ঢাকা ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

চালকবিহীন ইভি ভ্যান পরীক্ষা করছে ওক্সা

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৫ এএম
চালকবিহীন ইভি ভ্যান পরীক্ষা করছে ওক্সা
অটোনোমাস ভ্যানের পরীক্ষা চালাচ্ছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওক্সা। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওক্সা (সাবেক ওক্সবোটিকা) বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ফোর্ড ই-ট্রানজিট মডেলের উপর ভিত্তি করে অটোনোমাস বা স্বচালিত ভ্যান পরীক্ষা চালাচ্ছে। ইলেকট্রিক ভেহিকলের (ইভি) প্রযুক্তিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এসএই লেভেল ৪ প্রযুক্তি ব্যবহার করে চালকবিহীন যাতায়াত সেবার পরীক্ষা চালাচ্ছে ওক্সা। এই স্বয়ংক্রিয় ভ্যানগুলো মাল্টি-প্যাসেঞ্জার পরিবহন ও রাইড-শেয়ারিং অ্যাপে ব্যবহার উপযোগী।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এই মডেলগুলো তাদের নিজস্ব প্রযুক্তি ‘রেফারেন্স অটোনমি ডিজাইনস (আরএডিএস)’ ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো ব্যাপক উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এই প্রযুক্তি দ্রুত উৎপাদনযোগ্য মডেলে স্বয়ংক্রিয় হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সংযোজন করতে সক্ষম, যা বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের জন্য তৈরি।

ওক্সা আরও জানিয়েছে, তাদের উন্নত প্রযুক্তির প্ল্যাটফর্ম রেফারেন্স অটোনমি ডিজাইনস বিভিন্ন যানবাহনে সহজে সংযোগ করতে প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলোকে সহায়তা করবে। এই প্রযুক্তি থার্ড-পার্টি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও ব্যবহারযোগ্য। এটি মাল্টি-পারসন রাইড-পুলিং ও ডেলিভারি সেবার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যা একটি রাইড-শেয়ারিং অ্যাপের মাধ্যমে পরিচালিত হতে পারে। তবে মাল্টি-প্যাসেঞ্জার পরিবহন হিসেবে এ ধরনের গাড়িতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে। এ ধরনের সেবার ক্ষেত্রে বিভিন্ন আইনি ও প্রযুক্তিগত বিষয় সমাধান করতে হবে।

ওক্সার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) গেভিন জ্যাকসন বলেন, ‘ফোর্ড ই-ট্রানজিটের জন্য স্বয়ংক্রিয় অপারেশন চালু করা টেকসই পরিবহন সমাধানের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’ এই যানবাহনগুলো এক সময়ে কম যানবাহন ব্যবহার করেই বেশি যাত্রী পরিবহন করতে সক্ষম হবে, যা আগামীর সাশ্রয়ী সমাধান হতে পারে। কোম্পানিটি আশা করছে, এই উদ্যোগ যাত্রী পরিবহন ও সরবরাহ খাতে টেকসই পরিবর্তন আনবে। যুক্তরাষ্ট্রে স্বয়ংক্রিয় শাটল বাস চালুর জন্য আরও সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদিও এই প্রযুক্তিতে কিছু প্রোটোটাইপ ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে।

দেশে ২৫০ সিসির বাইক আনল সুজুকি

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫২ এএম
দেশে ২৫০ সিসির বাইক আনল সুজুকি
সুজুকি জিক্সার এসএফ ২৫০। ছবি: সংগৃহীত

