ঢাকা ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
English

বন্যার্তদের সবজির চারা বিতরণ এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৬ পিএম
আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩২ পিএম
বন্যার্তদের সবজির চারা বিতরণ এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের
ছবি: সংগৃহীত

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তিনশ’ পরিবারের কাছে সবজির চারা বিতরণ করল এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। 

সোমবার (২৮ অক্টোবর) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার রানীহাটি ও দুর্লভপুর ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মাঝে এই চারা বিতরণ করা হয়। 

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফতাবুজ্জামান- আল- ইমরান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ উপজেলা কৃষি অফিসার নয়ন মিয়া। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, শিবগঞ্জের সার্বিক সহযগিতায় আয়োজিত সবজির চারা বিতরণের এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কৃষিবিদ ড. মো. সাহেব আলী প্রামাণিক।

আফতাবুজ্জামান- আল- ইমরান বলেন, বানভাসি মানুষের জন্য সবজির চারা উৎপাদন এবং বিনামূল্যে বিতরণের যে উদ্যোগ এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ নিয়েছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আমরা তাদের এই সুন্দর জনকল্যাণমূলক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। যারা এই মহতি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা সবসময় আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় পাশে আছি।

নয়ন মিয়া বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকেনো প্রয়োজনে আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সর্বদা আপনাদের পাশে থাকব এবং এই সুন্দর কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

ড. সাহেব আলী প্রামাণিক বলেন, এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ দেশের একমাত্র গবেষণাধর্মী বেসরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশের বিশেষ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গবেষণা এবং শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সর্বদা আপনাদের পাশে আছি কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আপামর মানুষের কল্যাণের জন্য। এখানে যাতে করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছেলেমেয়েরা অল্প খরচে বিশ্বমানের শিক্ষা পায়। আমরা আমাদের মান ধরে রেখে শিক্ষা এবং গবেষণার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। কৃষি বিষয়ক যে কোনো সমস্যা সমাধানে আমরা সর্বদা সচেষ্ট।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বন্যায় কৃষকের ক্ষতির কথা চিন্তা করে দেশের একমাত্র গবেষণা ভিত্তিক বেসরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ এর শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা তাদের মাঝে সবজির চারা বিতরণের উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমনুরাস্থ স্থায়ী ক্যাম্পাসের গবেষণা মাঠে লাউ, বেগুন ও মরিচের চারা উৎপাদন করা হয়।

১০ বছরেও ক্ষতিপূরণ পায়নি বাসচাপায় নিহত ইবি শিক্ষার্থীর পরিবার

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ পিএম
আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৬ পিএম
১০ বছরেও ক্ষতিপূরণ পায়নি বাসচাপায় নিহত ইবি শিক্ষার্থীর পরিবার
ক্ষতিপূরণ ও বিচার দাবিতে নিহত ইবি শিক্ষার্থী টিটুর পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: খবরের কাগজ

২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে গাড়িচাপা পড়ে নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদুর রহমান টিটু। এই ঘটনার ১০ বছর পার হলেও কোনো ক্ষতিপূরণ ও বিচার পায়নি তার পরিবার।

তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার পরিবারের সদস্যদের একজনকে যোগ্যতা অনুসারে চাকরি দেওয়ার এবং তার নামে একটি ভবনের নামকরণের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি।

এদিকে টিটুর পরিবার এখনো মানবেতর জীবনযাপন করছে।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসির প্রেস কর্ণারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান টিটুর ছোট ভাই তারেক আজিজ। এ সময় তার পরিবারের অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে টিটুর পরিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তিনটি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- অনতিবিলম্বে টিটুর বোনের চাকরির স্থায়ীকরণ করা, তার স্মৃতি রক্ষার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ভবনের নামকরণ এবং তার পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

টিটুর পরিবার জানায়, এই দশ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলেও টিটুর পারিবারিক অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি। টিটুর বাবা আব্দুল আজিজ পেশায় একজন কৃষক। বর্তমানে ওপেন হার্ট সার্জারি করার পর এখন কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। তার ছোট ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। তাই তার বাবার নিজের চিকিৎসার খরচই যেখানে জোগাতে পারছেন না সেখানে পরিবার এবং সন্তানদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া তার জন্য দু:সাধ্য ব্যাপার। বর্তমানে পরিবারটির হাল ধরার মতো কেউ নেই। ১০ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে বার বার দেখা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

