ঢাকা ৩০ পৌষ ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

ইউনিয়ন ও শিক্ষাপঞ্জি ফি নেয় শাবিপ্রবি, সুবিধা পায় না শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৫ পিএম
আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩২ পিএম
ইউনিয়ন ও শিক্ষাপঞ্জি ফি নেয় শাবিপ্রবি, সুবিধা পায় না শিক্ষার্থীরা
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: খবরের কাগজ

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) প্রশাসন প্রতি সেমিস্টারে রেজিষ্ট্রেশন ফির জন্য বিভিন্ন খাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে থাকে। এ নিয়ে করোনার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, রেজিষ্ট্রেশন ফিতে এমন কিছু খাতে টাকা নেওয়া হয় যেগুলোর কোনো ব্যবহার বা সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন ফির বিভিন্ন খাতের তালিকা ও প্রশাসন সূত্রে সেসব খাতের ব্যবহার বিধি জানতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি সেমিস্টারে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রেজিষ্ট্রেশন ফির সঙ্গে শাকসুর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ইউনিয়ন ফি এবং ডায়েরির জন্য শিক্ষাপঞ্জি ফি নামে দুটি খাতে যথাক্রমে ১০০ টাকা ও ৯০ টাকা করে নেওয়া হলেও সেগুলোর কোনো ব্যবহার বা সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (শাকসু) কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতি সেমিস্টারে ইউনিয়ন ফি হিসেবে ১০০ টাকা করে নেওয়া হয়।

কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা যায় দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে শাকসু অকার্যকর থাকলেও প্রতি সেমিস্টারে তার জন্য শিক্ষার্থীদের আলাদা টাকা গুনতে হচ্ছে। সর্বশেষ শাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯৭ সালের ২৫ আগস্ট। এরপর সারাদেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শাবিতেও ছাত্র সংসদের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর প্রথম কয়েক বছর বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন শাকসু নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার থাকলেও পরবর্তীতে তা থমকে যায়।

অন্যদিকে শিক্ষাপঞ্জির জন্য প্রতি সেমিস্টারে ৯০ টাকা করে প্রদান করলেও শিক্ষাপঞ্জি বা এই সম্পর্কিত কোনো কিছুই পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা৷ এর আগে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর একটা করে ডায়েরি পেতো শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সেটাও এখন পাচ্ছেন না তারা।

এ দিকে গত ১১ ডিসেম্বর শিক্ষার্থী ভর্তিতে পোষ্য কোটা বাতিলসহ ভর্তি, সেমিস্টার ও ক্রেডিট ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনকে এ সব ‘অযৌক্তিক’ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন তারা।

এর আগে গত ১৯ নভেম্বর খবরের কাগজে ‌‌‌শাবিতে প্রতিবছর বাড়ছে রেজিস্ট্রেশন ও ক্রেডিট ফি' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয় কীভাবে প্রতি বছর রেজিষ্ট্রেশন ও ক্রেডিট ফি বৃদ্ধি নিয়ে শিক্ষার্থীরা নানামুখী সমালোচনা করে এলেও পরিবর্তনের বদলে প্রতিবছর নতুন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের গুনতে হচ্ছে বিগত শিক্ষাবর্ষের থেকে বেশি টাকা। তার ব্যতিক্রম ঘটেনি নতুন সেমিস্টারেও। নতুন সেমিস্টারে প্রতি বর্ষের শিক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন ফি বেড়েছে ২৫০ টাকা করে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ জুয়েল বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় তার গতানুগতিক মাতৃসুলভ মমতা থেকে দিনদিন এক আগ্রাসী সৎ মা হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। প্রতি বছর দাদনের মতো চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে অযৌক্তিক রেজিস্ট্রেশন ফি যার ভারে শিক্ষার্থীরা পিষ্ট। এই অযৌক্তিক ফি এবং তার বিপরীতে কাঁচকলা দেখানোর সংস্কৃতির অবসান ঘটুক।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসাইন বলেন, আমি মনে করি, ইউনিয়ন ফি ও শিক্ষাপঞ্জি নামে খাতগুলো আরও সমৃদ্ধ করতে হবে। অর্থাৎ সকল সাস্টিয়ানকে এসব সুবিধা প্রধান করতে হবে। নয়তো এসব অযৌক্তিক ফি বাদ দিতে হবে।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পদাধিকার বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাকসুর কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

