চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কেন্দ্রীয় মসজিদের বিপরীতে ছাত্রীদের একটি মেসে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে ৪ জন ছাত্রীর প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার টাকার মালামাল চুরির অভিযোগ ওঠেছে। মূলত বাড়িওয়ালীর উদাসীনতা ও নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এমন চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ছাত্রীদের।
সোমবার (২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয় ভুক্তভোগী ছাত্রীরা।
ভুক্তভোগী ছাত্রীরা অভিযোগ করেন, গত ১ জুন সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে খায়ের মেনশনে চুরির ঘটনা ঘটে। এতে ৪ জন ছাত্রীর নগদ টাকা, সাটিফিকেট, পোশাক, প্রসাধনীসহ প্রায় আড়াই লাখ টাকা পরিমাণের বিভিন্ন মালামাল চুরি হয়। এর আগেও গত বছর জুলাইয়ের ২৪ তারিখ চুরির ঘটনা ঘটে। তবে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি বাড়িওয়ালী।
ছাত্রীরা আরও বলেন, এছাড়াও প্রায়ই বাসার বাইরে থেকে তাদের অন্তর্বাসসহ, ফোনের চার্জার, জুতা ইত্যাদি চুরি করা হলেও বাড়িওয়ালা নিরাপত্তার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেননি। এটা ছাত্রীদের মেস হলেও নেই সিসি ক্যামেরা। নিরাপত্তার কথা বলা হলে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন ওই বাড়িওয়ালী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একতলা বাড়িতে মোট ৪টা রুম এবং চিলেকোঠায় একটি রুম রয়েছে। তবে, দুইটি রুম ও চিলেকোঠার একটি রুমের মোট ৪ জন ছাত্রীর মালামালা চুরি হলেও বাকি রুমগুলোর কোনো মালামালই চুরি হয়নি।
ভুক্তভোগী একজন ছাত্রী হিসাববিজ্ঞান বিভাগের রাইসা জহির বলেন, আমি এবং আমার রুমমেট ঈদের ছুটিতে বাড়িতে গিয়েছিলাম। ১ তারিখ রাতে আমাদের রুমে চুরি হয়। খবর পেয়ে পরদিন সকালে এসে দেখি আমার সার্টিফিকেট, মোবাইল ফোন, কাপড়, প্রসাধনী জিনিসপত্র, নগদ টাকাসহ প্রায় লক্ষাধিক টাকার বিভিন্ন মালামাল চুরি হয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বাসায় ছাত্রীরা থাকলেও নিরাপত্তার জন্য কোনো গার্ড বা সিসি ক্যামেরাও নেই। প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বাড়িওয়ালী। তাকে এ বিষয়ে বলা হলে উনি বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন। যেহেতু বাড়িওয়ালার উদাসীনতায় এমন ঘটনা ঘটেছে আমরা আমাদের ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।
এর আগে বিভিন্ন সময়ে চুরির ঘটনা স্বীকার করে বাড়িওয়ালী মাহমুদা বেগম রিনা বলেন, চুরি কমানোর জন্য জানালার অতিরিক্ত গ্রিল লাগানো হয়েছে। এছাড়া সিসি ক্যামেরা লাগানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চুরির ঘটনায় শিক্ষার্থীদের উদাসীনতারও দায় দেন তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, চবি কেন্দ্রীয় মসজিদের বিপরীতে মেয়েদের মেসে চুরির ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিক তদন্তে আমরা পেয়েছি বাড়িওয়ালী ও তার পরিবারের সদস্যরা নিয়মিত বাড়িটিতে আসা যাওয়া করেন। আপাতত অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে চোর পরিচিত কেউ-যার এ বাসার সবকিছু জানা আছে। আমরা দেখেছি শুধুমাত্র ছাত্রীদের জিনিসপত্র নিয়ে গেছে, যদিও সেখানে বাড়িওয়ালার আলমিরাসহ দামী জিনিসপত্র অক্ষুণ্ণ আছে এবং চোর যাওয়ার সময় বাড়িতে তালাও লাগিয়ে দিয়ে গেছে। আমরা আশা করি বাড়িওয়ালা কর্তৃপক্ষ আমাদের সহযোগিতা করে বিষয়টির সমাধান সহজ করবেন।
মাহফুজ শুভ্র/মাহফুজ