দেশের মোটরসাইকেল বাজারে নতুন মাত্রা যোগ করতে সুজুকি বাংলাদেশ আনল জিক্সার ২৫০ সিরিজের দুটি নতুন মডেল। চলতি সপ্তাহে ঢাকায় এক কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে ‘জিক্সার ২৫০’ ও ‘জিক্সার এসএফ ২৫০’ মডেলের দুটি বাইক উদ্বোধন করা হয়। জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সুজুকি জিক্সার ২৫০ ও জিক্সার এসএফ ২৫০ মডেলে রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, যা নিশ্চিত করবে ভালো পারফরম্যান্স। ২৫০ সিসি সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিনে উন্নত ফুয়েল ইনজেকশন (এফআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা সর্বোচ্চ পাওয়ার ডেলিভারি ও জ্বালানি সাশ্রয় নিশ্চিত করে। উচ্চতর তাপ ব্যবস্থাপনার জন্য সুজুকি অয়েল কুলিং সিস্টেম (এসওসিএস) ব্যবহার করে উচ্চ চাপের মধ্যেও সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মক্ষমতা নিশ্চিত করে।

সুজুকি জিক্সার এসএফ ২৫০। ছবি: সংগৃহীত

জিক্সার ২৫০ ও জিক্সার এসএফ ২৫০ দ্রুতগতি এবং স্থিতিশীলতার মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখে। মটোজিপি প্রযুক্তির আদলে তৈরি করা হয়েছে বাইক দুটির ইঞ্জিন। এ জন্য বাইকগুলোয় রাইডিংয়ের ক্ষেত্রেও রেসিং টেকনোলজির অনন্য অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে।

উভয় মডেলেই ৬-স্পিড গিয়ারবক্স রয়েছে, যা সঠিক শক্তি সরবরাহ ও নিখুঁত নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে। ডুয়েল চ্যানেল এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম রাইডারদের উচ্চ গতিতে বা হঠাৎ ব্রেকিংয়ের সময় নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা দেবে।

এটি বিভিন্ন রাস্তায় আত্মবিশ্বাসী রাইডিং অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করবে। এই বাইকগুলো ভিন্নধর্মী রাইডিং স্টাইলকে মাথায় রেখে ডিজাইন করা হয়েছে। জিক্সার ২৫০ এর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৯৫০ টাকা। আর জিক্সার এসএফ ২৫০ এর দাম পড়বে ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫০ টাকা। উভয় মডেলে রয়েছে সম্পূর্ণ ডিজিটাল ইনস্ট্রুমেন্ট ক্লাস্টারসহ এলইডি হেডলাইট ও টেইললাইট। রাইডার ও প্যাসেঞ্জার উভয়ের জন্য রয়েছে আরামদায়ক স্প্লিট সিট।

সুজুকি জিক্সার ২৫০

ম্যাট ব্ল্যাক ও ম্যাট ব্লু- এ দুটি আকর্ষণীয় রঙে পাওয়া যাবে জিক্সার ২৫০। অন্যদিকে জিক্সার এসএফ ২৫০ চারটি অনন্য রঙে পাওয়া যাবে। তবে জিক্সার এসএফ ২৫০ মডেল আরও দুটি বিশেষ সংস্করণ পাওয়া যাবে, যা কিনতে বাড়তি ১৫ হাজার টাকা গুনতে হবে। সবকটি মোটরসাইকেলেই তিন বছরের বিক্রয়োত্তর সেবাসহ বিনামূল্যে ছয়বার সার্ভিসিং সেবা পাওয়া যাবে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুজুকি বাংলাদেশ-এর ডিভিশনাল ডিরেক্টর শোয়েব আহমেদ বলেন, ‘সুজুকি জিক্সার ২৫০ সিরিজ আমাদের মটোজিপি-অনুপ্রাণিত ডিএনএ এবং উন্নত ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সমন্বয়ে তৈরি। এই সিরিজটি ২৫০ সিসি সেগমেন্টে নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে, যাতে রেসিং পারফরম্যান্স আর কমফোর্ট দুটোই বিদ্যমান।’