এ দিকে পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় তৎকালীন প্রশাসন কোনো প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেননি ও তারা হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তারা।

তবে ২০১৬ সালে তার বোন আফরোজা আক্তার লাকিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস থেকে থোক বরাদ্দে (চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী চাকরি) নিযুক্ত করলেও চাকরিতে যোগদানের আট বছর পার হলেও এ চাকুরি স্থায়ী করা হয়নি।

এ ছাড়া ঘাতক ড্রাইভার জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।

টিটুর বাবা আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আমার অনেক আশা ছিল ছেলে বড় হয়ে পরিবারের হাল ধরবে। কিন্তু আমার ছেলের মৃত্যুর ১০ বছর পার হলেও কোনো ক্ষতিপূরণ পাইনি। আমার পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার কথা হলেও এখন পর্যন্ত তা দেওয়া হয়নি। আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করুক।’

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর দুপুর ১২টার দিকে টিটু বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে উঠার চেষ্টা করেন। এ সময় বাস চালক হঠাৎ দ্রুত চালালে তিনি বাসে উঠতে ব্যর্থ হয়ে রাস্তায় পড়ে গেলে পেছন থেকে অপর একটি বাস (সাগর পরিবহন) দ্রুত বেগে তার গলার উপর দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাসসহ প্রায় ৪০টি বাস পুড়িয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ৩০-এরও বেশি শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় চার মাস বন্ধ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়। 

গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০০ জনকে আসামি করা হয়।

সার্বিক বিষয়ে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তারা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় আমার কাছে আসুক। আমি সবার কথা শুনব, সবার অধিকার নিয়েই  কাজ করব।’

নিয়ামত উল্লাহ/নাবিল/এমএ/

বেরোবির সহযোগী অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম সাময়িক বরখাস্ত

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০২ এএম
আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৫ পিএম
বেরোবির সহযোগী অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম সাময়িক বরখাস্ত
শরিফুল ইসলাম

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরিফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শহিদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ১৯ নভেম্বর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কর্তৃক গ্রেপ্তার হওয়ায় সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৩৯ (২) ধারা মোতাবেক তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকালীন তিনি বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা পাবেন।

গাজী আজম/জোবাইদা/অমিয়/

বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলা, প্রতিবাদে বেরোবিতে বিক্ষোভ

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ এএম
আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ এএম
বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলা, প্রতিবাদে বেরোবিতে বিক্ষোভ
ছবি : খবরের কাগজ

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন তিন শতাধিক শিক্ষার্থী।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ভারতীয় আগ্রাসন বাংলাদেশে চালালে তাদের যে আয়তন, সেটা তারা হারাবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রহমত আলী বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর ভারতীয় আগ্রাসন চালালে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে সেভেন সিস্টারস বিচ্ছিন্ন করে দেব। তারা ভুলে গেছে এই ভূমি ক্ষুদিরামের, আবু সাঈদের, মুগ্ধের এবং আবরার ফাহাদের। তারা শহিদ হওয়ার মাধ্যমে প্রত্যেক ঘরে ঘরে আবরার ফাহাদদের জন্ম হয়েছে। বাংলাদেশের ওপর ভারতীয় আগ্রাসন থেকে যদি তারা সরে না আসে, তা হলে বাংলাদেশের জনগণ তার উপযুক্ত জবাব দেবে।’

ভারতকে উদ্দেশ্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুন বলেন, ‘তাদের দেশে মসজিদ ভেঙে মন্দির তৈরি করছে আর আমাদের সম্প্রীতির কথা শোনায়! আগে নিজের দেশে মুসলিম নিধন বন্ধ করতে হবে। ভারতীয় আগ্রাসন বাংলাদেশে চালালে তাদের যে আয়তন, সেটা তারা হারাতে বসবে। ভারতের রাষ্ট্রনীতি ঠিক করতে হবে। এরপর তাদের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে ভাবতে হবে। আমরা রাজপথে আছি রাজপথে থাকব, ভারতীয় আগ্রাসন প্রতিহত করব।’

