
দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো কমপ্লিট শাটডাউন চলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি)।
এ সময় বন্ধ রয়েছে সব ধরনের ক্লাস পরীক্ষা। দাবি আদায় না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্যে শাটডাউনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিচরণ কমে গেছে। ক্লাস না থাকায় দূরের শিক্ষার্থীরা কেউ আসেনি।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্টিয়ারিং কমিটির মিটিংয়ে দাবি পূরণের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আন্দোলন জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলছে। নিরাপত্তাকর্মী ছাড়া আনাগোনা নেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
এ বিষয়ে বোটানি বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী একে এম রাকিব বলেন, ‘যদি আগামীকালের সভায় দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহীনিকে লিখিতসহকারে না দেওয়া হয় এবং অস্থায়ী আবাসনের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয় তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউনের ঘোষণা হতে পারে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রায়হান হাসান রাব্বি বলেন, ‘সচিবালয় থেকে আমাদের দুটি দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি দাবিগুলো লিখিত আকারে মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমরা কমপ্লিট শাটডাউন চালিয়ে যাব। আমাদের দাবিগুলো মানতেই হবে, না মানার কোন সুযোগ নেই। এর প্রেক্ষিতেই আমরা শাটডাউন চালিয়ে যাচ্ছি।’
রবিবার (১২ জানুয়ারি) থেকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর, অস্থায়ী আবাসন নিশ্চিত করা এবং অস্থায়ী ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা দেওয়ার দাবি জানিয়ে অনশন শুরু করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়েন ১৫ জন শিক্ষার্থী।
তারপর সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল চারটায় সচিবালয় ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা। তখন তাদের দুইটি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলে তারা অনশন প্রত্যাহার করেন তবে চালু রাখেন শাটডাউন কর্মসূচি। দাবি আদায় না হলে এই কর্মসূচি চলবে বলে জানান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো-
১. সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে। প্রয়োজনে স্পেশাল মিটিংয়ের মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ করতে হবে এবং ভিজ্যুয়ালভাবে সবার সামনে তা উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকাবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে তা প্রকাশ করতে হবে। কয়েক মাস সময় নেওয়ার নাম করে কোনো প্রকার দীর্ঘসূত্রতার বন্দোবস্ত করা চলবে না।
২. পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে।
৩. যতদিন অবধি আবাসন ব্যবস্থা না হয়, ততদিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।
জোবায়ের আহমেদ/সুমন/