ঢাকা ৩ আশ্বিন ১৪৩১, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ইবিতে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ফ্রি শরবত বিতরণ করল ছাত্র ইউনিয়ন

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ০৯:২৪ এএম
আপডেট: ০৪ মে ২০২৪, ০৯:২৪ এএম
ইবিতে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ফ্রি শরবত বিতরণ করল ছাত্র ইউনিয়ন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গুচ্ছভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় তীব্র দাবদাহে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ফ্রি শরবত বিতরণ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ।

শুক্রবার (৩ মে) বেলা ১১টায় গুচ্ছভর্তি পরীক্ষা চলাকালে তারা এ কর্মসূচি পালন করে।

ক্যাম্পাসে অসহনীয় গরমে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ফলে শরবত বিতরণের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ায় সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ছাড়াও ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্বরত রোভার স্কাউট, বিএনসিসি গ্রুপের সদস্য, আনসার, পুলিশসহ প্রধান ফটকে অবস্থানরত সকলকে ফ্রি শরবত বিতরণ করেন তারা। এ ছাড়া সংগঠনটি অভিভাবকদের বিশ্রামের জন্য কর্নার, পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রাথমিক মেডিকেল সেবা, তথ্য সহযোগিতা কেন্দ্রসহ নানা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।

এ বিষয়ে ইবি শিক্ষার্থী রাজু আহম্মেদ বলেন, ‘এ ধরনের উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। সদিচ্ছা থাকলে শুধু ছাত্র ইউনিয়ন নয়, প্রতিটি ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।’

ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিয়ে, শিক্ষার্থীদের জন্যই ছাত্র ইউনিয়ন ক্যাম্পাসে কাজ করে। ভর্তি পরীক্ষাকে ঘিরে অভিভাবক কর্নার, তথ্য কেন্দ্র, মেডিকেল সেবা, স্টলে ফ্রি শরবত বিতরণের কার্যক্রম পালনের মধ্য দিয়ে আমরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে চাই।’

 

জরিপ-গবেষণা ঢাবিতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ চান ৮৩.৮ শতাংশ শিক্ষার্থী

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ পিএম
আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৩ পিএম
ঢাবিতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ চান ৮৩.৮ শতাংশ শিক্ষার্থী
ছবি: খবরের কাগজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) দলীয় ছাত্ররাজনীতি একেবারে নিষিদ্ধ চান শতকরা ৮৩ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। এছাড়া দলীয় ছাত্ররাজনীতি প্রত্যাশা করেছেন শতকরা ১৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। দশমিক ২ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্ররাজনীতি যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায়ই প্রত্যাশা করেছেন। সর্বমোট শতকরা ৯৬ শতাংশ শিক্ষার্থী দলীয় ছাত্ররাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে মনে করেন। ঢাকা ইউনিভার্সিটি রিসার্চ সোসাইটির উদ্যোগে পরিচালিত এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্ররাজনীতি ও রাজনৈতিক কার্যক্রম বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অভিমত’ শীর্ষক প্রকাশিত ওই গবেষণায় এসব তথ্য উঠে আসে।

জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, শতকরা ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে দলীয় ছাত্ররাজনীতির কোন ‘গুরুত্ব নেই’ বলে মনে করেন। সর্বমোট ৯৬ শতাংশ শিক্ষার্থী দলীয় ছাত্ররাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে মনে করেন। এর মধ্যে ৭১ শতাংশ খুবই নেতিবাচক প্রভাব ও ২৫ শতাংশ নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে মনে করেন। এর বিপরীতে ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী দলীয় ছাত্ররাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে মনে করেন। যার মধ্যে ১ শতাংশ খুবই ইতিবাচক প্রভাব ও ২ শতাংশ ইতিবাচক প্রভাব বলে মনে করেন। ১ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করেন দলীয় ছাত্ররাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশের উপর কোনো প্রভাব ফেলে না।

গবেষণা জরিপে, দলীয় ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের বিকল্প হিসেবে দেখছেন গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা। এতে ৮১ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী নিয়মিত কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচন এর পক্ষে মত দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও দলীয় ছাত্ররাজনীতির প্রশ্নে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী ‘শুধুমাত্র ছাত্রসংসদ চান, তবে দলীয় ছাত্ররাজনীতি চান না’ বলে মতামত দিয়েছেন।