ফ্যাসিস্ট সরকারের দুর্বল পররাষ্ট্রনীতির কথা উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে আমরা নতুন যে বাংলাদেশ পেয়েছি, পূর্বে ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি ছিল। আমরা বর্তমান সরকারের আমলে শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতি চাই। প্রয়োজনে ১৬ কোটি জনগণ সরকারকে সাহায্য করবে।’

গাজী আজম/জোবাইদা/অমিয়/

খেলার মাঠে রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৩ পিএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৩ পিএম
খেলার মাঠে রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু
নিহত মেহেদী হাসান সিয়াম। ছবি: সংগৃহীত

ক্রিকেট খেলার সময় ‘হৃদরোগে’ আক্রান্ত হয়ে মেহেদী হাসান সিয়াম নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

রবিবার (১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাশ বাংলাদেশ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস।

মেহেদী হাসান সিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রাণীনগর গ্রামে।

মেহেদীর সহপাঠী, শিক্ষক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাশ বাংলাদেশ মাঠে আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলা চলাকালে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা ব্যাটার সিয়াম হঠাৎ অসুস্থতা বোধ করেন। পরে তিনি পানি পান করতে চান। এ সময় তার সতীর্থ খেলোয়াড়রা সেবা-শুশ্রূষা দিয়ে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করলে তার অবস্থার অবনতি হয়। একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে বিভাগের শিক্ষার্থীরা দ্রুত তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সিয়াম নামের এক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বুঝতে পারেন হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। পরিবার ও শিক্ষকদের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত করা হয়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়নি। 
পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে। বাদ এশা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রথম জানাজা শেষে মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে।’

এস আই সুমন/নাবিল/

প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৫ এএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০৮ পিএম
প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা
ছবি: সংগৃহীত

আজ ৩ ডিসেম্বর- ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’। ১৯৯২ সাল থেকে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে এই দিবসটি বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হয়ে আসছে। প্রতিবন্ধীরা আজও সমাজে অবহেলিত ও নানা সমস্যায় জর্জরিত। তাদের সম্পর্কে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিও হতাশাজনক। সমাজে প্রতিবন্ধীদের সমস্যা ও সমাধানের উপায় নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিমত তুলে ধরেছেন শাহ্ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ

‘সীমাবদ্ধতা মানেই হেরে যাওয়া নয়’

