যথাযথ মর্যাদায় দিনব্যাপী নানা আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। এদিকে ঢাবি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শহিদদের কবর চিহ্নিত করতে সহযোগিতা কামনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাবির ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান এই সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, ‘যে কয়েকটি বড় ঘটনা আমাদের জাতীয়তাবাদ ও জাতিসত্তার পরিচায়ক, এর মধ্যে অন্যতম শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। দেশ স্বাধীন না হলে আমরা কোনো পদ-পদবী, মর্যাদা কিছুই পেতাম না। কী পরিমাণ আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা একটি দেশ পেয়েছি, জাতি হিসেবে তা সকলের জানা প্রয়োজন। শহিদ পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের প্রতিনিয়ত অন্তরের রক্তক্ষরণ হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করতে হবে। ২৪-এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের তাৎপর্য বুঝার জন্য ঐতিহাসিক এসব ঘটনা পরম্পরা জানা দরকার। সকল অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বদা সোচ্চার থেকেছে। দেশের প্রতিটি ক্রান্তিকালে এই প্রতিষ্ঠান জাতির পাশে দাঁড়িয়েছে।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান আরও বলেন, ‘ঐতিহাসিক এসব ঘটনা পরম্পরার তাৎপর্য অনুধাবন করে এবিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শহিদদের কবরসমূহ দ্রুততম সময়ের মধ্যে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হক, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম শেখ, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, শহিদ গিয়াস উদ্দিন আহমদের ছোট বোন অধ্যাপক সাজেদা বানু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদুসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।
দিবসটি ঘিরে ঢাবি উপাচার্যের ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভবনসমূহে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণস্থ কবরস্থান, জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণের স্মৃতিসৌধ, বিভিন্ন আবাসিক এলাকার স্মৃতিসৌধ এবং মিরপুর ও রায়েরবাজার শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদসহ বিভিন্ন হল মসজিদে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয় এবং বিভিন্ন উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
অন্যদিকে মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী। এসময় অনুষদের ডিনগণ, বিভাগীয় প্রধানরা, রেজিস্ট্রার, প্রভোস্ট, অফিস প্রধান, ইনস্টিটিউট ও সেন্টার এর পরিচালকরাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরিফ জাওয়াদ/মাহফুজ/এমএ/