এত বছর যাবত ইউনিয়ন ফির টাকা কোন খাতে ব্যবহার হয়ে আসছে এবং শাকসু অকার্যকর থাকলেও কেনো তার জন্য টাকা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে বর্তমান প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেসুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, অতীতে আমি ছিলাম না তাই এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে পারছি না। কিন্তু আগামীতে যাতে খুব শিগগিরিই যাতে শাকসুর নির্বাচন হয় এবং এই টাকাটা যাতে শাকসুর জন্যই ব্যবহার করা হয় এ বিষয়টা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আমি বদ্ধপরিকর।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ এছাক মিয়া বলেন, আমরা এত দিন ছিলাম না। কিন্তু এখন আমরা এই বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, আমরা বিষয়গুলো নিয়ে যৌক্তিক চিন্তাভাবনা করছি এবং খুব শীগ্রই এ ব্যাপারে একটা কমিটি গঠন করা হবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, এই বিষয়গুলো ইতোমধ্যে একাডেমিক কাউন্সিলের এজেন্ডাভুক্ত হয়েছে। শিক্ষকরা এ ব্যাপারে আলোচনা করে কী সিদ্ধান্ত নেন সেটা খুব শিগগিরিই জানিয়ে দেওয়া হবে।

ইসফাক আলী/নাবিল/এমএ/

জবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো শাটডাউন

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৫৯ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:১৫ পিএম
জবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো শাটডাউন
ছবি: খবরের কাগজ

দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো কমপ্লিট শাটডাউন চলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি)।  

এ সময় বন্ধ রয়েছে সব ধরনের ক্লাস পরীক্ষা। দাবি আদায় না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্যে শাটডাউনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। 

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিচরণ কমে গেছে। ক্লাস না থাকায় দূরের শিক্ষার্থীরা কেউ আসেনি।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্টিয়ারিং কমিটির মিটিংয়ে দাবি পূরণের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আন্দোলন জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

সরেজমিনে দেখা গেছে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলছে। নিরাপত্তাকর্মী ছাড়া আনাগোনা নেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

এ বিষয়ে বোটানি বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী একে এম রাকিব বলেন, ‘যদি আগামীকালের সভায় দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহীনিকে লিখিতসহকারে না দেওয়া হয় এবং অস্থায়ী আবাসনের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয় তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউনের ঘোষণা হতে পারে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী  রায়হান হাসান রাব্বি বলেন, ‘সচিবালয় থেকে আমাদের দুটি দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি দাবিগুলো লিখিত আকারে মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমরা কমপ্লিট শাটডাউন চালিয়ে যাব। আমাদের দাবিগুলো মানতেই হবে, না মানার কোন সুযোগ নেই। এর প্রেক্ষিতেই আমরা শাটডাউন চালিয়ে যাচ্ছি।’

রবিবার (১২ জানুয়ারি) থেকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর, অস্থায়ী আবাসন নিশ্চিত করা এবং অস্থায়ী ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা দেওয়ার দাবি জানিয়ে অনশন শুরু করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়েন ১৫ জন শিক্ষার্থী।

তারপর সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল চারটায় সচিবালয় ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা। তখন তাদের দুইটি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলে তারা অনশন প্রত্যাহার করেন তবে চালু রাখেন শাটডাউন কর্মসূচি। দাবি আদায় না হলে এই কর্মসূচি চলবে বলে জানান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। 

শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো-

১. সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে। প্রয়োজনে স্পেশাল মিটিংয়ের মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ করতে হবে এবং ভিজ্যুয়ালভাবে সবার সামনে তা উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকাবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে তা প্রকাশ করতে হবে। কয়েক মাস সময় নেওয়ার নাম করে কোনো প্রকার দীর্ঘসূত্রতার বন্দোবস্ত করা চলবে না।

২. পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে।

৩. যতদিন অবধি আবাসন ব্যবস্থা না হয়, ততদিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

জোবায়ের আহমেদ/সুমন/

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রাবি শিক্ষকের মৃত্যু

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৪২ পিএম
সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রাবি শিক্ষকের মৃত্যু
ড. পুরনজিত মহালদার

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. পুরনজিত মহালদার মারা গেছেন। 