ওই গবেষণা জরিপটিতে ছাত্ররাজনীতির মূল প্রভাব হিসেবে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্ষমতার অপব্যবহারকে উল্লেখ কর হয়। ৮৭ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর মানসিক চাপ, ৮৪ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ভয়ংকর গেস্টরুম কালচার, ৭৭ দশমিক ২ শতাংশ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সহিংতা, ৭৪ দশমিক ১ শতাংশ দাঙ্গা-হাঙ্গামা, ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থতা, ৬৮ দশনিক ৭ শতাংশ জাতীয় রাজনৈতিক দলের প্রভাব, ১১ দশমিক ৪ শতাংশ নেতৃত্বে সুযোগ সৃষ্টি, ৪ দশমিক ৬ শতাংশ ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি এবং ৪ দশমিক ৫ শতাংশ অন্যান্য প্রভাব উল্লেখ করা হয়েছে। 

জরিপের ফলাফলে আরও দেখা যায়, ক্যাম্পাসভিত্তিক বা হলভিত্তিক দলীয় ছাত্ররাজনীতির কমিটি প্রদানকে ৯৪ শতাংশ শিক্ষার্থী সমর্থন করেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্ররাজনীতির সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং সমর্থন করেন কি— প্রশ্নে ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী নেতিবাচক উত্তর দিয়েছেন; অর্থাৎ, ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্ররাজনীতির সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং সমর্থন করেন না। ৮১ শতাংশ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক কার্যক্রমের কারণে তাদের শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মত প্রকাশ করেছেন।

এছাড়া দলীয় ছাত্ররাজনীতি পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা ৫৯ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনেশিক্ষার্থী ‘খুবই অসন্তোষজনক’, ২৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ‘অসন্তোষজনক’, ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী ‘মধ্যম’, ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী ‘সন্তোষজনক’ এবং ১ শতাংশ শিক্ষার্থী ‘খুবই সন্তোষজনক’ হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্ররাজনীতি প্রকৃত অর্থেই জাতীয় নেতৃত্ব তৈরি করতে সক্ষম নয় বলে মনে করেন ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থী।

রাজনৈতিক কার্যক্রমের ফলে ৭৪% শিক্ষার্থীদের নেতিবাচক অভিজ্ঞতা আছে বলে উল্লেখ করেন, অপরদিকে মাত্র ২৬% শিক্ষার্থীর নেতিবাচক অভিজ্ঞতা নেই বলে মতামত প্রকাশ করেন। ৯০% শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন না। এ জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮৬% শিক্ষার্থী কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা নেই (জরিপে অংশগ্রহণকালীন সময়ে) বলে জানিয়েছেন। 

জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সিংহভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো দলীয় ছাত্ররাজনীতি প্রত্যাশা করে না, এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, “পূর্বের নেতিবাচক অভিজ্ঞতা বিশেষত নির্যাতন ও নিপীড়নজনীত অভিজ্ঞতা (গণরুম ও গেস্টরুম কালচার, টর্চার সেল, জোরপূর্বক রাজনৈতিক মিছিল-মিটিং এ অংশগ্রহণ করানো ইত্যাদি)। দলীয় ছাত্ররাজনীতির ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়া, শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি ইত্যাদি বিষয়গুলো বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।

জরিপের ফলাফল অনুযায়ী ৪টি সুপারিশ করা হয়। সেগুলো হলো— দলীয় ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধকরণ; ডাকসু পুনর্জীবিত ও সংস্কার; শিক্ষা ও গবেষণা উন্নয়ন কমিটি গঠন; শিক্ষা ও গবেষণার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত।

এর আ‌গে, গত ৩ সেপ্টেম্বর গবেষণা জরিপ চালায় সংগঠন‌টি। প‌রে এ‌টি শেষ হয় ১১ সেপ্টেম্বর। এই জ‌রি‌পে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৮টি বিভাগ ও ১০টি ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ থেকে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ২ হাজার ২৩৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। গবেষণাটি পরিচালনার জন্য পরিমাণগত (কোয়ান্টিটিভ) পদ্ধতি এবং গবেষণা পরিকল্পনা (রিসার্চ ডিজাইন) হিসেবে ক্রস সেকশনাল সার্ভে পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়েছে।

দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধে ফের বিক্ষোভ মিছিল: ঢাবিতে ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং অনতিবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দা দাবিতে লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। গেল কয়েকদিন ধরে ‘দলীয় রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস আন্দোলন’ ব্যানারে ক্যাম্পাসে দলীয় উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করে এসেছেন।

