
কোভিডের পর থেকে প্রতিবছর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) বাড়ছে নতুন সেমিস্টারে রেজিস্ট্রেশন ও ক্রেডিট ফি।
এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা নানামুখী সমালোচনা করে এলেও পরিবর্তনের বদলে প্রতিবছর নতুন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের গুনতে হচ্ছে বিগত শিক্ষাবর্ষের থেকে বেশি টাকা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরগুলোর নতুন সেমিস্টারে রেজিস্ট্রেশন ফির নোটিশ থেকে জানা যায়, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা প্রতি সেমিস্টারে রেজিস্ট্রেশন ফি দেন ২ হাজার ৪৩০ টাকা। কিন্তু ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৯৫ টাকা। এদিকে ক্রেডিট ফির ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা যায়।
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের তত্ত্বীয় বিষয়গুলোর প্রতি ক্রেডিটের জন্য ১০৫ টাকা পরিশোধ করতে হতো। এখন সেটি বেড়ে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ১১৫ এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ১৪০ টাকায় পৌঁছায়। এ ছাড়া ব্যবহারিক বিষয়গুলোর প্রতি ক্রেডিটের জন্য ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ১৬০ টাকা পরিশোধ করতে হতো। সেটি যথাক্রমে বেড়ে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ১৭৫ টাকা এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ২০০ টাকায় পৌঁছায়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জুনায়েদ হাসান বলেন, ‘ক্রেডিট ফি ও
সেমিস্টার ফি বাড়ার ফলে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা এখন কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতি শিক্ষার অধিকার ক্ষুণ্ণ করছে এবং সমাজে বৈষম্য আরও বাড়িয়ে তুলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব হলো সবার জন্য শিক্ষা সহজলভ্য করা। ব্যয়বহুল করা নয়। আমরা এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাই। প্রশাসনের কাছে প্রত্যাশা করব, তারা যেন শিক্ষার্থীদের কণ্ঠকে উপেক্ষা না করে। ন্যায্য সমাধান দেয়।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শাবিপ্রবির সমন্বয়ক দেলোয়ার হোসেন শিশির বলেন, ‘আমরা মনে করি রেজিস্ট্রেশন এবং ক্রেডিট ফি এত বেশি পরিমাণে বাড়ানোয় আমাদের জুনিয়রদের ওপর চাপ বাড়ছে। এ বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে প্রশাসনের সঙ্গে মৌখিকভাবে কথা বলেছি। শিগগিরই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ নিয়ে প্রশাসনের কাছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য লিখিতভাবে দাবি জানাব।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী খবরের কাগজকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে আমরা ইতোমধ্যে একাডেমিক কাউন্সিলে এ ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছি।’ আশা করি, খুব শিগগিরই এ নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত আসবে।