাইট। এটি সবচেয়ে সাধারণ ও সস্তা হেডলাইট। এ ধরনের হেডলাইট সাধারণত উষ্ণ, হলুদাভ আলো দেয়, যা রাতের বেলা রাস্তা আলোকিত করে। এর আলোর তীব্রতা কম। তবে এতে বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়, সেই সঙ্গে তাপও বেশি উৎপন্ন হয়। এর প্রতিস্থাপন করা সহজ হলেও, এই হেডলাইটগুলোর আলো অপেক্ষাকৃত কম উজ্জ্বল এবং স্থায়িত্বও কম। হ্যালোজেন বাল্বের গড় স্থায়িত্ব প্রায় ৫০০ ঘণ্টা থেকে ১ হাজার ঘণ্টা পর্যন্ত হয়ে থাকে। সাধারণ ড্রাইভিংয়ের জন্য এটির দৃশ্যমানতা যথেষ্ট। তবে কুয়াশা বা ভারী বৃষ্টিতে সমস্যা হয়।

এইচআইডি হেডলাইট

এইচআইডি হেডলাইট উচ্চ উজ্জ্বলতার জন্য পরিচিত। এটি হ্যালোজেনের তুলনায় তিনগুণ বেশি আলো দেয়। এদের আলোর রং সাদা-নীলাভ। দীর্ঘমেয়াদি হলেও এই হেডলাইট ব্যবহারের খরচ বেশি। রাতে ড্রাইভিংয়ের জন্য খুবই ভালো। তবে অন্য গাড়ির চালকরা এর অতি উজ্জ্বল আলোর জন্য সমস্যায় পড়তে পারেন। এইচআইডি হেডলাইট সাধারণত উচ্চগতি ও অন্ধকার রাস্তা আলোকিত করতে বিশেষভাবে কার্যকর। তবে এ ধরনের হেডলাইট প্রতিস্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ বেশ ব্যয়বহুল। তবে হ্যালোজেনের তুলনায় ভালো পারফরম্যান্স দেয়। এটি গড়ে ২ হাজার ঘণ্টা পর্যন্ত জ্বলতে পারে।

এলইডি হেডলাইট

এলইডি হেডলাইট প্রচলিত হ্যালোজেন বা এইচআইডি বাল্বের তুলনায় অনেক বেশি উজ্জ্বল এবং স্পষ্ট আলো দেয়। এটি শুধু রাস্তা দেখার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে না, বরং রাস্তার পাশের বস্তু, চিহ্ন ও অন্যান্য যানবাহনকে আরও স্পষ্টভাবে দেখতে সাহায্য করে। এলইডি হেডলাইটের আয়ুষ্কাল হ্যালোজেন বা এইচআইডি বাল্বের তুলনায় অনেক বেশি। এ কারণে ঘন ঘন হেডলাইট পরিবর্তন করতে হয় না। এ ধরনের হেডলাইট হ্যালোজেন বা এইচআইডি বাল্বের তুলনায় অনেক কম শক্তি খরচ করে। এটিতে উচ্চ ভোল্টেজের প্রয়োজন হয় না, যা গাড়িতে নিরাপত্তা বাড়ায়। এ ধরনের হেডলাইট গাড়িতে ব্যবহারের ফলে ব্যাটারির ওপর চাপ কম পড়ে।

আধুনিক গাড়িতে এলইডি হেডলাইট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিদ্যুৎ খরচ কম এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর হওয়ায় এলইডি দীর্ঘমেয়াদি হয়ে থাকে। তবে এগুলোর দাম বেশি হওয়ায় প্রতিস্থাপন ব্যয়বহুল হতে পারে। এলইডি হেডলাইট ছোট আকারের হওয়ায় গাড়িতে বেশ মানিয়ে যায়।

লেজার হেডলাইট

লেজার হেডলাইট সবচেয়ে উন্নত ধরনের হেডলাইট। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি হিসেবে লেজার হেডলাইট ইতোমধ্যেই বিলাসবহুল গাড়িতে ব্যবহৃত হচ্ছে। লেজার হেডলাইটের আলোর তীব্রতা অত্যন্ত বেশি এবং এর আলোর ব্যাপ্তি অনেক দূর পর্যন্ত। তবে এটি অন্যান্য ধরনের হেডলাইটের তুলনায় অনেক বেশি দামি। উচ্চ ব্যয়বহুল হওয়ায় বর্তমানে সীমিত কিছু গাড়ির মডেলে এটি ব্যবহৃত হচ্ছে।

কোনটি বেছে নেবেন?

