ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যবিপ্রবির ১৩ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ০৯:১১ পিএম
যবিপ্রবির ১৩ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

চাকরিপ্রার্থীদের অপহরণ এবং একজন আবাসিক শিক্ষার্থীকে রাতভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের দায়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বিভিন্ন বিভাগের ১৩ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজনের ছাত্রত্ব না থাকায় দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিকেলে যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রিজেন্ট বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

যবিপ্রবির জনসংযোগ শাখার উপ-পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) আব্দুর রশিদ অর্ণব জানান, রিজেন্ট বোর্ডের সদস্যদের অনেকে ভার্চুয়ালি এবং সশরীরে সভায় অংশ নেন। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনের পর তা নিয়মানুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে উপস্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ডিসিপ্লিনারি কমিটির সুপারিশ রিজেন্ট বোর্ডের সভায় উপস্থাপন করার পর, ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর লিফট অপারেটরে চাকরিপ্রার্থীদের অপহরণের ঘটনায় সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় যবিপ্রবির ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী বেলাল হোসেন, ফার্মেসি বিভাগের জি এম রাইসুল হক রানা, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগের শিক্ষার্থী নৃপেন্দ্র নাথ রায়, মুশফিকুর রহমান, ফাহিম ফয়সাল লাবিব ও আবু বক্কারকে বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া গত ৪ জুন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মসিয়ূর রহমান হলের ৩০৬ নম্বর কক্ষে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিন রহমানকে রাতভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় একই বিভাগের সোহেল রানা, রেদওয়ান আহমেদ জিসান, বিপুল সেখ, ইছাদ হোসেন, আশিকুজ্জামান লিমন ও আমিনুল ইসলাম, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের বেলাল হোসেন ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের রায়হান রহমান রাব্বীকে যবিপ্রবির রুলস অব ডিসিপ্লিন ফর স্টুডেন্টস অনুযায়ী আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। 

তবে এদের মধ্যে ফাহিম ফয়সাল লাবিব, সোহেল রানা, ইছাদ হোসেন এবং আশিকুজ্জামান লিমনের বর্তমানে ছাত্রত্ব নেই। ফলে তাদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ও আবাসিক হলে প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।

যবিপ্রবির উপাচার্য ও রিজেন্ট বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনিছুর রহমান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) খালেদা আক্তার, যশোরের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাওছার উদ্দিন আহম্মদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া, বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. কৌশিক সাহা, ইউজিসি অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শাবিপ্রবি ক‍্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা, খাল খননেই মিলল সুফল

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৯:৩৩ পিএম
শাবিপ্রবি ক‍্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা, খাল খননেই মিলল সুফল
খননকৃত খাল। ছবি:খবরের কাগজ

বিগত বছরগুলোতে বর্ষাকাল আসতে না আসতেই অল্প বৃষ্টিতে ক্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ার কারণে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের। কিন্তু এবার বর্ষা আসার আগেই ক্যাম্পাসের প্রতিটি খাল পুনরায় খনন করায় সে সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। এতে প্রশংসায় ভাসছে প্রশাসনের খাল খননের এ উদ্যোগ। 

সোমবার (২ জুন) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিলেটে বিগত কয়েকদিনের মৌসুমি বৃষ্টিতে আগের মতো জলাবদ্ধতা তৈরি হয়নি ক্যাম্পাসে। পুনঃখননকৃত খাল দিয়ে সহজেই ক্যাম্পাসের বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে দেখা যেত ঠিক উল্টো চিত্র। একটু বৃষ্টি হলেই ক্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা তৈরি হতো, রাস্তা ডুবে যেতো এবং এতে করে যাতায়াত ভোগান্তিতে পড়তে হতো শিক্ষার্থীদের। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, ক্যাম্পাসের জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার সমস্যা দূর করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আনুমানিক ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ২ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন ও নতুন খাল খনন করা হয়। খালটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানাঘেঁষা টিলারগাও এলাকা দিয়ে চেঙ্গের খালে গিয়ে পতিত হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ইতিবাচক পরিবর্তনের ব্যাপারে পলিটিকাল স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোস্তুফা আহাম্মেদ বলেন, অতীতে সামান্য বৃষ্টিতেই ক্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা দেখা দিত, যা শিক্ষার্থীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটাত। তবে সম্প্রতি খাল খনন ও জলাধার উন্নয়নের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফলে এখন বৃষ্টির পরও ক্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা দেখা দেয় না, যা শিক্ষার্থীদের জন্য স্বস্তির বিষয়। এই উদ্যোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূসম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বলেন, বিগত বছরগুলোতে দেখা যেত একটু বৃষ্টি হলেই ক্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে সবাইকে যাতায়াত ভোগান্তিতে পড়তে হতো। তাই আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই প্রথম এই কাজটার দিকেই মনোযোগ দিয়েছিলাম। আমাদের কাজ এখনো চলমান আছে। আশা করি এই সমস্যা পুরোপুরি সমাধান হবে।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, প্রত্যেক বছর বৃষ্টি হলেই ক্যাম্পাস প্লাবিত হয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাইকে ভোগান্তিতে পড়তে হতো। পাশাপাশি ক্লাসরুম বা ল্যাবের ভিতরে পানি ঢুকে অনেক ক্ষতি করতো। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই সময় মতো খাল খনন করা হয়েছে। খালের পানি যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার বাহিরে যাতে পানি সহজে নিষ্কাশন হয় সে ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট প্রশাসককে বলা হয়েছে। তারাও বিষয়টা গুরুত্ব সহকারে দেখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রাস্তার খানাখন্দ ঈদের বন্ধের মধ্যে মেরামতের জন্যও সিটি করপোরেশনকে জানানো হয়েছে। আশা করি এই বন্ধের মধ্যে তারা এটা করে ফেলবে।


