ঢাকা ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

ইবিতে পরীক্ষা দিতে এসে তোপের মুখে ২ ছাত্রলীগ নেতা

প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩৩ পিএম
ইবিতে পরীক্ষা দিতে এসে তোপের মুখে ২ ছাত্রলীগ নেতা
ছবি: সংগৃহীত

সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিতে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতা। বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের জনরোষ থেকে উদ্ধার করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সমন্বয়করা। 

বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে রবীন্দ্র নজরুল কলা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকেন। অবস্থা বেগতিক দেখে শিক্ষকরা পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহনে তুলে তাদেরকে বাহিরে বের করেন। এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন এবং তাদের মারধরের চেষ্টা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা ও সমন্বয়করা তাদেরকে এ জনরোষ থেকে উদ্ধার করেন।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাদের স্থায়ী বহিষ্কার ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। পরে তাদেরকে ইবি থানায় সোর্পদ করা হয়। শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতা উভয়ই আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহিনুর পাশা ও আল আমিন। পাশা ছাত্রলীগের দূর্যোগ ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ও আল আমিন নাট্য ও বির্তক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ জুলাই আন্দোলননকে দমাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হুমকি প্রদান করেন এ দুই নেতা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, আমি আজকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছি। এরমধ্যে এ ঘটনা শুনে সেখানে গিয়েছিলাম। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করাসহ পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি। এতে আমি একটু আঘাতপ্রাপ্তও হয়েছি। ওই দুই ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা তাদেরকে আমাদের নিকট সোপর্দ করেছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিব।

শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন আবু সাঈদ

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:১৯ পিএম
শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন আবু সাঈদ
নিহত আবু সাঈদ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।  

সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

আবু সাঈদের সঙ্গে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলা বিভাগের শামসুর রহমান সুমন বলেন, ‘১১ জুলাই ক্যাম্পাসে মিছিল করার পর ১২ জুলাই ছিল আবু সাঈদ ভাইয়ের নিবন্ধন লিখিত পরীক্ষা। আমরা ওই দিন সকালে মিটিং করব, তো আবু সাঈদ ভাই বলছিলেন আমার জীবনের প্রথম পরীক্ষা এটা। পরীক্ষা দেব কি-না? কিছুই পড়িনি আন্দোলনের কারণে। বললাম, ভাই পরীক্ষা দিয়ে আসেন। আমরা বিকেলে মিটিং করব। তো আগের দিন ১১ জুলাই ছাত্রলীগের চড়-থাপ্পড় ও মার খাওয়ার স্ট্রেস নিয়ে ১২ জুলাই পরীক্ষা দিতে যান সাঈদ ভাই। আজ ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু আবু সাঈদ ভাই নাই। আমরা শুধু বীর সাঈদ ভাইকেই হারাইনি, হারিয়েছি মেধাবী শিক্ষার্থীকে।’

ইংরেজি বিভাগের সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘আবু সাঈদ পড়াশোনায় মনোযোগী ছিল। ওর টার্গেট ছিল জীবনে ভালো কিছু করার। কিন্তু অধিকার আদায় করতে গিয়ে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। আজ বেঁচে থাকলে হয়তো বা ভালো কিছু করত।’ 

এনটিআরসিএ সূত্রে জানা গেছে, এনটিআরসিএর ব্যবস্থাপনায় ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা ২০২৩-এর স্কুল (নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান/দাখিল ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের মাদরাসা) ও স্কুল-২ (মাধ্যমিক কারিগরি ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, উচ্চ মাধ্যমিক কারিগরি ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট এবং কারিগরি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট) পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষা ১২ জুলাই এবং কলেজ (কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিকোত্তর/উচ্চ মাধ্যমিক কারিগরি/ভোকেশনাল/ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান/ইনস্টিটিউট এবং আলিম ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের মাদরাসা) পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষা ১৩ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৮০ জন। এর মধ্যে স্কুল ও সমপর্যায়ের ৫৫ হাজার ৮৯০ জন, স্কুল-২ পর্যায়ের ৫ হাজার ৩২৩ জন এবং কলেজ ও সমপর্যায়ের ২২ হাজার ৬৫২ জনসহ সর্বমোট ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। 

গাজী আজম/সালমান/

ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প বন্যা পুনর্বাসনেও অগ্রণী বাকৃবি