সুজুকি বাংলাদেশের সিওও এ কে এম তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘এই বাইকগুলো রোমাঞ্চকর কিন্তু নিয়ন্ত্রিত অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে নিখুঁতভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়েছে। উন্নত এফআই প্রযুক্তি এবং অ্যারোডাইনামিক ডিজাইন নিশ্চিত করেছে জিক্সার ২৫০ সিরিজ, যা বাংলাদেশের রাইডারদের জন্য অনন্য গতি, শক্তি এবং স্টাইলের নিশ্চয়তা দেয়।’

/আবরার জাহিন

জনপ্রিয়তা বাড়ছে ক্রসওভারের

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৮ এএম
আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৮ পিএম
জনপ্রিয়তা বাড়ছে ক্রসওভারের
ক্রসওভার গাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

গাড়ির জগতে ক্রসওভার মডেলের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। হ্যাচব্যাকের কমপ্যাক্ট ডিজাইন ও এসইউভির শক্তিশালী কাঠামোর সমন্বয়ে তৈরি এই গাড়িগুলো ব্যবহারকারীদের দেয় এক নতুন অভিজ্ঞতা। ক্রসওভার গাড়িগুলো সাধারণত সেডান গাড়ির চেয়ে উঁচু ও এসইউভির চেয়ে ছোট হয়। ফলে শহুরে পরিবেশে চলাচলের জন্য আরামদায়ক ও অফ-রোড ড্রাইভিংয়ের জন্যও উপযোগী হয়।

ক্রসওভারেও হুইল বেইস বড় থাকে। গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স এসইউভির মতো না হলেও সেডান গাড়ির চেয়ে বেশি থাকে। এই গাড়িগুলোয় সাধারণত বেশি জায়গা থাকে, ফলে পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে ভ্রমণ করা আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় হয়ে ওঠে।

ছোট গাড়ির ব্যবস্থাপনা সহজ করার পাশাপাশি বড় গাড়ির ক্ষমতা ও আরামদায়ক অভিজ্ঞতা দিতে সক্ষম হওয়ায় ক্রসওভার মডেলগুলো দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। যাত্রীবহন ক্ষমতা, উন্নত সেফটি ফিচার ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ক্রসওভার গাড়ির বাজারকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে। হোন্ডা ভেজেল, অওডি কিউ২, মিতসুবিশি ইকলিপস ক্রস, নিশান জুক, হ্যাভেল এইচ২-এর মতো মডেলগুলো আধুনিক ডিজাইন এবং উন্নত ফিচারের জন্য বাংলাদেশের গাড়ির বাজারে বেশ জনপ্রিয়।

টয়োটা সেলেকা ফিরে আসছে?

প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১১ এএম
আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৬ পিএম
টয়োটা সেলেকা ফিরে আসছে?
জনপ্রিয় স্পোর্টস কার টয়োটা সেলেকা আবার বাজারে আসতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

গাড়িপ্রেমীদের জন্য দারুণ খবর। দীর্ঘদিনের জনপ্রিয় স্পোর্টস কার টয়োটা সেলেকা আবার বাজারে আসতে পারে বলে জানিয়েছে জাপানের গাড়িবিষয়ক জনপ্রিয় ম্যাগাজিন বেস্ট কার। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, র‌্যালি জাপান ইভেন্টে টয়োটার এক নির্বাহী কর্মকর্তা সেলেকার প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

টয়োটার সাবেক সিইও ও বর্তমান চেয়ারম্যান আকিও টয়োটা ইভেন্টে সেলেকা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইউকি নাকাজিমাকে মঞ্চে ডেকে আনেন। নাকাজিমা বলেন, ‘আমরা সেলেকা তৈরি করছি।’ এই বিবৃতি সেলেকার ভক্তদের মধ্যে আশার আলো জ্বালালেও, গাড়িটি শোরুমে আসার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

