ঢাকা ১ আশ্বিন ১৪৩১, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিক্ষার্থীদের আলটিমেটামের মধ্যে শাবির আরও ৩ কর্মকর্তার পদত্যাগ

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৪, ০৪:৩২ পিএম
শিক্ষার্থীদের আলটিমেটামের মধ্যে শাবির আরও ৩ কর্মকর্তার পদত্যাগ
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও তিন কর্মকর্তার পদত্যাগ

শিক্ষার্থীদের বেঁধে দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটামের মধ্যেই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের পিএসসহ তিন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। 

বুধবার (১৪ আগস্ট) রেজিস্ট্রার দপ্তরে প্রত্যেকে তাদের পদত্যাগপত্র জমা দেন। 

পদত্যাগ করেছেন- কম্পিউটার ও তথ্যকেন্দ্র এবং আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক মো. মাসুম, উপাচার্যের পিএস মো. কবির উদ্দিন এবং এপিএস মো. সাইদুর রহমান ভুইয়া।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) শিক্ষার্থীদের দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটামের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত)-সহ ৬ কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। 

গতকাল সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যারা এখনো পদত্যাগ করেননি তাদের পদত্যাগের দবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক টিম।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “গত ৭ আগস্ট আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষণা দিয়েছিলাম যে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শাবিপ্রবির ভিসি, প্রো-ভিসি, ট্রেজারার, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক, শিক্ষক সমিতি নেতারাসহ আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা ও শিক্ষার্থীদের মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলার দায় স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা এবং নিজ নিজ দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে হবে। 

কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, ইতোমধ্যে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, মেডিকেল প্রশাসক, পরিবহণ প্রশাসক, গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক, প্রক্টরিয়াল টিম ও ৬টি আবাসিক হলের হল প্রভোস্ট বডির সদস্যরা পদত্যাগ করেছেন। তবে নির্লজ্জ প্রশাসনের অনেকেই এখনো পদত্যাগ করেননি। যার মধ্যে রয়েছেন রেজিস্ট্রার ফজলুর রহমান, ভিসির পিএস কবির হোসেন ও এপিএস সাঈদুর রহমান মিঠু, প্লানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক একেএম ফেরদৌস, চিফ ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ হাবিবুর রহমান, মহাবিদ্যালয় পরিদর্শক তাজিম উদ্দিন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মুজিবুর রহমান, আইআইসিটির পরিচালক অধ্যাপক ড. এম জহিরুল ইসলাম, কম্পিউটার ও তথ্য কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মাসুম, আইএমএলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আলমগীর তৈমুর, লাইব্রেরি প্রশাসক অধ্যাপক ড. আজিজুল বাতেন।

যেসব শিক্ষকেরা ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন আমরা তাদের স্বাগত জানাচ্ছি। তবে যারা এখনো পদত্যাগ করেননি তাদের আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে। তা না হলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য করবে। এমনকি আমাদের দাবি মেনে পদত্যাগ না করে তারা জনরোষের শিকার হলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দায়ী থাকবে না।”

ইসফাক আলী/সালমান/

আবারও ‘রাজাকার’স্লোগানে উত্তাল ঢাবি

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৩ পিএম
আবারও ‘রাজাকার’স্লোগানে উত্তাল ঢাবি
দুই মাস পর জুলাইয়ে ইতিহাস বিকৃত করার প্রতিবাদে এবং শেখ হাসিনার বিচার দাবিতে ‘রাজাকার’ স্লোগানে আবারও উত্তাল ঢাবি। ছবি: খবরের কাগজ

ঠিক দুই মাস আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ঘিরে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া এক বক্তব্যের জেরে বিক্ষোভ মিছিলে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস। দুই মাস পর জুলাইয়ে ইতিহাস বিকৃত করার প্রতিবাদে এবং শেখ হাসিনার বিচার দাবিতে ‘রাজাকার’ স্লোগানে আবারও উত্তাল ঢাবি। শিক্ষার্থীদের দাবি, ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান মুছে দেওয়ার সুযোগ নেই। যারা ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করবে, তাদের শক্ত হাতে দমন করবে দেশের ছাত্র-জনতা।