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে শিক্ষার্থীরা একে একে জড়ে হতে থাকেন। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা স্মৃতি চিরন্তন হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এতে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা জানান, পরবর্তীতে তাদের কর্মসূচি জানিয়ে দেওয়া হবে।

সন্ধ্যায় পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি এণ্ড লিডারশীপ বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা আপাতত হলগুলোতে জনসংযোগ করবো। প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি জানানো হবে।’

আরিফ জাওয়াদ/এমএ/

আবারও ‘রাজাকার’স্লোগানে উত্তাল ঢাবি

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৩ পিএম
আবারও ‘রাজাকার’স্লোগানে উত্তাল ঢাবি
দুই মাস পর জুলাইয়ে ইতিহাস বিকৃত করার প্রতিবাদে এবং শেখ হাসিনার বিচার দাবিতে ‘রাজাকার’ স্লোগানে আবারও উত্তাল ঢাবি। ছবি: খবরের কাগজ

ঠিক দুই মাস আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ঘিরে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া এক বক্তব্যের জেরে বিক্ষোভ মিছিলে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস। দুই মাস পর জুলাইয়ে ইতিহাস বিকৃত করার প্রতিবাদে এবং শেখ হাসিনার বিচার দাবিতে ‘রাজাকার’ স্লোগানে আবারও উত্তাল ঢাবি। শিক্ষার্থীদের দাবি, ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান মুছে দেওয়ার সুযোগ নেই। যারা ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করবে, তাদের শক্ত হাতে দমন করবে দেশের ছাত্র-জনতা।

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে এই হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা। এতে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের ২ মাস যেতে না যেতে ইতিহাস বিকৃতির মহোৎসব শুরু করেছে একদল অপতৎপরতাকারী। তারা সহস্রাধিক শহিদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতিচিহ্ন মুছে দিতে চায়। মুগ্ধ-আবু সাঈদের সহযোদ্ধারা এ-চক্রান্ত কখনোই বাস্তবায়ন হতে দেবে না। খুনি হাসিনা ১৫-১৬ বছর ধরে রাজাকার ট্যাগ দিয়ে গণহত্যা-গুম-খুনের স্টিম রোলার চালানোর চেষ্টা চালিয়েছে। গত ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের রাজাকারের নাতি-পুতি বলে গালি দেওয়ার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে। শিক্ষার্থীরা তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদে ‘তুমি কে, আমি কে রাজাকার-রাজাকার’ স্লোগানের যে ঢেউ তুলেছিল, সেই ঢেউ খুনি হাসিনার চক্রান্তকে তো ব্যর্থ করেছেই, সেই সঙ্গে খুনি হাসিনা সমূলে উৎখাত হয়ে ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানের সাফল্য মুছে দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে। এ ছাড়া পরিকল্পিতভাবে সচিবালয় প্রশাসন, ডিসি অফিস সব অফিসে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রিহ্যাবিলেট করার চেষ্টা চলছে। ছাত্র-জনতা জানে কারা এসব করছে।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এ বি জুবায়ের বলেন, “আমার স্পষ্ট মনে আছে, যখন ওই খুনি হাসিনা রাজাকারের নাতি-পুতি বলে, তার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা বারুদের মতো ফুঁসে উঠেছিল, নারী শিক্ষার্থীরা রাতেই হল থেকে বের হয়ে এসেছিল। সবার কণ্ঠে স্লোগান ছিল ‘তুমি কে, আমি কে রাজাকার-রাজাকার’, ‘কে বলেছে, কে বলেছে- স্বৈরাচার-স্বৈরাচার’ কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, যেই স্লোগানের মধ্য দিয়ে আমাদের আন্দোলনের মোড় ঘুরে গিয়েছে এবং অর্জিত হয়েছে বিজয়। কিন্তু এখন কিছুসংখ্যক লোক আমাদের সেই দ্রোহের স্লোগানকে পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ২৪-এর বিপ্লবের যেকোনো উপাদান, আমরা রক্ত দিয়ে হলেও রক্ষা করব।”