মো: ইসফাক আলী/মাহফুজ 

 

নোবিপ্রবিতে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে কর্মচারী বরখাস্ত

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৩:১০ পিএম
আপডেট: ০২ জুন ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
নোবিপ্রবিতে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে কর্মচারী বরখাস্ত
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) রিসার্চ সেলের ৪৩ লাখ টাকার দুর্নীতির ঘটনা সামনে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদন্তে আর্থিক অনিয়ম, হিসাব জালিয়াতি এবং অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর কাওসার হামিদ চৌধুরী জিকুকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সোমবার (২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তামজিদ হোছাইন চৌধুরীর স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

অফিস আদেশে বলা হয়, শিক্ষকদের গবেষণা প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ আদায় করা প্রায় ৩০ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে যথাসময়ে জমা না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে জিকুর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে কোনো সন্তোষজনক উত্তর পাওয়া যায়নি। ওই অর্থ তার ব্যক্তিগত কাজে ব্যয় করা হয়। পরে নির্দেশনা দেওয়া সত্ত্বেও ওই টাকা নির্ধারিত অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হয়নি। এছাড়া সাম্প্রতিক অডিটেও বিভিন্ন খাত মিলে ৪৩ লাখ টাকার আর্থিক গরমিল ধরা পড়ে।

এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। পাশাপাশি তার বাবাকে এক মাসের মধ্যে পুরো অর্থ পরিশোধের অঙ্গীকারে তাকে নিজের জিম্মায় নিয়েছেন বলে অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তামজিদ হোছাইন চৌধুরী বলেন, 'হিসাবে গরমিল এবং আর্থিক কেলেঙ্কারির কারণে তাকে শোকজ করে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বাবা এক মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেবেন বলে ছেলেকে জিম্মায় নিয়ে যান। ইতোমধ্যে আমরা আরেকটি নোটিশ দিয়েছি। তাতে বলা হয়েছে কেউ যাতে তার সঙ্গে কোনো আর্থিক লেনদেনে না যায়।'

তিনি আরও জানান, অফিসের কার্যক্রম শুরু হলে তদন্ত কমিটি করা হবে। এ ঘটনায় জিকু এককভাবে দায়ী, নাকি এর সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত, সেটিও খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তের ভিত্তিতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

কাউসার আহমেদ/রিফাত/

গাড়ি চালিয়ে চীন থেকে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ১২:৫৪ পিএম
গাড়ি চালিয়ে চীন থেকে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে
ইউকুন তাও। ছবি: বিবিসি

আধুনিক বিশ্বে কেউ এক দেশ থেকে আরেক দেশে যেতে চাইলে বিমানে চেপে বসে। সেটা যদি চীন থেকে যুক্তরাজ্য হয়, তা হলে তো কথাই নেই। কিন্তু ২০ বছর বয়সী শিক্ষার্থী ইউকুন তাও বিরল এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে গাড়ি চালিয়ে তিনি চীন থেকে ১১ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছেছেন। এ জন্য তার ২৬ দিন লেগেছে। পাড়ি দিয়েছেন সাতটি দেশ- কাজাখস্তান, রাশিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড, জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডস। উদ্দেশ্য ছিল শুধু স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছানো। কিন্তু তার এই যাত্রা হয়ে উঠেছে সাহস, সংকল্প ও আত্মবিশ্বাসের এক অনন্য গল্প।

ইউকুন তাও বর্তমানে হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছর মেয়াদি এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশ নিতে চেয়েছিলেন। তার এই পরিকল্পনার কথা তার মা-বাবাকে জানালে তারা মাসের পর মাস ধরে তাকে এই পাগলামি থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেন। তবে তিনি থামেননি।

