ঢাকা ১৯ আশ্বিন ১৪৩১, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪

আশ্বাসে স্থগিত আন্দোলন, মুক্ত বুয়েট উপাচার্য

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ০৯:৫৭ এএম
আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪, ১১:৩৪ এএম
আশ্বাসে স্থগিত আন্দোলন, মুক্ত বুয়েট উপাচার্য
ছবি: খবরের কাগজ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পদোন্নতি সংক্রান্ত নীতিমালা-২০১৫ পুনর্বহালকে কেন্দ্র করে উপাচার্য ড. সত্যপ্রসাদ মজুমদারকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় মুক্ত হন তিনি। 

এদিকে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের আগমুহূর্ত পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সোমবার (২৪ জুন) রাত সোয়া ৯টার দিকে উপাচার্যের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধি দলের আলোচনা শেষে এ ঘোষণা দেন তারা। পরে পুলিশের সহায়তায় উপাচার্য তার বাসভবনে চলে যান। 

এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক সত্যপ্রসাদের সঙ্গে সাংবাদিকরা কথা বলতে চাইলেও তাতে রাজি হননি তিনি। 

সোমবার বিকেল ৪টার দিকে বুয়েটের পদোন্নয়নসংক্রান্ত নীতিমালা-২০১৫ বাতিল করে জারি করা এক অফিস আদেশকে কেন্দ্র করে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

এদিকে বুয়েট টেকনিক্যাল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সিদ্দিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘উপাচার্য নতুন নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত ২০১৫ নীতিমালা বহাল রাখতে রাজি হয়েছেন। এটা আগামী সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করতে সুপারিশ করে লিখিত দিয়েছেন। তাই আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করছি। এরপরের কর্মসূচি পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে।’

এর আগে গত রবিবার (২৩ জুন) প্রকাশিত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তি ঘিরেই মূলত ক্ষুব্ধ হন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ফিন্যান্স কমিটির ৫৫তম অধিবেশনের কার্যবিবরণীর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে একই বছরের ২৭ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৫৪০তম সভায় নতুন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এসব সিদ্ধান্তে জানানো হয়, গত ২৭ ডিসেম্বরের পরবর্তী সময়ে নীতিমালা-২০১৫-এর মাধ্যমে বুয়েটের কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারী পদোন্নতি, পদোন্নয়ন, সিলেকশন গ্রেড, সিনিয়র গ্রেড স্কেল প্রাপ্যতার জন্য বিবেচিত হবেন না এবং এর মধ্যে যাদের পদোন্নতি, পদোন্নয়ন, সিলেকশন গ্রেড, সিনিয়র গ্রেড সেল দেওয়া হয়েছে তা অপরিবর্তিত থাকবে। যাদের পদোন্নতি, পদোন্নয়ন, সিলেকশন গ্রেড, সিনিয়র গ্রেড স্কেল দেওয়া হয়েছে, তাদের চাকরি শেষ হলে বা পদত্যাগ করলে বা অপসারণ বা পদচ্যুত হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের অর্গানোগ্রাম বহির্ভূত পদ বিলুপ্ত হবে এবং অর্গানোগ্রামভুক্ত মূল পদ শূন্য হবে। পরবর্তী সময়ে কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারী যদি সরকারি নীতিমালায় এরই মধ্যে বুয়েট প্রণীত নীতিমালা-২০১৫-এর মাধ্যমে প্রাপ্ত গ্রেডের চেয়ে উচ্চতর গ্রেড অথবা পদপ্রাপ্ত হন তাহলে তা দেওয়া হবে।

আরিফ/পপি/অমিয়/

সিলেটে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির স্থায়ী সনদ লাভ

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১৩ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫৮ পিএম
সিলেটে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির স্থায়ী সনদ লাভ
মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি

সিলেট বিভাগের একমাত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের ১৮তম হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে স্থায়ী সনদ পেয়েছে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি। 

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-১ শাখার উপসচিব ড. মো. ফরহাদ হোসেন এ বিষয়ে একটি পত্র পাঠান। 

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর ধারা ১০ মোতাবেক মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি, বটেশ্বর, সিলেট ৩১০৪-এর অনুকূলে স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার জন্য সনদপত্র নির্দেশক্রমে প্রদান করা হলো।’ 

বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ড. তৌফিক রহমান চৌধুরীর উদ্যোগে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। 

