দেশের বাজারে রিভো নতুন দুটি ইলেকট্রিক বাইক এনেছে। ছবি: খবরের কাগজ
দেশের ইলেকট্রিক বাইকের বাজারে নতুন মাত্রা যোগ করেছে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড রিভো। প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি দেশের বাজারে এনেছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দুটি ইলেকট্রিক বাইক। ‘এ১০’ ও ‘এ১২’ মডেলগুলো দৈনন্দিন যাতায়াতের ক্ষেত্রে ক্রেতাদের জন্য আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী সমাধান হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আশা করছে রিভো।
রিভো জানিয়েছে, নতুন এই বাইকগুলো দেখতে যেমন দৃষ্টিনন্দন, তেমনি টেকসই ও ব্যাটারি পারফরম্যান্সেও অসাধারণ। রিভোর এ১০ মডেলের দাম শুরু হয়েছে ৭৯ হাজার ৯০০ টাকা থেকে এবং এ১২ মডেলটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৯ হাজার ৯০০ টাকা। একবার সম্পূর্ণ চার্জে এই বাইকগুলো ৬৫ থেকে ৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে সক্ষম।
সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে এক শোরুমে নতুন এই বাইক দুটি উন্মোচন করেন রিভো বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ভেন নেইল। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ রূপান্তরের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা চাই মানুষ আরও টেকসই ও সাশ্রয়ী বৈদ্যুতিক যানবাহনের মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন যাতায়াত সহজতর করুক।’
রিভো এ১০ এই মডেল বিশেষভাবে তরুণদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। আধুনিক ডিজাইন, সম্পূর্ণ গ্রাফিন ব্যাটারি এবং একবার চার্জে ৬৫ থেকে ৭৫ কিলোমিটার চলতে সক্ষম এটি। বাইকটির সর্বোচ্চ গতি প্রতি ঘণ্টায় ৩৫ কিলোমিটার। নিরাপদ ও আরামদায়ক যাতায়াতের জন্য এটি আদর্শ। মাটি থেকে বাইকটির উচ্চতা ১২০ মিলিমিটার। বাইকটিতে এলইডি মিটারের পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য হাইড্রোলিক ব্রেকও রয়েছে।
রিভো এ১২ ‘এ০১’ মডেলের উন্নত সংস্করণ এই মডেল মূলত পেশাদার ও করপোরেট ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এতে রয়েছে ৬০ ভোল্টের ২৬ অ্যাম্পিয়ার আওয়ারের গ্রাফিন ব্যাটারি এবং ১০০০ ওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন মোটর। বাইকটির সর্বোচ্চ গতি প্রতি ঘণ্টায় ৪৭ কিলোমিটার এবং একবার চার্জে এটি ৭৫ থেকে ৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে। আসনের নিচে সুপরিসর জায়গা থাকায় হেলমেটসহ অন্যান্য বস্তু সহজে রাখা যায়। মাটি থেকে বাইকটির উচ্চতা ১৫৫ মিলিমিটার। বাইকটিতে আকারে বড় ডিজিটাল স্পিডোমিটার থাকায় সহজে বাইকের যাবতীয় তথ্য জানার সুযোগ মেলে।