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫০ পিএম
আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০১:০৪ পিএম
ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প বন্যা পুনর্বাসনেও অগ্রণী বাকৃবি
ছবি: সংগৃহীত

সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ছোট্ট গ্রাম বাকশীমূল। বর্ষায় বন্যায় ভেসে যাওয়া বাড়িঘর, ক্ষতিগ্রস্ত খামার এবং ভাঙা স্বপ্ন নিয়ে এখানে চলছে বেঁচে থাকার সংগ্রাম। কৃষকরা একে অন্যকে বলছেন, ‘কীভাবে আবার শুরু করা যায়?’ তাদের সেই নতুন শুরুর গল্পে আশার আলো হয়ে এসেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পিএইচডি শিক্ষার্থীদের একটি দল।

ঠিক একই সময় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার কৃষকরাও ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় বিভোর। তাদের এই ঘুরে দাঁড়ানোর সংগ্রামে শামিল হয়েছেন ‘অ্যাগ্রি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ’ সংগঠনের বাকৃবির শিক্ষার্থীরা। বীজধানের প্রত্যাশায় সারা দিন অপেক্ষা করাও যেন হার মেনে যায় শেষ বেলার হাসিতে।

বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া, ভেঙে যাওয়া স্বপ্ন পুনর্গঠনের এই মহাযজ্ঞে বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে বাকৃবি শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসেছেন কৃষকের মাঠে, হাতে তুলে নিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের ঘুরে দাঁড়ানোর হাতিয়ার- ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল, উন্নত ঘাসের বীজ, সার, কীটনাশক ও পশু চিকিৎসাসেবা। শুধু ত্রাণ নয়, তারা তৈরি করেছেন এক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, যেন কৃষকরা এই ক্ষতি কাটিয়ে নিজ পায়ে দাঁড়াতে পারেন। তাইতো তারা একেকটি দল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছেন দেশের একেকটি জেলায়। ছড়িয়ে দিয়েছেন মানবতা।

বীজধানে নতুন স্বপ্নের বুনন
‘আজ গ্রামে আসছেন বাকৃবির শিক্ষার্থীরা।’ ঠিক এই কথাটা শোনার পর মুহূর্তেই সারা গ্রামে ছড়িয়ে যায়। কুমিল্লা থেকে নোয়াখালী, ফেনী থেকে লক্ষ্মীপুর, যেখানেই গেছেন বাকৃবি শিক্ষার্থীরা, সকাল থেকেই শুরু হয়ছে অন্যরকম প্রাণচাঞ্চল্য। উদ্দেশ্য কৃষকদের মাঝে বীজ বিতরণ করে নতুন স্বপ্নের বীজ বপন করা। কয়েক ধাপে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ২০০, কুমিল্লার দেবিদ্বারে ৫০ এবং ফেনীর সোনাগাজীতে ৫০, লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ৪০, রায়পুরে ৪০ এবং রামগঞ্জে ২০ কৃষককে ২০ শতাংশ জমির জন্য বিনা ধান-১৭ বীজধানের চারা, সার ও কীটনাশক দেওয়া হয় অ্যাগ্রি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। আর বুড়িচংয়ের বাকশীমূল গ্রামে বাকৃবির পিএইচডি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের ক্যাম্পেইনে ২০০ খামারিকে উন্নত অস্ট্রেলিয়ান সুইট জাম্বু হাইব্রিড ঘাসের বীজ এবং পাকচুং ঘাসের কাটিং সরবরাহ করা হয়। তাদের প্রতিশ্রুতি এই ঘাস একবার রোপণ করলে তা ৪ থেকে ৫ বছর উৎপাদন দেবে। এমনকি ৩ বিঘা জমিতে একটি প্যাকেটের বীজ দিয়েই চারা উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

গবাদিপশুর জন্য স্বাস্থ্যসেবা
কুমিল্লায় পিএইচডি শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পেইনে ২০০ গরুকে লাম্পি স্কিন রোগের টিকা দেওয়া হয়েছে। অভিজ্ঞ পশু চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গরু ও ছাগলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ওষুধ সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শও দেওয়া হয়। বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের অন্য আরেকটি ক্যাম্প পরিচালিত হয় শেরপুরে। এ সময় ৩০০ খামারির পশুদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ বিতরণ করা হয়। ক্যাম্পে প্রায় ১০০টি গরুকে তড়কা ও বাদলা রোগের ভ্যাকসিন এবং ৫০টি ছাগলকে পিপিআর ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। তাদের এই উদ্যোগ যেন আশ্রয়হীন খামারিদের মনে নতুন আশার সঞ্চার করে।