টয়োটা সাম্প্রতিক সময়ে তাদের জিআর পারফরম্যান্স লাইনআপ বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। জিআর৮৬ তৈরির মাধ্যমে সেলেকার ঐতিহ্যবাহী র‌্যালি কারের প্রতি সম্মান জানানো হয়েছিল। এর পাশাপাশি টয়োটার অ্যানিমেশন সিরিজ ‘গ্রিপ’-এর দ্বিতীয় মৌসুমের প্রথম পর্বে একটি হোয়াইট বোর্ডে ভবিষ্যতের পারফরম্যান্স গাড়ির তালিকায় সেলেকার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও এটি শুধু একটি অ্যানিমেশনের অংশ, তবে এটি টয়োটার পারফরম্যান্স কারের প্রতি আগ্রহের ইঙ্গিত দেয়।

টয়োটার এই পদক্ষেপ হোন্ডা প্রেলুডের পুনরুত্থানের মতো হতে পারে, যা জাপানের স্পোর্টস কারের বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরি করতে পারে। সেলেকার সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক বিবৃতির জন্য টয়োটা নর্থ আমেরিকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। সেলেকার পুনরুত্থান গাড়ির জগতে টয়োটার শক্তিশালী প্রত্যাবর্তনের বার্তা দিচ্ছে। তবে গ্রাহকদের জন্য এখন শুধু অপেক্ষার পালা।

৫ মিনিটের চার্জে যাত্রা করা যাবে ৩০০ কিলোমিটার

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৭ এএম
আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৫ পিএম
৫ মিনিটের চার্জে যাত্রা করা যাবে ৩০০ কিলোমিটার
সলিড-স্টেট ব্যাটারি মাত্র পাঁচ মিনিটের চার্জে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম হবে। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের প্রথম শতভাগ সিলিকন অ্যানোড ব্যাটারি ২০২৭ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হবে। এই ব্যাটারি মাত্র পাঁচ মিনিটের চার্জে প্রায় ১৮৬ মাইল বা ৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম হবে।

চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর প্যারিস মোটর শোতে প্রোলজিয়াম নামের লিথিয়াম সিরামিক ব্যাটারি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তাদের নতুন সলিড-স্টেট ব্যাটারির ধারণা উন্মোচন করে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এই সিলিকন কম্পোজিট অ্যানোড ব্যাটারির শক্তির ঘনত্ব (এনার্জি ডেনসিটি) বর্তমান লিথিয়াম-আয়ন (li-ion) বা লিথিয়াম আয়রন ফসফেট (lfp) ব্যাটারির তুলনায় অনেক বেশি।

জার্মানির টিইউভি রাইনল্যান্ড কর্তৃক এই ব্যাটারির শক্তির ঘনত্ব প্রমাণিত হয়েছে। ভলিউম অনুসারে শক্তি ঘনত্ব প্রতি লিটারে ৭৪৯ ওয়াট (wh/l) আর ওজন অনুসারে শক্তি ঘনত্ব প্রতি কিলোগ্রামে ৩২১ ওয়াট (wh/kg)। তুলনামূলকভাবে বর্তমানে ব্যবহৃত এলএফপি ব্যাটারি ২০০ wh/kg-এর কম শক্তি সরবরাহ করে। আর লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি ২০০ থেকে ৩০০ wh/kg শক্তি সরবরাহ করে।

প্রোলজিয়াম জানিয়েছে, চলমান গবেষণা ও উন্নতির ফলে ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ এই সিলিকন অ্যানোড ব্যাটারির শক্তি ঘনত্ব ৭৭ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে ৫ থেকে ৬০ শতাংশ চার্জ করা সম্ভব মাত্র ৫ মিনিটে, যা ৩০০ কিলোমিটার যাত্রার জন্য যথেষ্ট। এই চার্জিং সময়সীমা ব্যাটারি শিল্পের প্রচলিত গড় ৩০ মিনিটের তুলনায় অনেক কম একই দূরত্বের ক্ষেত্রে।

