যুক্তির বুদ্ধি দিয়ে মুক্তির পথ মেলে কি না, তা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। তবে বিতর্ক শিখে উপকার বৈ অপকার হয়েছে এমনটি খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্তরে যুক্তি দিয়ে মুক্ত চিন্তার এই চর্চা বেশ জনপ্রিয়। শিক্ষাঙ্গনে নিজের বুদ্ধির চর্চায় অনেকে বিতর্কের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। যারা বিতর্ক ভালোবাসে, তাদের মনে হয়তো ‘বিতর্ক কেন করব?’ সে প্রশ্নের উদ্রেকও হয় না। কিন্তু যারা এখনো বিতর্ক শুরু করেননি অথচ বিতর্কে আগ্রহী, তাদের অবশ্যই জানা দরকার বিতর্ক একজন মানুষকে কী দিতে পারে।
বিতর্ক কী শুধুই সহশিক্ষা কার্যক্রমের অংশ? বরং এর ফলে যুক্তিবাদী চিন্তায় তর্কের খেলা, বাগ্মিতা চর্চা, সময়জ্ঞান সম্পর্কে সচেতনতা, আঞ্চলিকতা ঝেড়ে প্রমিত ভাষাচর্চা, তীক্ষ্ণ শব্দ প্রয়োগ, চিন্তার প্রসার, ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি মর্যাদা, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক, জ্ঞানের প্রসার এবং ব্যক্তিগত অর্জনের পথ সুগম হয় প্রতিটি বিতার্কিকের জীবন। যেকোনো সমস্যার উপযুক্ত সমাধান খুঁজতে হলেও বিতর্কের মাধ্যমে সেটি বেরিয়ে আসে। ফলে বিতর্ককে প্রকারান্তরে মুক্তির পথ হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। আজকের গল্প এমনি একটি বিতর্ক চর্চার সংগঠনকে নিয়ে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি বিতর্ক ও বিতার্কিকদের মানোন্নয়নে কাজ করছে। শুধু বিতর্ক অঙ্গনই নয় একাডেমিক ও পেশাগত জীবনেও সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন সংগঠনটির সাবেক বিতার্কিকরা। বিতর্কের প্রয়োজনে প্রচুর পড়াশোনা ও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে ধারণা রাখতে হয়। যা বিতার্কিকদের নতুনভাবে ভাবতে শেখায়। সংগঠনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও হলভিত্তিক বিতর্ক চর্চায়ও অবদান রাখছে। পাশাপাশি কুমিল্লার বিভিন্ন স্কুল, কলেজে বিতর্কের মানোন্নয়নে ডিবেট কোচ হিসেবে কাজ করেন সংগঠনের সদস্যরা। কুমিল্লার শিক্ষা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও বিতার্কিকরা মনোযোগ কেড়ে নিচ্ছেন নিয়মিত। প্রায় তিন শত সদস্য সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন।
সংগঠনের সাবেক বিতার্কিকরা বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার পাশাপাশি বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রশাসন, পুলিশ, শিক্ষা ক্যাডারসহ, ব্যাংক, এনজিও এবং কর্পোরেট সেক্টরে কাজ করছেন।
সংগঠনটির স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়েও রয়েছে বিভিন্ন অর্জন। জাতীয় টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতা এবং জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা সমূহে নিয়মিত অংশগ্রহণ করছে সিওইউডিএস এর সদস্যরা। ত্রয়োদশ জাতীয় বিজ্ঞান বিতর্ক উৎসবে রানারআপ, একাদশ পল্লীকবি জসীমউদ্দিন আন্তঃক্লাব বিতর্কে বারোয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন, এটিএন বাংলা: ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট এ চ্যাম্পিয়ন, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত আঞ্চলিক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব।
কাউসার আহমেদ বাঁধন কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক। সংগঠনের অগ্রগতি এবং পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বির্তক করার ও শেখার একটি সংগঠন সিওইউডিএস। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই সোসাইটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতর্কের চর্চা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে যুক্তিসম্মত ভাবনার বিকাশে অবদান রেখে আসছে। বিতর্ক কৌশল এবং বক্তৃতা দক্ষতা বাড়ানোর জন্য সোসাইটি নিয়মিতভাবে বিভিন্ন ওয়ার্কশপ এবং ট্রেনিং প্রোগ্রাম ও সেশনের আয়োজন করে।’
হাসান