ছাগল ও মুরগি, নতুন জীবনের হাতিয়ার
শেরপুরে বন্যা-পরবর্তী পুনর্বাসনের জন্য ৭২ অসহায় নারীকে বিনামূল্যে অধিক ডিম ও মাংস উৎপাদনশীল ফাওমি, রড আইল্যান্ড রেড জাতের মুরগি দেওয়া হয়। প্রতিজনকে ৪টি করে মুরগি এবং ১টি করে মোরগসহ মোট ৩৬০টি মোরগ-মুরগি বিতরণ করা হয়। এদিকে পিএইডি শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির আরেকটি বিশেষ দিক ছিল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১১ দরিদ্র পরিবারের মাঝে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল বিতরণ। এর মধ্য দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো আবার নতুন করে নিজেদের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করতে পারবে। এ সময় গিয়াস উদ্দিন নামে এক কৃষক এই ছাগল পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘ছাগল পাইয়া আমি অনেক খুশি। স্যারদের আল্লাহ ভালো করুক। উনারা আমাদের জন্য একটা সিঁড়ি তৈরি করে দিয়ে গেলেন, যাতে এই ছাগল পালার মাধ্যমে আমরা ওই সিঁড়ি বাইয়া উঠবার পারি।’

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ও সচেতনতা
বিশেষায়িত এসব ক্যাম্পেইনের বিশেষজ্ঞরা শুধু সেবা দিয়েই থেমে থাকেননি। তারা কৃষকদের শিখিয়েছেন মাছ চাষ, পশুপালন এবং উন্নত ঘাস চাষের কৌশল। প্রতিটি কৃষক হাতে পেয়েছেন প্রশিক্ষণ ও সচেতনতামূলক লিফলেট, যা ভবিষ্যতে তাদের খামারের উন্নয়নে সহায়তা করবে। প্রতিটি টিম যখন যেখানেই গেছেন তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, স্থানীয় উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা, ভেটেরিনারি সার্জনসহ অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞরা পাশে থেকে সমর্থন ও পরামর্শ দিয়ে প্রতিটি খামারির মনে সাহস জোগান।

এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা
এই কর্মসূচির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যে শুধু ত্রাণ পেয়েছেন, তা নয়; তারা পেয়েছেন নতুন করে বেঁচে থাকার সাহস, একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। সত্যিই, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছেন, ত্রাণ শুধু সাময়িক নয়, সঠিক পরিকল্পনা ও উদ্যোগের মাধ্যমে তা হয়ে উঠতে পারে স্বপ্ন বুননের সিঁড়ি।

 কলি

 

অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটিতে স্কলারশিপ

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৫৪ পিএম
আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৫৫ পিএম
অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটিতে স্কলারশিপ
চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটি। ছবি: সংগৃহীত

আটটি ক্যাম্পাসে ২১ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে অস্ট্রেলিয়ার সরকারি গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটিতে। নর্দার্ন টেরিটরি ইউনিভার্সিটি (সেন্ট্রালিয়ান কলেজ অব এলিস স্প্রিংস, ক্যাথরিন রুরাল কলেজ ও দ্য ইউনিভার্সিটি কলেজ অব এনটি-সহ) এবং মেনজিয়েস স্কুল অব হেলথ রিসার্চ-এর সঙ্গে এটি অঙ্গীভূত হয় ২০০৩ সালে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নেওয়ার আগে ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ডারউইন কমিউনিটি কলেজ হিসেবে। তার পর ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সেন্ট্রালিয়ান কলেজ অব এলিস স্প্রিংস এবং ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ডারউইন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি।

চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করে ১৯৮৯ সালে।এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের জন্য উচ্চশিক্ষার্থীরা যেসব বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারেন সেগুলোর মধ্যে আছে ভাইস-চ্যান্সেলরস ইন্টারন্যাশনাল হাই অ্যাচিভার্স স্কলারশিপ, সিডিইউ গ্লোবাল মেরিট স্কলারশিপ, সিডিইউ ব্যাচেলর অব নার্সিং স্কলারশিপ, সিডিইউ ইন্টারন্যাশনাল কলেজ পাথওয়ে স্কলারশিপ, এলিকস স্কলারশিপ এবং ডিলি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল স্কলারশিপ।