এই ব্যাটারির উচ্চ শক্তির ঘনত্বের ফলে ছোট ব্যাটারি থেকে বেশি শক্তি পাওয়া যাবে। এতে গাড়ি নির্মাতারা কম জায়গা ব্যবহার করে বড় শক্তি সরবরাহ করতে পারবে। এটি হাইব্রিড গাড়ির নকশায় নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে, যেখানে ব্যাটারির জন্য বরাদ্দকৃত জায়গা অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে। একই সঙ্গে সমান আকারের ব্যাটারি ব্যবহার করে, প্রচলিত গাড়ির তুলনায় অনেক বেশি দূরত্ব অতিক্রম করা যাবে। প্রোলজিয়ামের এই ব্যাটারির মডুলার নকশা মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ আরও সহজ করবে। ব্যাটারির কোনো এক বা একাধিক সেলের ক্ষতি হলে পুরো ব্যাটারি প্যাক পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে না, ফলে খরচও কমবে।

২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রোলজিয়াম এতদিন বৈদ্যুতিক যানবাহনের জন্য ব্যাটারি উপাদান ও নমুনা সরবরাহ করে আসছিল। এবার তারা সলিড-স্টেট ব্যাটারির বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি বৈশ্বিক গাড়ি নির্মাতাদের কাছে মডিউল উন্নত ও পরীক্ষা করার জন্য প্রায় ৮ হাজার সলিড-স্টেট ব্যাটারি নমুনা হিসেবে সরবরাহ করেছে। এ ছাড়া কোম্পানিটি জার্মানির এফইভি গ্রুপের সঙ্গে অংশীদারত্ব করছে। এর মাধ্যমে প্রোলজিয়ামের ব্যাটারি প্রযুক্তি ও এফইভিয়ের প্রকৌশল দক্ষতা একত্রিত হয়ে আগামীর পরিবেশবান্ধব যানবাহন নির্মাণে কাজ করছে।

এফইভিয়ের ইলেকট্রিক পাওয়ারট্রেনের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট থমাস হুলশর্স্ট বলেন, ‘গত দুই বছরে আমাদের সহযোগিতায় কাস্টমাইজড ব্যাটারি প্যাক ও ধারণাগত নকশাগুলো তৈরি হয়েছে, যা বাজারের চাহিদা ও নিয়ন্ত্রক মানের ঊর্ধ্বে। এটি টেকসই যানবাহন তৈরির পথে বড় পদক্ষেপ।’ ২০২৭ সালে প্রোলজিয়ামের পরবর্তী প্রজন্মের এই ব্যাটারি উৎপাদন শুরুর কথা রয়েছে। সূত্র: লাইভ সায়েন্স

গাড়িতে কেন আগুন লাগে, বিপদ এড়াতে কী করবেন?

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৯ পিএম
গাড়িতে কেন আগুন লাগে, বিপদ এড়াতে কী করবেন?
মহাসড়কে হঠাৎ দুর্ঘটনাবশত গাড়িতে আগুন। ছবি: সংগৃহীত

গাড়িতে আগুন লাগা একটি ভয়ানক দুর্ঘটনা, যা মুহূর্তের মধ্যে জীবন ও সম্পদ নষ্ট করতে পারে। সাধারণত বৈদ্যুতিক গোলযোগ, ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হওয়া কিংবা জ্বালানির লিকেজের মতো সমস্যা থেকে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। আসুন জেনে নিই গাড়িতে আগুন লাগার কারণ ও তা প্রতিরোধ করার উপায় যায়।

বৈদ্যুতিক গোলযোগ

গাড়িতে আগুন লাগার অন্যতম সাধারণ কারণ বৈদ্যুতিক গোলযোগ। এই সমস্যা মূলত গাড়ির বৈদ্যুতিক সার্কিট বা যন্ত্রাংশের ত্রুটির কারণে দেখা দিতে পারে। গাড়ির বৈদ্যুতিক তারগুলোয় ত্রুটি থাকলে শর্টসার্কিট হতে পারে, যা আগুন লাগার অন্যতম কারণ। বিশেষ করে পুরোনো মডেলের গাড়িতে তারের সংযোগ ঢিলেঢালা হলে বা কোনো তার ক্ষতিগ্রস্ত হলে আগুন ধরার আশঙ্কা থাকে। 
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির তারগুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। ফলে শর্টসার্কিটের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ছাড়া অপ্রশিক্ষিত কারিগরের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ ইনস্টল করলে তার সংযোগ ভুল হতে পারে, যা অতিরিক্ত তাপ সৃষ্টি করে। এতে শর্টসার্কিট হয়ে গাড়িতে আগুন ধরতে পারে।