রিভো তার গ্রাহকদের সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে ক্রমাগত প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সাধন করছে। ব্যবহারকারীদের আরও ভালো মাইলেজ, গতি ও পারফরম্যান্স দেওয়ার লক্ষ্যে তারা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। কোম্পানিটি সারা দেশে ছয় মাসের ডোরস্টেপ সার্ভিস এবং ২৪ মাস পর্যন্ত ওয়ারেন্টি দিচ্ছে।
টয়োটা জিআর৮৬-এর বিশেষ সংস্করণ ‘ইউজু’। ছবি: সংগৃহীত
অটোমোবাইল প্রেমীদের জন্য এক নতুন চমক নিয়ে হাজির হয়েছে জাপানি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা সিয়ন ব্র্যান্ডের স্পিরিট আবারও ফিরিয়ে আনছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২৬ সালের জিআর৮৬ ইউজু স্পেশাল এডিশন বাজারে আনার মাধ্যমে সেই স্মৃতিকে উদযাপন করছে টয়োটা। এটি দ্বিতীয় প্রজন্মের জিআর৮৬ স্পোর্টস কুপের চতুর্থ সীমিত সংস্করণের মডেল।
নতুন এই ইউজু সংস্করণটি মূলত ২০১৫ সালের সিয়ন এফআর-এস রিলিজ সিরিজের ১.০ থেকে অনুপ্রাণিত। এর উজ্জ্বল হলুদ রং ও গ্লসি ব্ল্যাক অ্যাক্সেন্টস গাড়িটিকে দিয়েছে দৃষ্টিনন্দন ও স্পোর্টি লুক। সামনের সিটগুলোতে হলুদ রঙের কাভার ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া স্টিয়ারিং হুইল, হ্যান্ডব্রেক ও দরজায় পর্যন্ত হলুদ রঙের ছোঁয়া রয়েছে।
স্পেশাল এডিশনের সঙ্গে থাকছে অতিরিক্ত আনুষঙ্গিক প্যাকেজ, যা ব্যবহারকারীদের ‘স্ট্রিট রেসিং’ ঘরানার অভিজ্ঞতা দেবে। এর মধ্যে রয়েছে আকর্ষণীয় বডি কিট ও চারটি বিশাল সিলভার রঙের টেলপাইপযুক্ত ক্যাট-ব্যাক এক্সজস্ট সিস্টেম, যেখানে জিআর লোগোও রয়েছে।
অন্যান্য দিক থেকে ইউজু মূলত পারফরম্যান্স প্যাকযুক্ত একটি উন্নত জিআর৮৬ প্রিমিয়াম মডেল। পারফরম্যান্স প্যাকেজে স্যাক্স ড্যাম্পার ও শক্তিশালী ব্রেমবো ব্রেক রয়েছে। এই পারফরম্যান্স প্যাকটি ২০২৫ সালের টয়োটা জিআর৮৬-এর দামের সঙ্গে ১৫০০ থেকে ২০২০ ডলার পর্যন্ত যোগ করতে পারে, যা মডেলের ওপর নির্ভর করে।
ইউজুর ইঞ্জিনে রয়েছে ২২৮ হর্সপাওয়ারের ২ দশমিক ৪ লিটারের ফ্ল্যাট-ফোর ইঞ্জিন, যা জিআর৮৬-এর অন্যান্য মডেলেও ব্যবহার করা হয়েছে। ট্রান্সমিশনের জন্য থাকবে ছয় গতির ম্যানুয়াল বা অটোমেটিক অপশন।
টয়োটা যুক্তরাষ্ট্রে ইউজু স্পেশাল এডিশনের মাত্র ৮৬০টি ইউনিট বিক্রি করার পরিকল্পনা করেছে। ২০২৬ সালের জিআর৮৬ মডেলের দাম এখনো ঘোষণা করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, আমদানি শুল্কের কারণে সামনের দিনে দাম বাড়তে পারে। তবে সম্প্রতি আরোপিত বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহার করা হলে এর দাম ৩৬ হাজার ডলারের কাছাকাছি হতে পারে। শুল্কের প্রভাব পড়লে টয়োটাকে সেই খরচ ভোক্তাদের ওপর চাপাতে হতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার বাইরে থাকা বিখ্যাত ব্রিটিশ গাড়ি প্রস্তুতকারক জাগুয়ার সম্প্রতি তাদের পুরোনো লোগো বাদ দিয়ে উন্মোচন করেছে নতুন এক মিনিমালিস্ট লোগো। নতুন লোগো ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার ঝড় তুলেছে। এর পর জাগুয়ার সম্প্রতি তাদের ব্র্যান্ডিংয়ের অংশ হিসেবে একটি নতুন ইলেকট্রিক কনসেপ্ট গাড়ি উন্মোচন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ‘টাইপ ০০’ নামের এই কনসেপ্ট কার প্রকাশ্যে এনেছে, যা তাদের বর্তমান উৎপাদন মডেলগুলোর থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
