আগারগাঁও ইউজিসির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। ছবি :সংগৃহীত
তিন দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) আগারগাঁও ইউজিসির কার্যালয়ের সামনে তারা এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এ সময় তারা তিনটি দাবি উত্থাপন করে।
দাবিগুলো হল- বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা, দ্রুত স্থায়ী ক্যাম্পাসে নিয়ে যাওয়া এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে যৌক্তিক একটা সিমেস্টার ফি ধার্য করা।
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে ইউজিসির কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। আগামী ২০ জানুয়ারি ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সঙ্গে আবার সভা হবে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী তালহা হাবিব খবরের কাগজকে বলেন, ২০ তারিখ আমাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। এ দাবি পূরণ হওয়ার আগ পর্যন্ত অর্থাৎ মিটিং হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা সব প্রকার ক্লাস পরীক্ষা বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একাডেমিক সব কাজকর্ম থেকে আমরা বিরত থাকব।
রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আমরণ অনশনে বসা ঢাবির ৪ শিক্ষার্থীর অনশন ভাঙিয়েছেন জুলাই বিপ্লবে শহিদ রানা তালুকদারের মা রুবি বেগম। ছবি: খবরের কাগজ
আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ ও বিচার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আমরণ অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীর অনশন ভাঙিয়েছেন জুলাই বিপ্লবে শহিদ রানা তালুকদারের মা রুবি বেগম। অনশন ভাঙালেও লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে তাদের অনশন ভাঙানো হয়। এ সময় শহিদ রানার স্ত্রী রানু তালুকদার ও ছেলে মেহরাজ তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।
রুবী বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের স্বজন হত্যায় জড়িত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালাতে হবে। কিন্তু আমরা আর কোনো সন্তান হারাতে চাই না। তাই অনশন না করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করুন। আমরা শহিদ পরিবারসহ দেশবাসী আন্দোলনে থাকব।’
এরপর তারা ডাবের পানি পান করিয়ে ছাত্রদল নেতা মো. ওমর ফারক ও আবু সাঈদ এবং বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ ও ফজলুর রহমানের অনশন ভাঙান। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে আবদুল ওয়াহেদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘চব্বিশের বীর শহিদ রানা তালুকদারের মা, তার স্ত্রী-সন্তানসহ এসে আমাদের অনশন ভাঙার অনুরোধ করলে আমরা অনশন ভাঙি। আজ থেকে যতদিন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হবে, ততদিন রাজু ভাস্কর্যে ছাত্র-জনতার অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী সংবাদ সম্মেলনে শহিদ আবু সাঈদ বই মেলা-২০২৫ এর তথ্য জানান। ছবি: খবরের কাগজ
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো শহিদ আবু সাঈদ বই মেলা-২০২৫ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) দুপুর ২.৩০ মিনিটে শহিদ আবু সাঈদ বই মেলার উদ্বোধন করা হবে। উপাচার্যের সভাপতিত্বে শহিদ আবু সাঈদের বাবা ও শহিদ ফেলানীর বাবা এই বই মেলা উদ্বোধন করবেন।
প্রশাসন থেকে প্রথমবারের মত আয়োজিত পাঁচ দিনব্যাপী এই বই মেলা চলবে ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বই মেলায় থাকছে ১৮টি প্রকাশনী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি সক্রিয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ মোট ৪০টি স্টল।
