ঢাকা ২৫ ভাদ্র ১৪৩১, সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চবির ভর্তি পরীক্ষা শুরু ২ মার্চ, প্রতি আসনে লড়বেন ৫০ জন

প্রকাশ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:২৩ এএম
আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:২৫ এএম
চবির ভর্তি পরীক্ষা শুরু ২ মার্চ, প্রতি আসনে লড়বেন ৫০ জন
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২ মার্চ। ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শুরু হবে এবারের ভর্তি পরীক্ষা। ভর্তি পরীক্ষায় ৪ হাজার ৯২৬ আসনের বিপরীতে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৫৫৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন। সে হিসাবে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সম্মিলিতভাবে প্রতি আসনের বিপক্ষে লড়বেন ৫০ জন ভর্তিচ্ছু।

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে ভর্তি পরীক্ষার সার্বিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. নুরুল আজিম সিকদার।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের ভোগান্তি কমাতে এবার চবি ছাড়াও দুটি কেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে ভর্তি পরীক্ষা। ভর্তি পরীক্ষায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, ডিজিএফআই, এনএসআই, ডিএসবি, রেলওয়ে পুলিশ, প্রক্টরিয়াল বডি, নিরাপত্তাকর্মী, বিএনসিসি এবং রোভার স্কাউটের প্রায় ৭ শতাধিক কর্মী নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।

ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে চবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. নুরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘আমরা সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা তৈরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলে বা কোনো প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হলে প্রক্টরিয়াল বডিকে অবহিত করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এ জন্য ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় নাম্বারসহ পোস্টার লাগানো থাকবে।’ 

২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা ২ মার্চ শুরু হয়ে চলবে ১৬ মার্চ পর্যন্ত। শর্তসাপেক্ষে দ্বিতীয়বার (সেকেন্ড টাইম) ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত মোট নম্বর থেকে ৫ নম্বর কাটা হবে। ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা হবে, প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য অতিরিক্ত ০ দশমিক ২৫ নম্বর কাটা হবে। এ ছাড়া, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলের ওপরে সর্বোচ্চ ২০ নম্বর যোগ করা হবে।

তথ্যানুযায়ী, আগামী ২ মার্চ ‘এ’ ইউনিটের, ৮ মার্চ ‘বি’ ইউনিটের, ৯ মার্চ ‘সি’ ইউনিটের এবং ১৬ মার্চ ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হবে। এ ছাড়া ‘বি-১’ উপ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ৩ মার্চ ও ‘ডি-১’ উপ-ইউনিটের ৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। ‘বি-১’ উপ-ইউনিটের ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে ১২, ১৩ ও ১৪ মার্চ এবং ‘ডি-১’ উপ-ইউনিটের ব্যবহারিক ১০ ও ১১ মার্চ হবে।

শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের জন্য ৮ নির্দেশনা:

ভর্তি পরীক্ষার সময়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের করণীয় ৮টি নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

১. প্রবেশপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রার্থীরা ভর্তির ওয়েবসাইটে (https://admission.cu.ac.bd) লগইন করে ভর্তি পরীক্ষায় ৪৮ ঘণ্টা পূর্ব থেকে নিজ নিজ আসনের অবস্থান জানতে পারবে। সিট প্লান দেখার আগে অবশ্যই প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে হবে।

২. প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর ডাউনলোড করা দুই কপি প্রবেশপত্র, পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি (প্রবেশপত্রে আঠা/পিন দিয়ে লাগিয়ে) ও উচ্চ মাধ্যমিক/সমমান পরীক্ষার মূল রেজিট্রেশন কার্ড ভর্তি পরীক্ষার দিন অবশ্যই সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে।

৩. পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলে FX-100 বা এর নিচে সাধারণ মানের (মেমরি অপশন ব্যতীত) ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে। পরীক্ষার হলে প্রার্থীর মোবাইল ফোন, Calculator with Memory Option, Electronic Device-সংবলিত ঘড়ি ও কলম বা যেকোনো ধরনের Device সঙ্গে রাখা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।

৪. চ.বি. ক্যাম্পাসে আগত সকল পরীক্ষার্থী, পরীক্ষার্থীর অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হলো।

৫. অপ্রত্যাশিত ভিড় এড়ানো ও শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আগত পরীক্ষার্থীদের সাথে একের অধিক অভিভাবক চ.বি. ক্যাম্পাসে না আসার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হলো।