গাড়িটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক এর লম্বা সম্মুখভাগ এবং নিচু ছাদ। সরল প্রান্ত থেকে দেখলে এটিকে একটি অসম্পূর্ণ থ্রি-ডি মডেলের মতো মনে হতে পারে। অন্য ডিজাইন বৈশিষ্ট্যগুলো বেশ আধুনিক এবং কিছুটা কল্পনাপ্রসূত। যেমন গাড়ির মাঝ বরাবর ও পাশে পিতলের বার, ডিম্বাকৃতির স্টিয়ারিং হুইল, ভাঁজ করা যায় এমন ডিসপ্লে, বাটারফ্লাই দরজা এবং যাত্রী ও চালকের স্থানকে পৃথককারী ট্র্যাভারটিন পাথরের প্ল্যাটফর্ম রয়েছে।
২০০৮ সাল থেকে ভারতের টাটা মোটরসের মালিকানাধীন জাগুয়ার জানিয়েছে, এই কনসেপ্টের উৎপাদন সংস্করণে একবার চার্জে ৪৩০ মাইল পর্যন্ত রেঞ্জ পাওয়া যাবে। মাত্র ১৫ মিনিটের চার্জেই মিলবে ২০০ মাইলের রেঞ্জ। যদিও গতি, অ্যাকসেলারেশনসহ অন্যান্য পারফরম্যান্সসংক্রান্ত বিস্তারিত এখনো প্রকাশ করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, উৎপাদন সংস্করণে কনসেপ্ট মডেলের অনেক চমকপ্রদ ফিচার বাদ পড়তে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হোনডে (হুন্দাই) ২০২৬ সালের জন্য নতুন রূপে হাজির করতে যাচ্ছে ইলেকট্রিক সেডান হোনডে আয়োনিক ৬। দক্ষিণ কোরিয়ায় চলমান ‘সিউল মোবিলিটি শো’-এ গাড়িটির হালনাগাদ সংস্করণ উন্মোচন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
২০২৩ সালে প্রথম বাজারে আসে হোনডে আয়োনিক-৬। যদিও এটি আয়োনিক-৫-এর মতো জনপ্রিয়তা পায়নি। তবে ই-জিএমপি প্ল্যাটফর্মভিত্তিক ৩৪২ মাইলের রেঞ্জ ও দ্রুত চার্জিং সুবিধার জন্য এটি ‘ইভি অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জিতেছিল।
হোনডে আয়োনিক ৬ এন লাইন। ছবি: সংগৃহীত
২০২৬ সালের মডেলের এই গাড়িটিতে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে হোনডে নতুন সংস্করণে পারফরম্যান্স বা রেঞ্জ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। তবে হোনডে গাড়িটির নকশাগত পরিবর্তনের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে। আগের চেয়েও বেশি অ্যারোডায়নামিক করা হয়েছে গাড়িটির সামনের অংশ, যেখানে চারটি এলইডি লাইট একটি বিশেষ নকশা তৈরি করেছে। প্রধান হেডলাইট এখন বাম্পারে স্থাপন করা হয়েছে, যা গাড়িটিকে আরও প্রশস্ত ও নিচু দেখায়।
গাড়ির পেছনের অংশের ছবি প্রকাশ না করা হলেও হোনডে জানিয়েছে, পেছনের অংশে বড় স্পয়লারের পরিবর্তে যুক্ত করা হয়েছে নতুন ‘ডাকটেইল’ স্পয়লার। এটি একই সঙ্গে অ্যারোডায়নামিক পারফরম্যান্স ও আকর্ষণীয় ডিজাইন নিশ্চিত করে।
অভ্যন্তরীণ ডিজাইনে সূক্ষ্ম কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। স্টিয়ারিং হুইলে এখন একটি অতিরিক্ত স্পোক রয়েছে এবং সেন্টার কনসোল পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্লাইমেট কন্ট্রোল বাটনগুলো আগের চেয়ে বড় করা হয়েছে। দরজার অভ্যন্তরের উপাদানগুলো আগের চেয়ে উন্নত মানের বলে দাবি করেছে হোনডে।