২০০৩ সালের ৩ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাময়িক সনদ নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি।

শুরুতে সিলেটের জিন্দাবাজারের একটি ভবনে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম। 

২০১৯ সালে সিলেট শহরতলির বটেশ্বর এলাকায় স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপিত হয়। 

বিগত ২১ বছরে এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে ডিগ্রি অর্জন করা গ্র্যাজুয়েটরা গুগল, অ্যামাজনসহ দেশ-বিদেশের প্রথিতযশা প্রতিষ্ঠানে সুনাম ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি অনুষদের অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্যবসায় প্রশাসন, আইন ও বিচার, ইংরেজি এবং অর্থনীতি বিভাগ রয়েছে। 

ইতোমধ্যে তিনটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে চতুর্থ সমাবর্তন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।  

স্থায়ী সনদপ্রাপ্তিতে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর রহমান চৌধুরী, ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক সরকার, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, বোর্ড অব অ্যাডভাইজর, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক, কর্মকর্তা, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবকসহ সব শুভানুধ্যায়ী, শুভাকাঙ্ক্ষীদের ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর জানায়, বাংলাদেশে ১১৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মধ্যে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি দেশের ১৮তম ও সিলেটের প্রথম এবং একমাত্র স্থায়ী সনদপ্রাপ্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।

পপি/

জাবির ১৭ সমন্বয়ক ও সহসমন্বয়কের পদত্যাগ

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৮ পিএম
জাবির ১৭ সমন্বয়ক ও সহসমন্বয়কের পদত্যাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন সমন্বয়করা। ছবি : খবরের কাগজ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সরকারি দলের মতো আচরণ ও গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিট-বিরুদ্ধ কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার কারণ দেখিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ১৩ জন সমন্বয়ক ও ৪ জন সহসমন্বয়ক পদত্যাগ করেছেন। 

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

পদত্যাগ করা সমন্বয়করা হলেন আবদুর রশিদ জিতু, রুদ্র মুহাম্মদ সফিউল্লাহ, হাসিব জামান, জাহিদুল ইসলাম ইমন, জাহিদুল ইসলাম, ফাহমিদা ফাইজা, রোকাইয়া জান্নাত ঝলক, মিশু খাতুন, রাফিদ হাসান রাজন, হাসানুর রহমান সুমন, আব্দুল হাই স্বপন, নাসিম আল তারিক ও ঐন্দ্রিলা মজুমদার। তাদের মধ্যে আব্দুর রশিদ জিতু কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের দায়িত্বও পালন করেছেন। সহসমন্বয়করা হলেন জিয়া উদ্দিন আয়ান, তানজিম আহমেদ, জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি ও সাইদুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে ৯ দফার ওপর ভিত্তি করে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্যাসিবাদের পতনের মধ্য দিয়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। তবে ৯ দফায় অন্তর্ভুক্ত দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিগুলোতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এক প্রকার নিশ্চুপ রয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের মতো ভূমিকা পালন করছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের সর্বস্তরের আন্দোলনকারীর একই ব্যানারে অন্তর্ভুক্ত করতে এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।’ 

জিতু আরও বলেন, ‘জাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কতিপয় সমন্বয়কের জাবিকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরতে অক্ষমতা, সহযোদ্ধাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ এবং গত ১৮ সেপ্টেম্বর সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সন্ত্রাসী শামীম মোল্লার গণধোলাইয়ের পর পুলিশের হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে একাধিক সমন্বয়কের নাম উঠে আসে। এ ঘটনায় এই ব্যানার কোনো ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে আসতে না পারায় আমরা সমন্বয়ক পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করছি।’

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আরিফ সোহেল বলেন, ‘সমন্বয়কদের পদত্যাগের বিষয়ে আমরা কিছু জানি না, যারা পদত্যাগ করেছেন এটা তাদের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়।’

জবির ক্যাফেটেরিয়ায় ছাত্রলীগের দেনা ৭ লাখ

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪৯ পিএম
জবির ক্যাফেটেরিয়ায় ছাত্রলীগের দেনা ৭ লাখ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায়। ছবি খবরের কাগজ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাফেটেরিয়ায় গত আড়াই বছরে খেয়ে প্রায় সাত লাখ টাকা বাকি রেখেছেন শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