অতিরিক্ত বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ সংযোগ করলে সার্কিটে অতিরিক্ত লোড পড়ে। এতে শর্টসার্কিটের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বৈদ্যুতিক গাড়ির ক্ষেত্রে চার্জিং পোর্টের ত্রুটি বা প্লাগ ঢিলেঢালা হলে স্পার্ক হতে পারে, যা আগুন ধরানোর জন্য যথেষ্ট।

ব্যাটারির সমস্যা

গাড়িতে আগুন লাগার অন্যতম কারণগুলোর মধ্যে একটি ব্যাটারির সঠিক আকার ও মানের প্রতি নজর না দেওয়া। বৈদ্যুতিক ও জ্বালানিচালিত গাড়িতে ব্যাটারির আকার ও স্থাপনের স্থান সঠিক না হলে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
গাড়ির ব্যাটারি যদি সঠিকভাবে ইনস্টল না করা হয়, তবে তা গাড়ির বৈদ্যুতিক সংযোগে গোলযোগ সৃষ্টি করতে পারে। ভুল মাপের ব্যাটারি বা ইঞ্জিনের অনুপযুক্ত স্থানে রাখা ব্যাটারি গাড়ির ভোল্টেজ ভারসাম্য নষ্ট করে। এতে অতিরিক্ত হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়, যা স্পার্কের মাধ্যমে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে।

বৈদ্যুতিক গাড়িতে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ব্যবহারে অতিরিক্ত তাপ উৎপন্ন হয়, যা অতিরিক্ত তাপ বিকিরণ ঘটিয়ে আগুন লাগাতে পারে। এ ছাড়া পুরোনো বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাটারি থেকেও রাসায়নিক তরল লিক হয়ে গাড়ির অন্যান্য অংশে আগুন ধরার ঝুঁকি বাড়ায়। ব্যাটারির আকার সঠিক না হলে, তা বিস্ফোরিত হতে পারে। অতিরিক্ত চার্জিংয়ের ফলে ব্যাটারি থেকে গ্যাস নির্গত হয়, যা সহজে জ্বলে উঠতে পারে।

ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হওয়া

গাড়ির ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হওয়া (ওভারহিটিং) গাড়িতে আগুন ধরার অন্যতম প্রধান কারণ। ইঞ্জিনের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে গাড়ির অন্যান্য যন্ত্রাংশে আগুন লাগার ঝুঁকি বাড়ে। এটি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও সময়মতো প্রতিকার না করলে বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।

ইঞ্জিনে পর্যাপ্ত কুল্যান্ট না থাকলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। ফলে ইঞ্জিন দ্রুত গরম হয়ে যায়। রেডিয়েটর, ফ্যান বা থার্মোস্ট্যাটে সমস্যা থাকলে কুলিং সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। আবার রেডিয়েটরের সামনে ময়লা জমে গেলে বা বাতাস প্রবাহ বন্ধ হলে ইঞ্জিনের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়ে। বেশি লোড বা লম্বা সময় ধরে ইঞ্জিন চালালে ওভারহিট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ইঞ্জিন ওভারহিট হলে রাবার পাইপ, ওয়্যারিং বা তেলের পাইপগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফলে জ্বালানির লিকেজ হতে পারে, যা স্পার্কের সংস্পর্শে আগুন সৃষ্টি করে।