এর পাশাপাশি হোনডে একটি স্পোর্টি ‘এন লাইন’ সংস্করণও প্রদর্শন করেছে। এই সংস্করণের সামনের বাম্পারটিকে কালো রঙের বিশেষ ডিজাইনের প্যানেল দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। চাকায় বিশেষ নকশা ও এন লাইন ব্যাজ রয়েছে গাড়িটির বিভিন্ন অংশে।
তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো প্রদর্শিত একটি ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে একটি উচ্চ পারফরম্যান্স সম্পন্ন আয়োনিক-৬ ‘এন’-এর টিজার দেখানো হয়েছে। হোনডে জানিয়েছে, আগামী জুলাইয়ে এই মডেল আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হবে।
টিজারে গাড়িটির গাঢ় নীল রং, কালো রঙের পেছনের বাম্পার, একটি ‘ডাকটেইল’ স্পয়লার এবং একটি বড় রেয়ার উইং দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, আয়োনিক-৬ এন-এ আয়োনিক-৫ এন-এর ৬৪১ হর্সপাওয়ারের কাছাকাছি ইঞ্জিন এবং ২০২২ সালের আরএন২২ই কনসেপ্টের কিছু ফিচার থাকতে পারে।
হুন্দাই জানিয়েছে, আরও বিস্তারিত তথ্য শিগগিরই জানানো হবে। ২০২৬ সালের মডেল হিসেবে এই ইলেকট্রিক সেডানটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উন্নত বিশ্বে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ই-বাইকের ব্যবহার। ছবি: সংগৃহীত
আমাদের দেশে ই-বাইকের ব্যবহার খুব একটা দেখা না গেলেও, উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে প্রতিনিয়ত এর ব্যবহার বাড়ছে। ই-বাইক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত নতুন নতুন মডেল নিয়ে আসছে। এখানে ১ হাজার ৮৯৯ থেকে ৪ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যের চারটি নতুন মডেল তুলে ধরা হলো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার থেকে ৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। তবে উচ্চ দাম সব সময় মানের নিশ্চয়তা দেয় না।
ফোর্ড মুস্ট্যাং ই-বাইক
ফোর্ড মুস্ট্যাং ই-বাইক ১৯৬৪ সাল থেকে আইকনিক গাড়ি হিসেবে পরিচিত মুস্ট্যাংয়ের নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের মতো অনেক গাড়ি প্রস্তুতকারক এখন ই-বাইক উৎপাদনে নামছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা কাজটি অন্য প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করায়। ফোর্ড তৈরি করেছে N+ বাইক, যা শুধু ফোর্ড ডিলারশিপে তিনটি ভিন্ন আকারে পাওয়া যায়।
মুস্ট্যাং ই-বাইকটি ফোর্ডের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তৈরি হয়েছে। এটি কিছুটা পুরোনো ধাঁচের, অনেকটা আগের দিনের মোটরসাইকেলের মতো। বেশির ভাগ তার গাড়ির কাঠামোর ভেতরে লুকানো থাকায় বাইকটি দেখতে বেশ পরিচ্ছন্ন মনে হয়। তবে অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেমের বাইকটি ৬৮ পাউন্ড ওজনের হওয়ায় বেশ ভারী। এ ছাড়া এতে কোনো কিকস্ট্যান্ড নেই, ফলে এটি পার্ক করাও বেশ ঝামেলা সৃষ্টি করে। উঁচু টপ টিউবের কারণে ওঠানামা করতেও কিছুটা অসুবিধা হয়।