এসব বাকির টাকা না পাওয়ায় বেশ বিপাকে পড়েছেন ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক মাসুদ। পরিশোধ করতে পারছেন না মালামাল কেনার টাকা।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক মো. মাসুদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। 

তিনি জানান, গত আড়াই বছরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ক্যান্টিন থেকে সাত লাখ টাকার মতো ‘ফাও’ খেয়েছে। পরবর্তীতে আর টাকা দেয়নি। এখন তাদের সবাই পলাতক। ক্যাম্পাসে আসেন না। 

ক্যাফেটেরিয়া পরিচালক আরও জানান, ক্যাফেটেরিয়ায় জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির নামে বাকি রয়েছে এক লাখ ৮৮ হাজার টাকা এবং শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের নামে বাকি রয়েছে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা। 

এ ছাড়াও বাকির হিসেবে নাম রয়েছে ছাত্রলীগের আরও পাচঁ নেতা-কর্মীর। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির ‘মাই ম্যান’ খ্যাত রবিউল ইসলাম রবির নামে বাকি ৫২ হাজার টাকা। সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসানের ডান হাত খ্যাত মিরাজের নামে বাকি রয়েছে ৭৫ হাজার টাকা, সহসভাপতি মেহেদী হাসান বাবুর নামে বাকি ৫৫ হাজার টাকা। সাধারণ সম্পাদক আক্তারের প্যানেলের আরও দুই নেতা তামিম ও সাজবুলের নামে বাকি রয়েছে ১২ হাজার টাকা ও ৯ হাজার টাকা। ছাত্রলীগের এই সাত নেতাকর্মীদের নামেই বাকি সর্বমোট ৬ লাখ ৪১ হাজার টাকা। এছাড়া অনেকে বাকি খেলেও হিসাব নেই তার।

ক্যাফেটেরিয়া পরিচালক মো. মাসুদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন বাকি খেয়েছে তারা। টাকা দেবে দেবে করে আর দেয়নি। এর বাইরে আরও অনেকে আছে যারা টুকটাক খেয়েছে, তার হিসাব নেই। খেয়ে তারা টাকা দেয় না, আবার খাবার দিতে দেরি হলে ওয়েটাদের মারধরও করেছে সাজবুলসহ বেশ কয়েকজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এদিকে ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালনা বাবদ সপ্তাহে খরচ হয় ৩৯ হাজার ৭৫০ টাকা, মাসে এক লাখ ৫৯ হাজার টাকা। এ ছাড়া মালামাল বাবদ খরচ তো আছেই। তার ওপর এতো টাকা বাকি। যেখান থেকে আমি মালামাল কিনি, সেখানেও আমার ধার করে কেনা লাগে। এতো টাকা এখন কিভাবে উঠাবো আর কিভাবে আমি এই লস পূরণ করব?’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদককে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বাকি অভিযুক্ত নেতাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক ড. কে এ এম রিফাত হাসান বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে বিষয়টি সত্য হলে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা রেগুলার স্টুডেন্ট হলে তাদের থেকে টাকা আদায় করার ব্যবস্থা করা হবে এবং প্রশাসনিকভাবে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

মুজাহিদ/জোবাইদা/অমিয়/

বিশ্বসেরা গবেষকের তালিকায় বেরোবির ৯৩ গবেষক

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩০ পিএম
আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৮ পিএম
বিশ্বসেরা গবেষকের তালিকায় বেরোবির ৯৩ গবেষক
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) থেকে ৯৩ জন গবেষকের নাম প্রকাশিত হয়েছে অ্যালপার ডগার (এডি) সায়েন্টিফিক ইনডেক্সের ওয়েবসাইটে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৫৯।

আন্তর্জাতিক গবেষক ও বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিং সংস্থা ‘অ্যালপার ডগার (এডি) সায়েন্টিফিক ইনডেক্স’ এ তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে বিশ্বের ২১৯টি দেশের ২৪ হাজার ৩৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ২৪ লাখ ১৪০ জন বিজ্ঞানী ও গবেষক স্থান পান।

বেরোবি গবেষকদের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু রেজা মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম, দ্বিতীয় স্থানে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ফেরদৌস রহমান, তৃতীয় স্থানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রোকাইয়া সালাম, চতুর্থ স্থানে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান, পঞ্চম স্থানে রয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাকিব।