৬. চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অতীতের ন্যায় বিধিবদ্ধ নিয়মনীতি কঠোরভাবে অনুসরণপূর্বক অত্যন্ত গোপনীয়তা ও সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ বিষয়ে কারও কাছে কোনো অভিযোগ দৃষ্টিগোচর হলে তা পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ সময়ের ন্যূনতম ১ (এক) ঘণ্টা পূর্বে সকল প্রমাণসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিট কো-অর্ডিনেটরের কাছে লিখিত অভিযোগ করা যাবে। এ সময়ের পরে পরীক্ষা বা প্রশ্নপত্র সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ গ্রহণ করা হবে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ অন্য কোনো মাধ্যমে যেকোনো ধরনের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য ভর্তি পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

৭. ভর্তি পরীক্ষায় কারও বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে তাৎক্ষণিকভাবে কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

৮. পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে আগত অভিভাবকের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা নিজস্ব পরিচয়পত্র (যদি থাকে) সার্বক্ষণিক সঙ্গে রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।

মাহফুজ শুভ্র/ইসরাত চৈতি/

চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাবির শিক্ষা কার্যক্রম চালুর প্রত্যাশা

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫০ পিএম
চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাবির শিক্ষা কার্যক্রম চালুর প্রত্যাশা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে (সম্ভাব্য তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষা কার্যক্রম চালুর সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আগামী অ্যাকাডেমিক সভায় আলোচনার পর সিন্ডিকেটের সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। 

ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত চালু করার লক্ষ্যে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, বিভাগগুলোর চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউটগুলোর পরিচালক এবং অফিস প্রধানদের নিয়ে এক মতবিনিময়ে সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর প্রস্তাব করা হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ প্রমুখ।

আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীদের শাস্তি চায় ঢাবি সাদা দল

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ পিএম
আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীদের শাস্তি চায় ঢাবি সাদা দল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থানকারী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে ঢাবির বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান ও অধ্যাপক আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘দেশের প্রচলিত আইন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ বাঞ্ছনীয়। এতে আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একটি গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন স্বৈরাচারী সরকারের পতনের ফলে বাংলাদেশ একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। স্বৈরাচারের পতন এবং বাংলাদেশের নতুন এ অভিযাত্রার অগ্রপথিক আমাদের ছাত্র সমাজ। এ জন্য গোটা জাতির মতো আমরাও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, শত শত ছাত্র-জনতার প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত সফলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ এবং নস্যাৎ করার জন্য নানামুখী তৎপরতা চলছে। এ ব্যাপারে আমাদের শিক্ষার্থীসহ দেশপ্রেমিক সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’

প্রশাসনে স্বৈরাচারের কোনো দোসর পুনর্বাসিত যেন না হয় তা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনের কাছে ইতোমধ্যেই এ ব্যাপারে আমরা জোরালো দাবি জানিয়েছি। একই সঙ্গে সদ্য বিতাড়িত স্বৈরাচারের কোনো দোসর যেন প্রশাসনে না থাকে অথবা পুনর্বাসিত না হয়, সে ব্যাপারেও আমরা নতুন প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে এনে, দ্রুত শিক্ষা কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে প্রশাসন প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

ঢাবিতে দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগের দাবি ভর্তিচ্ছুদের

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৯ পিএম
ঢাবিতে দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগের দাবি ভর্তিচ্ছুদের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। ছবি : খবরের কাগজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি এবং উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। 

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি পালন শেষে স্মারকলিপি জমা দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে যান তারা। স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ মাহবুব কায়সার।

মোহাম্মদ মাহবুব কায়সার আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘কোনো এক কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম বন্ধ হয়ে যায়, সেটি ভিন্ন প্রসঙ্গ। তবে ব্যক্তিগতভাবে যদি বলতে হয় তাহলে বলব, আপনাদের দাবিটি যৌক্তিক। যদিও এই মুহূর্তে এটি আলোচনার মুখ্য কোনো বিষয় না। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় যে প্রেক্ষাপটে এটি বাতিল করেছিল, সেটিও বিবেচনায় নিতে হবে এবং নতুন প্রশাসন এ নিয়ে আলোচনা করবে। পরবর্তী ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ভাবার যথেষ্ট সময় আছে। আমার মনে হয় আপনাদের আর আন্দোলন করার প্রয়োজন নেই। যেহেতু আপনাদের যে দাবি আমরা জানতে পেরেছি, তাই পরবর্তীতে এ বিষয়ে উপর্যুক্ত জায়গাতে আলোচনা করা হবে।’

ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার এমন নিয়ম বৈষম্য বলে দাবি করে এইচএসসি ২০২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাসমিয়া আলম সুনেহা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই সব বৈষম্য দূর করার আন্দোলনের সূত্রপাত। সেখানে আমরা দেখতে পাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটা বৈষম্য রয়ে গেছে। বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে তাকানো হলে সেখানে কিন্তু সেকেন্ড টাইম বলতে কোনো টার্মই নেই। ঢাবির উচিত হবে উচ্চশিক্ষায় অবিলম্বে এই বৈষম্য দূর করা।’