ভাইস-চ্যান্সেলরস ইন্টারন্যাশনাল হাই অ্যাচিভার্স স্কলারশিপে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অথবা পোস্টগ্র্যাজুয়েট কোর্সে পূর্ণ মেয়াদের জন্য টিউশন ফি-এর শতকরা ৫০ ভাগ বৃত্তি দেওয়া হয়। তবে এই বৃত্তির বদলে নগদ অর্থ দেওয়া হয় না কিংবা বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর পরিবর্তে অন্য শিক্ষার্থীকেও এই বৃত্তি হস্তান্তর করা যাবে না। তাছাড়া বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী যে সেমিস্টার, বছর বা কোর্সের জন্য বৃত্তি পেয়েছেন সেগুলোও পরিবর্তন করতে পারবেন না।

সিডিইউ গ্লোবাল মেরিট স্কলারশিপে নির্দিষ্ট কোর্সের জন্য শতকরা ৩০ ভাগ বৃত্তি দেওয়া হয়। এজন্য শিক্ষার্থীকে কোনো আবেদন করতে হয় না। কোনো কোর্সে ভর্তির জন্য আবেদনকারী প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বৃত্তির জন্য যাচাই করে দেখা হয়। সিডিইউ ব্যাচেলর অব নার্সিং স্কলারশিপ পেতেও কোনো আবেদন করতে হয় না। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর অব নার্সিং কোর্সে ভর্তি হলেই যোগ্য শিক্ষার্থীদের শতকরা ২০ ভাগ বৃত্তি দেওয়া হয়। সিডিইউ ইন্টারন্যাশনাল কলেজ পাথওয়ে স্কলারশিপ পাওয়ার জন্যও কোনো আবেদন করতে হয় না। যারা ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন স্টাডিজ প্রোগ্রাম, ডিপ্লোমা অব বিজনেস স্টাডিজ, ডিপ্লোমা অব ইনফরমেশন টেকনোলজি এবং এক্সেলারেটেড ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার্স কোয়ালিফাইং প্রোগ্রামে ভর্তি হবেন তাদের মধ্য থেকে যোগ্য শিক্ষার্থী বাছাই করে টিউশন ফি-এর শতকরা ২০ ভাগ বৃত্তি দেওয়া হয়।

এলিকস স্কলারশিপ পেতেও কোনো আবেদন করতে হয় না, কারণ কোনো কোর্সে ভর্তির জন্য আবেদনকারী প্রত্যেক শিক্ষার্থীকেই এই বৃত্তির জন্য যাচাই করে দেখা হয়। এই বৃত্তির অধীনে যোগ্য শিক্ষার্থীদের শতকরা ২০ ভাগ বৃত্তি দেওয়া হয়।

তিন বছর মেয়াদি ব্যাচেলর ডিগ্রির জন্য পাঁচজন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয় ডিলি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল স্কলারশিপ। এই বৃত্তিপ্রাপ্ত একজন শিক্ষার্থী প্রতি বছর ৯ হাজার মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ ব্যয় করার পর তার টিউশন ফি এবং অন- ক্যাম্পাস আবাসনের বাকি অর্থ চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ বহন করবে।

চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটির বৃত্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন

কলি

মানুষের জন্য কাজ করেন অর্ণব

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২০ পিএম
আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪৫ পিএম
মানুষের জন্য কাজ করেন অর্ণব
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জুনায়েদ আরাফাত অর্ণব। তিনি গড়ে তুলেছেন ইউনিটি ফর হিউম্যানিটি নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

যেভাবে শুরু
সময় তখন ২০১৭ সাল। সবে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন অর্ণব। ঘুরে বেরিয়েই কাটছিল সময়। সেই অবসর কাজে লাগাতে বন্ধুরা মিলে ঠিক করলেন, কিছু স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্সে ভর্তি হবেন। পাশাপাশি বিকেলে পার্কের আড্ডা তো রমরমিয়ে চলছেই। এক দিন তেমনই আড্ডা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ভিক্ষা করতে দেখলেন কিছু ছিন্নমূল শিশুকে। তাদের গায়ে না আছে জামা, না আছে পেটে খাবার। ঠিক এ জায়গা থেকেই অর্ণবের মাথায় ভাবনার উদয়। এক এক করে সেই কথা বন্ধুদের জানালেন। শুনে রাজিও হলেন সবাই। এভাবেই ২০১৭ সালের ১৭ জুন ইউনিটি ফর হিউম্যানিটির জন্ম।