এ ছাড়াও ষষ্ঠ স্থানে রয়েছেন রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সাদ্দাম হোসেন, সপ্তম স্থানে রয়েছেন পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান, অষ্টম স্থানে রয়েছেন ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক মো. তৌহিদুল ইসলাম, নবম স্থানে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম ভূইয়া এবং দশম স্থানে রয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মো. হাসানুজ্জামান। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, ‘এটি খুবই খুশির খবর। যারা গবেষণায় শ্রম দিচ্ছেন ও কৃতিত্ব রাখছেন, তাদের স্যালুট জানাই। আশা করি এই ধারা অব্যাহত থাকবে এবং ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষার্থীরাও গবেষণায় অবদান রাখবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা গবেষণায় অবদান রাখছেন তা নিয়ে সেমিনার আয়োজন করার চেষ্টা করব, যাতে অন্যরাও গবেষণায় উদ্বুদ্ধ হয়।’

সংস্থার ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, ইনডেক্সটি (AD Scientific Index) সারা বিশ্বে গবেষণাপত্রের কার্যকারিতা মূল্যায়নের মাধ্যমে ‘এইচ’ এবং ‘আই-১০’ সূচকে এ তালিকা তৈরি করে। 

এ পদ্ধতির উদ্ভাবক দুই গবেষকের (অধ্যাপক মুরত আলপার এবং চিহান ডজার) দাবি, বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী-গবেষক-অধ্যাপকদের কাজ এবং তাদের শেষ ৬ বছরের কাজের তথ্য বিশ্লেষণের পর তা এইচ-ইনডেক্স, আইটেন-ইনডেক্স স্কোর এবং সাইটেশনের ওপর ভিত্তি করে এ তালিকা প্রকাশিত হয়। এতে নিজ নিজ গবেষণার বিষয় অনুযায়ী গবেষকদের বিশ্ববিদ্যালয়, নিজ দেশ, মহাদেশীয় অঞ্চল ও বিশ্বে নিজেদের অবস্থান জানা যায়।

তা ছাড়া সূচকটিতে গবেষকদের বিশ্লেষণ ও বিষয়গুলো নির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে গণ্য করা হয়। কৃষি ও বনায়ন, কলা নকশা ও স্থাপত্য, ব্যবসায় ও ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি, শিক্ষা, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, ইতিহাস দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব, আইন, চিকিৎসা, প্রকৃতিবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞানসহ মোট ১২টি ক্যাটাগরিতে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।

গাজী আজম/জোবাইদা/অমিয়/

শাবিপ্রবির ‘কার্টুন ফ্যাক্টরি’ সক্রিয়

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৪ এএম
আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৫ এএম
শাবিপ্রবির ‘কার্টুন ফ্যাক্টরি’ সক্রিয়
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে কার্টুন প্রদর্শনীতে প্রথম পুরস্কার পাওয়া কার্টুন। ছবি: খবরের কাগজ

সংগঠনের নাম ‘কার্টুন ফ্যাক্টরি’। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসভিত্তিক হরেক রকম সংগঠনের ভিড়ে এ নামটিও অনেকটা আকর্ষণীয়। ‘পেন্সিল চলবেই’ স্লোগানে যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৭ সালে। যাত্রাপথে নানা বাধা-বিপত্তি আর অঘোষিত বাধায় অনেকটা স্থবির ছিল সংগঠনটি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কার্টুন ফ্যাক্টরি নতুন রূপে আবার সক্রিয় হচ্ছে। সম্প্রতি নতুন কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে সক্রিয়তার পথে পা বাড়িয়েছে কার্টুন ফ্যাক্টরি।

সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১ জুন শাবিতে একমাত্র ক্যাম্পাসভিত্তিক কার্টুন সংগঠন হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিল এটি। ১৭ বছর আগে কিছু তরুণের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া এই কার্টুন ফ্যাক্টরি দীর্ঘ পথচলায় হাজারও বিপত্তি, চাপ ও আইনের খড়গ পেরিয়ে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। কার্টুনের মাধ্যমে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে এ সংগঠন। সমাজের বিভিন্ন অসংগতি তারা যৌক্তিক উপায়ে মানুষের সামনে তুলে আনেন। সামাজিক অপরাধগুলোর বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন কার্টুনের মাধ্যমে।