যদি সাশ্রয়ীমূল্যের হেডলাইট চান, তবে হ্যালোজেন সেরা। উজ্জ্বল আলোর জন্য এলইডি এবং এইচআইডি কার্যকর, যেখানে লেজার হেডলাইট আগামী দিনের প্রযুক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যেকোনো ধরনের হেডলাইট ব্যবহারের আগে অবশ্যই স্থানীয় আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে হবে। কারণ কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ধরনের হেডলাইট নিষিদ্ধ।

জনপ্রিয়তা বাড়ছে ক্রসওভারের

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৮ এএম
আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৮ পিএম
জনপ্রিয়তা বাড়ছে ক্রসওভারের
ক্রসওভার গাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

গাড়ির জগতে ক্রসওভার মডেলের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। হ্যাচব্যাকের কমপ্যাক্ট ডিজাইন ও এসইউভির শক্তিশালী কাঠামোর সমন্বয়ে তৈরি এই গাড়িগুলো ব্যবহারকারীদের দেয় এক নতুন অভিজ্ঞতা। ক্রসওভার গাড়িগুলো সাধারণত সেডান গাড়ির চেয়ে উঁচু ও এসইউভির চেয়ে ছোট হয়। ফলে শহুরে পরিবেশে চলাচলের জন্য আরামদায়ক ও অফ-রোড ড্রাইভিংয়ের জন্যও উপযোগী হয়।

ক্রসওভারেও হুইল বেইস বড় থাকে। গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স এসইউভির মতো না হলেও সেডান গাড়ির চেয়ে বেশি থাকে। এই গাড়িগুলোয় সাধারণত বেশি জায়গা থাকে, ফলে পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে ভ্রমণ করা আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় হয়ে ওঠে।

ছোট গাড়ির ব্যবস্থাপনা সহজ করার পাশাপাশি বড় গাড়ির ক্ষমতা ও আরামদায়ক অভিজ্ঞতা দিতে সক্ষম হওয়ায় ক্রসওভার মডেলগুলো দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। যাত্রীবহন ক্ষমতা, উন্নত সেফটি ফিচার ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ক্রসওভার গাড়ির বাজারকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে। হোন্ডা ভেজেল, অওডি কিউ২, মিতসুবিশি ইকলিপস ক্রস, নিশান জুক, হ্যাভেল এইচ২-এর মতো মডেলগুলো আধুনিক ডিজাইন এবং উন্নত ফিচারের জন্য বাংলাদেশের গাড়ির বাজারে বেশ জনপ্রিয়।

টয়োটা সেলেকা ফিরে আসছে?

প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১১ এএম
আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৬ পিএম
টয়োটা সেলেকা ফিরে আসছে?
জনপ্রিয় স্পোর্টস কার টয়োটা সেলেকা আবার বাজারে আসতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

গাড়িপ্রেমীদের জন্য দারুণ খবর। দীর্ঘদিনের জনপ্রিয় স্পোর্টস কার টয়োটা সেলেকা আবার বাজারে আসতে পারে বলে জানিয়েছে জাপানের গাড়িবিষয়ক জনপ্রিয় ম্যাগাজিন বেস্ট কার। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, র‌্যালি জাপান ইভেন্টে টয়োটার এক নির্বাহী কর্মকর্তা সেলেকার প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

টয়োটার সাবেক সিইও ও বর্তমান চেয়ারম্যান আকিও টয়োটা ইভেন্টে সেলেকা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইউকি নাকাজিমাকে মঞ্চে ডেকে আনেন। নাকাজিমা বলেন, ‘আমরা সেলেকা তৈরি করছি।’ এই বিবৃতি সেলেকার ভক্তদের মধ্যে আশার আলো জ্বালালেও, গাড়িটি শোরুমে আসার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