রাইডারের জন্য রয়েছে আকর্ষণীয় ফুল-কালার এলসিডি স্ক্রিন, যা মুস্ট্যাং গাড়ির স্পিডোমিটারের মতো দেখতে। তবে চলন্ত অবস্থায় ডিজিটাল সংখ্যাগুলো পড়তে কিছুটা অসুবিধা হতে পারে। এ ছাড়া রয়েছে লাল স্টার্টার বাটন, যদিও এটি তেমন কোনো কাজে দেয় না। সামনের ও পেছনের এয়ার-স্প্রিং সাসপেনশনের কারণে শহরের রাস্তায় চলাচলের অভিজ্ঞতা বেশ ভালো। এতে রয়েছে ৭৫০ ওয়াটের হাব মোটর, ফলে এটি ২৮ মাইল প্রতি ঘণ্টায় ক্লাস ৩ গতিতে চলতে পারে। থ্রটল ছাড়া এটি ২০ মাইল প্রতি ঘণ্টায় ক্লাস ২ গতিতে চলতে পারে। ব্যাটারি চার্জ হতে সময় লাগে সাড়ে তিন ঘণ্টা।
উল্লেখযোগ্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে টেকট্রো ফোর-পিস্টন হাইড্রোলিক ব্রেক, পিরেলি অ্যাঞ্জেল জিটি সেমি-স্লিক টায়ার, রানিং লাইট ও ইনটিগ্রেটেড রিয়ার লাইট। এতে রয়েছে শিমানোর ৯-স্পিড গিয়ার। এ ছাড়া রয়েছে ইকো, নরমাল, স্পোর্ট ও ট্র্যাক মোড। স্পোর্ট মোড থ্রি-লেভেল প্যাডেল অ্যাসিস্টের মতো অনুভূতি দেবে, যা চালানোর সময় সবচেয়ে ভালো অভিজ্ঞতা দেয়। ইকো মোডে সর্বোচ্চ পথ পাড়ি দেওয়া যাবে, যা ৬০ মাইল পর্যন্ত হতে পারে।
দাম বেশ বেশি, অতিরিক্ত ওজন ও কিকস্ট্যান্ডের অনুপস্থিতি কিছুটা অসুবিধার কারণ হতে পারে। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক ই-বাইক বাজারে ফোর্ড ডিজাইনকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে, কার্যকারিতার দিকে যথেষ্ট মনোযোগের অভাব রয়েছে।
ভিভোল্ট আলফা টু
ভিভোল্ট আলফা টু ফোর্ড মুস্ট্যাংয়ের তুলনায় ভিভোল্ট আলফা টু সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের ই-বাইক। অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেমের এই ই-বাইক সস্তা, সুন্দর, হালকা ও বেশ সাদামাটা ডিজাইনের। এটির ব্যাটারি ছোট হওয়ায় ওজন মাত্র ৪৫ পাউন্ড। এতে কোনো গিয়ার শিফটও নেই, কারণ এটি একটি সিঙ্গেল-স্পিড ই-বাইক।
বাইকটিতে কোনো টার্ন সিগন্যাল নেই। এটি শুধু দুটি রঙে পাওয়া যায়, এগুলো হলো রিফ অরেঞ্জ ও ব্ল্যাক পার্ল। এতে কোনো উন্নত সাসপেনশনও নেই, স্ক্রিনটি ছোট ও সাদাকালো। তবে এতে শিমানো হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক রয়েছে, যদিও থাম্ব থ্রটল খুব একটা কার্যকর নয়।
রিফ অরেঞ্জ রঙের বাইকটি ৩৫০ ওয়াট মোটরসহ বাজারে এসেছে। এটি গেটস কার্বন বেল্ট ড্রাইভের মাধ্যমে চলতে অত্যন্ত মসৃণ অনুভূতি দেয়। লেভেল তিন প্যাডেল অ্যাসিস্টে ছোট মোটরের সত্ত্বেও পাহাড়ি পথ সহজে পাড়ি দেওয়া যায়।
এতে মাল্টিপল স্পিড না থাকায় ‘ঘোস্ট পেডেলিংয়ের’ কিছু সমস্যা হয়। তবে সামনে বড় চেইন রিং যোগ করলে সম্ভবত সেই প্রভাব কমতে পারে। তবে এটি কোনো বড় সমস্যা নয়।