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে এই হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা। এতে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের ২ মাস যেতে না যেতে ইতিহাস বিকৃতির মহোৎসব শুরু করেছে একদল অপতৎপরতাকারী। তারা সহস্রাধিক শহিদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতিচিহ্ন মুছে দিতে চায়। মুগ্ধ-আবু সাঈদের সহযোদ্ধারা এ-চক্রান্ত কখনোই বাস্তবায়ন হতে দেবে না। খুনি হাসিনা ১৫-১৬ বছর ধরে রাজাকার ট্যাগ দিয়ে গণহত্যা-গুম-খুনের স্টিম রোলার চালানোর চেষ্টা চালিয়েছে। গত ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের রাজাকারের নাতি-পুতি বলে গালি দেওয়ার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে। শিক্ষার্থীরা তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদে ‘তুমি কে, আমি কে রাজাকার-রাজাকার’ স্লোগানের যে ঢেউ তুলেছিল, সেই ঢেউ খুনি হাসিনার চক্রান্তকে তো ব্যর্থ করেছেই, সেই সঙ্গে খুনি হাসিনা সমূলে উৎখাত হয়ে ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানের সাফল্য মুছে দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে। এ ছাড়া পরিকল্পিতভাবে সচিবালয় প্রশাসন, ডিসি অফিস সব অফিসে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রিহ্যাবিলেট করার চেষ্টা চলছে। ছাত্র-জনতা জানে কারা এসব করছে।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এ বি জুবায়ের বলেন, “আমার স্পষ্ট মনে আছে, যখন ওই খুনি হাসিনা রাজাকারের নাতি-পুতি বলে, তার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা বারুদের মতো ফুঁসে উঠেছিল, নারী শিক্ষার্থীরা রাতেই হল থেকে বের হয়ে এসেছিল। সবার কণ্ঠে স্লোগান ছিল ‘তুমি কে, আমি কে রাজাকার-রাজাকার’, ‘কে বলেছে, কে বলেছে- স্বৈরাচার-স্বৈরাচার’ কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, যেই স্লোগানের মধ্য দিয়ে আমাদের আন্দোলনের মোড় ঘুরে গিয়েছে এবং অর্জিত হয়েছে বিজয়। কিন্তু এখন কিছুসংখ্যক লোক আমাদের সেই দ্রোহের স্লোগানকে পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ২৪-এর বিপ্লবের যেকোনো উপাদান, আমরা রক্ত দিয়ে হলেও রক্ষা করব।”

কেন রাতে ফের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি এমন প্রশ্নের জবাবে সমাবেশে অংশ নেওয়া মাস্টারদা সূর্য সেন হলের শিক্ষার্থী এস এম ওমর খবরের কাগজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের যে আন্দোলন ছিল, সেই আন্দোলনের সব থেকে বহুল ব্যবহৃত স্লোগান ছিল ‘রাজাকার-রাজাকার’। এখন বলা হচ্ছে এসব স্লোগান সর্বপ্রথম বিএনপি-ছাত্রদলের ছিল, আবার বলা হচ্ছে এই স্লোগান সমন্বয়কদের ছিল, আবার কেউ কেউ যারা নিজেদের সমন্বয়ক দাবি করে তারা বিকৃতভাবে প্রচার করছে। মূলত এই আন্দোলন তো কোনো দল কিংবা সমন্বয়কদের না। তবে আমরা স্বীকার করি, সবাই এখানে অংশ নিয়েছে। এখানে তো নতুন করে দলীয় পরিচয় দেওয়ার কিছু দেখছি না। ৭১-কে ঘিরে শেখ হাসিনা যেভাবে ইতিহাস বিকৃতি করার চেষ্টা করেছিল এখন তো সেই সময় না, এখন ২০২৪ সাল। আমরা তাদেরকে সাবধান করে দিতে চাই, তারা ছাত্র-জনতার যে অভ্যুত্থান সেটি যেন বিকৃত না করে।

এর আগে রাত ১০টার দিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছাতা হাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়ায় একে-একে জমায়েত হতে শুরু করেন। সেখান থেকে সূর্য সেন হল-মুহসীন হল-এ এফ রহমান হল-স্মৃতি চিরন্তন-রোকেয়া হল হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে অংশ নেন। পরে সেখান থেকে রাত ১১টার দিকে রাজু ভাস্কর্যে থেকে হলে ফেরত যান শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার-রাজাকার’, ‘কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার সরকার’, ‘বিকৃতি চলবে না, সাক্ষী আছে জনতা’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ‘জুলাইয়ের ইতিহাস, বিকৃতি চলবে না’, ‘আবু সাঈদের ইতিহাস বিকৃতি চলবে না’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