সংগঠনটির কার্যক্রম মূলত পাঁচটি সেকশনে হয়। এর মধ্যে রয়েছে স্কেচ-বুকিং, ওয়ার্কশপ, ড্রয়িং ফ্লোর, সেমিনার ও বিভিন্ন দিবসে অঙ্কন প্রদর্শনী। স্কেচবুকিং সেশনটি মূলত সাপ্তাহিক হয়। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর তারা তাৎক্ষণিক কার্টুন আঁকার কাজ করেন। এ সেশনটি সবার জন্য উন্মুক্ত। যে কেউ চাইলে সেখানে যোগ দিতে পারেন এবং সংগঠনটির কার্টুনিস্টরা তাদের দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। এ ছাড়া তারা কার্টুন আঁকার বিভিন্ন কৌশল শেখানোর উদ্দেশ্যে ওয়ার্কশপ ও সেমিনারের আয়োজন করে থাকেন। সেখানে প্রায়ই দেশের স্বনামধন্য কার্টুনিস্টরা এসে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি বিভিন্ন দিবসের এক্সিবিশন আয়োজনের আগে সংগঠনটি ড্রয়িং ফ্লোরের আয়োজন করেন। যেখানে তারা নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর সম্মিলিতভাবে কার্টুন আঁকেন।

সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত ক্যাম্পাসভিত্তিক কার্টুন প্রতিযোগিতা ‘নির্বাচন the election’-এ কার্টুন ফ্যাক্টরি অংশ নিয়ে প্রথম পুরস্কারসহ একাধিক ‘সম্মানজনক’ পুরস্কারে ভূষিত হয়। বর্তমানে সংগঠনটির ১৩তম কার্যকরী কমিটি কার্যরত। সভাপতি পদে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল তায়্যিব। 

কার্টুন ফ্যাক্টরির ভবিষ্যৎ চিন্তাভাবনা কী? এ প্রশ্নে সংগঠনটির সভাপতি বলেন, ‘মতপ্রকাশ, চিন্তাভাবনার প্রতিফলন এবং প্রতিবাদের অন্যতম এক মাধ্যম কার্টুন। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ২৪ বিপ্লবেও এরই ধারাবাহিকতা আমরা সবাই দেখেছি। তাই এই বিপ্লবের মূলমন্ত্র ও স্পিরিটকে ধারন করে রং-তুলির মাধ্যমে সবার মত, চাওয়া-পাওয়া, হাসি-কান্নার ভাষা হিসেবে কাজ করতে চাই আমরা। পাশাপাশি কার্টুনের মাধ্যমে তুলে ধরতে চাই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মজার বিষয়, অসংগতি ও অনিয়ম। এর জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক স্থাপত্য বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইশতিয়াক হুদা রাফি। একই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘প্রথমত আমরা ক্যাম্পাসের সব বিষয় মজা করে তুলে ধরতে চাই। পাশাপাশি দেশের চলমান অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় কার্টুনের প্রভাব ভালো লক্ষ করা যাচ্ছে। যেটা অনেক বছর আগে ছিল। মাঝখানে একটা লম্বা সময় দেশে কার্টুন প্রচার-প্রসারে স্বাধীনতা ছিল না। কার্টুন ফ্যাক্টরি শাবিপ্রবির তথা দেশের অন্যতম ব্যতিক্রম সংগঠন হিসেবে কার্টুনকে উজ্জীবিত করতে চায়। এই লক্ষ্যে অনেক ধরনের সুদূরপ্রসারী চিন্তা করা হচ্ছে। পাশাপাশি বলতে চাই, ক্যাম্পাসে সব নিয়ম-অনিয়ম, সংগতি-অসংগতির বিষয়ে কার্টুন ফ্যাক্টরির পেন্সিল চলছে এবং ভবিষ্যতেও পেন্সিল চলবেই।’

কার্টুনিস্টদের স্বাধীনভাবে কাজ করার পক্ষে মতামত দেন শাবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম। 

তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হলো যেকোনো ধরনের মেধার লালন, পরিস্ফুটন, দলমত নির্বিশেষে জ্ঞানের উৎকর্ষতা সাধনের চর্চা কেন্দ্র। কার্টুন শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে একটা গ্রহণযোগ্য শিল্প। কেউ যদি এ শিল্পকে বাধা দিয়ে থাকে আমি মনে করি এটা উচিত হয়নি।’ 

তবে হীন উদ্দেশ্যে কার্টুন বা অনুরূপ কোনো শিল্প চর্চা না করার আহ্বান জানান ড. মো. সাজেদুল করিম।