ঢাকা ২০ আশ্বিন ১৪৩১, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪

অপ্রচলিত উদ্ভিদই পুষ্টিতে ভরপুর

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০০ পিএম
অপ্রচলিত উদ্ভিদই পুষ্টিতে ভরপুর

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাঠপর্যায়ের কৃষি নিয়ে কাজ করেন এমন গবেষকের সন্ধান করলে সবার আগে যার নাম আসবে তিনি হলেন- ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ছোলায়মান আলী ফকির। তিনি গবেষণা করেছেন শিমুল আলু, চুকুর, অড়হরসহ নানাবিধ উদ্ভিদ নিয়ে এবং মাঠপর্যায়ে সেগুলোকে ব্যবহার উপযোগীও করে তুলেছেন।শিমুল আলু বা কাসাভা, রোজেল বা চুকুর, অড়হরসহ বিভিন্ন উদ্ভিদ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করেছেন ড. ছোলায়মান। এসব উদ্ভিদ থেকে তিনি উন্নতমানের খাদ্যসামগ্রী উৎপাদন করেছেন। চিপস, চপ, কেক, পাকোড়া, পুডিংসহ নানাবিধ মুখরোচক খাদ্য এসব উদ্ভিদ থেকে তৈরি করেছেন তিনি। মূলত মাঠ কৃষির উন্নয়নের লক্ষ্যেই গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। প্রচলিত উদ্ভিদ নিয়ে অধ্যাপক ছোলায়মানের কার্যক্রম সম্পর্কে লিখেছেন বাকৃবির শিক্ষার্থী মো. আশিকুজ্জামান।

শিমুল আলু বা কাসাভা
শিমুল আলু বা কাসাভা প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে রুটি, তেলের পিঠা, হালুয়া, পাকোড়া, চিপস, চপ, কেকসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য তৈরি করেছেন অধ্যাপক ছোলায়মান। কাসাভা হলো গাছের শিকড়জাত এক ধরনের আলু। অনেকের কাছে এটা শিমুল আলু বা কাঠ আলু হিসেবেও পরিচিত। কাসাভা শর্করাজাতীয় খাবারের অন্যতম উৎস। এই কাসাভা সহজে এবং কম খরচেই চাষাবাদ করা সম্ভব। কম উর্বর আবাদি জমিতেও এর চাষাবাদ করা যায়। যার ফলস্বরূপ চাল ও আলুর ওপর নির্ভরশীলতাও অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

কাসাভা সিদ্ধ করে, পুড়িয়ে, এমনকি গোলআলুর মতো তরকারির সঙ্গে রান্না করেও খাওয়া যায়। কাসাভার আটা গমের আটার সঙ্গে মিশিয়ে রুটি, পরোটা, কেক তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। কেক, চপ, পাকোড়া, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের মতো কাসাভার চিপস তৈরি করে প্রদর্শনী করেছেন অধ্যাপক ছোলায়মান। এ ছাড়া গো-খাদ্য হিসেবেও কাসাভার ব্যবহার সম্ভব।

গবেষক আরও জানান, খাদ্যের চেয়ে শিল্পে কাসাভার ব্যবহার বেশি। বিশেষ করে বস্ত্র ও ওষুধশিল্পের জন্য কাসাভা গুরুত্বপূর্ণ। গ্লুকোজের অন্যতম উৎস এই কাসাভা। কাসাভার স্টার্চকে এক ধরনের জীবাণুর মাধ্যমে গ্লুকোজে রূপান্তর করা হয়। কাসাভাতে গ্লুটেইন নামক প্রোটিন রয়েছে, যা আঠালো হয়ে থাকে।

রোজেল বা চুকুর
একটি সম্ভাবনাময় গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ হলো রোজেল। আঞ্চলিক ভাষায় যেটি চুকাই বা চুকুর নামে পরিচিত। রোজেল পৃথিবীব্যাপী পুষ্টিগুণ, স্বাদ ও ঘ্রাণের জন্য বিখ্যাত হলেও বাংলাদেশে এর চাহিদা নেই বললেই চলে। অপরিচিত ও অপ্রচলিত এ রকম একটি উদ্ভিদের ফুলের বৃতি প্রক্রিয়াজাত করে জ্যাম, জেলি, পুডিং, চাটনি, আচার, চকলেট, চা ও জুসসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাদ্য ও পানীয় উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছেন ড. ছোলায়মান।