টয়োটা সাম্প্রতিক সময়ে তাদের জিআর পারফরম্যান্স লাইনআপ বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। জিআর৮৬ তৈরির মাধ্যমে সেলেকার ঐতিহ্যবাহী র‌্যালি কারের প্রতি সম্মান জানানো হয়েছিল। এর পাশাপাশি টয়োটার অ্যানিমেশন সিরিজ ‘গ্রিপ’-এর দ্বিতীয় মৌসুমের প্রথম পর্বে একটি হোয়াইট বোর্ডে ভবিষ্যতের পারফরম্যান্স গাড়ির তালিকায় সেলেকার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও এটি শুধু একটি অ্যানিমেশনের অংশ, তবে এটি টয়োটার পারফরম্যান্স কারের প্রতি আগ্রহের ইঙ্গিত দেয়।

টয়োটার এই পদক্ষেপ হোন্ডা প্রেলুডের পুনরুত্থানের মতো হতে পারে, যা জাপানের স্পোর্টস কারের বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরি করতে পারে। সেলেকার সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক বিবৃতির জন্য টয়োটা নর্থ আমেরিকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। সেলেকার পুনরুত্থান গাড়ির জগতে টয়োটার শক্তিশালী প্রত্যাবর্তনের বার্তা দিচ্ছে। তবে গ্রাহকদের জন্য এখন শুধু অপেক্ষার পালা।

৫ মিনিটের চার্জে যাত্রা করা যাবে ৩০০ কিলোমিটার

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৭ এএম
আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৫ পিএম
৫ মিনিটের চার্জে যাত্রা করা যাবে ৩০০ কিলোমিটার
সলিড-স্টেট ব্যাটারি মাত্র পাঁচ মিনিটের চার্জে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম হবে। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের প্রথম শতভাগ সিলিকন অ্যানোড ব্যাটারি ২০২৭ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হবে। এই ব্যাটারি মাত্র পাঁচ মিনিটের চার্জে প্রায় ১৮৬ মাইল বা ৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম হবে।

চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর প্যারিস মোটর শোতে প্রোলজিয়াম নামের লিথিয়াম সিরামিক ব্যাটারি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তাদের নতুন সলিড-স্টেট ব্যাটারির ধারণা উন্মোচন করে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এই সিলিকন কম্পোজিট অ্যানোড ব্যাটারির শক্তির ঘনত্ব (এনার্জি ডেনসিটি) বর্তমান লিথিয়াম-আয়ন (li-ion) বা লিথিয়াম আয়রন ফসফেট (lfp) ব্যাটারির তুলনায় অনেক বেশি।

জার্মানির টিইউভি রাইনল্যান্ড কর্তৃক এই ব্যাটারির শক্তির ঘনত্ব প্রমাণিত হয়েছে। ভলিউম অনুসারে শক্তি ঘনত্ব প্রতি লিটারে ৭৪৯ ওয়াট (wh/l) আর ওজন অনুসারে শক্তি ঘনত্ব প্রতি কিলোগ্রামে ৩২১ ওয়াট (wh/kg)। তুলনামূলকভাবে বর্তমানে ব্যবহৃত এলএফপি ব্যাটারি ২০০ wh/kg-এর কম শক্তি সরবরাহ করে। আর লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি ২০০ থেকে ৩০০ wh/kg শক্তি সরবরাহ করে।

প্রোলজিয়াম জানিয়েছে, চলমান গবেষণা ও উন্নতির ফলে ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ এই সিলিকন অ্যানোড ব্যাটারির শক্তি ঘনত্ব ৭৭ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে ৫ থেকে ৬০ শতাংশ চার্জ করা সম্ভব মাত্র ৫ মিনিটে, যা ৩০০ কিলোমিটার যাত্রার জন্য যথেষ্ট। এই চার্জিং সময়সীমা ব্যাটারি শিল্পের প্রচলিত গড় ৩০ মিনিটের তুলনায় অনেক কম একই দূরত্বের ক্ষেত্রে।