অতিরিক্ত ভোল্টের হেডলাইট

অনেক সময় গাড়িতে অতিরিক্ত ভোল্টের হেডলাইট লাগানো হয়, যা বৈদ্যুতিক সার্কিটে চাপ ফেলে। এতে করে তার গরম হয়ে আগুন ধরে যেতে পারে।

কুলিং ফ্যান অপরিষ্কার

গাড়ির কুলিং ফ্যান অপরিষ্কার থাকলে তা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। ফলে তৈরি উচ্চ তাপমাত্রায় জমে থাকলে সহজেই আগুন ধরে যেতে পারে।

সিএনজি বা এলপিজি লিকেজ

গাড়িতে সিএনজি বা এলপিজি গ্যাস ব্যবহৃত হলে, সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করলে গ্যাস লিক হতে পারে। এটি স্পার্কের সংস্পর্শে এসে আগুনের সূত্রপাত ঘটাতে পারে।

গাড়িতে আগুন লাগলে করণীয়

গাড়িতে আগুন লাগার পর সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া না হলে বিপদের মাত্রা অনেক বেড়ে যেতে পারে। তাই গাড়ি চালানোর সময় কিছু জরুরি বিষয় মাথায় রাখা উচিত। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিন বন্ধ করুন ও গাড়ি থেকে নেমে নিরাপদ দূরত্বে যান। গাড়িতে সবসময় একটি ফায়ার এক্সটিংগুইশার রাখুন এবং তা ব্যবহার করতে শিখুন। জরুরি নম্বরে কল করুন। যত দ্রুত সম্ভব ফায়ার সার্ভিস বা পুলিশের সাহায্য নিন।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

গাড়ির নিয়মিত চেকআপ করানো অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে ইঞ্জিন, ব্যাটারি ও জ্বালানির লিকেজ পরীক্ষা করুন। গাড়ির জন্য নির্ধারিত আকারের ব্যাটারি ব্যবহার করুন ও ব্যাটারি চার্জিংয়ের সময় সতর্ক থাকুন। গাড়ির কুলিং ফ্যান ও রেডিয়েটর নিয়মিত পরিষ্কার করুন। ইঞ্জিন তাপমাত্রা পরীক্ষা করার জন্য কুল্যান্ট, ইঞ্জিন অয়েল ও রেডিয়েটরের অবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা উচিত।

সিএনজি বা এলপিজি গাড়ি ব্যবহার করলে লিকেজ আছে কি না, তা নিয়মিত পরীক্ষা করুন। ভালো মানের সিলিন্ডার ব্যবহার করুন, প্রয়োজনে তা প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ানের কাছ থেকে চেকআপ করান। নিম্নমানের তার বা ফিউজ ব্যবহার না করে উচ্চমানের পণ্য ব্যবহার করুন। এটি শর্টসার্কিটের ঝুঁকি কমাবে।

ইঞ্জিন ওভারহিট হলে রাস্তার পাশে থেমে গাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিন। সমস্যা বেশি হলে নিকটস্থ সার্ভিস সেন্টারে যোগাযোগ করুন। বৈদ্যুতিক তার ও সংযোগ সঠিক অবস্থায় আছে কি না, তা নিয়মিত পরীক্ষা করুন। অপ্রয়োজনীয় হেডলাইট বা অন্যান্য অতিরিক্ত বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

গাড়ির বৈদ্যুতিক সমস্যা থেকে আগুন লাগার ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব, যদি সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। গাড়ির বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশের সুস্থতা নিশ্চিত করতে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির কোনো অস্বাভাবিক গন্ধ, ধোঁয়া বা অতিরিক্ত তাপ দেখা দিলে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

গাড়িতে আগুন লাগার ঝুঁকি এড়াতে সচেতনতা ও রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত চেকআপ ও সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে বড় ধরনের বিপদ থেকে বাঁচা সম্ভব। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জরুরি পরিস্থিতিতে সঠিক পদক্ষেপ নিন। স্মার্ট ব্যবস্থাপনায় যেকোনো দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।