কুবিতে ৫ মাসের সেশনজটে শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১২ এএম
আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১২ এএম
কুবিতে ৫ মাসের সেশনজটে শিক্ষার্থীরা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি : খবরের কাগজ

শিক্ষক-উপাচার্য দ্বন্দ্ব, ঈদের ছুটি, কোটা বাতিলের আন্দোলন ও সাম্প্রতিক বন্যাপরিস্থিতি মিলিয়ে প্রায় ১৫৬ দিনের মতো বন্ধ ছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম। ফলে শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে চেপে বসেছে দীর্ঘ সেশনজট। এ পরিস্থিতিতে তারা চাকরির বাজারে পিছিয়ে পড়বেন বলে জানান। সেই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে রিকোভারি প্লান তৈরি করে দ্রুত সেশনজট নিরসন করার দাবিও জানান তারা।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী ফাহিমা সুলতানা রাতুয়া বলেন, ‘আমাদের  বিশ্ববিদ্যালয় গত পাঁচ মাসে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে গেছে। যদিও সব সমস্যার এখন সমাধান হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের একাডেমিক ক্ষেত্রে এটা একটা অপূরণীয় ক্ষতি। কেননা করোনা মহামারির জন্য আমাদের  পড়াশোনার যে ব্যাঘাত ঘটেছিল সেটা থেকে এখনো কাটিয়ে  উঠতে পারিনি। তারপর ভার্সিটি পাঁচ মাসের মতো অফ ছিল। এতে করে আমাদের চলতি  সেমিস্টারের পড়াশোনা একেবারে থেমে যায়। অনেক শিক্ষার্থী এই গত পাঁচ মাসে মানসিকভাবে ভেঙ্গে  পরে। আমাদের  একাডেমিক পড়াশোনা এবং কো-কারিকুলাম এক্টিভিটি থেকেও আমরা অনেকটাই দূরে সরে যাই। এখন সেশনজটের থেকে পরিত্রাণ পাওয়া আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী নূর আখের মাওলা বলেন, ‘জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময় বিশ্ববিদ্যালয় থাকাকালীন সময়। আর এখানেই টানা পাঁচ থেকে ছয় মাস নানা আন্দোলনের জন্য নষ্ট হয়েছে। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় যারা টিউশনি করে নিজের পড়ালেখা চালিয়ে যেত তারা এই কয়েকটি মাস খুব কষ্টে কাটিয়েছে। অনেকে তো শেষ সম্বল টিউশনিও হারিয়েছে। অর্ধবর্ষ পিছিয়ে থাকায় সরকারি চাকরির বয়সে একটা বড় প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কর্মকাণ্ড বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পড়াশোনার যে স্বাভবিক ধারা ছিল তা ব্যহত হয়ে পড়েছে।’

শিক্ষার্থীদের সেশনজট নিরসনে প্রশাসন আসলে কোনো উদ্যোগ নিয়েছে কি না, জানতে চাইলে উপাচার্যের পরিবর্তে কুবিতে দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. মো. জাকির ছায়াদউল্লাহ খান বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়া পরপরই বিভাগীয় প্রধান এবং ডিনদের সঙ্গে একটি মিটিং করেছি। মিটিংয়ে সকল বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে প্রায় ছয় মাসের যে সেশনজট তা পুষিয়ে নেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে। এখন পর্যন্ত মোটামুটি সকল বিভাগই তাদের পরিকল্পনা দিয়েছে। আমরা আগামী এক বছরের মধ্যে তিনটি সেমিস্টার শেষ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। শিক্ষকরাও সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন।’

যুক্তরাজ্যের গেটস কেমব্রিজ স্কলারশিপে পিএইচডি, এমএসসি করার সুযোগ

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৩৫ পিএম
যুক্তরাজ্যের গেটস কেমব্রিজ স্কলারশিপে পিএইচডি, এমএসসি করার সুযোগ

যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ বিনা ফিতে পিএইচডি, এমএসসি বা এমএলিট বা এক বছরের স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে অধ্যয়নের সুযোগ দিচ্ছে। ‘গেটস কেমব্রিজ স্কলারশিপ’ প্রোগ্রামের আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের এ স্কলারশিপ দেওয়া হবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা এ স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ তারিখ: কোর্সভেদে আবেদনের শেষ সময় ভিন্ন ভিন্ন তারিখে। কোনো কোর্সের আবেদনের শেষ তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত। আবার কোনো কোর্সের আবেদনের শেষ তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০২৫।