অধ্যাপক ছোলায়মান বলেন, মূলত রোজেলের বৃতিই প্রধান কার্যকর উপাদান। রোজেল ফুলের মাংসল বৃতি সরাসরি খাদ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। বৃতির উজ্জ্বল লাল রঙ জৈব খাবার রঙ হিসেবেও ব্যবহার করা সম্ভব। বৃতি থেকে জ্যাম, জেলি, চা, আচার, চাটনি, জুসসহ বিভিন্ন পানীয় প্রস্তুত করা সম্ভব। রোজেলের বীজ যখন পরিপক্ব হয়, তখন তা আমিষ ও চর্বিতে পরিপূর্ণ থাকে বিধায় এটা প্রক্রিয়াজাত করে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। অন্যদিকে রোজেলের পাতাও ঔষধিগুণে পরিপূর্ণ। তা ছাড়া বৃতির উজ্জ্বল রঙই প্রমাণ করে দেয়, এটা পুষ্টিগুণে ভরপুর। রোজেলের বৃতিতে থাকে অ্যান্থোসায়ানিন, ক্যারোটিনয়েডসহ গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এই বৃতি থেকে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্য খেলে ও পানীয় পান করলে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পাওয়াসহ নানা রোগ থেকে মুক্তি মিলবে।

এ ছাড়া অধ্যাপক যোগ করেন, একটি রোজেল গাছ থেকে আধা কেজি থেকে দেড় কেজি পরিপক্ব কাঁচা ফল পাওয়া যায়। একটি পরিবারের চা, জ্যাম, জুস, আচার ইত্যাদির চাহিদা মেটাতে চার থেকে পাঁচটি গাছই যথেষ্ট।

অড়হর
অড়হর নিয়েও গবেষণা করেছেন অধ্যাপক ছোলায়মান। অড়হর ডাল দেশে তেমন একটা প্রচলিত না হলেও, অড়হর গাছের বীজ প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে কাবাবসহ মুখরোচক সাতটি খাদ্য তৈরি করা সম্ভব বলে তার গবেষণালব্ধ জ্ঞানের ভিত্তিতে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, শুকনো বীজের অড়হর দিয়ে রুটি, পুরি, শিঙাড়া এবং সেদ্ধ কাঁচা বীজের পেস্ট দিয়ে হালুয়া, কাবাব তৈরি করা সম্ভব। এ ছাড়া বীজ ভাজা ও কাঁচা বীজ সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে অড়হর।

অড়হর ডালের পেস্ট আটার সঙ্গে মিশিয়ে রুটি করেছেন অধ্যাপক ছোলায়মান। এটি ভাতের বিকল্প হিসেবে চালের ওপর চাপ কমাবে বলেও জানান এই গবেষক। ভাতের চেয়ে কার্বোহাইড্রেট অনেকাংশে কম থাকায় এটা মানুষের ওজন নিয়ন্ত্রণে অধিক কার্যকর। স্বল্প খরচে ডালের চাহিদা পূরণে অড়হর গাছ ভূমিকা রাখবে। তরকারিতে মটরশুঁটির বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে এই অড়হর ডাল। এ ছাড়া অড়হর বীজ নানা ধরনের রোগবালাই থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম।

উল্লেখ্য, অধ্যাপক ছোলায়মান আলী ফকিরের শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ রয়েছে। বর্তমানে তিনি রঙিন চাল নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

 কলি

 

ঢাবিতে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার পাঁয়তারা চলছে

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩০ পিএম
পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার পাঁয়তারা চলছে
ছবি: খবরের কাগজ

আমেরিকা ও ভারতের যৌথ মদদে অস্থিতিশীল করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার পাঁয়তারা চলছে বলে দাবি তুলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখতে এবং বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষার্থে সাত দফা দাবি উত্থাপন জানান। 

সমাবেশে স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টির আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে ভারত উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সহায়তা দিচ্ছে। তা ছাড়া সম্প্রতি ভারত থেকে প্রকাশ্যে বাংলাদেশের পাহাড়কে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি আসছে। একইভাবে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে (ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল) আমেরিকার স্বার্থ রয়েছে। বাংলাদেশ যদি এখানে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন না করে মার্কিন স্বার্থের বিপরীত ব্লকে চলে যায়, তাহলে কিন্তু আমেরিকা এই অঞ্চলে সুবিধা করতে পারবে না। তাদের এই বিষয়গুলো স্মরণ রাখা উচিত।’

হিল হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট মিনহাজ ত্বকি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন ভিকটিম রুল কার্ড ব্যবহার করা হয়। আমার তিন পুরুষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাস করছি, আমাকে বলা হচ্ছে স্যাটেলার। জানি না কীভাবে স্যাটেলার বলা হয়!’

ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘৫ আগস্টের পর দেশকে বিশৃঙ্খলা করা অন্যতম পাঁয়তারা হলো, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা। পাহাড়ে শান্তি রক্ষার জন্য যদি আমাদের জীবন দিতে হয়, অবশ্যই আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত।’ 

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখতে এবং বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষার্থে বিক্ষোভ সমাবেশে উত্থাপিত সাত দফা দাবিগুলো হলো- ১. বাংলাদেশের উপজাতিদের সম্বোধনের ক্ষেত্রে আদিবাসী ও জুম্ম শব্দ ব্যবহার এবং বাংলাদেশের বাঙালিদের সম্বোধনে স্যাটেলার শব্দ ব্যবহারকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ঘোষণা করতে হবে এবং এই শব্দ ব্যবহারকারীদের কালো তালিকাভুক্ত করে শাস্তিযোগ্য আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। ২. বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সব অঞ্চলে অবশ্যই পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি-১৯০০ বাতিল করতে হবে। এ জন্য একই আইন প্রচলন ও কার্যকর করতে হবে। ৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি চাকরিতে উপজাতি কোটা বাতিল করতে হবে। ৪. ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অবশ্যই নিরপেক্ষ ও ভারসাম্যমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। ৫. পার্বত্য সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। ৬. পার্বত্য অঞ্চলে চলমান অস্থিতিশীলতা নিরসন, সন্ত্রাস দমন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনাক্যাম্প বাড়াতে হবে। এবং ৭. ১৯৯৭ সালের চুক্তি অনুযায়ী উপজাতি কর্তৃক সশস্ত্র কার্যক্রম বন্ধ না করায় সংবিধানবিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিল করতে হবে।

আরিফ জাওয়াদ/এমএ/

আওয়ামী আমলা-ব্যবসায়ীদের উৎখাতসহ ৫ দফা দাবি বিপ্লবী ছাত্র-জনতার

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০৪ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০৭ পিএম
আওয়ামী আমলা-ব্যবসায়ীদের উৎখাতসহ ৫ দফা দাবি বিপ্লবী ছাত্র-জনতার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিপ্লবী ছাত্র-জনতার মানবন্ধন। ছবি: খবরের কাগজ

আওয়ামী লীগের আমলা ও ব্যবসায়ীদের উৎখাতসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র-জনতা। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনুষ্ঠিত এক মানবন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রনি বলেন, ‘আমরা যখন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে হাসিনার পতন ঘটিয়েছি তখন কিন্তু আমরা কোন আইনের তোয়াক্কা করিনি। আজকে যারা ৫-১০ কোটি টাকার বিনিময়ে ডিসিদের নিয়োগ দিয়েছে, তাদেরকে কিন্তু ছাড় দেওয়া হবে না। গণঅভ্যুত্থানের দুই মাস পেরিয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত দ্রব্যমূল্যের ঊধ্বগতির পেছনে যেসব সিন্ডিকেট রয়েছে তারা এখনো সক্রিয় রয়েছে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন  দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখিনি। উপদেষ্টাদের বলতে চাই, যদি রাষ্ট্র যদি চালাতে ব্যর্থ হন; দায়িত্ব ছেড়ে দেন, জনগণের সঙ্গে তামাশা করবেন না। খুনি হাসিনার মতো চটকদার কথা আর শুনতে চাই না, আমরা দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে চাই।’

সহ-সমন্বয়ক বাবু খান বলেন, ‘যে আশা-আকাঙ্খা নিয়ে আমরা যে বাংলাদেশ গঠন করেছিলাম তা এখন পর্যন্ত সেই আশা-আকাঙ্খা পূরণে কোন দৃশ্যমান কাজ দেখা যায়নি। শেখ হাসিনার পতন হলেও এখনো সচিবালয়ে শেখ হাসিনার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রয়েই গিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তাদের অপসারণ করা হয়নি। যেমন ভাবে আমরা শেখ হাসিনাকে চাইনি, তার নিয়োগপ্রাপ্ত আমলাদেরও আমরা চাই না। সরকারের প্রতি দৃষ্টি আর্কষণ করছি, অবিলম্বে আওয়ামী লীগের দোসর এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপসারণ করুন।’