এই ব্যাটারির উচ্চ শক্তির ঘনত্বের ফলে ছোট ব্যাটারি থেকে বেশি শক্তি পাওয়া যাবে। এতে গাড়ি নির্মাতারা কম জায়গা ব্যবহার করে বড় শক্তি সরবরাহ করতে পারবে। এটি হাইব্রিড গাড়ির নকশায় নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে, যেখানে ব্যাটারির জন্য বরাদ্দকৃত জায়গা অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে। একই সঙ্গে সমান আকারের ব্যাটারি ব্যবহার করে, প্রচলিত গাড়ির তুলনায় অনেক বেশি দূরত্ব অতিক্রম করা যাবে। প্রোলজিয়ামের এই ব্যাটারির মডুলার নকশা মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ আরও সহজ করবে। ব্যাটারির কোনো এক বা একাধিক সেলের ক্ষতি হলে পুরো ব্যাটারি প্যাক পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে না, ফলে খরচও কমবে।

২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রোলজিয়াম এতদিন বৈদ্যুতিক যানবাহনের জন্য ব্যাটারি উপাদান ও নমুনা সরবরাহ করে আসছিল। এবার তারা সলিড-স্টেট ব্যাটারির বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি বৈশ্বিক গাড়ি নির্মাতাদের কাছে মডিউল উন্নত ও পরীক্ষা করার জন্য প্রায় ৮ হাজার সলিড-স্টেট ব্যাটারি নমুনা হিসেবে সরবরাহ করেছে। এ ছাড়া কোম্পানিটি জার্মানির এফইভি গ্রুপের সঙ্গে অংশীদারত্ব করছে। এর মাধ্যমে প্রোলজিয়ামের ব্যাটারি প্রযুক্তি ও এফইভিয়ের প্রকৌশল দক্ষতা একত্রিত হয়ে আগামীর পরিবেশবান্ধব যানবাহন নির্মাণে কাজ করছে।

এফইভিয়ের ইলেকট্রিক পাওয়ারট্রেনের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট থমাস হুলশর্স্ট বলেন, ‘গত দুই বছরে আমাদের সহযোগিতায় কাস্টমাইজড ব্যাটারি প্যাক ও ধারণাগত নকশাগুলো তৈরি হয়েছে, যা বাজারের চাহিদা ও নিয়ন্ত্রক মানের ঊর্ধ্বে। এটি টেকসই যানবাহন তৈরির পথে বড় পদক্ষেপ।’ ২০২৭ সালে প্রোলজিয়ামের পরবর্তী প্রজন্মের এই ব্যাটারি উৎপাদন শুরুর কথা রয়েছে। সূত্র: লাইভ সায়েন্স

গাড়িতে কেন আগুন লাগে, বিপদ এড়াতে কী করবেন?

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৯ পিএম
গাড়িতে কেন আগুন লাগে, বিপদ এড়াতে কী করবেন?
মহাসড়কে হঠাৎ দুর্ঘটনাবশত গাড়িতে আগুন। ছবি: সংগৃহীত

গাড়িতে আগুন লাগা একটি ভয়ানক দুর্ঘটনা, যা মুহূর্তের মধ্যে জীবন ও সম্পদ নষ্ট করতে পারে। সাধারণত বৈদ্যুতিক গোলযোগ, ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হওয়া কিংবা জ্বালানির লিকেজের মতো সমস্যা থেকে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। আসুন জেনে নিই গাড়িতে আগুন লাগার কারণ ও তা প্রতিরোধ করার উপায় যায়।