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাত ২টা ৩৫মিনিটের দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. পুরনজিত মহালদার মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২.৩৫ মিনিটে মারা গেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোমবার দুপুরে রাজশাহীর বারো রাস্তার মোড় এলাকায় মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন ড. পুরনজিত মহালদার। পরে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। 

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদুল্লাহ একাডেমিক ভবনের সামনে পুরনজিত মহালদারের মরদেহ আনা হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। পরে বেলা পৌনে ১১টার দিকে তার মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার উদ্দেশে রওনা দেওয়া হয়। সেখানেই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

এস আই সুমন/জোবাইদা/

ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৪ এএম
ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ছবি : খবরের কাগজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি এবং রোডম্যাপ দাবিতে বৈঠক করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বৈঠকে রোড ম্যাপের ঘোষণা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো আলোচনা না হলেও অতিসত্বর কিভাবে ডাকসু নির্বাচনের আয়োজন করা যায়, সেই বিষয়ে আশ্বাস পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা এবং ডাকসু দাবিতে তারা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ বেরিয়ে আসেন। পরবর্তীতে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা প্রক্টরসহ উপাচার্য-উপাচার্য (প্রশাসন) ও কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। প্রায় দেড় ঘণ্টার ওই বৈঠক চলে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত। 

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষে কোনো ধরনের আশ্বাস দেয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যতদ্রুত সম্ভব হয়, ডাকসু নির্বাচনের আয়োজন করবে এমন আশ্বাস দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ডাকসুকে ঘিরে বেশ কিছু কার্যপরিধির অগ্রগতি বিজ্ঞপ্তি আকারে জানানো হবে, এমন আশ্বাস দেওয়া হয় ওই বৈঠকে। পরে এমন আশ্বাস মেনে নিয়ে শিক্ষার্থীরা বৈঠক শেষ করেন।

বৈঠক শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দেক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের নিকট কোনো দাবি নিয়ে আসলে সেটা তারা না মানতে চাইলে আমাদেরকে লাল ফিতার দৌরাত্ম দেখায়। তারা আমাদের বুঝ দেয় আমরা দ্রুত তম সময়ের মধ্যে কাজ করবো। কিন্তু সেটা কতদিনে তারা বাস্তবয়ন করবে তা বলে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদেরকে সর্বশেষ বার্তা হিসেবে বলেছেন তারা আগামীতে একটি মিটিং করবেন ডাকসু নিয়ে। মিটিং শেষে আমাদেরকে ডাকসুর অগ্রগতি সম্পর্কে জানানো হবে।’

গঠনতন্ত্র সংস্কারে শিবিরের প্রস্তাবনা: এদিকে ডাকসু গঠনতন্ত্র সংস্কার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে ৯প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। সোমবার মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবনা দেন সংগঠনটির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত তথ্য উপস্থাপন করেন ঢাবি শিবিরের সেক্রেটারি মো. মহিউদ্দীন।

শিবিরের প্রস্তাবনাগুলো হলো- লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে ধারা ২ (ক) সংস্কার; ডাকসুর 'লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য'-এ নিম্নোক্ত ধারাসমূহ সংযুক্ত- (ক) ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, লিঙ্গ, রাজনৈতিক বিশ্বাস ও মতাদর্শ নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ স্বার্থরক্ষা ও অধিকার আদায়ের মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করা।

(খ) শিক্ষার্থীদের মতামতকে গুরুত্ব প্রদানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সব নীতিমালা প্রণয়নে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত; ডাকসুর কার্যাবলিতে শিক্ষার্থীদের স্বার্থরক্ষা ও গণতন্ত্র চর্চা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের উল্লেখ; সংসদের অনির্বাচিত সভাপতির স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা সীমিত করতে হবে ও কার্যনির্বাহী পরিষদকে শক্তিশালী করা; ডাকসুকে যুগোপযোগী ও শিক্ষার্থীবান্ধব করার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট কিছু সম্পাদকীয় পদের পরিবর্তন, পরিমার্জন ও সংযোজন করতে হবে।

