দীর্ঘদিন ধরে গোসলের পানি খাওয়াচ্ছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) অভ্যন্তরীণ শান্তিনিকেতন এলাকার টং দোকানিরা। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কিছুই জানে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে টং দোকানিরা যে ট্যাপ থেকে পানি সরবারাহ করেন, সেই পানি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের গোসলের জন্য ব্যবহার করে থাকেন শিক্ষার্থীরা। ট্যাপ থেকে আনা পানি কোনো ধরনের ফিল্টার বা বিশুদ্ধকরণ ছাড়াই শিক্ষার্থীদের খাওয়ানো হচ্ছে। এ ছাড়া এই পানি দিয়েই ধোয়ামোছা করা ও চা বানানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর ধরে প্রশাসনের নাকের ডগায় গোসলের পানি খাওয়াচ্ছেন টং দোকানিরা। প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ পানি খাওয়ার পরেই শিক্ষার্থীরা ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কবে প্রশাসন সচেতন হবে?’
বিশ্ববিদ্যালয়ের টং দোকানি জামাল মিয়া বলেন, ‘পানির লাইন থেকেই পানি আনি আমরা। কিন্তু এ পানি কোথা থেকে আসে, সেটা জানি না। আপনার কাছ থেকেই জানতে পারলাম, এটা গোসলের পানি। এখন থেকে বিশুদ্ধ পানি খাওয়ানোর চেষ্টা করব। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি একটু সহযোগিতা করে, তাহলে আমাদের জন্য বিশুদ্ধ পানি খাওয়ানো সহজ হবে।’
মারুফ নামে এক শিক্ষার্থী জানান, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর থেকেই দেখছি, টং দোকানিরা ট্যাপের পানি বোতলে ভরে আমাদের খাওয়াচ্ছেন। পানির সোর্স সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলত, বিশুদ্ধ পানি খাওয়াচ্ছেন। আজ জানতে পারলাম, এটা গোসলের পানি।’
অপরিশোধিত পানি পানে স্বাস্থ্যঝুঁকির ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. ইসমত আরা পারভীন বলেন, ‘এ পানি খাওয়ার ফলে ডায়রিয়া, টাইফয়েডসহ নানা রোগ হতে পারে। মেডিকেল সেন্টারে আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্বর, ঠাণ্ডার পর আমরা পানিবাহিত রোগের রোগী বেশি পাচ্ছি। এরপরেও দোকানিরা এই পানি শিক্ষার্থীদের খাওয়াচ্ছেন। এটা খুবই দুঃখজনক।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত টং দোকানগুলোতে তদারকি করছি। বিষয়গুলো নিয়ে এদের জরিমানাও করা হয়েছে। এরপরেও তারা এমন অস্বাস্থ্যকর কাজ করেই যাচ্ছেন। তারা যদি আমাদের কথা না শোনেন, তাহলে সেখান থেকে দোকান সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করব।’