শুরুতেই খটকা
সংগঠনের প্রথম মিটিংয়ে ছিলেন ৬০ থেকে ৭০ জন। তবে দ্রুতই সে সংখ্যাটা নেমে আসে ২০ জনে। লড়াইটা তাই বেশ কঠিন হয়ে যায়। অর্ণবের মনে খটকা লাগল কিছুটা। তত দিনে কলেজে ভর্তি হয়েছেন তিনি। অবসরও শেষ। খটকা মেটাতে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলেন শিক্ষকদের সঙ্গে। অর্ণবের কথা শুনে কয়েকজন শিক্ষক রাজি। এবার বেশ অভয় পেলেন অর্ণব। মানে, ঠিক পথেই হাঁটছেন। তবে দেরি কেন! শুরু হলো অসহায় শিশুদের কল্যাণে পথচলা।

সংগঠনের বেড়ে ওঠা
কলেজে পড়াকালে টিফিনের টাকা জমিয়ে অর্ণব ও তার বন্ধুদের অদম্য ইচ্ছায় ধীরগতিতে কাজ চলছিল। আবারও বুদ্ধি নিতে ছুটলেন শিক্ষকদের কাছে। তাদের পরামর্শে কাজে গতি আনার চেষ্টা হলো। আগের চেয়ে অনেক বেশি সচল হয়ে উঠল ইউনিটি ফর হিউম্যানিটির কার্যক্রম।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর আরও বড় পরিসরে কাজের সুযোগ মেলে অর্ণবের। শিশুদের কল্যাণে আর থেমে রইল না সংগঠন। জাতীয় দিবসগুলোয় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের খাবার ও পোশাক বিতরণ, পিছিয়ে থাকা এলাকার স্কুলশিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ, শিশুদের জন্য ছবি আঁকা, কুইজ, গান, আবৃত্তির মতো সৃজনশীল প্রতিযোগিতার আয়োজন চলছিল। পাশাপাশি চলছিল এতিম ও প্রতিবন্ধীদের সেবা, শীতবস্ত্র বিতরণ, ধর্মীয় ও জাতীয় দিবসে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, রক্তদান এবং দরিদ্রদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়ার মতো মানবিক কার্যক্রম। অন্যদিকে ছিল পেশাজীবীদের সম্মাননা প্রদান, সামাজিক অবক্ষয় ও কুপ্রথার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে নাটক তৈরি ও প্রদর্শনী, গুণিজনের উপস্থিতিতে অফলাইন ও অনলাইনে সেমিনার আয়োজন।

সেই ধারাবাহিকতায় সংগঠনটি গত ছয় বছরে সহায়তা দিয়েছে প্রায় ৭ হাজার মানুষকে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, রংপুর, সিলেট, বরিশাল, কিশোরগঞ্জ মিলিয়ে মোট ১৭টি জেলায় নিয়মিত কাজ করে ইউনিটি ফর হিউম্যানিটি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যক্রম বেশ সচল। সেসব কাজ সচল রাখছেন প্রায় দেড় হাজার নিয়মিত সদস্য ও ভলান্টিয়ার।

প্রজেক্ট স্বনির্ভর
মানুষকে স্বাবলম্বী করে তোলা এ প্রজেক্টের মূল কাজ। ২০২০ সালে পথচলা শুরু করে বিশেষ প্রকল্পটি। খেটে খাওয়া মানুষের জন্য ভ্যানগাড়ি ও দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারকে গাভি কিনে দেওয়া। ঘরহীন মানুষের বাড়ি তৈরির জন্য টিন, প্রয়োজনে কাউকে সাইকেল কিনে দেওয়ার মাধ্যমে জীবিকার লড়াইয়ে টিকে থাকতে সহায়তা করা এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা
বিভিন্ন মানবিক কাজের পাশাপাশি সংগঠনটি পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতেও কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের শুরুতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন ক্যাম্পাস’ শিরোনামে একটি সেমিনার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে সংগঠনটি। ২০১৯ সালে সংগঠনের পক্ষ থেকে রোপণ করা হয়েছে প্রায় ৫০০ গাছ।