তিনি আরও বলেন, বই মেলায় পাঁচ দিনব্যাপী মঞ্চে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। লেখক-পাঠক আড্ডা, বিতর্ক, আবৃত্তি, বুক রিভিউ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। প্রতিদিন দুপুর আড়াইটা থেকে শুরু হয়ে চলবে রাত ৯ টা পর্যন্ত। বই মেলায় ২১শে ফেব্রুয়ারি উপস্থিত থাকবেন কবি আব্দুল হাই শিকদার এবং সমাপণী দিনে উপস্থিত থাকবেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
উল্লেখ্য, শহিদ আবু সাঈদ বই মেলার আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো.ইলিয়াছ প্রামানিক এবং সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো.শাহজাহান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতির সংস্কারের দাবিতে পদযাত্রা ও গণজমায়েত। ছবি: খবরের কাগজ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতির সংস্কারের দাবিতে পদযাত্রা ও গণজমায়েত কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এসময় জটিল প্রশাসনিক প্রক্রিয়া দূর করার পাশাপাশি টেকসই জ্বালানির জন্য একটি সুগম পথ তৈরির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চবি ক্যাম্পাসে আইএসডিই বাংলাদেশ, যুব ক্যাব চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর নেতৃত্বে এই প্রচারণা কর্মসূচি পালিত হয়।
প্রচারণা কর্মসুচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, উন্নয়ন কর্মী, সামাজিক আন্দোলনের কর্মী ও জলবায়ু যোদ্ধারা অংশ নেন।
অংশগ্রহণকারীরা চবি জিরো পয়েন্ট থেকে বিভিন্ন প্লে কার্ড, ফেস্টুন ও দাবি সম্বলিত ব্যানার প্রদর্শন ও স্লোগান দিয়ে পদযাত্রা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও অনুষদের এলাকায় প্রদক্ষিণ করে। যেখানে পুরনো অবকাঠামো, অসংগঠিত নীতিমালা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অপর্যাপ্ত বিনিয়োগের মতো বাধাগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আইএসডিই বাংলাদেশ’র নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইন বলেন, আসন্ন গ্রীষ্ম মৌসুম শুরু হবার আগেই বিদ্যুৎ সংকট চরমে পৌঁছেছে। তাই দ্রুত নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়ানো না হলে জ্বালানি সংকট সমাধান কঠিন হবে। আমাদের অবশ্যই নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের জন্য আরও অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। শুধুমাত্র কার্যকর নীতিগত পরিবর্তনের মাধ্যমেই আমরা সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য সবুজ জ্বালানিতে রূপান্তর নিশ্চিত করতে পারি।
এসময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি ও এনভায়রনমেন্ট শিক্ষক ড. খালেদ মিজবাহউজ্জমান, পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক ড. চন্দন কমার, যুব ক্যাব চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সভাপতি রাব্বি তৌহিদ, সাধারণ সম্পাদক মো. খাইরুল ইসলাম, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদের যুগ্ন সম্পাদক মোহাম্মদ জানে আলম, ইয়ুথ পিপলস অব বাংলাদেশ এর সমন্বয়ক সিরাতুল মুনতাহা, আইএসডিই বাংলাদেশ এর প্রকল্প সমন্বয়কারী আবু হাসান আজমীসহ স্থানীয় নেতা, শিক্ষার্থী এবং পরিবেশ কর্মীরা অংশগ্রহণ করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি (টিএফপি) বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি (টিএফপি) বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা একদিনের ফটোওয়াকে অংশ নিলেন সোনারগাঁয়ের ঐতিহাসিক পানাম নগর এবং লোক ও লোকশিল্প জাদুঘর প্রাঙ্গণে। টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি (টিএফপি) বিভাগের তত্বাবধানে ৭ ফেব্রুয়ারি আয়োজিত এই ফিল্ড ট্রিপটি ছিল শিক্ষার্থীদের কোর্স কারিকুলামের একটি অংশ। এতে অংশ নেন টিএফপি ফটোগ্রাফি ক্লাবের সদস্যরাও।
সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে চেপে হৈ-হুল্লোড় করতে করতে শিক্ষার্থীরা পৌঁছে যান তাদের গন্তব্যে। পানাম নগরে পৌঁছেই তাদের স্বাগত জানান কোর্স ইনস্ট্রাক্টর মুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এবং টিএফপি ফটোগ্রাফি ক্লাবের মডারেটর ও বিভাগের লেকচারার শাওলিন শাওন। ফটোওয়াকের শুরুতেই প্রথমেই মোস্তাফিজুর রহমান শিক্ষার্থীদের ফটোওয়াকের নির্দেশনা দেন এবং দলবদ্ধভাবে কাজ করার সুবিধার্থে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করে দেন। প্রতিটি গ্রুপের দায়িত্বে ছিলেন ফটোগ্রাফি ক্লাবের একজন করে সদস্য।
ঐতিহাসিক স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন পানাম নগর শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে। ক্যামেরার লেন্সের মাধ্যমে তারা আবিষ্কার করেন প্রাচীন নগরীর কোনায় কোনায় ছড়িয়ে থাকা ইতিহাসের চিহ্ণ। টিকিট কেটে প্রবেশের পরপরই শিক্ষার্থীরা তাদের অ্যাসাইনমেন্টের জন্য ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। প্রাচীন অতীতের গল্প বলা শতাব্দী প্রাচীন ভবন, ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থাপত্য এবং পথের মাঝে ছড়িয়ে থাকা ইট-পাথর ক্যামেরায় ধারণ করছিলেন শিক্ষার্থীরা।
ফটোওয়াকের বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান এস এম ইমরান হোসেন বলেন, 'এই ফিল্ড ট্রিপের মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীরা ফটোগ্রাফির যেসব থিওরি পড়েছেন প্রাকটিক্যালি সেগুলোর চর্চা করা। এটি বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে সোনারগাঁওয়ের পানামনগর এবং লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর প্রাঙ্গণে দিনব্যাপি ছবি তোলার হাতে কলমে শিক্ষা নিয়েছে, এতে আমি খুবই আনন্দিত। বিভাগে এ ধরণের উদ্যোগ এটিই প্রথম এবং আমি আশা করছি ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।'
পানাম নগরের ফটোওয়াক শেষে শিক্ষার্থীরা যান সোনারগাঁয়ের বিখ্যাত লোক ও কারুশিল্প জাদুঘরের উদ্দেশ্যে। দুপুরের খাবারের পর তারা বেরিয়ে পড়ে জাদুঘর পরিদর্শনে। সেখানে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি, নানান কারুশিল্প এবং ঐতিহ্যবাহী শিল্পকর্মের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরিচয় লাভ করেন। জাদুঘর প্রাঙ্গণে আয়োজিত মাসব্যাপী লোকশিল্প মেলার নানান রঙিন স্টলকে নিজেদের ছবির বিষয়বস্তু করে নেন শিক্ষার্থীরা। মেলায় ওঠা নকশি কাঁথা, টেপা পুতুল, জামদানি শাড়ি, দেশীয় মৃৎশিল্প, গ্রামীণ খেলনা ও নানা ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার দেখে মুগ্ধ হন শিক্ষার্থীরা; ক্যামেরার ফ্রেমে তারা বন্দী করেন বাংলার লোকজ ঐতিহ্যের এই অপরূপ মুহূর্তগুলো।
দিনের আলো ফুরিয়ে আসতেই শুরু হয় ফেরার প্রস্তুতি। বিকেলের মিষ্টি রোদে সোনারগাঁয়ের রঙিন স্মৃতিগুলো ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দী করে শিক্ষার্থীরা যখন ফিরতি পথে, তখন শীতলক্ষ্যা নদীর উপর দিয়ে ছুটে চলছিল তাদের বাস। সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার ব্যস্ত নগর জীবনে ফিরলেও শিক্ষার্থীদের মনে রয়ে গেল একদিনের এই অসাধারণ অভিজ্ঞতা- যা তাদের ফটোগ্রাফি শিক্ষার পথচলায় অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য অনেকেই ইংরেজি ভাষার দেশকে পছন্দের প্রথম দিকে রাখেন। অপরিচিত ভাষা শেখার ঝামেলা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের নিকট তাই অস্ট্রেলিয়া বেশ প্রিয় গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত। তা ছাড়া তাদের শিক্ষার মান এবং নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বিশ্বের যেকোনো উন্নত দেশের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। তাই আজকে থাকছে অস্ট্রেলিয়া গমনেচ্ছু ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য উচ্চশিক্ষা গ্রহণের বিস্তারিত।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচন করুন প্রথমেই আপনাকে প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে হবে অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার জন্য। অর্থাৎ আপনি কোন অঞ্চলের কোন প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে চাচ্ছেন, তা ঠিক করতে হবে।