সাজিদুর রশীদ নামে আরেক ভর্তিচ্ছু বলেন, ‘আমরা চাই মেধার ভিত্তিতে সবাইকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হোক। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেকেন্ড টাইমের সুযোগ দিতে পারলে ঢাবি কেন তা পারবে না। তাই উপাচার্যের নিকট সেকেন্ড টাইম চালুর দাবি জানাচ্ছি। আশা করছি তিনি আমাদের নিরাশ করবেন না।’

বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন দেখেন নয়ন

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৬ পিএম
বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন দেখেন নয়ন

জন্মের পর থেকে ডান হাত নেই তার। এমন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েও থেমে থাকেননি তিনি, বন্ধ করেননি স্বপ্ন দেখা। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে সঙ্গী করেই স্বপ্ন দেখছেন বিশ্ব জয়ের। তার নাম নয়ন অধিকারী। তিনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

নয়ন বর্তমানে জাতীয় প্যারা ব্যাডমিন্টন দলের সদস্য। সেই সঙ্গে বিসিবির নিয়ন্ত্রণাধীন কুমিল্লার ইউনিসেফ ডিজেবল ক্রিকেট টিমের অলরাউন্ডার হিসেবেও যুক্ত রয়েছেন। এক হাতে কীভাবে তিনি ব্যাডমিন্টন খেলেন, কোথা থেকে পেলেন অনুপ্রেরণা- এসব বিষয়ে জানতে কথা হলো নয়ন অধিকারীর সঙ্গে।

ব্যাডমিন্টন খেলার অনুপ্রেরণা নয়ন মূলত পেয়েছিলেন তার বাবার কাছ থেকে। ছোটবেলায় যখন ঢাকায় থাকতেন, তখন বাবার সঙ্গে গলিতে অনেক ব্যাডমিন্টন খেলেছেন। তখন থেকেই ব্যাডমিন্টন খেলার প্রতি আলাদা একটা ভালো লাগা জন্মে নয়নের। এশিয়ান ও অলিম্পিকে পদকজয়ী ভারতের পলক কোহলির খেলা দেখে ব্যাডমিন্টনের প্রতি ভালোবাসা আরও বেড়ে যায়। পলকের সমস্যাটাও ছিল নয়নের মতো। পার্থক্য শুধু পলকের বাঁ হাত নেই আর নয়নের নেই ডান হাত।

বরিশালের অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি নয়ন অধিকারী উপজেলা পর্যায়ে ব্যাডমিন্টন খেলতেন। সেখানে তিনি একজনের নজর কাড়েন। তিনিই প্রথম নয়নকে পরামর্শ দেন জাতীয় প্যারা ব্যাডমিন্টন দলে খেলার জন্য চেষ্টা করতে। সঙ্গে কোচ এনায়েত উল্লাহ খানের মোবাইল ফোন নম্বরও দেন তিনি। এনায়েত উল্লাহ খান এখন নয়নের কোচ এবং বাংলাদেশের জাতীয় প্যারা অলিম্পিক কমিটির সদস্য ও প্যারা ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক। নয়নের এই পথচলার পেছনে তার পরিবারের পাশাপাশি এনায়েত উল্লাহ খানের ব্যাপক ভূমিকা আছে।

এনায়েত উল্লাহ খানের পরামর্শে কুমিল্লা ব্যাডমিন্টন একাডেমিতে সপ্তাহে তিন দিন কোচিং করছেন নয়ন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে সন্ধ্যা ৬টায় গিয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত খেলার অনুশীলন করেন তিনি। কুমিল্লা ব্যাডমিন্টন একাডেমির কোচ রকিব এখন নয়নকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।
প্রতিবন্ধকতার জন্য অনেকেই পিছপা হন জীবন থেকে, তাদের লালিত স্বপ্ন থেকে। কিন্তু নয়ন সেটা করেননি বলেই ব্যতিক্রম। তিনি স্বপ্ন দেখেন বিশ্ব জয়ের। সেই লক্ষ্যেই একটু একটু করে এগিয়ে চলেছেন।

নয়নের বাবার স্বপ্ন ২০২৮ সালে আমেরিকায় অনুষ্ঠেয় প্যারা অলিম্পিকে খেলবেন নয়ন। সেই সঙ্গে তিনি ২০২৪ সালের জাতীয় ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। সেখানে চ্যাম্পিয়ন হলে নয়ন দেশের বাইরে খেলার সুযোগ পাবেন। সে লক্ষ্য সামনে রেখে তিনি কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

