দেশের ইলেকট্রিক টু-হুইলার বাজারে নিজেদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে রাজধানী ঢাকায় কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছে বৈশ্বিক ইলেকট্রিক বাইক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রিভো। গতকাল বুধবার রাজধানীর মিরপুর ৬০ ফিট এলাকায় নতুন ৩এস (সেলস, সার্ভিস, স্পেয়ার্স) শোরুম উদ্বোধন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এটি ঢাকায় রিভোর দ্বিতীয় শোরুম, যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি রাজধানীতে কার্যক্রম সম্প্রসারণ করল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রিভো বাংলাদেশের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মি. ভেন। তিনি বলেন, ‘নতুন শোরুমের মাধ্যমে নগরবাসীর জন্য আরও সহজ ও উন্নত বৈদ্যুতিক যানবাহন সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’
গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে রিভো নতুন শোরুম উদ্বোধন উপলক্ষে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশ ডিসকাউন্টের ঘোষণা দিয়েছে, যা রমজানের শেষ পর্যন্ত থাকবে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, নতুন শোরুমের মাধ্যমে তারা রাজধানীতে ইলেকট্রিক বাইকের সহজলভ্যতা ও সেবার মান আরও উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করবে।
এই উদ্যোগ দেশের ইভি মার্কেটকে আরও শক্তিশালী করতে এবং গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী ও উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে বলে মনে করে রিভো বাংলাদেশ।
আটলান্টায় উবার ব্যবহারকারীরা অ্যাপের মাধ্যমে ওয়েমোর রোবোট্যাক্সি ব্যবহার করতে পাবেন।
জনপ্রিয় রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম উবার ও গুগলের অটোনোমাস বা স্বচালিত গাড়ি প্রকল্প ওয়েমো তাদের রোবোট্যাক্সি সেবা যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি নতুন শহরে চালু করছে। এই রোবোট্যাক্সিগুলো চালকবিহীন হয়ে থাকে। নতুন এই পদক্ষেপে আটলান্টায় উবার ব্যবহারকারীরা অ্যাপের মাধ্যমে ওয়েমোর রোবোট্যাক্সি ব্যবহার করতে পাবেন।
স্বচালিত ট্যাক্সি সেবা খাতে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে উবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারত্ব করেছে, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ওয়েমোর সঙ্গে এই অংশীদারত্ব। ফলে ব্যবহারকারীরা চালকবিহীন গাড়িতে চড়ে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।
২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফিনিক্সে প্রথম উবার অ্যাপে ওয়েমোর চালকবিহীন জাগুয়ার আই-পেস গাড়ির (যা ‘ওয়েমো ড্রাইভার’ নামে পরিচিত) ব্যবহার শুরু হয়। ২০২৪ সালের শেষের দিকে এই অংশীদারত্ব আরও জোরদার হয়। এবার অস্টিন ও আটলান্টার নির্দিষ্ট অঞ্চলে একচেটিয়াভাবে উবারের মাধ্যমে ওয়েমোর সেবা চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই মায়ামিতেও এ সেবা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