কেন রাতে ফের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি এমন প্রশ্নের জবাবে সমাবেশে অংশ নেওয়া মাস্টারদা সূর্য সেন হলের শিক্ষার্থী এস এম ওমর খবরের কাগজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের যে আন্দোলন ছিল, সেই আন্দোলনের সব থেকে বহুল ব্যবহৃত স্লোগান ছিল ‘রাজাকার-রাজাকার’। এখন বলা হচ্ছে এসব স্লোগান সর্বপ্রথম বিএনপি-ছাত্রদলের ছিল, আবার বলা হচ্ছে এই স্লোগান সমন্বয়কদের ছিল, আবার কেউ কেউ যারা নিজেদের সমন্বয়ক দাবি করে তারা বিকৃতভাবে প্রচার করছে। মূলত এই আন্দোলন তো কোনো দল কিংবা সমন্বয়কদের না। তবে আমরা স্বীকার করি, সবাই এখানে অংশ নিয়েছে। এখানে তো নতুন করে দলীয় পরিচয় দেওয়ার কিছু দেখছি না। ৭১-কে ঘিরে শেখ হাসিনা যেভাবে ইতিহাস বিকৃতি করার চেষ্টা করেছিল এখন তো সেই সময় না, এখন ২০২৪ সাল। আমরা তাদেরকে সাবধান করে দিতে চাই, তারা ছাত্র-জনতার যে অভ্যুত্থান সেটি যেন বিকৃত না করে।

এর আগে রাত ১০টার দিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছাতা হাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়ায় একে-একে জমায়েত হতে শুরু করেন। সেখান থেকে সূর্য সেন হল-মুহসীন হল-এ এফ রহমান হল-স্মৃতি চিরন্তন-রোকেয়া হল হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে অংশ নেন। পরে সেখান থেকে রাত ১১টার দিকে রাজু ভাস্কর্যে থেকে হলে ফেরত যান শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার-রাজাকার’, ‘কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার সরকার’, ‘বিকৃতি চলবে না, সাক্ষী আছে জনতা’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ‘জুলাইয়ের ইতিহাস, বিকৃতি চলবে না’, ‘আবু সাঈদের ইতিহাস বিকৃতি চলবে না’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

কুবিতে ৫ মাসের সেশনজটে শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১২ এএম
আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১২ এএম
কুবিতে ৫ মাসের সেশনজটে শিক্ষার্থীরা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি : খবরের কাগজ

শিক্ষক-উপাচার্য দ্বন্দ্ব, ঈদের ছুটি, কোটা বাতিলের আন্দোলন ও সাম্প্রতিক বন্যাপরিস্থিতি মিলিয়ে প্রায় ১৫৬ দিনের মতো বন্ধ ছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম। ফলে শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে চেপে বসেছে দীর্ঘ সেশনজট। এ পরিস্থিতিতে তারা চাকরির বাজারে পিছিয়ে পড়বেন বলে জানান। সেই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে রিকোভারি প্লান তৈরি করে দ্রুত সেশনজট নিরসন করার দাবিও জানান তারা।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী ফাহিমা সুলতানা রাতুয়া বলেন, ‘আমাদের  বিশ্ববিদ্যালয় গত পাঁচ মাসে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে গেছে। যদিও সব সমস্যার এখন সমাধান হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের একাডেমিক ক্ষেত্রে এটা একটা অপূরণীয় ক্ষতি। কেননা করোনা মহামারির জন্য আমাদের  পড়াশোনার যে ব্যাঘাত ঘটেছিল সেটা থেকে এখনো কাটিয়ে  উঠতে পারিনি। তারপর ভার্সিটি পাঁচ মাসের মতো অফ ছিল। এতে করে আমাদের চলতি  সেমিস্টারের পড়াশোনা একেবারে থেমে যায়। অনেক শিক্ষার্থী এই গত পাঁচ মাসে মানসিকভাবে ভেঙ্গে  পরে। আমাদের  একাডেমিক পড়াশোনা এবং কো-কারিকুলাম এক্টিভিটি থেকেও আমরা অনেকটাই দূরে সরে যাই। এখন সেশনজটের থেকে পরিত্রাণ পাওয়া আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী নূর আখের মাওলা বলেন, ‘জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময় বিশ্ববিদ্যালয় থাকাকালীন সময়। আর এখানেই টানা পাঁচ থেকে ছয় মাস নানা আন্দোলনের জন্য নষ্ট হয়েছে। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় যারা টিউশনি করে নিজের পড়ালেখা চালিয়ে যেত তারা এই কয়েকটি মাস খুব কষ্টে কাটিয়েছে। অনেকে তো শেষ সম্বল টিউশনিও হারিয়েছে। অর্ধবর্ষ পিছিয়ে থাকায় সরকারি চাকরির বয়সে একটা বড় প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কর্মকাণ্ড বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পড়াশোনার যে স্বাভবিক ধারা ছিল তা ব্যহত হয়ে পড়েছে।’