বৈদ্যুতিক গোলযোগ

গাড়িতে আগুন লাগার অন্যতম সাধারণ কারণ বৈদ্যুতিক গোলযোগ। এই সমস্যা মূলত গাড়ির বৈদ্যুতিক সার্কিট বা যন্ত্রাংশের ত্রুটির কারণে দেখা দিতে পারে। গাড়ির বৈদ্যুতিক তারগুলোয় ত্রুটি থাকলে শর্টসার্কিট হতে পারে, যা আগুন লাগার অন্যতম কারণ। বিশেষ করে পুরোনো মডেলের গাড়িতে তারের সংযোগ ঢিলেঢালা হলে বা কোনো তার ক্ষতিগ্রস্ত হলে আগুন ধরার আশঙ্কা থাকে। 
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির তারগুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। ফলে শর্টসার্কিটের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ছাড়া অপ্রশিক্ষিত কারিগরের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ ইনস্টল করলে তার সংযোগ ভুল হতে পারে, যা অতিরিক্ত তাপ সৃষ্টি করে। এতে শর্টসার্কিট হয়ে গাড়িতে আগুন ধরতে পারে।

অতিরিক্ত বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ সংযোগ করলে সার্কিটে অতিরিক্ত লোড পড়ে। এতে শর্টসার্কিটের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বৈদ্যুতিক গাড়ির ক্ষেত্রে চার্জিং পোর্টের ত্রুটি বা প্লাগ ঢিলেঢালা হলে স্পার্ক হতে পারে, যা আগুন ধরানোর জন্য যথেষ্ট।

ব্যাটারির সমস্যা

গাড়িতে আগুন লাগার অন্যতম কারণগুলোর মধ্যে একটি ব্যাটারির সঠিক আকার ও মানের প্রতি নজর না দেওয়া। বৈদ্যুতিক ও জ্বালানিচালিত গাড়িতে ব্যাটারির আকার ও স্থাপনের স্থান সঠিক না হলে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
গাড়ির ব্যাটারি যদি সঠিকভাবে ইনস্টল না করা হয়, তবে তা গাড়ির বৈদ্যুতিক সংযোগে গোলযোগ সৃষ্টি করতে পারে। ভুল মাপের ব্যাটারি বা ইঞ্জিনের অনুপযুক্ত স্থানে রাখা ব্যাটারি গাড়ির ভোল্টেজ ভারসাম্য নষ্ট করে। এতে অতিরিক্ত হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়, যা স্পার্কের মাধ্যমে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে।

বৈদ্যুতিক গাড়িতে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ব্যবহারে অতিরিক্ত তাপ উৎপন্ন হয়, যা অতিরিক্ত তাপ বিকিরণ ঘটিয়ে আগুন লাগাতে পারে। এ ছাড়া পুরোনো বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাটারি থেকেও রাসায়নিক তরল লিক হয়ে গাড়ির অন্যান্য অংশে আগুন ধরার ঝুঁকি বাড়ায়। ব্যাটারির আকার সঠিক না হলে, তা বিস্ফোরিত হতে পারে। অতিরিক্ত চার্জিংয়ের ফলে ব্যাটারি থেকে গ্যাস নির্গত হয়, যা সহজে জ্বলে উঠতে পারে।

ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হওয়া

গাড়ির ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হওয়া (ওভারহিটিং) গাড়িতে আগুন ধরার অন্যতম প্রধান কারণ। ইঞ্জিনের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে গাড়ির অন্যান্য যন্ত্রাংশে আগুন লাগার ঝুঁকি বাড়ে। এটি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও সময়মতো প্রতিকার না করলে বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।

ইঞ্জিনে পর্যাপ্ত কুল্যান্ট না থাকলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। ফলে ইঞ্জিন দ্রুত গরম হয়ে যায়। রেডিয়েটর, ফ্যান বা থার্মোস্ট্যাটে সমস্যা থাকলে কুলিং সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। আবার রেডিয়েটরের সামনে ময়লা জমে গেলে বা বাতাস প্রবাহ বন্ধ হলে ইঞ্জিনের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়ে। বেশি লোড বা লম্বা সময় ধরে ইঞ্জিন চালালে ওভারহিট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ইঞ্জিন ওভারহিট হলে রাবার পাইপ, ওয়্যারিং বা তেলের পাইপগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফলে জ্বালানির লিকেজ হতে পারে, যা স্পার্কের সংস্পর্শে আগুন সৃষ্টি করে।