সিএনএন জানিয়েছে, আটলান্টায় উবার ব্যবহারকারীরা এখন ওয়েমোর রোবোট্যাক্সিতে চড়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করতে পারবেন। চলতি বছরের গ্রীষ্মে এই সেবা আরও ব্যাপকভাবে চালু হওয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে উবারের কর্মীরা পরীক্ষামূলকভাবে ওয়েমো ট্যাক্সি ব্যবহার করছেন।
এই সেবা নিতে হলে উবার অ্যাপ আপডেট করে অ্যাকাউন্ট > সেটিংস > রাইড প্রেফারেন্সেস > অটোনোমাস ভেহিকলস-এ গিয়ে ‘জয়েন ইন্টারেস্ট লিস্ট’-এ ক্লিক করতে হবে।
স্বচালিত যানবাহনকে অনেকে পরবর্তী প্রজন্মের যোগাযোগ ব্যবস্থার বড় উদ্ভাবন হিসেবে বিবেচনা করছেন। বিশেষ করে ট্যাক্সি পরিষেবায় চালকহীন প্রযুক্তি বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ট্যাক্সি সেবাগুলো এই প্রযুক্তি থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে পারে, কারণ চালকের প্রয়োজন না থাকায় পরিচালন ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। এছাড়া মুনাফা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ওয়েমো ও টেসলা স্বচালিত গাড়ি প্রযুক্তিতে এগিয়ে থাকলেও তাদের পদ্ধতি ভিন্ন। টেসলার রোবোট্যাক্সি সেবা যুক্তরাষ্ট্রের অস্টিনে জুন মাসে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, ওয়েমো বেশ কয়েক বছর ধরেই নির্দিষ্ট কিছু শহরে এই সেবা দিয়ে আসছে।
উবারের জন্য ওয়েমো একটি বড় সম্ভাবনা তৈরি করলেও, এটিই একমাত্র বিকল্প নয়। উবারের প্রধান নির্বাহী দারা খোসরোশাহী টেসলার আসন্ন রোবোট্যাক্সি সেবাও তাদের প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। যদিও প্রাথমিকভাবে টেসলা তাদের রোবোট্যাক্সি সেবা স্বাধীনভাবে পরিচালনা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে এ দুটি প্রতিষ্ঠান নিজেদের মতো করে অটোনোমাস ট্যাক্সি খাতে প্রতিযোগিতা চালিয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ির (ইভি) বাজারে টেসলার অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের অটোমোবাইল জায়ান্ট বিওয়াইডি। সম্প্রতি তারা এমন এক অত্যাধুনিক ব্যাটারি প্রযুক্তি সম্পন্ন গাড়ি এনেছে, যা মাত্র পাঁচ মিনিটের চার্জে ৪০০ কিলোমিটার (প্রায় ২৪৯ মাইল) পর্যন্ত পথ পাড়ি দিতে পারে। নিজেদের নতুন ‘হ্যান এল’ সেডান ও ‘ট্যাং এল’ এসইউভি মডেলে এই যুগান্তকারী প্রযুক্তি যুক্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই প্রযুক্তি বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জিং নিয়ে প্রচলিত ধারণাকে বদলে দিতে চলেছে।
চীনের এই অটোমোবাইল নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তাদের নতুন ‘সুপার ই-প্ল্যাটফর্ম’ প্রযুক্তিতে তৈরি ব্যাটারি এই দ্রুত চার্জিংয়ের সুবিধা দেবে। এর চার্জিং গতি ১ হাজার কিলোওয়াট, যা টেসলার ২৫০ কিলোওয়াটের সুপার চার্জারের চেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি। দ্রুত চার্জিংয়ের পাশাপাশি দামের দিক থেকেও নতুন মডেল দুটি বেশ সাশ্রয়ী।