শিক্ষার্থীদের সেশনজট নিরসনে প্রশাসন আসলে কোনো উদ্যোগ নিয়েছে কি না, জানতে চাইলে উপাচার্যের পরিবর্তে কুবিতে দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. মো. জাকির ছায়াদউল্লাহ খান বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়া পরপরই বিভাগীয় প্রধান এবং ডিনদের সঙ্গে একটি মিটিং করেছি। মিটিংয়ে সকল বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে প্রায় ছয় মাসের যে সেশনজট তা পুষিয়ে নেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে। এখন পর্যন্ত মোটামুটি সকল বিভাগই তাদের পরিকল্পনা দিয়েছে। আমরা আগামী এক বছরের মধ্যে তিনটি সেমিস্টার শেষ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। শিক্ষকরাও সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন।’

যুক্তরাজ্যের গেটস কেমব্রিজ স্কলারশিপে পিএইচডি, এমএসসি করার সুযোগ

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৩৫ পিএম
যুক্তরাজ্যের গেটস কেমব্রিজ স্কলারশিপে পিএইচডি, এমএসসি করার সুযোগ

যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ বিনা ফিতে পিএইচডি, এমএসসি বা এমএলিট বা এক বছরের স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে অধ্যয়নের সুযোগ দিচ্ছে। ‘গেটস কেমব্রিজ স্কলারশিপ’ প্রোগ্রামের আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের এ স্কলারশিপ দেওয়া হবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা এ স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ তারিখ: কোর্সভেদে আবেদনের শেষ সময় ভিন্ন ভিন্ন তারিখে। কোনো কোর্সের আবেদনের শেষ তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত। আবার কোনো কোর্সের আবেদনের শেষ তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০২৫।

২০০০ সালের অক্টোবরে যুক্তরাজ্যের গেটস কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ দেওয়া শুরু হয়। এ জন্য মাইক্রোসফটের বিল গেটস ও তার স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস তাদের ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’ থেকে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়কে ২২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দেন। যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া এই অনুদান দিয়েই স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি প্রোগ্রামের আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের বৃত্তির সব খরচ বহন করা হয়।

বৃত্তির সুযোগ-সুবিধা
সম্পূর্ণ খরচ, টিউশন ফি দেওয়া হবে। সঙ্গে অতিরিক্ত ভাতাও পাওয়া যাবে।

পুরো বছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা হিসেবে ২১ হাজার পাউন্ড দেওয়া হবে। (বাংলাদেশি টাকায় ৩৩ লাখ ৩ হাজার ৩৮১ টাকা)। পিএইচডি স্কলারদের জন্য চার বছর পর্যন্ত বৃত্তি সুবিধা দেওয়া হবে।

বিভিন্ন কনফারেন্স ও কোর্সে যোগ দিতে কোর্সভেদে ৫০০ থেকে ২ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত ভাতা সুবিধা দেওয়া হবে।

পারিবারিক ভাতা বাবদ প্রথম সন্তানের জন্য ১১ হাজার ৬০৪ পাউন্ড এবং দ্বিতীয় সন্তানের জন্য ১৬ হাজার ৫৪৮ পাউন্ড ভাতা সুবিধা পাওয়া যাবে

সঙ্গীর জন্য কোনো ধরনের তহবিল দেওয়া হবে না।

পিএইচডির অংশ হিসেবে ফিল্ড ওয়ার্কের সময় খরচ পাওয়া যাবে।

মাতৃত্ব/পিতৃত্ব তহবিল পাওয়া যাবে।

অপ্রত্যাশিত সমস্যার তহবিলও পাওয়া যাবে।

যোগ্যতা

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হতে হবে।

একাডেমিক ফলাফল ভালো হতে হবে।

অসামান্য মেধাক্ষমতা থাকতে হবে।

ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে।

প্রোগ্রামটি পছন্দ করার কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।

আবেদন করার ঠিকানা
আগ্রহী শিক্ষার্থীরা https://www.gatescambridge.org এ ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

 

স্কুলটির বয়স শতবর্ষের বেশি

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:০০ পিএম
স্কুলটির বয়স শতবর্ষের বেশি