তবে সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো ছোট ব্যাটারির কার্যক্ষমতা। ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় মাত্র ১০ মাইল রেঞ্জ পাওয়া যায়। এ জন্য প্রতি দুইবার চালানোর পরেই এটি রিচার্জ করতে হয়। স্ট্যান্ডার্ড ৩৭৪ ওয়াট-আওয়ারের ব্যাটারি গ্রীষ্মকালে ২৫ থেকে ৪০ মাইল রেঞ্জ দিতে পারে। তবে ৪৯০ ওয়াট-আওয়ারের রেঞ্জার ব্যাটারি ব্যবহার করলে ৬০ মাইল রেঞ্জ পাওয়া যাবে। বিশেষ অফারে এটি ফ্রি দেওয়া হলেও, আলাদাভাবে কিনতে হলে ৩৯৯ ডলার খরচ করতে হবে। সামগ্রিকভাবে ভিভোল্ট চালাতে বেশ আরামদায়ক। স্বনামধন্য ব্রিটিশ গাড়ি নির্মাতা লোটাসের প্রতিষ্ঠাতা কলিন চ্যাপম্যানের মতে, ওজন ই-বাইকের সবচেয়ে বড় সমস্যা, আর ভিভোল্টের ছোট মোটর থাকলেও অতিরিক্ত ওজন বহন করতে হয় না।
লেকট্রিক এক্সপেডিশন ২.০
লেকট্রিক এক্সপেডিশন ২.০ লেকট্রিক ব্র্যান্ডের ই-বাইক বাজারে বেশ জনপ্রিয়, বিশেষ করে এটি দাম কম ও খুব মজবুত। এই ব্র্যান্ডের ই-বাইক একক ও ডুয়াল ব্যাটারি সংস্করণে পাওয়া যায়। ডুয়াল ব্যাটারি সংস্করণের দাম ৪০০ থেকে ৬০০ ডলার বেশি হয়।
নানা আনুষঙ্গিকসহ লেকট্রিকের রেইনড্রপ ব্লু রঙের বাইকটি দুজন যাত্রী বহন করতে পারে। এতে আলাদা সিট রয়েছে। এ ছাড়া এটি মালবাহী বাইক হিসেবেও ভালো কাজ করে। এতে এক সপ্তাহের বাজার অনায়াসে বহন করা যায়।
একক রাইডারদের জন্যও এটি কার্যকর। ১ হাজার ৩১০ ওয়াটের পিক পেডেল-অ্যাসিস্ট মোটর পাহাড়ি বা সমতল পথেও শক্তিশালী পারফরম্যান্স দেয়। এতে সামনের সাসপেনশন, ব্রেক লাইট ও টার্ন সিগন্যাল রয়েছে। স্ক্রিনটিও বেশ সুন্দর।
ক্লাস ৩ ক্যাটাগরির এই বাইক প্রতি ঘণ্টায় ২৮ মাইল গতিতে চলতে পারে। একক ব্যাটারিতে সর্বোচ্চ ৬০ মাইল এবং ডুয়াল ব্যাটারি সংস্করণের ১২০ মাইল রেঞ্জ পাওয়া যায়।
পেডেগো মটো
পেডেগো মটো ই-বাইকের বাজারে নিত্যনতুন মডেলের আনাগোনা থাকলেও, পেডেগো মটো একেবারে ব্যতিক্রম। এটি সহজে সংযোজন করা যায়, যা ব্যবহারকারীদের জন্য স্বস্তিদায়ক। বাইকটির ডিজাইন রেট্রো-ফিউচারিস্টিক মোটরসাইকেল বা মোপেডের মতো, যা দেখতে বেশ আকর্ষণীয়।
এটির নিচু বেঞ্চ আসনটি সামঞ্জস্য করা যায় না। তবে ছয় ফুট উচ্চতার চালকও আরামের সঙ্গে বসতে পারেন। এটি মূলত ক্লাস ২ ই-বাইক, যা প্রতি ঘণ্টায় ২০ মাইল গতিতে চলতে পারে। তবে সেটিংস পরিবর্তন করে ক্লাস ৩-এ রূপান্তর করা যায়, এরপর এটি প্রতি ঘণ্টায় ২৮ মাইল গতিতে চলতে পারে।
৪৮ ভোল্টের ১৯.২ অ্যাম্পিয়ার-আওয়ার ব্যাটারির সাহায্যে বাইকটি ৭৫ মাইল পর্যন্ত চলতে পারে। গতি কমিয়ে চালালে এই রেঞ্জ আরও ভালো পাওয়া যায়। তবে থ্রটল ব্যবহারের ফলে রেঞ্জ কিছুটা কমে যায়। এতে রয়েছে ৭৫০ ওয়াটের শক্তিশালী মোটর, যা দ্রুত গতিতে চলার সক্ষমতা দেয়। সামনে ও পেছনে সাসপেনশন থাকায় আরামদায়ক অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। এ ছাড়া প্রশস্ত আসনও বাড়তি সুবিধা যোগ করে।
এতে রয়েছে ব্রেক লাইট। উজ্জ্বল রঙের এলসিডি স্ক্রিনে তথ্য সহজে পড়া যায়। এটি ১০-স্পিড ড্রাইভট্রেন থাকলেও ই-বাইকের টর্ক বেশি হওয়ায় গিয়ার বদলানোর প্রয়োজনীয়তা তুলনামূলক কম হয়।