বিওয়াইডির নতুন হ্যান এল সেডান গাড়ির দাম শুরু হচ্ছে ২ লাখ ১৯ হাজার ৮০০ ইউয়ান থেকে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা। এই দাম টেসলার সবচেয়ে সাশ্রয়ী মডেল থ্রি-এর চেয়েও প্রায় ১০ হাজার ডলার কম। অন্যদিকে বিওয়াইডির ট্যাং এল এসইউভি মডেলের দাম শুরু হচ্ছে ২ লাখ ৩৯ হাজার ৮০০ ইউয়ান থেকে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৯ লাখ ৬১ হাজার টাকা।
গত মাসে এই সুপার ই-প্ল্যাটফর্ম চার্জিং প্রযুক্তির ঘোষণা দিয়েছিল বিওয়াইডি। তখন তারা দাবি করেছিল, এই প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের ভ্রমণের সময় গাড়ির রেঞ্জ বা কত দূর চলবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা পুরোপুরি দূর করবে। কারণ, প্রচলিত পেট্রল বা ডিজেল গাড়িতে জ্বালানি ভরতে যে সময় লাগে, প্রায় একই সময়ে এই গাড়িগুলো চার্জ দেওয়া সম্ভব হবে। আপাতত এই দুটি নতুন মডেল শুধু চীনে পাওয়া যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে দ্রুত চার্জিংয়ের জন্য দেশটিতে ৪ হাজার ফাস্ট চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে।
বিওয়াইডি বর্তমানে চীনের সবচেয়ে জনপ্রিয় বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। দেশটির মোট ইভি বিক্রির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ তাদের দখলে রয়েছে। অভ্যন্তরীণ বাজারে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করার পর সংস্থাটি সম্প্রতি বৈশ্বিক সম্প্রসারণে জোর দিয়েছে। গত বছর তারা টেসলাকে পেছনে ফেলে বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রীত বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রস্তুতকারকের খেতাব অর্জন করে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কোনো কার্যক্রম নেই।
বৈশ্বিক বাজারের চাহিদা মেটাতে বিওয়াইডি বর্তমানে হাঙ্গেরিতে একটি কারখানা নির্মাণ করছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই বছরের শেষ নাগাদ কারখানাটি উৎপাদনে যাবে। এতে বছরে ৩ লাখ গাড়ি উৎপাদনের সক্ষমতা থাকবে বলে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপনের ঘোষণাও দিয়েছে বিওয়াইডি।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউরোপে টেসলার ইভি বিক্রি কমে যাওয়া এবং শেয়ারের দরপতনের মতো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিওয়াইডির এই অত্যাধুনিক চার্জিং প্রযুক্তিসম্পন্ন এবং তুলনামূলক কম দামের নতুন মডেলগুলো বাজারে আসায় বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
টয়োটা জিআর৮৬-এর বিশেষ সংস্করণ ‘ইউজু’। ছবি: সংগৃহীত
অটোমোবাইল প্রেমীদের জন্য এক নতুন চমক নিয়ে হাজির হয়েছে জাপানি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা সিয়ন ব্র্যান্ডের স্পিরিট আবারও ফিরিয়ে আনছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২৬ সালের জিআর৮৬ ইউজু স্পেশাল এডিশন বাজারে আনার মাধ্যমে সেই স্মৃতিকে উদযাপন করছে টয়োটা। এটি দ্বিতীয় প্রজন্মের জিআর৮৬ স্পোর্টস কুপের চতুর্থ সীমিত সংস্করণের মডেল।
নতুন এই ইউজু সংস্করণটি মূলত ২০১৫ সালের সিয়ন এফআর-এস রিলিজ সিরিজের ১.০ থেকে অনুপ্রাণিত। এর উজ্জ্বল হলুদ রং ও গ্লসি ব্ল্যাক অ্যাক্সেন্টস গাড়িটিকে দিয়েছে দৃষ্টিনন্দন ও স্পোর্টি লুক। সামনের সিটগুলোতে হলুদ রঙের কাভার ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া স্টিয়ারিং হুইল, হ্যান্ডব্রেক ও দরজায় পর্যন্ত হলুদ রঙের ছোঁয়া রয়েছে।