বাবার উৎসাহ
অর্ণবের বাবা ওমর ফারুক একজন ব্যবসায়ী। মানুষের কল্যাণমূলক কাজে উৎসাহ তিনিই জুগিয়েছেন। অর্ণব জানিয়েছেন, শিক্ষকদের বাইরে বাবার জন্যই তিনি মূলত সাহস পেয়েছেন এসব কাজ করার। শুরুর দিকে সব ইভেন্টে ছেলের পাশে থেকে তিনি উৎসাহ জোগাতেন। কেবল অর্ণবের বাবাই নন, পাশে ছিলেন বাকি বন্ধুদের বাবা-মায়েরা ও পরিবার।

আগামীর দিনগুলো
মানবিকতা ছড়ানোর কাজে থেমে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেই বিশ্বাস ইউনিটি ফর হিউম্যানিটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা অর্ণবের। হাঁটি হাঁটি পা পা করে চলতে শুরু করা ছোট্ট সংগঠন আজ বেশ পরিণত ও সমৃদ্ধ। সাময়িক কিছু ব্য

 কলি

পূজার ছুটিতে শিক্ষার্থীরা কীভাবে সময় কাটাবেন?

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩৮ পিএম
আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩৯ পিএম
পূজার ছুটিতে শিক্ষার্থীরা কীভাবে সময় কাটাবেন?
ছবি: সংগৃহীত

আবারও সপ্তাহখানেকের লম্বা ছুটি পেয়েছেন দেশের স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। সঙ্গে শুক্র-শনির সাপ্তাহিক ছুটি যোগ হওয়ায় ছুটির দিনের সংখ্যা আরও বেড়েছে। মূলত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সঙ্গে ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহাম ও লক্ষ্মীপূজার বন্ধ যোগ হওয়ার ফলস্বরূপই এমন লম্বা ছুটি।

যদিও গত ঈদুল আজহার পর থেকেই দেশে উদ্ভূত বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খুব একটা ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাননি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিছুদিন পর শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষায় ফেরেন। তবে দুর্গাপূজার কল্যাণে খুব বেশি দিন না যেতেই আবারও ছুটিতে গেলেন শিক্ষার্থীরা।

শারদীয় দুর্গোৎসব বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের কাছে এই উৎসবের মাহাত্ম্যও অসীম। এ সময় তাদের নানা রকম পরিকল্পনা থাকে। আবার যারা ভিন্ন ধর্মাবলম্বী তাদেরও বিশ্রামের ফুরসত মেলে। ক্যাম্পাসের ক্লাস-পরীক্ষা থেকে বিরতির এই সময় কে কীভাবে পার করবেন?

এমন প্রশ্নে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের শিক্ষার্থী প্রান্ত সাহা বলেন, ‘বরাবরের মতো প্রতি বছরই এই সময়ের জন্য অপেক্ষায় থাকি। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে থাকে অনেক পরিকল্পনা। বিশেষ করে সপ্তমীতে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া, প্রতিমা দর্শন আর নৈশভোজ। অষ্টমীতে সবাই একসঙ্গে পাঞ্জাবি পরে মা দুর্গার প্রতি বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা প্রকাশে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, রাতে সবাই মিলে বিভিন্ন পূজা প্যান্ডেলে মায়ের দর্শনে বের হওয়া। নবমীতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আশপাশের জেলায় প্রতিমা দর্শন করব। আর দশমীতে সাধারণত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করার পর রাতে মায়ের বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার সব আনন্দের অবসান হয়। এবারও আমার এমনটাই পরিকল্পনা। তবে গত কয়েকদিনে দেশের বেশকিছু মণ্ডপে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় আমি বেশ উদ্বিগ্ন। আশা করি প্রশাসন এবারের দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

