বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ও ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ফোরাম’ নামে এক সংগঠনের ব্যানারে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম বলেন, ‘ভারতীয় বর্ডার থেকে যখন বাংলাদেশে কিছু আসে তখন সংবাদ হয় ভারতীয় কোস্ট গার্ডকে বাঁচিয়ে দিল বাংলাদেশি বর্ডার গার্ড। আর বাংলাদেশের মানুষ ভারতীয় বর্ডার পার হতে না হতেই লাশ ঝুলতে দেখা যায় কাঁটাতারের সঙ্গে। আমরা ভারতের সঙ্গে এই সম্পর্ক আর চাই না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে একজন গণহত্যাকারী কীভাবে ভারতে থাকে? এই প্রশ্নের উত্তর ভারত সরকারকে দিতে হবে। জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যে স্বৈরাচার রেজিমের পতন হয়েছে সেই রেজিমকে এতদিন বৈধতা দিয়ে আসছে ভারত সরকার। হাসিনা রেজিম থেকে আমরা মুক্ত হলেও নানা রকম ষড়যন্ত্রের শিকার আমরা। আওয়ামী রেজিম বাংলাদেশকে ভারতের কাছে বর্গা দিয়ে নিজের চেয়ারের দাম অর্জন করেছিল। এখন এ দেশের চেয়ারও স্বাধীন, এ দেশের মানুষও স্বাধীন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক মাঈন আহমেদ বলেন, ‘ভারতের মানুষের সঙ্গে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আমাদের সমস্যা রাষ্ট্রের সঙ্গে। জুলাই বিল্পবের মধ্য দিয়ে যে স্বৈরাচার রেজিমের পতন হয়েছে। সেই রেজিমকে এতদিন বৈধতা দিয়ে এসেছে ভারত সরকার। হাসিনা রেজিম থেকে আমরা মুক্ত হলেও এখনো নানা রকম ষড়যন্ত্রের শিকার আমরা।’
এ সময় তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। এতে অন্যদের মধ্যে তুহিন খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আশরেফা খাতুনসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়, মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় ‘ফেলানী থেকে স্বর্ণা, সীমান্তে খুন আর না’, ‘হিন্দু-মুসলিম ঐক্য গড়ো, সীমান্তে খুন বন্ধ কর’, ‘দিল্লি-ঢাকা জনতা, গড়ে তোলো একতা’সহ নানান স্লোগান দিতে থাকেন।
এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে স্বর্ণা দাস নামের এক কিশোরীর মৃত্যু হয়। জানা যায়, ভারতের ত্রিপুরায় বড় ভাইকে দেখতে স্বর্ণা ও তার মা রবিবার রাতে স্থানীয় দুই দালালের সহযোগিতায় লালারচক সীমান্ত দিয়ে চোরাইপথে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করেন। রাত ৯টার দিকে ভারতের কাঁটাতারের বেড়ার কাছে পৌঁছালে বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় স্বর্ণা, ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান স্বর্ণার মা।