ভ্রমণ নিয়ে ইউকুন তাও বলেন, ‘আমি ওইসব দেশে আগে কখনো যাইনি। বস্তুত ১০ বছর ধরে বিদেশে যাওয়া হয়নি আমার। এই সিদ্ধান্ত নিতে মানসিক শক্তি আর সাহসের দরকার ছিল। অজানার মুখোমুখি হতে আসলেই সাহস লাগে।’

এই অজানা যাত্রার প্রস্তুতি নিতে সময় লেগেছিল প্রায় ছয় মাস। গাড়ি, রুট প্ল্যান, ভিসা ইত্যাদি সবকিছু নিয়ে ভাবতে হয়েছে ইউকুন তাওকে।
ভ্রমণটা সহজ ছিল না ইউকুন তাও-এর। ১ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করার কিছুদিন পরই চীন-কাজাখস্তান সীমান্তের কাছে এসে তার গাড়ির ইঞ্জিনে গুরুতর সমস্যা দেখা দেয়। তাও-এর হাতে সময় কম ছিল। ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশ ছাড়তে না পারলে পুরো যাত্রা থেমে যেত। পরে এক বন্ধুর সহায়তায় স্থানীয় একটি ওয়ার্কশপে রাত-দিন কাজ করে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই গাড়ি ঠিক করে ফেলেন মিস্ত্রিরা।

২৬ সেপ্টেম্বর, দীর্ঘ পথ পেরিয়ে তাও পৌঁছান ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জোসেফিন বাটলার কলেজে। গাড়ির পেছনে ঝোলানো ছিল তার প্রিয় মাউন্টেন বাইক। কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিনিধি তাকে স্বাগত জানায়। তাও অবাক হন। এত ভালোবাসা আর এত সম্মান পাবেন, সেটা তিনি আঁচ করতে পারেননি।  সূত্র: বিবিসি

/রিয়াজ

ঢাবিকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি শিক্ষকদের

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৫, ১০:১১ পিএম
ঢাবিকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি শিক্ষকদের
ঢাবিকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের কাছে স্মারকলিপি জমা দিচ্ছেন শিক্ষকরা। ছবি: খবরের কাগজ

রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা খাতসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (ঢাবি) ‘বিশেষ মর্যাদা’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। 

রবিবার (১ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের কাছে এই দাবি সংবলিত স্মারকলিপি জমা দেন তারা। 
জানা গেছে, পরবর্তীতে ওই স্মারকলিপিটি উপাচার্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠাবেন। স্মারকলিপিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩টি বিভাগের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করা হয়। 

এ বিষয়ে ঢাবির বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে যত গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন হয়েছে সব আন্দোলনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান ছিল অগ্রগামী। শুধু তাই নয় শিক্ষা ও গবেষণায়ও ঢাকা বিশ্ববদ্যালয় জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই কোনো বিশেষ মর্যাদা। অথচ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার নজির রয়েছে। আমরা চাই, সরকার এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ মর্যাদা দেবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে অতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ঢাবি সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, ‘বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, স্বাধীনতা যুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে এবং সর্বশেষ চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি।’ 

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন এবং সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান। তিনি এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান।

এ সময় ঢাবির স্যার পি জে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এমএ কাউসার, স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাহবুবা সুলতানা, শামসুন্নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিনুর রশিদ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আনোয়ারুল আজিম, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কম খরচে পড়াশোনা ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দিচ্ছে পর্তুগাল

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৫, ১২:০৪ পিএম
আপডেট: ০১ জুন ২০২৫, ১২:১২ পিএম
কম খরচে পড়াশোনা ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দিচ্ছে পর্তুগাল
ছবি: সংগৃহীত

পর্তুগাল শুধু ইউরোপের অন্যতম প্রাচীন রাষ্ট্রই নয়, দেশটি এখন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আকর্ষণের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। আটলান্টিক মহাসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম তীরে অবস্থিত শান্ত, ছিমছাম এই দেশটি এখন উচ্চশিক্ষার এক সম্ভাবনাময় ঠিকানা। কম খরচ, আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা এবং গবেষণার সুযোগ- সব মিলিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য পর্তুগাল হতে পারে এক অনন্য সম্ভাবনার দেশ।

বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্সের বৈচিত্র্য
পর্তুগালের প্রায় সব বড় বিশ্ববিদ্যালয়েই রয়েছে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রাম। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, মেডিকেল, অর্থনীতি, ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে শুরু করে সোশ্যাল সায়েন্স- প্রায় সব বিষয়েই পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে দেশটিতে। অনেক কোর্সই পর্তুগিজ ভাষায় হলেও, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ইংরেজি মাধ্যমে নানা কোর্স অফার করা হয়।

