বিজ্ঞান ও গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য জাপানের জিচি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘দ্য মোস্ট ভ্যালুয়েবল পেপার অ্যাওয়ার্ড-২০২৪’ পেয়েছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শিবলুর রহমান।
কেমোস্ফিয়ার জার্নালে প্রকাশিত তার গবেষণাপত্রটির জন্য এ অ্যাওয়ার্ড পান তিনি।
গবেষণাপত্রটি ২০২৩ সালে প্রকাশিত হয় এবং যাচাই-বাছাই শেষে ২০২৪ সালে এসে ‘মোস্ট ভ্যালুয়েবল পেপার অ্যাওয়ার্ড’ হিসেবে মনোনীত হয়।
গবেষণাপত্রের মূল বিষয়বস্তু ছিল- কিভাবে স্বল্প ঘনমাত্রার আর্সেনিক এক্সপোজার উচ্চ রক্তচাপ এবং অন্তর্নিহিত আণবিক প্রক্রিয়াগুলোকে প্ররোচিত করে এবং সেল লাইন ও অ্যানিমেল মডেল উভয় ব্যবহার করে আণবিক প্রক্রিয়াকে চিহ্নিতকরণ।
ড. শিবলুরকে জিচি মেডিকেল ইউনিভার্সিটি এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য একটি সার্টিফিকেট এবং পাঁচ লাখ জাপানি ইয়েন সম্মানী দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতি বছর বিজ্ঞান ও গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য এই অ্যাওয়ার্ড দিয়ে আসছে।
এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হওয়ার পর ড. শিবলুর অনুভূতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জিচি মেডিকেল ইউনিভার্সিটি এবং আমার পোস্টডক্টরাল সুপারভাইজার প্রফেসর ড. ইছিহারার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এই অ্যাওয়ার্ডটি আমাকে আগামীতে আরও ভালো গবেষণা করতে অনুপ্রাণিত করবে বলে আশা করছি।’
অধ্যাপক শিবলুর বলেন, ‘আমি বর্তমানে আমেরিকার স্যাম হিউস্টন স্টেট ইউনিভার্সিটির পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্টে গবেষণা করছি। এখানে আমার গবেষণার বিষয় হচ্ছে- কিভাবে আর্সেনিক, সিসা, ক্যাডমিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজের মতো বিষাক্ত ধাতুর মিশ্রণগুলো বাংলাদেশি গ্রামীণ শিশুদের শৈশব শুরুর দিকে এবং শেষের দিকে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে।’
তিনি আশা ব্যক্ত করেন, তাদের এ গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল বাংলাদেশে পরিববেশগত নিউরোটক্সিসিটি সমস্যা সমাধানে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
ড. শিবলু বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের স্যাম হিউস্টন স্টেট ইউনিভার্সিটির পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্টে ন্যাশনাল ইনিস্টিটিউট অব হেলথ (এনআইএইচ) অর্থায়িত একটি গবেষণা প্রকল্পের গবেষক হিসেবে কাজ করছেন। তিনি ২০১৫ সাল থেকে নোবিপ্রবির পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগে স্থায়ী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত (বর্তমানে ছুটিতে আমেরিকায় অবস্থান করছেন)।
তিনি জাপানিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ এমইএক্সটির অধীনে জাপানের হোক্কাইডো ইউনিভার্সিটি থেকে ২০২০ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি জাপানের মর্যাদাপূর্ণ জেএসপিএস পোস্টডক্টরাল ফেলোশিপ নিয়ে জিচি মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে পোস্টডক্টরাল গবেষণা সফলভাবে সম্পন্ন করেন।
ড. রহমান আন্তর্জাতিকভাবে স্বনামধন্য বিভিন্ন জার্নালে ৩০টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন এবং আর্থ সিস্টেম অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট এবং এনভায়রনমেন্টাল জিওকেমিস্ট্রি অ্যান্ড হেলথ জার্নালের সহযোগী সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন।
তিনি বেশ কয়েকটি একাডেমিক সোসাইটির সদস্য এবং বিএমসি পাবলিক হেলথ, ডিসকভার অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেসসহ বেশকিছু স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক জার্নালের সম্পাদকীয় বোর্ডের সদস্য হিসেবে কাজ করছেন।
কাউসার/তাওফিক/পপি/