এ ছাড়া বিদ্যমান সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন ও নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা আরোপ; যে কোনো সময়ে ডাকসুর গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের যে ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটকে প্রদান করা হয়েছে সেটির পরিবর্তন করতে হবে এবং ডাকসু গঠনতন্ত্র সংশোধনের এখতিয়ার ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরকে প্রদান; নির্বাহী কমিটির সভায় যেকোনো অ্যাজেন্ডা আলোচনা করার জন্য সভাপতির অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার; গঠনতন্ত্রের অনুল্লিখিত বিষয়সমূহের ক্ষেত্রে সভাপতির একক সিদ্ধান্তের পরিবর্তে সংসদের সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য।

আরিফ জাওয়াদ/জোবাইদা/

জবি শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার, চলবে শাটডাউন

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৩ পিএম
জবি শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার, চলবে শাটডাউন
অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বোটানি বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী একেএম রাকিব। ছবি : খবরের কাগজ

দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের আশ্বাসে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। তবে চলবে শাটডাউন। 

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বোটানি বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী একেএম রাকিব।

তিনি বলেন, ‘বুধবার মন্ত্রণালয়ের সভায় প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর হবে বলে আশ্বাস পেয়েছি। এ ছাড়া অস্থায়ী আবাসনের বিষয়ে আলোচনা হবে। আমাদের তিনটি দাবির মধ্যে দুটি মেনে নেওয়া হয়েছে। তাই আমরা অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদিও আমরা অনশন প্রত্যাহার করেছি, তবে ক্যাম্পাস শাটডাউন থাকবে। বুধবারের সভার সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করা হবে।’

আরেক শিক্ষার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে একটা চিঠি এসেছে। সেই চিঠিতে আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নিয়ে। ১৫ জানুয়ারি সভা হবে, সেখানে সেনাবাহিনীকে কাজ হস্তান্তর করা হবে, বাণী ভবন ও হাবীবুর রহমান হলে স্টিল বেজ কাজের অনুমতি দেবে। আর ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতার বিষয়ে আলোচনা হবে।’

উল্লেখ্য, গতকাল রবিবার (১২ জানুয়ারি) থেকে শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর, অস্থায়ী আবাসন নিশ্চিত করা এবং অস্থায়ী ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা দেওয়ার দাবি জানিয়ে অনশন শুরু করেন।

মুজাহিদ/সালমান/

 

সচিবালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ জবি শিক্ষার্থীদের

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৪৭ পিএম
আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৪৮ পিএম
সচিবালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ জবি শিক্ষার্থীদের
সচিবালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করেছেন জবি শিক্ষার্থীরা। ছবি: খবরের কাগজ

বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে সচিবালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) অনশনরত শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে সচিবালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করেন তারা।

এর আগে বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনকারী শিক্ষার্থীরা রিকশায় এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে রওনা দেন।

এদিকে আজ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিকে ‘অস্পষ্ট’ আখ্যা দিয়ে শিক্ষার্থীরা তা সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন।

সেসময় অনশনকারী শিক্ষার্থীদের একজন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং ‘জাস্টিস ফর জুলাই’-এর আহ্বায়ক সজিবুর রহমান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের চিঠিটি অনেকটাই অস্পষ্ট। তাই আমরা একটা সুনির্দিষ্ট রূপরেখার মাধ্যমে সংশোধিত চিঠি চাই। যেখানে উল্লেখ থাকতে হবে- ১. দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের চুক্তি স্বাক্ষর করা; ২. সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করে কাজ সম্পাদনের দায় নিয়ে বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান ভারে স্টিল বেইজড ভবনের নির্মাণ অনুমোদন ও বাজেট পাস করতে হবে। ৩. ২৫-২৬ অর্থবছর আসার আগেই জরুরি ভিত্তিতে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা আগামী ফেব্রুয়ারি থেকেই দেওয়ার ঘোষণা দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আগামী বুধবারের সভার সিদ্ধান্তগুলো লিখিত আকারে না আসা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শাটডাউনের আওতাভুক্ত থাকবে।’

শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো-

১. সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে। প্রয়োজনে স্পেশাল মিটিংয়ের মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ করতে হবে এবং ভিজ্যুয়ালভাবে সবার সামনে তা উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকাবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে তা প্রকাশ করতে হবে। কয়েক মাস সময় নেওয়ার নাম করে কোনো প্রকার দীর্ঘসূত্রতার বন্দোবস্ত করা চলবে না।

২. পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে।

৩. যত দিন অবধি আবাসন ব্যবস্থা না হয়, তত দিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।