ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৭ আক্টোবর) দুপুর দেড়টায় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে তালা দেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় নানা স্লোগান দিতে থাকেন তারা। প্রধান ফটক অবরোধকালে উপাচার্যের কাছে তাদের দাবি উত্থাপনের নির্দেশ দেন প্রক্টর ড. শাহীনুজ্জামান, সহকারী প্রক্টর ড. আব্দুল বারী ও ড. খাইরুল ইসলাম। পরে বেলা ৩টায় উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আলোচনা হয়।
এ সময় শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের বিপক্ষে তাদের অভিযোগ উত্থাপন করেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করেন, ক্লাসে ফল কম-বেশি, ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে পেটানোর হুমকি, প্রতিনিয়ত বিশ্রী গালাগালি ও শব্দচয়ন, ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি, আন্দোলনে জড়িত শিক্ষার্থীকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকি দিয়ে আসছেন। এ ছাড়া তাকে ছাত্রলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ও ছাত্রলীগের দোসর বলে আখ্যায়িত করেন শিক্ষার্থীরা। তারা আরও অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের মিছিলে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় তিনি চাপ প্রয়োগ করেন। একাডেমিক ক্যারিয়ার ধ্বংসের হুমকি, ফেইক আইডি দিয়ে হেনস্তা, ব্লেকমেইল, শিক্ষার্থীদের নেশায় জড়িত বলে হেনস্তাসহ বিভিন্ন সময় উসকানিমূলক কথা বলেন হাফিজুল ইসলাম।
এ বিষয়ে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী লামিয়া হোসেন বলেন, ‘আমি প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকতাম। আমি কী পোশাক পরব, কোথায় যাব, কী খাব, সেই স্বাধীনতাটুকু তিনি (হাফিজুল ইসলাম) কেড়ে নিয়েছিলেন। দুই দিন বিভাগে না যাওয়ায় আমাকে ফ্যানে ঝুলিয়ে পেটাতে চেয়েছেন। বিভাগের মেয়েদের প্রকাশ্যে গালিগালাজ করেছেন।’
এ বিষয়ে উক্ত বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় বলেন, ‘একজন শিক্ষক কখনো অন্যের ব্যক্তিগত বিষয়ে মানসিক চাপ দিতে পারেন না। কিন্তু তিনি সব শিক্ষার্থীর সঙ্গে, কোথায় থাকব, কোথায় আড্ডা দেব, কোন হলে থাকব, এসব নিয়ে বাড়াবাড়ি করতেন।’ এ বিষয়ে জানার জন্য হাফিজুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে লিখিত বক্তব্য পেলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে কথা বলার, অভিযোগ করার জায়গা তৈরি হয়েছে।’