ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) এবং দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা পদত্যাগ করেছেন।
এ ছাড়া নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক, আইকিউএসির পরিচালক, অতিরিক্ত পরিচালক এবং পাঁচ হল প্রভোস্ট পদত্যাগ করেছেন। এদিকে ঢাবি ও চবির উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো বিস্তারিত খবর:
রংপুর: ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশীদ রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ও অফিসপ্রধান মোহাম্মদ আলী।
এর আগে বৃহস্পতিবার উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছিল বেরোবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
দিনাজপুর: দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামান গতকাল পদত্যাগ করেছেন।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. সাইফুর রহমান, প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. মামনুর রশিদ ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মাহবুব হোসেন পদত্যাগ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. মামনুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নোয়াখালী: নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক, আইকিউএসির পরিচালক, অতিরিক্ত পরিচালক এবং পাঁচ হল প্রভোস্ট পদত্যাগ করেছেন।
শুক্রবার দুপুরে তারা রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। পদত্যাগের পেছনে তারা ব্যক্তিগত কারণের কথা উল্লেখ করেছেন।
সদ্য পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন নোবিপ্রবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক, ভাষাশহিদ আবদুস সালাম হলের প্রভোস্ট ড. কাউসার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক উকিল হলের প্রভোস্ট ড. রুহুল আমিন, হযরত বিবি খাদিজা হলের প্রভোস্ট ড. মো. রফিকুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. অবন্তী বড়ুয়া, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট ড. মহিনুজ্জামান, আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ ও অতিরিক্ত পরিচালক মোহাইমেনুল ইসলাম।
পদত্যাগ করা সবাই আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সরকার পতনের পর নোবিপ্রবির এই প্রথম প্রশাসনের কেউ পদত্যাগ করলেন।
ঢাবি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন ও শিক্ষা), কোষাধ্যক্ষ, সব হলের প্রাধ্যক্ষসহ সব সিনেট এবং সিন্ডিকেট সদস্যদের পদত্যাগ দাবিতে পৃথক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থী মু. মেহেদী হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ প্রশাসনের সবার সম্মতিতে আমাদের ওপর ছাত্রলীগের আক্রমণ হয়েছে, পুলিশের বর্বর হামলা হয়েছে। আমরা তাদের স্বপদে আসীন থাকতে দেব না। আমরা তাদের পদত্যাগ না করিয়ে হলে ও ক্লাস রুমে ফিরব না।’
এর কিছুক্ষণ পরই শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের এক দল শিক্ষার্থী উপাচার্যসহ হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। পরে অপর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিলিত হয়ে তারাও মিছিল করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের কাছে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রক্টর এবং ১৪ জন সহকারী প্রক্টর পদত্যাগ করেন। ১৫ জনের প্রক্টরিয়াল বডিতে ১ জন সহকারী প্রক্টর বাদে বাকিরা সবাই পদত্যাগ করেছেন।
চবি উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য, দুই উপ-উপাচার্য (একাডেমিক ও প্রশাসনিক), প্রক্টরিয়াল বডি ও হল প্রভোস্টদের পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান তারা।
লিখিত বক্তব্যে ৫ দফা দাবি জানান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলন শেষে চাকসু ভবন থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে সমাবেশ করেন। প্রশাসন পদত্যাগ না করায় বিকেলে উপাচার্যের বাংলো, উপাচার্যের কার্যালয়, দুই উপ-উপাচার্য, প্রক্টর এবং প্রভোস্টদের কার্যালয়ে তালা দেন শিক্ষার্থীরা।