স্পেশাল এডিশনের সঙ্গে থাকছে অতিরিক্ত আনুষঙ্গিক প্যাকেজ, যা ব্যবহারকারীদের ‘স্ট্রিট রেসিং’ ঘরানার অভিজ্ঞতা দেবে। এর মধ্যে রয়েছে আকর্ষণীয় বডি কিট ও চারটি বিশাল সিলভার রঙের টেলপাইপযুক্ত ক্যাট-ব্যাক এক্সজস্ট সিস্টেম, যেখানে জিআর লোগোও রয়েছে।
অন্যান্য দিক থেকে ইউজু মূলত পারফরম্যান্স প্যাকযুক্ত একটি উন্নত জিআর৮৬ প্রিমিয়াম মডেল। পারফরম্যান্স প্যাকেজে স্যাক্স ড্যাম্পার ও শক্তিশালী ব্রেমবো ব্রেক রয়েছে। এই পারফরম্যান্স প্যাকটি ২০২৫ সালের টয়োটা জিআর৮৬-এর দামের সঙ্গে ১৫০০ থেকে ২০২০ ডলার পর্যন্ত যোগ করতে পারে, যা মডেলের ওপর নির্ভর করে।
ইউজুর ইঞ্জিনে রয়েছে ২২৮ হর্সপাওয়ারের ২ দশমিক ৪ লিটারের ফ্ল্যাট-ফোর ইঞ্জিন, যা জিআর৮৬-এর অন্যান্য মডেলেও ব্যবহার করা হয়েছে। ট্রান্সমিশনের জন্য থাকবে ছয় গতির ম্যানুয়াল বা অটোমেটিক অপশন।
টয়োটা যুক্তরাষ্ট্রে ইউজু স্পেশাল এডিশনের মাত্র ৮৬০টি ইউনিট বিক্রি করার পরিকল্পনা করেছে। ২০২৬ সালের জিআর৮৬ মডেলের দাম এখনো ঘোষণা করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, আমদানি শুল্কের কারণে সামনের দিনে দাম বাড়তে পারে। তবে সম্প্রতি আরোপিত বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহার করা হলে এর দাম ৩৬ হাজার ডলারের কাছাকাছি হতে পারে। শুল্কের প্রভাব পড়লে টয়োটাকে সেই খরচ ভোক্তাদের ওপর চাপাতে হতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার বাইরে থাকা বিখ্যাত ব্রিটিশ গাড়ি প্রস্তুতকারক জাগুয়ার সম্প্রতি তাদের পুরোনো লোগো বাদ দিয়ে উন্মোচন করেছে নতুন এক মিনিমালিস্ট লোগো। নতুন লোগো ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার ঝড় তুলেছে। এর পর জাগুয়ার সম্প্রতি তাদের ব্র্যান্ডিংয়ের অংশ হিসেবে একটি নতুন ইলেকট্রিক কনসেপ্ট গাড়ি উন্মোচন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ‘টাইপ ০০’ নামের এই কনসেপ্ট কার প্রকাশ্যে এনেছে, যা তাদের বর্তমান উৎপাদন মডেলগুলোর থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
গাড়িটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক এর লম্বা সম্মুখভাগ এবং নিচু ছাদ। সরল প্রান্ত থেকে দেখলে এটিকে একটি অসম্পূর্ণ থ্রি-ডি মডেলের মতো মনে হতে পারে। অন্য ডিজাইন বৈশিষ্ট্যগুলো বেশ আধুনিক এবং কিছুটা কল্পনাপ্রসূত। যেমন গাড়ির মাঝ বরাবর ও পাশে পিতলের বার, ডিম্বাকৃতির স্টিয়ারিং হুইল, ভাঁজ করা যায় এমন ডিসপ্লে, বাটারফ্লাই দরজা এবং যাত্রী ও চালকের স্থানকে পৃথককারী ট্র্যাভারটিন পাথরের প্ল্যাটফর্ম রয়েছে।