দীপা সাহা প্রিয়া
আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগ

‘প্রতিবন্ধী’ শব্দটা শুনলেই মানসপটে ভেসে ওঠে সমাজে পিছিয়ে পড়া একাংশের চিত্র, যারা জীবনমান উন্নয়নের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন। 
‘বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ আইন ২০০১’ অনুসারে, মোট সাত ধরনের প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান, যা দেশের মোট জনসংখ্যার বড় একটি অংশ।
একটি সাদা জামায় তিল পরিমাণ কালির দাগ যেমন সম্পূর্ণ জামাটার দৃষ্টি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে কলুষিত করে, সেই রকম প্রতিবন্ধকতার ধরন যাই হোক না কেন, প্রকট কিংবা প্রচ্ছন্ন- তা প্রতিবন্ধী ট্যাগধারী ব্যক্তিটিকে সামাজিক মানদণ্ডের পাল্লায় স্বাভাবিক জগৎ থেকে নির্বাসিত করে দেয়। কিছু ক্ষেত্রে তাদের করুণার দৃষ্টিতে দেখা হলেও মূলত তারা তাদের অধিকার ও প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হয়। তথাকথিত সামাজিক স্বীকৃতির অভাব ও সৃষ্ট বৈষম্যের কারণে প্রতিবন্ধীদের শৈশব হারিয়ে যায় না, বরং নষ্ট হয়!
সামাজিক বর্জন ও অবহেলা, উপযুক্ত শিক্ষা ও বিকাশের অভাব, কর্মসংস্থানের অপর্যাপ্ততা, ভৌত ও অবকাঠামোগত অপ্রাপ্যতা, স্বাস্থ্যসেবা ও পুনর্বাসনের অপ্রতুলতা প্রভৃতি তাদের জীবনমান উন্নয়নের অন্তরায়। অবাক করা তেতো সত্য, একবিংশ শতাব্দীর ডিজিটাল যুগে দাঁড়িয়েও বিপুল জনগোষ্ঠীর দুর্ভোগের অন্যতম কারণ প্রচলিত কুসংস্কার। পদ্মা, যমুনা, মেঘনার বহু পানি গড়িয়েছে- এমনকি উন্নয়নের দরুন নদীগুলোর নাব্য হারিয়ে পানিশূন্য খাল হওয়ার উপক্রম। তবুও এখনো কানা, খোঁড়া, ন্যাংড়া, বোবা, পাগল বলে অভিহিত করে তাদের সুপ্ত সম্ভাবনাকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দেওয়া হয়।
‘সীমাবদ্ধতা মানেই হেরে যাওয়া নয়, বরং ভেতরের অদম্য শক্তি অনুসন্ধানের সুযোগ।’ কাজেই প্রতিবন্ধকতা কোনো অপরাধ নয়; প্রতিবন্ধীরা নয় পাপের ফসল। নিজেকে প্রমাণের উপযুক্ত সুযোগ পেলে তারাও দক্ষ জনশক্তি হয়ে উঠতে পারে, সভ্যতার কল্যাণে স্বাক্ষর রাখতে পারে।

‘তারা করুণা চায় না, চায় সুযোগ’

মো. এমরান হোসেন 
সমাজকর্ম বিভাগ

‘প্রতিবন্ধী’ শব্দটা শুনলে জানি না কেন অধিকাংশ মানুষের একটি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে ওঠে। অনেক বিশেষজ্ঞ ও সংস্থা এখন ‘প্রতিবন্ধী’ শব্দের জায়গায় ‘বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন’ ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করে। এতে কি আদৌ অধিকাংশ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির কোনো পরিবর্তন আসে?
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা এখনো সমাজে অবহেলিত, তারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। কিন্তু কেন জানি না প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কথা এলে সবাই চুপ হয়ে যায়। তাদের অধিকার নিয়ে বেশির ভাগ মানুষ কথা বলতে চায় না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির দিনে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যে নামমাত্র ভাতা দেওয়া হয়, তা দিয়ে এক বস্তা চালও কেনা কঠিন। দেশের যানবাহন থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ যথেষ্ট প্রতিবন্ধীবান্ধব নয়। উচ্চশিক্ষার জন্য অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই দৃষ্টি ও শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের জন্য তাদের উপযুক্ত শিক্ষা সরঞ্জাম। দেশের বিশাল বিশাল ভবনের বেশির ভাগে নেই প্রতিবন্ধীদের সহজে যাতায়াতের ব্যবস্থা। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য নেই যথেষ্ট অনুদান ও সাহায্যের ব্যবস্থা।
বাংলাদেশের সংবিধানের ১৯ (ক) অনুচ্ছেদে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ এ দেশের সব নাগরিকের সুযোগের সমতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু এই অনুচ্ছেদের যথাযথ সমতা এখনো নিশ্চিত হয়নি। বিবিএসের জরিপ অনুযায়ী, দেশের ৪৪ শতাংশ প্রতিবন্ধী বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার। 
আমাদের প্রতিবন্ধীদের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। কারণ নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বৈষম্যের উৎপত্তি এবং বৈষম্য থেকে জনবিচ্ছিন্নকরণ।
পরিশেষে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও পারে, তাদেরও রয়েছে দেশ ও জাতি গঠনের ক্ষমতা ও প্রতিভা। তাদেরকে যথেষ্ট সুযোগের ব্যবস্থা করে দিন।