২০০০ সালের অক্টোবরে যুক্তরাজ্যের গেটস কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ দেওয়া শুরু হয়। এ জন্য মাইক্রোসফটের বিল গেটস ও তার স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস তাদের ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’ থেকে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়কে ২২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দেন। যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া এই অনুদান দিয়েই স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি প্রোগ্রামের আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের বৃত্তির সব খরচ বহন করা হয়।

বৃত্তির সুযোগ-সুবিধা
সম্পূর্ণ খরচ, টিউশন ফি দেওয়া হবে। সঙ্গে অতিরিক্ত ভাতাও পাওয়া যাবে।

পুরো বছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা হিসেবে ২১ হাজার পাউন্ড দেওয়া হবে। (বাংলাদেশি টাকায় ৩৩ লাখ ৩ হাজার ৩৮১ টাকা)। পিএইচডি স্কলারদের জন্য চার বছর পর্যন্ত বৃত্তি সুবিধা দেওয়া হবে।

বিভিন্ন কনফারেন্স ও কোর্সে যোগ দিতে কোর্সভেদে ৫০০ থেকে ২ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত ভাতা সুবিধা দেওয়া হবে।

পারিবারিক ভাতা বাবদ প্রথম সন্তানের জন্য ১১ হাজার ৬০৪ পাউন্ড এবং দ্বিতীয় সন্তানের জন্য ১৬ হাজার ৫৪৮ পাউন্ড ভাতা সুবিধা পাওয়া যাবে

সঙ্গীর জন্য কোনো ধরনের তহবিল দেওয়া হবে না।

পিএইচডির অংশ হিসেবে ফিল্ড ওয়ার্কের সময় খরচ পাওয়া যাবে।

মাতৃত্ব/পিতৃত্ব তহবিল পাওয়া যাবে।

অপ্রত্যাশিত সমস্যার তহবিলও পাওয়া যাবে।

যোগ্যতা

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হতে হবে।

একাডেমিক ফলাফল ভালো হতে হবে।

অসামান্য মেধাক্ষমতা থাকতে হবে।

ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে।

প্রোগ্রামটি পছন্দ করার কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।

আবেদন করার ঠিকানা
আগ্রহী শিক্ষার্থীরা https://www.gatescambridge.org এ ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

 

স্কুলটির বয়স শতবর্ষের বেশি

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:০০ পিএম
স্কুলটির বয়স শতবর্ষের বেশি

শত বছরে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে সমাজ, রাষ্ট্র- সবকিছুতেই। সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেছে পুরনো অনেক কিছু। নানান বদলের মধ্য দিয়ে কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এমনি এক শতবর্ষী স্কুল দিনাজপুরের ফুলবাড়ী গোলাম মোস্তফা (জিএম) পাইলট উচ্চবিদ্যালয়।

১৯২০ সালে ১০ একর জমিতে গোলাম মোস্তফা হাই মাদ্রাসা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল স্কুলটি। পরবর্তী সময়ে ১৯৫৮ সালে এটি জিএম উচ্চবিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। ফুলবাড়ী পৌর শহরের ঢাকা মোড়, রেলস্টেশন এলাকাসংলগ্ন স্থানে গাছ-গাছালির ছায়াঘেরা মনোরম পরিবেশে অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এর ফটক পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে সুদৃশ্য শহীদ মিনার। তার পাশে শতবর্ষ ফলক। বিদ্যালয়ের মাঝখানে রয়েছে পাড়বাঁধা একটি পুকুর। এর চারপাশে বিদ্যালয় ভবন।