সচিবালয়ের অবস্থা গণভবনের মতো হবে, এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র নেতা আবু তৈয়ব হাবিলদার বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের ১৫ বছরের রক্ষক আওয়ামী সচিব ও অফিসার এখনো সচিবালয়ে রয়ে গিয়েছে। তাদের এভাবে রেখে তো বাংলাদেশ চলতে পারে না, অবিলম্বে তাদের অপসারণ করুন। সরকারকে বলতে চাই, যদি এসব আমলাদের সচিবালয় থেকে সরানো না হয় গণভবনের মতো পরিণতি হবে সচিবালয়ের।’

ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘সচিবালয়ে আনসার প্রবেশ করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা সেখানে ক্যু করতে গিয়েছিল। আমরা দুর্নীতির আখড়া গড়ে তুলতে চাই না, আর আওয়ামী পুর্নবাসন করতে চাই না। আমরা যেভাবে সচিবালয়কে রক্ষা করতে গিয়েছিলাম, ঠিক একইভাবে দালাল স্বৈরাচারের দোসর মুক্ত করতে সচিবালয়ে গড়তে ফের সচিবালয়ে যাবো।’

এসময় তিনি ৫ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো—

আমলাতন্ত্র ও ব্যবসায়ী অঙ্গন থেকে স্বৈরাচারের দোসর দুর্নীতিবাজদের উৎখাত করতে হবে এবং অনতিবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে; গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন এবং শহিদ পরিবারের সদস্যদের চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে; যেই সরকারি চাকরির জন্য কোটা সংস্কার হয়েছে সেই বাংলাদেশ কর্মকমিশন (পিএসসি) আগের অবস্থায় বহাল রয়েছে। সেই পিএসসিকে সংস্কার ও চেয়ারম্যানকে অব্যহতি দিতে হবে। পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অব্যহতি ও দুদক সংস্কার করতে হবে; দ্রব্যমূল্যের দাম কমিয়ে আনতে হবে, রাষ্ট্রপতির অপসারণ করতে হবে; সেনাবাহিনীতে সংস্কারসহ, আওয়ামী ফ্যাসিস্টের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত সেনাবাহিনীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আওয়মী ফ্যাসিস্টের যে সিন্ডিকেট রয়েছে তা ভেঙে দিয়ে দালালদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

আরিফ জাওয়াদ/এমএ/

বেরোবিতে উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদ শূন্য

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:০১ পিএম
বেরোবিতে উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদ শূন্য
ছবি : খবরের কাগজ

দীর্ঘ ৪০ দিন অভিভাবক শূন্য থাকার পর রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. শওকাত আলীকে উপাচার্য নিয়োগ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি যোগদান করেন। কিন্তু উপাচার্য নিয়োগ হলে এখনো শূন্য রয়েছে উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার প্রায় এক যুগ ধরে শূন্য পড়ে থাকা উপ-উপাচার্য পদে প্রথম উপ-উপাচার্য হিসেবে ২০২০ সালের ১০ মার্চ। নিয়োগ পান একই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা। চলতি বছরের ১০ মার্চ  তার মেয়াদ শেষ হয়। পরবর্তীতে এ পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এছাড়া গত ১৭ আগস্ট কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মজিব উদ্দিন আহমদ পদত্যাগ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ থাকলে আমার কষ্ট কম হবে। কাজ ভাগাভাগি করে নেওয়া যেত কিন্তু আমি যোগদান করেই আগে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থবিরতা কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি। আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, এখনও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ হয়নি। তারপরও আমি শিক্ষা উপদেষ্টা সঙ্গে দেখা করব। উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের ব্যাপার কথা বলব।

গাজী আজম হোসেন/এমএ/

সিলেটে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির স্থায়ী সনদ লাভ

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১৩ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫৮ পিএম
সিলেটে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির স্থায়ী সনদ লাভ
মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি

সিলেট বিভাগের একমাত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের ১৮তম হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে স্থায়ী সনদ পেয়েছে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি। 