তবে বাইকটির ওজন ৮৯ পাউন্ড, যা বহন করা কঠিন হতে পারে। তবে কিকস্ট্যান্ডের সাহায্যে দাঁড় করানো যায়। দৈনন্দিন যাতায়াতের জন্য বেশ ভালো ও আরোহী নিয়ে সহজে চালানো যায়।
রিভিয়ান তাদের মাঝারি আকারের আর২ মডেলটি আগামী বছর বাজারে আনতে কাজ করে যাচ্ছে। এর জন্য ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের নরমাল প্ল্যান্ট সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত চলছে, যেখানে ২০২৬ সালে আর২ সরবরাহের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। শীতকালেও নির্মাণকাজ ভালোভাবে এগিয়েছে বলে জানিয়েছে রিভিয়ান। নতুন ১১ লাখ বর্গফুটের ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, যেখানে বডি শপ ও জেনারেল অ্যাসেম্বলি স্থাপন করা হবে।
বর্তমানে রিভিয়ানের ৪৩ লাখ বর্গফুটের নরমাল প্ল্যান্টে আর১এস, আর১টি ও ইলেকট্রিক কমার্শিয়াল ভ্যান তৈরি হয়। সম্প্রসারণ শেষ হলে এই প্ল্যান্টের উৎপাদন ক্ষমতা বছরে ২ লাখ ১৫ হাজার গাড়িতে উন্নীত হবে, যা এখন ১ লাখ ৫০ হাজার। শিগগিরই ছাদের কাজ শেষ করার আশা করছে রিভিয়ান। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। রিভিয়ানের উৎপাদন সুবিধা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট টনি স্যাঙ্গার তাদের অগ্রগতির কয়েকটি তথ্য জানিয়েছেন।
রিভিয়ানের প্রোডাকশন ফ্যাসিলিটিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট টনি স্যাঙ্গার জানান, ভবন নির্মাণের কাজ পরিকল্পনার চেয়ে কিছুটা এগিয়েছে। নতুন বডি শপ ও অ্যাসেম্বলি বিল্ডিংয়ের ৭০ শতাংশ স্ট্রাকচারাল স্টিলের কাজ সম্পন্ন হয়েছে, আর ছাদ নির্মাণের ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে।
নতুন ভবন নির্মাণের জন্য রিভিয়ানকে তাদের পুরোনো পরীক্ষামূলক ট্র্যাক সরিয়ে ফেলতে হয়েছে। তবে একটি নতুন উচ্চগতির ট্র্যাক তৈরি করা হচ্ছে, যা এই বসন্তে চালু হবে। রিভিয়ানের সিইও আরজে স্কারিংজ সম্প্রতি আর২-এর বডির একটি প্রোটোটাইপ উন্মোচন করেছেন, যা উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। প্রথম আর২ মডেলটি ই-কোট প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে, যার রঙ রিভিয়ানের পুরোনো ‘লঞ্চ গ্রিন’ থেকে অনুপ্রাণিত।
প্রাথমিকভাবে নরমাল প্ল্যান্টে আর২ উৎপাদন শুরু হলেও, ভবিষ্যতে জর্জিয়ার নতুন ইভি প্ল্যান্টে উৎপাদন করা হবে। জর্জিয়ার এই কারখানা ২০২৮ সালে চালু হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে বছরে ৪ লাখ গাড়ি তৈরি করার সক্ষমতা থাকবে।
রিভিয়ানের নতুন আর২ মডেলের দাম শুরু হবে প্রায় ৪৫ হাজার ডলার থেকে, যা রিভিয়ানের বর্তমান আর১এস ও আর১টি মডেলের প্রায় অর্ধেক। আর২-এর পাশাপাশি আর৩ ও স্পোর্টি আর৩এক্স মডেলও শিগগিরই বাজারে আসবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। রিভিয়ানের এই নতুন মডেল বাজারে বৈদ্যুতিক যানবাহনের প্রতিযোগিতায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।