পুকুরের পাশ দিয়ে সারি সারি দেবদারুগাছ দাঁড়িয়ে আছে। এসব মহিরুহের ফাঁকে শোভা ছড়াচ্ছে বাহারি ফুলগাছ। পুব পাশে শানবাঁধানো ঘাট এবং ঈদগাহ মাঠ ও মসজিদ। উত্তর পাড়ে বিদ্যালয়ের পুরনো একটি লাল রঙের ভবন কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভবনটি এখন অফিসকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ভারতের হুগলি জেলার বাসিন্দা ছিলেন সৈয়দ গোলাম মোস্তফা। পেশায় তিনি ছিলেন চিকিৎসক। সৈয়দ গোলাম মোস্তফা ১৯১৯ সালের আগে ইসলাম প্রচার ও সেবার জন্য এই অঞ্চলে আসেন। তার চার ছেলে ও দুই মেয়ে। সন্তানদের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন সৈয়দা ফাতেমা খাতুন। তার মেয়ে জোহরা তাজউদ্দীন, যিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের স্ত্রী। ফুলবাড়ী পৌর শহরের পূর্ব গৌরীপাড়ায়, এখন যেটি ঢাকা মোড় শাপলা চত্বর নামে পরিচিত, সপরিবারে বসবাস করতেন সৈয়দ গোলাম মোস্তফা। বর্তমানে সেখানে তার পরিবারের উত্তরসূরিরা বসবাস করেন। সেই সময় ফুলবাড়ীসহ আশপাশের লোকজনের সেবা দিতে গিয়ে তাদের জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করতে বাড়ির পাশে নিজ জমিতে গোলাম মোস্তাফা হাই মাদ্রাসা স্থাপন করেন।

বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক বীরেন্দ্রনাথ সরকার জানান, গত এক শতক বিদ্যালয়টি অনেক কীর্তিমান শিক্ষার্থীর জন্ম দিয়েছে। তবে ১৯৭১ সালে বিদ্যালয়টিতে পাকিস্তানি বাহিনী ক্যাম্প করে এর রেকর্ডপত্র নষ্ট করে দেয়। তাই এর অনেক ইতিহাস আজও অজানা। তিনি বলেন, শুরুতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন শরৎচন্দ্র সরকার। সাতজন প্রধান শিক্ষকের পর বর্তমানে তোজাম্মেল হোসেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি জানান, এখন বিদ্যালয়ে প্রায় ১ হাজার ছাত্রছাত্রী, ৩০ জন শিক্ষকসহ ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। নিভৃত পল্লির শতবর্ষী এ বিদ্যালয় শিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরিতে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে।

১৯৬০ সালে বিদ্যালয়ে প্রথম এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সে বছর এসএসসিতে ষষ্ঠ স্ট্যান্ড করেন দানেশ আহম্মেদ। তিনি বর্তমানে লন্ডনে বসবাস করছেন। একই সঙ্গে এসএসসিতে ওই বছর মো. আ. গফুর নামের একজন অষ্টম স্ট্যান্ড করেন।

ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আতাউর রহমান মিল্টন বলেন, মানুষ গড়ার এই বিদ্যাপীঠ সমাজে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। 

২০২০ সালে এর শতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে। বিদ্যালয়ের হাজার হাজার বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী নিয়ে জমকালো আয়োজনে দুই দিনব্যাপী শতবর্ষ উদযাপন করা হয়েছে।

কলি

দল বেঁধে ছবি তুলতে নেই বাধা

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৫৬ পিএম
আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:০৫ পিএম
দল বেঁধে ছবি তুলতে নেই বাধা
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পদ্মার পাড়ে ‘পাস্ট ফটোগ্রাফিক সোসাইটি’র সদস্যরা। ছবি: পাস্ট ফটোগ্রাফিক সোসাইটি

পশ্চিম আকাশে তখনো সূর্যের আভা পুরোপুরি স্পষ্ট হয়নি। চারদিকে শীতল হাওয়া। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) প্রধান ফটকে জড়ো হতে শুরু করেছে কিছু তরুণ। তাদের কারও হাতে ক্যামেরার ব্যাগ, কারও হাতে মোবাইল, কারও হাতে ট্রাইপড। এরা সবাই ‘পাস্ট ফটোগ্রাফিক সোসাইটি’র সদস্য, পড়েন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে। তাদের গন্তব্য পাবনার উত্তরের সীমানা ছাড়িয়ে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে, সেখানকার পদ্মার পাড়ে সকালের আবহাওয়ায় কিছু ছবি তুলবেন আর কিছু ছবি তোলা শিখবেন। প্রতি সপ্তাহেই তারা পাবনার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত জায়গায় ছবি তোলার জন্য দল বেঁধে ছুটে যান। সেখানে কেউ ছবি তোলেন আবার কেউ ছবি তোলা শেখেন।

