সরকার পরিবর্তনের প্রায় দেড় মাস পরেও স্থবির কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম। চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে উপাচার্য-শিক্ষক সমিতির দ্বন্দ্ব এবং এরপর শিক্ষকদের পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে সব মিলিয়ে প্রায় ৬ মাস ধরেই বন্ধ আছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
সরকার পরিবর্তনের পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান, হল প্রভোস্ট এবং প্রক্টর পদত্যাগ করেন। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক-প্রশাসনিক এবং শৃঙ্খলার কাজে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের আগ পর্যন্ত চলমান গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রমসহ সব প্রশাসনিক এবং আর্থিক দায়িত্ব পালন করার দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাকির ছায়াদউল্লাহ খান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মুজিবুর রহমান মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এই বিষয় রেজিস্ট্রার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে চলমান সব কাজ তিনি দেখবেন। চলমান গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা, বেতন-ভাতা, সরকারি গবেষণার অগ্রগতি, সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট স্বাক্ষরসহ যাবতীয় কাজ ড. মো. জাকির ছায়াদউল্লাহ খান করতে পারবেন।’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের পদে থাকা অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামানের মেয়াদ শেষ হয় চলতি বছরের ৪ জুলাই। এরপর থেকে শূন্যই আছে পদটি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক বিভিন্ন কাজেও ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে বলে জানা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক দায়িত্বে ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির। তিনিও ৫ আগস্টের পর থেকে ১৪ দিন অফিসে আসেননি। এতে মোট ১৩টি পরীক্ষার ফল জমে যায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে। তবে পদত্যাগের আগে সেগুলোতে স্বাক্ষর করে যাওয়ার পর আরও চারটি বিভাগের পরীক্ষার ফল জমা হয়েছে দপ্তরে। এ মুহূর্তে ফলগুলো চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার কেউই নেই। এ ছাড়া প্রশ্ন মডারেশন, গেস্ট টিচার নিয়োগসহ বিভিন্ন সমস্যায় পড়েছে দপ্তরটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের (বর্তমান বিজয় ২৪ হল) আবাসিক শিক্ষার্থী ওবাদুল্লাহ হক বলেন, ‘দেশের এমন পরিস্থিতিতে হলে কোনো প্রশাসন না থাকলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য কে দায়ী থাকবে? আমরা হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা ওই সময় কার কাছে সমাধানের জন্য যাব? ক্যাম্পাসে প্রক্টরিয়াল বডি নেই। নেই ভিসি কিংবা প্রো-ভিসি। এর মধ্যে আবার আমাদের হলের প্রভোস্টও নেই। আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?’
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নুরুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘উপ-উপাচার্য অফিসে না এসেও কয়েকটি ফলে স্বাক্ষর করে পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু এরপরেও বিভিন্ন বিভাগের ৪টি পরীক্ষার ফল স্বাক্ষরের জন্য আটকে আছে। তবে প্রশাসন না থাকায় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি আবাসিক হলের মধ্যে তিনটি হলের প্রভোস্টপদ শূন্য।