প্রতিবন্ধীদের জন্য চাই যুগোপযোগী শিক্ষা

মো. আতিক শাহরিয়ার সিয়াম 
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ


জন্মের পর থেকেই প্রতিবন্ধীরা প্রতিকূল পরিবেশের সম্মুখীন হয়। স্কুলজীবন প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য এক আতঙ্ক হয়ে দেখা দেয়। বুলিং থেকে শুরু করে অসংখ্য বাজে অভিজ্ঞতা নিয়ে বড় হতে থাকে প্রতিবন্ধী শিশু। অনেক স্কুল তো প্রতিবন্ধীদের ভর্তিই নেয় না।  
প্রতিবন্ধীরা সব নিগ্রহের জবাব নীরবেই দিতে পারত শিক্ষার মাধ্যমে। কিন্তু আফসোস, প্রতিবন্ধীদের জন্য যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা দেশে গড়ে ওঠেনি। ইউনিসেফের সহায়তায় করা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তি জরিপ ২০২১’ অনুযায়ী দেশের প্রতিবন্ধী শিশুদের ৬০ শতাংশ আনুষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে রয়েছে। অথচ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য এমপিওভুক্ত স্কুল আছে মাত্র ৭৬টি। সে স্কুলগুলোরও আবার বেহাল। অথচ মন্ত্রণালয়ে ২ হাজার ৬৯৭টি প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির আবেদন ঝুলে আছে ২০১৯ সাল থেকে। প্রতিবন্ধীদের নিয়ে এই অবহেলা সব ক্ষেত্রে। খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক ও বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিবন্ধীদের অধিকার- যা জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের ২৩ নং অনুচ্ছেদ দ্বারা স্বীকৃত। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩-এর ১৬ নং ধারায় বাংলাদেশের প্রতিবন্ধীদের অধিকার সংহত করার কথা বলা হয়েছে। 
প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গী করে নিতে পারলে আমাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ও গতিশীল অর্থনীতির স্বপ্ন পূরণ সহজতর হবে।
 আমাদের দেশ ও বিশ্ব প্রতিবন্ধীবান্ধব হোক। এটাই এবারের বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসের চাওয়া।

প্রতিবন্ধী হওয়াটা লজ্জার নয়

মো. আরিকুজ্জামান
বাংলা বিভাগ

প্রতিবন্ধী শব্দটাকে বর্তমানে সমাজে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়, যেন প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেওয়া এক লজ্জার বিষয়।
প্রতিবন্ধীদের জন্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক সম্মান প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আমাদের সর্বপ্রথম কাজ হলো চিন্তাধারার উন্নতিসাধন করা। প্রতিবন্ধীদের কোনো সময় বুঝতে দেওয়া যাবে না তাদের সীমাবদ্ধতা। ‘দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ’- এ মন্ত্রটি বুকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে।
প্রতিবন্ধীদের সমাজের বিভিন্ন স্তরে, শ্রেণিকক্ষে কটাক্ষের শিকার হতে হয়। যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতিসাধন করছে। এই চর্চা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তাদের সঙ্গে সর্বদা সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করতে হবে।
সঠিক মানুষের সান্নিধ্য পেয়ে ‘হেলেন কেলার’ হয়ে উঠেছিলেন ‘অন্ধকারে আলো জ্বালা এক দীপশিখা।’ তার শিক্ষক অ্যানি সুলিভানের স্পর্শ-অনুভূতির মাধ্যমে শিক্ষাদান এটাই প্রমাণ করে, জীবনের চাকা যদি একপাশে থেমে যায়, তবে অন্যপাশে ঘুরিয়ে দিতে হয়। যার সুদূরপ্রসারী প্রতিফলন দেখা যায় দৃষ্টিহীন নাহিয়ান বুশরার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিকূলতা জয়ের চ্যালেঞ্জে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স পাশ করা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শাহীন আলম স্ক্রিন রিডার সফটওয়্যার ব্যবহার করে কম্পিউটারের সব কাজ করেন। নিজের মতো অন্য যারা প্রতিবন্ধকতার জীবন পার করেছেন তাদের জন্যও যেন তিনি আশীর্বাদ। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়ে পারদর্শী করে তুলেছেন। চোখের আলো নেই, এমন প্রায় অর্ধশত দেশি-বিদেশি মানুষ কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তার কাছে।

হাসান