পড়াশোনার পাশাপাশি তার বাইরেও বিভিন্ন যোগ্যতা অর্জন করা উচিত বলে মনে করেন নয়ন। তিনি বলেন, ‘আমরা প্যারা অলিম্পিকের খেলোয়াড়দের দিকে তাকালে দেখতে পাব তারা শারীরিক প্রতিবন্ধকতাগুলো মোকাবিলা করে বিশ্বদরবারে নিজেকে উপস্থাপন করে বহুদূর এগিয়ে গেছেন।’

তাই যাদের এ ধরনের সমস্যা রয়েছে তারা যেন ঘরে বসে না থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করেন, নয়ন অধিকারীর চাওয়া সেটাই।

 কলি

 

বই পড়ার অভ্যাস গড়ে দিচ্ছে ইনোভেটর

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৪০ পিএম
বই পড়ার অভ্যাস গড়ে দিচ্ছে ইনোভেটর

২০০৬ থেকে ২০২৪। সময়টা ১৮ বছরের। এই পুরো সময় কিশোর-তরুণদের পাঠাভ্যাস তৈরিতে নিরলস কাজ করে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। গুটিকয় শিক্ষার্থী নিয়ে ১৮ বছর আগে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা এখন অযুত স্বপ্নের ডালপালা মেলেছে। শহর পেরিয়ে গ্রাম, উপজেলা, জেলা, বিস্তৃত হয়েছে কার্যক্রম। বইয়ের আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে স্কুল থেকে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে।

‘ইনোভেটর’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ২০০৬ সালে। সে সময়টাজুড়ে আছে জঙ্গিবাদের উত্থান, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি আর তারুণ্যের নিদারুণ ক্ষয়ে যাওয়ার স্মৃতি। সিলেটের একঝাঁক তরুণ-তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে ইনোভেটর প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেন সমাজকর্মী রেজওয়ান আহমদ এবং শিক্ষক ও সংগঠক প্রণব কান্তি দেব।

বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে বই বিতরণ, ভাষার মাসে পরীক্ষা আর স্বাধীনতার মাসে পুরস্কার বিতরণ- এভাবেই নির্ধারিত হয় ইনোভেটরের বইপড়া উৎসবের গতিপথ। এই উৎসবের পাশাপাশি বই বিনিময় উৎসব, বই আলোচনা প্রতিযোগিতা, কুইজ, সেমিনার, বিতর্ক ইত্যাদি বই নিয়ে বিভিন্ন আয়োজন করে চলেছে সংগঠনটি। লক্ষ্য একটাই, আগামী প্রজন্ম যেন বেড়ে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও আদর্শ ধারণ করে। দিনে দিনে বাড়ছে পড়ুয়ার সংখ্যা। এমনকি করোনা সংক্রমণের কারণে সবকিছুতেই যখন স্থবিরতা নেমে এসেছিল, তখনো থেমে থাকেনি ইনোভেটরের কার্যক্রম। ঘরবন্দি সে সময়ে সংগঠনটি আয়োজন করে অনলাইনে বইপড়া কর্মসূচির। এখন প্রতিবছর এই কর্মসূচিতে হাজারো শিক্ষার্থী অংশ নেয়। শহর পেরিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় এতে।

বছরব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রম থাকলেও ইনোভেটরের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি বইপড়া উৎসব। প্রতিবছরের ডিসেম্বর থেকে মার্চ- এই তিন মাস চলে উৎসব। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে শুরু হয় রেজিস্ট্রেশন। এর পর উৎসব করে শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে অংশগ্রহণকারীদের হাতে নির্বাচিত বই তুলে দেওয়া হয় ডিসেম্বরে। সবার বই পড়া নিশ্চিত করতে বিতরণ করা বইয়ের ওপর একটি পরীক্ষা নেওয়া হয় ফেব্রুয়ারিতে। আর বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয় মার্চে। এ পর্যন্ত মোট ১৭ হাজার ৭৭৬ শিক্ষার্থী সরাসরি বইপড়া উৎসবে অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

ইনোভেটরে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি একটি নির্বাচিত গ্রন্থতালিকাও তৈরি করেছে ইনোভেটর। আশার কথা, ইনোভেটর বাংলাদেশের বইপড়ার সংস্কৃতিতে প্রতিনিয়ত যুক্ত করে চলেছে নতুন নতুন পালক। তিন বছর ধরে সিলেট জেলা পরিষদ এগিয়ে এসেছে বইপড়া উৎসবের পৃষ্ঠপোষকতায়। এ বছর সিলেটের সব কটি উপজেলায় ‘জেলা পরিষদ, সিলেট-ইনোভেটর বইপড়া উৎসব’-এর আয়োজন চলছে।

 কলি