অতিরিক্ত ভোল্টের হেডলাইট

অনেক সময় গাড়িতে অতিরিক্ত ভোল্টের হেডলাইট লাগানো হয়, যা বৈদ্যুতিক সার্কিটে চাপ ফেলে। এতে করে তার গরম হয়ে আগুন ধরে যেতে পারে।

কুলিং ফ্যান অপরিষ্কার

গাড়ির কুলিং ফ্যান অপরিষ্কার থাকলে তা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। ফলে তৈরি উচ্চ তাপমাত্রায় জমে থাকলে সহজেই আগুন ধরে যেতে পারে।

সিএনজি বা এলপিজি লিকেজ

গাড়িতে সিএনজি বা এলপিজি গ্যাস ব্যবহৃত হলে, সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করলে গ্যাস লিক হতে পারে। এটি স্পার্কের সংস্পর্শে এসে আগুনের সূত্রপাত ঘটাতে পারে।

গাড়িতে আগুন লাগলে করণীয়

গাড়িতে আগুন লাগার পর সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া না হলে বিপদের মাত্রা অনেক বেড়ে যেতে পারে। তাই গাড়ি চালানোর সময় কিছু জরুরি বিষয় মাথায় রাখা উচিত। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিন বন্ধ করুন ও গাড়ি থেকে নেমে নিরাপদ দূরত্বে যান। গাড়িতে সবসময় একটি ফায়ার এক্সটিংগুইশার রাখুন এবং তা ব্যবহার করতে শিখুন। জরুরি নম্বরে কল করুন। যত দ্রুত সম্ভব ফায়ার সার্ভিস বা পুলিশের সাহায্য নিন।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

গাড়ির নিয়মিত চেকআপ করানো অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে ইঞ্জিন, ব্যাটারি ও জ্বালানির লিকেজ পরীক্ষা করুন। গাড়ির জন্য নির্ধারিত আকারের ব্যাটারি ব্যবহার করুন ও ব্যাটারি চার্জিংয়ের সময় সতর্ক থাকুন। গাড়ির কুলিং ফ্যান ও রেডিয়েটর নিয়মিত পরিষ্কার করুন। ইঞ্জিন তাপমাত্রা পরীক্ষা করার জন্য কুল্যান্ট, ইঞ্জিন অয়েল ও রেডিয়েটরের অবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা উচিত।

সিএনজি বা এলপিজি গাড়ি ব্যবহার করলে লিকেজ আছে কি না, তা নিয়মিত পরীক্ষা করুন। ভালো মানের সিলিন্ডার ব্যবহার করুন, প্রয়োজনে তা প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ানের কাছ থেকে চেকআপ করান। নিম্নমানের তার বা ফিউজ ব্যবহার না করে উচ্চমানের পণ্য ব্যবহার করুন। এটি শর্টসার্কিটের ঝুঁকি কমাবে।

ইঞ্জিন ওভারহিট হলে রাস্তার পাশে থেমে গাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিন। সমস্যা বেশি হলে নিকটস্থ সার্ভিস সেন্টারে যোগাযোগ করুন। বৈদ্যুতিক তার ও সংযোগ সঠিক অবস্থায় আছে কি না, তা নিয়মিত পরীক্ষা করুন। অপ্রয়োজনীয় হেডলাইট বা অন্যান্য অতিরিক্ত বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

গাড়ির বৈদ্যুতিক সমস্যা থেকে আগুন লাগার ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব, যদি সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। গাড়ির বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশের সুস্থতা নিশ্চিত করতে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির কোনো অস্বাভাবিক গন্ধ, ধোঁয়া বা অতিরিক্ত তাপ দেখা দিলে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

গাড়িতে আগুন লাগার ঝুঁকি এড়াতে সচেতনতা ও রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত চেকআপ ও সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে বড় ধরনের বিপদ থেকে বাঁচা সম্ভব। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জরুরি পরিস্থিতিতে সঠিক পদক্ষেপ নিন। স্মার্ট ব্যবস্থাপনায় যেকোনো দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

গাড়ির জগতে আধুনিকতার প্রতীক এসইউভি

প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৩ পিএম
গাড়ির জগতে আধুনিকতার প্রতীক এসইউভি
এসইউভি। ছবি: সংগৃহীত