শত বছরে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে সমাজ, রাষ্ট্র- সবকিছুতেই। সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেছে পুরনো অনেক কিছু। নানান বদলের মধ্য দিয়ে কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এমনি এক শতবর্ষী স্কুল দিনাজপুরের ফুলবাড়ী গোলাম মোস্তফা (জিএম) পাইলট উচ্চবিদ্যালয়।

১৯২০ সালে ১০ একর জমিতে গোলাম মোস্তফা হাই মাদ্রাসা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল স্কুলটি। পরবর্তী সময়ে ১৯৫৮ সালে এটি জিএম উচ্চবিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। ফুলবাড়ী পৌর শহরের ঢাকা মোড়, রেলস্টেশন এলাকাসংলগ্ন স্থানে গাছ-গাছালির ছায়াঘেরা মনোরম পরিবেশে অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এর ফটক পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে সুদৃশ্য শহীদ মিনার। তার পাশে শতবর্ষ ফলক। বিদ্যালয়ের মাঝখানে রয়েছে পাড়বাঁধা একটি পুকুর। এর চারপাশে বিদ্যালয় ভবন।

পুকুরের পাশ দিয়ে সারি সারি দেবদারুগাছ দাঁড়িয়ে আছে। এসব মহিরুহের ফাঁকে শোভা ছড়াচ্ছে বাহারি ফুলগাছ। পুব পাশে শানবাঁধানো ঘাট এবং ঈদগাহ মাঠ ও মসজিদ। উত্তর পাড়ে বিদ্যালয়ের পুরনো একটি লাল রঙের ভবন কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভবনটি এখন অফিসকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ভারতের হুগলি জেলার বাসিন্দা ছিলেন সৈয়দ গোলাম মোস্তফা। পেশায় তিনি ছিলেন চিকিৎসক। সৈয়দ গোলাম মোস্তফা ১৯১৯ সালের আগে ইসলাম প্রচার ও সেবার জন্য এই অঞ্চলে আসেন। তার চার ছেলে ও দুই মেয়ে। সন্তানদের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন সৈয়দা ফাতেমা খাতুন। তার মেয়ে জোহরা তাজউদ্দীন, যিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের স্ত্রী। ফুলবাড়ী পৌর শহরের পূর্ব গৌরীপাড়ায়, এখন যেটি ঢাকা মোড় শাপলা চত্বর নামে পরিচিত, সপরিবারে বসবাস করতেন সৈয়দ গোলাম মোস্তফা। বর্তমানে সেখানে তার পরিবারের উত্তরসূরিরা বসবাস করেন। সেই সময় ফুলবাড়ীসহ আশপাশের লোকজনের সেবা দিতে গিয়ে তাদের জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করতে বাড়ির পাশে নিজ জমিতে গোলাম মোস্তাফা হাই মাদ্রাসা স্থাপন করেন।

বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক বীরেন্দ্রনাথ সরকার জানান, গত এক শতক বিদ্যালয়টি অনেক কীর্তিমান শিক্ষার্থীর জন্ম দিয়েছে। তবে ১৯৭১ সালে বিদ্যালয়টিতে পাকিস্তানি বাহিনী ক্যাম্প করে এর রেকর্ডপত্র নষ্ট করে দেয়। তাই এর অনেক ইতিহাস আজও অজানা। তিনি বলেন, শুরুতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন শরৎচন্দ্র সরকার। সাতজন প্রধান শিক্ষকের পর বর্তমানে তোজাম্মেল হোসেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি জানান, এখন বিদ্যালয়ে প্রায় ১ হাজার ছাত্রছাত্রী, ৩০ জন শিক্ষকসহ ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। নিভৃত পল্লির শতবর্ষী এ বিদ্যালয় শিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরিতে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে।

১৯৬০ সালে বিদ্যালয়ে প্রথম এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সে বছর এসএসসিতে ষষ্ঠ স্ট্যান্ড করেন দানেশ আহম্মেদ। তিনি বর্তমানে লন্ডনে বসবাস করছেন। একই সঙ্গে এসএসসিতে ওই বছর মো. আ. গফুর নামের একজন অষ্টম স্ট্যান্ড করেন।

ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আতাউর রহমান মিল্টন বলেন, মানুষ গড়ার এই বিদ্যাপীঠ সমাজে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। 

২০২০ সালে এর শতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে। বিদ্যালয়ের হাজার হাজার বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী নিয়ে জমকালো আয়োজনে দুই দিনব্যাপী শতবর্ষ উদযাপন করা হয়েছে।

কলি