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-১ শাখার উপসচিব ড. মো. ফরহাদ হোসেন এ বিষয়ে একটি পত্র পাঠান। 

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর ধারা ১০ মোতাবেক মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি, বটেশ্বর, সিলেট ৩১০৪-এর অনুকূলে স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার জন্য সনদপত্র নির্দেশক্রমে প্রদান করা হলো।’ 

বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ড. তৌফিক রহমান চৌধুরীর উদ্যোগে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। 

২০০৩ সালের ৩ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাময়িক সনদ নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি।

শুরুতে সিলেটের জিন্দাবাজারের একটি ভবনে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম। 

২০১৯ সালে সিলেট শহরতলির বটেশ্বর এলাকায় স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপিত হয়। 

বিগত ২১ বছরে এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে ডিগ্রি অর্জন করা গ্র্যাজুয়েটরা গুগল, অ্যামাজনসহ দেশ-বিদেশের প্রথিতযশা প্রতিষ্ঠানে সুনাম ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি অনুষদের অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্যবসায় প্রশাসন, আইন ও বিচার, ইংরেজি এবং অর্থনীতি বিভাগ রয়েছে। 

ইতোমধ্যে তিনটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে চতুর্থ সমাবর্তন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।  

স্থায়ী সনদপ্রাপ্তিতে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর রহমান চৌধুরী, ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক সরকার, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, বোর্ড অব অ্যাডভাইজর, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক, কর্মকর্তা, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবকসহ সব শুভানুধ্যায়ী, শুভাকাঙ্ক্ষীদের ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর জানায়, বাংলাদেশে ১১৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মধ্যে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি দেশের ১৮তম ও সিলেটের প্রথম এবং একমাত্র স্থায়ী সনদপ্রাপ্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।

পপি/

জাবির ১৭ সমন্বয়ক ও সহসমন্বয়কের পদত্যাগ

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৮ পিএম
জাবির ১৭ সমন্বয়ক ও সহসমন্বয়কের পদত্যাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন সমন্বয়করা। ছবি : খবরের কাগজ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সরকারি দলের মতো আচরণ ও গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিট-বিরুদ্ধ কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার কারণ দেখিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ১৩ জন সমন্বয়ক ও ৪ জন সহসমন্বয়ক পদত্যাগ করেছেন। 

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

পদত্যাগ করা সমন্বয়করা হলেন আবদুর রশিদ জিতু, রুদ্র মুহাম্মদ সফিউল্লাহ, হাসিব জামান, জাহিদুল ইসলাম ইমন, জাহিদুল ইসলাম, ফাহমিদা ফাইজা, রোকাইয়া জান্নাত ঝলক, মিশু খাতুন, রাফিদ হাসান রাজন, হাসানুর রহমান সুমন, আব্দুল হাই স্বপন, নাসিম আল তারিক ও ঐন্দ্রিলা মজুমদার। তাদের মধ্যে আব্দুর রশিদ জিতু কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের দায়িত্বও পালন করেছেন। সহসমন্বয়করা হলেন জিয়া উদ্দিন আয়ান, তানজিম আহমেদ, জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি ও সাইদুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে ৯ দফার ওপর ভিত্তি করে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্যাসিবাদের পতনের মধ্য দিয়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। তবে ৯ দফায় অন্তর্ভুক্ত দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিগুলোতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এক প্রকার নিশ্চুপ রয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের মতো ভূমিকা পালন করছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের সর্বস্তরের আন্দোলনকারীর একই ব্যানারে অন্তর্ভুক্ত করতে এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।’ 

জিতু আরও বলেন, ‘জাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কতিপয় সমন্বয়কের জাবিকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরতে অক্ষমতা, সহযোদ্ধাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ এবং গত ১৮ সেপ্টেম্বর সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সন্ত্রাসী শামীম মোল্লার গণধোলাইয়ের পর পুলিশের হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে একাধিক সমন্বয়কের নাম উঠে আসে। এ ঘটনায় এই ব্যানার কোনো ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে আসতে না পারায় আমরা সমন্বয়ক পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করছি।’

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আরিফ সোহেল বলেন, ‘সমন্বয়কদের পদত্যাগের বিষয়ে আমরা কিছু জানি না, যারা পদত্যাগ করেছেন এটা তাদের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়।’