তবে আবেদন করার আগে আপনার বাছাইকৃত কোর্সটি কোন ভাষায় পড়ানো হয় সেটা অবশ্যই দেখে নেবেন।

যোগ্যতা ও কম খরচে সুযোগ
অনেক শিক্ষার্থীর কাছে ইউরোপ মানেই আইইএলটিএসের জটিলতা। কিন্তু পর্তুগালে উচ্চশিক্ষার জন্য এটা বাধ্যতামূলক নয়। ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকলেই যথেষ্ট। 

ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় পর্তুগালে টিউশন ফি অনেক কম। ব্যাচেলর বা মাস্টার্স প্রোগ্রামে বার্ষিক খরচ মাত্র ৯৫০ থেকে ১২০০ ইউরো। আর পিএইচডির ক্ষেত্রে বছরে ২৫০০ থেকে ৩৫০০ ইউরোর মতো প্রয়োজন পড়বে। এই ফি অনেক সময় স্কলারশিপ বা বিভিন্ন ডিসকাউন্টের মাধ্যমে আরও কমে আসে।

আবেদন প্রক্রিয়া ও সময়সীমা
প্রতিবছর দুইবার আবেদন গ্রহণ করে পর্তুগালের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিল থেকে জুলাই। এ দুটি সময়েই ভর্তির সুযোগ পাওয়া যায়। আবেদন করতে হয় অনলাইনে এবং কাগজপত্র জমা দিতে হয় ডিজিটালি।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

  • একাডেমিক সনদপত্র ও নম্বরপত্র
  •  পাসপোর্ট, ছবি ও সিভি
  •  মোটিভেশন ও রেফারেন্স লেটার
  •  ব্যাংক সলভেন্সি ও টিউশন ফি জমার রসিদ
  •  অ্যাকোমোডেশন ডকুমেন্ট ও হেলথ ইন্স্যুরেন্স

ভিসা প্রক্রিয়া
বাংলাদেশে পর্তুগালের এমব্যাসি না থাকায় শিক্ষার্থীদের দিল্লির পর্তুগিজ এমব্যাসিতে আবেদন করতে হয়। এ জন্য সময় লাগতে পারে ৩০ দিন বা তার বেশি। ভিসা আবেদন করার আগে অবশ্যই অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে।
ভিসার জন্য প্রয়োজন পড়বে:

  •  বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার
  •  টিউশন ফি জমার প্রমাণ
  •  আর্থিক সচ্ছলতার দলিল
  •  স্বাস্থ্যবিমা (কমপক্ষে ১২০ দিন মেয়াদি)
  •  ফ্লাইট বুকিং টিকিট

গ্যাপ বেশি থাকলে ভিসা পাওয়ায় জটিলতা হতে পারে। তাই শিক্ষাজীবনে বড় বিরতি না রেখে আগেভাগেই প্রস্তুতি শুরু করা ভালো।

স্কলারশিপের সুযোগ
পর্তুগালের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নানা ধরনের স্কলারশিপ অফার করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-
১) ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ: ইউরোপীয় ইউনিয়নের আওতায় এটি ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও জনপ্রিয় একটি স্কলারশিপ। 
২) এফসিটি স্কলারশিপ:  পিএইচডি ও গবেষণার শিক্ষার্থীদের জন্য এটি ভালো একটি সুযোগ হতে পারে। 
৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্কলারশিপ:  এসব স্কলারশিপের মাধ্যমে টিউশন ফিতে ৫০%-৭৫% পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায়।

খরচ ও খণ্ডকালীন চাকরি
পর্তুগালের জীবনযাত্রার খরচ তুলনামূলক কম। মাসে মাত্র ৩৫০ থেকে ৪০০ ইউরোতেই থাকা ও খাওয়ার খরচ মেটানো সম্ভব। শিক্ষার্থী হিসেবে সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা খণ্ডকালীন চাকরি এবং ছুটিতে ফুল-টাইম কাজ করার অনুমতি থাকে। পর্তুগিজ ভাষা জানলে কাজ পাওয়া সহজ হয়, তবে টিউশন ফি চালাতে খণ্ডকালীন চাকরির টাকা যথেষ্ট নয়।

নাগরিকত্বের সম্ভাবনা
পড়াশোনার পর পর্তুগালে থেকে যাওয়ার সুযোগ আছে। দেশটিতে বৈধভাবে ৫ বছর অবস্থান, ট্যাক্স পরিশোধ ও ভাষাজ্ঞান থাকলে নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়। তাই ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে স্থায়ী বসবাসের সুযোগও আছে পর্তুগালে। 

লেখক: শিক্ষার্থী, এমএম কলেজ, যশোর

/রিয়াজ