ছুটিতে সময় কাটানো নিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রত্যুষ চক্রবর্তী বলেন, ‘বাংলার মাটি ও মানুষের সঙ্গে মিশে থাকা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান বাৎসরিক ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা বাঙালির বিবিধ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের প্রতীক। এবারও বাড়ি গিয়েই পূজা উদযাপন করব। পরিবার, আত্মীয়স্বজনসহ প্রিয় সব মানুষের জন্য নতুন জামাকাপড় ও পছন্দসই উপহার কিনতে ব্যস্ত সময় কাটবে।
পূজায় বন্ধুদের নিয়ে গ্রামের অন্য সব পূজামণ্ডপে পূজা দেখেই কাটানোর প্ল্যান। অষ্টমীর সকালে বাড়ির সবাইকে নিয়ে পূজামণ্ডপে গিয়ে মঙ্গলমন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে অঞ্জলী দেব। সবার বাড়িতে যাব আড্ডা দিয়ে ও ভালো-মন্দ খাওয়া-দাওয়ার মধ্য দিয়ে আশা করি প্রতিবারের মতো এবারও ভালো সময় কাটবে। কিন্তু দশমীর সন্ধ্যাটা কাটবে আবেগপ্রবণ হয়ে। উন্মুক্ত জলাশয়ে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। আবার পুরো একটা বছর অপেক্ষায় থাকতে হবে এই দিনগুলোর। একরাশ সুখস্মৃতি নিয়ে আবারও ফিরতে হবে চিরচেনা ব্যস্ততায়।’

নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী দেবব্রত সরকারের ভাবনাটা বাকিদের থেকে আলাদা। তিনি বলেন, ‘শ্রী শ্রী দুর্গাপূজা আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় পূজা। অশুভ শক্তির অবসান ঘটিয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে মা আমাদের মাঝে আসেন। ষষ্ঠী থেকে দশমী আমরা মায়ের আরাধনাতে মেতে থাকি। তবে এবারের দুর্গা পূজাটা আমাদের জন্য একটু ভিন্ন। আমরা ছাত্রসমাজ অতন্দ্র প্রহরীর মতো জেগে আছি, যাতে আমরা সুষ্ঠুভাবে আমাদের পূজা সম্পাদনা করতে পারি। দুর্গাপূজার এই আনন্দঘন মুহূর্তকে নষ্ট করার জন্য যে কুচক্রী মহল কাজ করছে, তাদের দমন করার জন্য আমরা ছাত্রসমাজ সদা প্রস্তুত। এ ছাড়া সনাতনী ভাইদের মধ্যে যেন কোনো প্রকার ভয়ভীতি না কাজ করে তার জন্যও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সর্বোপরি, মায়ের কাছে আমাদের একটাই প্রার্থনা, যেন আমরা সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ সুখে শান্তিতে একসঙ্গে বসবাস করতে পারি। সব অশুভ শক্তির যেন পরাজয় ঘটে মায়ের আগমনের সঙ্গে।’

নিজের পরিকল্পনা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ নাঈমের কথা, ‘কিছুদিন হলো ক্যাম্পাস খুলেছে এবং সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় মাস্টার্সের রোলার কোস্টার রাইড। এমতাবস্থায় ব্যস্ততার মাঝে ৮ থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গাপূজার ছুটি যেন কাঠফাটা রোদে ঝুমবৃষ্টির মতো উৎফুল্ল ব্যাঞ্জক হয়ে এসেছে। খুব আড়ম্বরপূর্ণ কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও এ ছুটি কেবল আমার পরিবার, ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও একান্ত প্রিয়জনের সঙ্গে কাটাব বলে স্থির করেছি। কিশোরগঞ্জের হাওরের পানিতে নৌকো ভাসিয়ে ১৭ অক্টোবর আশ্বিনি পূর্ণিমা উপভোগ করেই তবে ক্যাম্পাসে ফিরব।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ওয়াজিবুল রনি বলেন, ‘যখন এই পূজার ছুটিটি পেতে যাচ্ছি তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। চাকরির পরীক্ষা, বিভিন্ন পেন্ডিং জব এক্সামের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি আমার মাস্টার্স ফাইনাল এক্সামের জন্য ব্যাপক পড়াশোনার এমন মুহূর্তে দুর্গাপূজার এই ছুটি আমার জন্য বড় এক স্বস্তির কারণ। যেন নিঃশ্বাস নেওয়ার ফুরসত পেলাম। এই ছুটির সময়কাল শুধু নিজ এলাকার বন্ধুদের উৎসর্গ করেছি বলা যায়। বৃষ্টি মুখর দিনে ফুটবল খেলে বাড়ির পাশের নদীতে ঝাঁপিয়ে বেড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছি।’

কলি