স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকল বা এসইউভি অন্যান্য গাড়ি সাধারণ গাড়ি থেকে উঁচু ও শক্তিশালী কাঠামোর জন্য পরিচিত। অন্যদিকে বিএমডব্লিউর তৈরি বিশেষ ধরনের উচ্চমানের গাড়িগুলোকে বলা হয় স্পোর্টস অ্যাকটিভিটি ভেহিকল (এসএভি)। যদিও উভয়ের নকশা ও ফিচারে বেশ মিল রয়েছে। বিএমডব্লিউ তাদের এসএভি ব্র্যান্ডটি আরও প্রিমিয়াম বৈশিষ্ট্য দিয়ে তৈরি করে।

আজকের দিনে গাড়ির বাজারে স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকল (এসইউভি) অন্যতম জনপ্রিয় একটি ক্যাটাগরি। এ ধরনের গাড়ির শক্তিশালী ইঞ্জিন ও বহুমুখী ব্যবহারের জন্যই এই গাড়িগুলো আলাদা পরিচিতি পেয়েছে। 

বাংলাদেশে ধীরে ধীরে বাড়ছে এসইউভির জনপ্রিয়তা। শহরাঞ্চলে বাড়তি উচ্চতার এসব গাড়ি যেমন রাস্তার বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতি সামলাতে দক্ষ, তেমনি এগুলোর বিলাসবহুল ফিচার ক্রেতাদের আকর্ষণ করছে। বিশেষ করে বিএমডব্লিউর তৈরি এসএভি গাড়িগুলো শহুরে ক্রেতাদের মধ্যে জনপ্রিয়। অন্যদিকে টয়োটা, নিশান ও হোন্ডার মতো প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ডগুলো তাদের এসইউভি মডেল দিয়ে বাজারে প্রভাব বিস্তার করছে।
আরামদায়ক অভ্যন্তরীণ ডিজাইনের জন্য এসইউভি জনপ্রিয় হয়েছে। এই গাড়িগুলো একদিকে যেমন শহরের ব্যস্ত রাস্তায় চালানো সহজ, তেমনই গ্রামীণ বা পাহাড়ি রাস্তায়ও দারুণভাবে চালানো যায়। বড় পরিবারের জন্য এটি একটি আদর্শ পছন্দ। 
বাংলাদেশে মাঝারি দামের এসইউভি গাড়ির চাহিদা বেশি। তবে উচ্চআয়ের ক্রেতারা বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের এসইউভি গাড়ি কিনতে পছন্দ করেন। এই বিলাসবহুল মডেলগুলোর দাম বেশি হতে পারে। সম্প্রতি বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড এসইউভিগুলোর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়ছে, যা পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশ করে।

বাংলাদেশে এসইউভি ও এসএভি বাজারে বড় চ্যালেঞ্জ হলো উচ্চ আমদানি শুল্ক। এটি দামকে তুলনামূলকভাবে বাড়িয়ে দেয়। তবে ক্রমবর্ধমান শহুরে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের কারণে এসব গাড়ির চাহিদা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশের রাস্তার অবস্থা ও গাড়ির চাহিদা বিবেচনায় এসইউভি এবং এসএভি গাড়ি ভবিষ্যতে আরও জনপ্রিয় হবে।

স্থানীয় ক্রেতারা এখন গাড়ির কর্মক্ষমতা ও আরামকে আরও গুরুত্ব দেওয়ায় বাংলাদেশের বাজারে এসইউভি গাড়ির এই ক্রমবর্ধমান চাহিদা বাড়ছে। ভবিষ্যতে বৈদ্যুতিক ও পরিবেশবান্ধব মডেলগুলোর চাহিদাও একইভাবে বাড়বে বলে আশা করা যায়।
এসইউভি গাড়িগুলো শক্তিশালী পারফরম্যান্স, উন্নত প্রযুক্তি ও আরামদায়ক ইন্টেরিয়রের জন্য সুপারিশ করা যায়। তবে জ্বালানি খরচের বিষয়টি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।