২০০৮ সাল থেকে ভারতের টাটা মোটরসের মালিকানাধীন জাগুয়ার জানিয়েছে, এই কনসেপ্টের উৎপাদন সংস্করণে একবার চার্জে ৪৩০ মাইল পর্যন্ত রেঞ্জ পাওয়া যাবে। মাত্র ১৫ মিনিটের চার্জেই মিলবে ২০০ মাইলের রেঞ্জ। যদিও গতি, অ্যাকসেলারেশনসহ অন্যান্য পারফরম্যান্সসংক্রান্ত বিস্তারিত এখনো প্রকাশ করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, উৎপাদন সংস্করণে কনসেপ্ট মডেলের অনেক চমকপ্রদ ফিচার বাদ পড়তে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হোনডে (হুন্দাই) ২০২৬ সালের জন্য নতুন রূপে হাজির করতে যাচ্ছে ইলেকট্রিক সেডান হোনডে আয়োনিক ৬। দক্ষিণ কোরিয়ায় চলমান ‘সিউল মোবিলিটি শো’-এ গাড়িটির হালনাগাদ সংস্করণ উন্মোচন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
২০২৩ সালে প্রথম বাজারে আসে হোনডে আয়োনিক-৬। যদিও এটি আয়োনিক-৫-এর মতো জনপ্রিয়তা পায়নি। তবে ই-জিএমপি প্ল্যাটফর্মভিত্তিক ৩৪২ মাইলের রেঞ্জ ও দ্রুত চার্জিং সুবিধার জন্য এটি ‘ইভি অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জিতেছিল।
হোনডে আয়োনিক ৬ এন লাইন। ছবি: সংগৃহীত
২০২৬ সালের মডেলের এই গাড়িটিতে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে হোনডে নতুন সংস্করণে পারফরম্যান্স বা রেঞ্জ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। তবে হোনডে গাড়িটির নকশাগত পরিবর্তনের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে। আগের চেয়েও বেশি অ্যারোডায়নামিক করা হয়েছে গাড়িটির সামনের অংশ, যেখানে চারটি এলইডি লাইট একটি বিশেষ নকশা তৈরি করেছে। প্রধান হেডলাইট এখন বাম্পারে স্থাপন করা হয়েছে, যা গাড়িটিকে আরও প্রশস্ত ও নিচু দেখায়।
গাড়ির পেছনের অংশের ছবি প্রকাশ না করা হলেও হোনডে জানিয়েছে, পেছনের অংশে বড় স্পয়লারের পরিবর্তে যুক্ত করা হয়েছে নতুন ‘ডাকটেইল’ স্পয়লার। এটি একই সঙ্গে অ্যারোডায়নামিক পারফরম্যান্স ও আকর্ষণীয় ডিজাইন নিশ্চিত করে।
অভ্যন্তরীণ ডিজাইনে সূক্ষ্ম কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। স্টিয়ারিং হুইলে এখন একটি অতিরিক্ত স্পোক রয়েছে এবং সেন্টার কনসোল পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্লাইমেট কন্ট্রোল বাটনগুলো আগের চেয়ে বড় করা হয়েছে। দরজার অভ্যন্তরের উপাদানগুলো আগের চেয়ে উন্নত মানের বলে দাবি করেছে হোনডে।
এর পাশাপাশি হোনডে একটি স্পোর্টি ‘এন লাইন’ সংস্করণও প্রদর্শন করেছে। এই সংস্করণের সামনের বাম্পারটিকে কালো রঙের বিশেষ ডিজাইনের প্যানেল দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। চাকায় বিশেষ নকশা ও এন লাইন ব্যাজ রয়েছে গাড়িটির বিভিন্ন অংশে।
তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো প্রদর্শিত একটি ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে একটি উচ্চ পারফরম্যান্স সম্পন্ন আয়োনিক-৬ ‘এন’-এর টিজার দেখানো হয়েছে। হোনডে জানিয়েছে, আগামী জুলাইয়ে এই মডেল আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হবে।
টিজারে গাড়িটির গাঢ় নীল রং, কালো রঙের পেছনের বাম্পার, একটি ‘ডাকটেইল’ স্পয়লার এবং একটি বড় রেয়ার উইং দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, আয়োনিক-৬ এন-এ আয়োনিক-৫ এন-এর ৬৪১ হর্সপাওয়ারের কাছাকাছি ইঞ্জিন এবং ২০২২ সালের আরএন২২ই কনসেপ্টের কিছু ফিচার থাকতে পারে।
হুন্দাই জানিয়েছে, আরও বিস্তারিত তথ্য শিগগিরই জানানো হবে। ২০২৬ সালের মডেল হিসেবে এই ইলেকট্রিক সেডানটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।