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাস্ট ফটোগ্রাফিক সোসাইটি (পাস্ট পিএস) ২০১৬ সালে ৯ জন শিক্ষার্থীর হাত যাত্রা শুরু করে। তবে এর প্রথম কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন হয় ২০২০ সালে। বর্তমানে এর তৃতীয় কার্যনির্বাহী কমিটি চলছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৫০ শিক্ষার্থী সংগঠনটির সঙ্গে নিয়মিতভাবে করে যাচ্ছেন। তবে এদের বেশির ভাগই পড়াশোনার পাশাপাশি শখের বসে ফটোগ্রাফি শেখার জন্য সংগঠনটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।

সংগঠনটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফটোগ্রাফির জ্ঞান একেবারে শূন্য থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো বর্ষের শিক্ষার্থীরা ‘পাস্ট পিএস’-এর সঙ্গে কাজ করতে পারেন। নবীন সদস্যদের ফটোগ্রাফির কাজ শেখানোর জন্য তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি মাসে যেমন সেশনের আয়োজন করেন তেমনি বিভিন্ন সময় দেশের খ্যাতিমান ফটোগ্রাফারদের ক্যাম্পাসে এনে কর্মশালা করান। সংগঠনটির হিসাবমতে, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত তারা ছোট-বড় ১৫টি কর্মশালা করিয়েছেন। যেখানে সংগঠনের সদস্য এবং সদস্যের বাইরে সব মিলিয়ে মোট প্রশিক্ষণার্থী সংখ্যা প্রায় ৪০০ এর অধিক।

শুধু প্রশিক্ষণই নয়, বিভিন্ন সময় ফটোগ্রাফি বিষয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা এবং চিত্র প্রদর্শনীরও আয়োজন করে সংগঠনটি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ‘ইমাজিনেশন ইনসাইট ১.০’, ‘ইমাজিনেশন ইনসাইট ২.০’, ‘ইমাজিনেশন ইনসাইট ৩.০’, ‘পিক্সেল পয়েট্রি’।

বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজনের পাশাপাশি সংগঠনটির সদস্যরা অংশগ্রহণ করছেন বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ফটোগ্রাফিক প্রতিযোগিতায়। সেখান থেকে আসছে ভালো ফলাফলও। সংগঠনটির সদস্যদের দীর্ঘ অর্জনের মধ্যে ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্ব নগর ও পরিকল্পনা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় সংগঠনটির সদস্য লিসান আসিব খান প্রথম স্থান লাভ করেন, সংগঠনটির একই সদস্য ২০১৯ সালে স্কলাস্টিকা স্কুল আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করেন, ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক ফটোগ্রাফারদের ফেসবুক গ্রুপ ‘থার্ড আই প্রফেশনাল ফটোগ্রাফিক গ্রুপ’ আয়োজিত ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় ‘স্ট্রিট ক্যাটাগরি’তে সংগঠনটির সদস্য আরিয়ান হক জয়ের পুরস্কার জিতেন, ২০২২-এ রোভার স্কাউট বাংলাদেশ আয়োজিত ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় সংগঠনটির সদস্য ইমন হোসেনের প্রথম স্থান সংগঠনটির উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলোর মধ্যে অন্যতম।

সংগঠনটির বিষয়ে জানতে চাইলে এর সভাপতি বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু মানুষ তৈরির করার চেষ্টা করছি যারা ছবির মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে তুলে ধরবে। দীর্ঘ এই পথচলাতে আমাদের সদস্যদের অনেক অর্জন আছে যেগুলো আমাদের সদস্যদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বয়ে নিয়ে এনেছে। আমরা আগেও যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অর্জনের জন্য কাজ করেছি, বর্তমানেও তা করছি, ভবিষ্যতেও একই কাজ করে যাব।’

সাধারণ সম্পাদক এশহানুল হক সাকিব বলেন, ‘আমাদের সংগঠনে আসার জন্য ফটোগ্রাফির প্রতি কোনো শিক্ষার্থীর আগ্রহই যথেষ্ট। ফটোগ্রাফি শেখার জন্য অনেক দামি দামি গেজেট লাগে ব্যাপারটা তা নয়। বর্তমান সময়ে ফটোগ্রাফি শেখার জন্য একটা স্মার্টফোনই যথেষ্ট। আমরা আমাদের ক্লাব থেকে ভালো একজন ফটোগ্রাফার তৈরি করতে চেষ্টা করি যেন ভবিষ্যৎ জীবনেও ফটোগ্রাফি নিয়ে ভালো কিছু করতে পারে।’

কলি