নিজের যোগ্যতা মিলিয়ে নিন
ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ স্কিল আপনি অস্ট্রেলিয়ার যে প্রতিষ্ঠানেই ভর্তি হতে চান না কেন, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানই আপনার কাছে ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ স্কিল সম্পর্কে ডকুমেন্ট চাইবে। সুতরাং অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার জন্য মনস্থির করার সঙ্গে সঙ্গেই IELTS, TOEFL, GRE, GMAT ইত্যাদি যেকোনো একটি কোর্স করে ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জন করুন।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়
শিক্ষাগত যোগ্যতা ক) স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রে ন্যূনতম IELTS স্কোর ৬.৫ প্রয়োজন। খ) অস্ট্রেলিয়ায় IELTS ছাড়া শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা নেই। সেক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে IELTS দেওয়ার প্রয়োজন নেই। গ) স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্য ও/এ লেভেলের সনদ থাকলে IELTS দরকার হয় না।
অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার জন্য আবেদন প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করার পর আপনাকে দুই জায়গায় দুটি আবেদন করতে হবে। আপনার পছন্দকৃত প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদন। অস্ট্রেলিয়া সরকারের কাছে ভিসার আবেদন।
প্রতিষ্ঠানের আবেদনে যেসব বিষয় উল্লেখ করতে হবে শিক্ষাগত যোগ্যতা ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ স্কিল পড়াশোনা করার জন্য আপনার ফান্ড আছে কি না তার প্রমাণ বিদেশি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিমা প্রতিষ্ঠানটি আপনার আবেদন মঞ্জুর করলে আপনাকে একটি অনুমোদনপত্র (eCOE) দেবে।
স্পন্সর জোগাড় বিষয়ভেদে বিভিন্ন পরিমাণ টাকা স্পন্সর দেখাতে হয়। ব্যাচেলরের ক্ষেত্রে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা এবং ডিগ্রি প্রোগ্রামের জন্য প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা ৬ মাসের জন্য স্পন্সর দেখাতে হয়। স্পন্সর সম্পদমূল্য দেখানো যাবে না, শুধু নগদ টাকা দেখাতে হবে। কোনো ছাত্রের স্পন্সর দেখানোর জন্য রক্তের সম্পর্কের কেউ হলে ভালো হয়। এর জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং জন্মসনদ ইত্যাদির কাগজ জমা দিতে হয়।
ভিসার জন্য আবেদন করবেন যেভাবে প্রতিষ্ঠানে আবেদন করার সময় যে ডকুমেন্টগুলো দরকার পড়েছিল, ভিসার জন্যও ওই একই ধরনের ডকুমেন্টগুলো দেখাতে হবে। তবে ভিসার জন্য নতুন করে প্রতিষ্ঠানের ভর্তির অনুমোদনপত্র লাগবে।
পড়াশোনার খরচ কেমন পড়াশোনার জন্য টিউশন ফি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন রকম। আপনি যখন শুরুতেই প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করবেন, তখনই ওই প্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি সম্পর্কে জানতে পারবেন। তবে কোনো বৃত্তি নিয়ে পড়তে গেলে খরচ অনেক কমে আসবে, এমনকি টিউশন ফি ফ্রিও হতে পারে।
থাকা/খাওয়া ও অন্যান্য খরচ নিয়ে আনুমানিক ধারণা অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে গড়ে কেমন খরচ হতে পারে তা শুরুতেই জানা জরুরি।
বাসস্থানের খরচ হোস্টেল/গেস্টহাউস- ৮০ থেকে ১৩৫ ডলার (প্রতি সপ্তাহে) ক্যাম্পাসে- ৮০ থেকে ২৫০ ডলার (প্রতি সপ্তাহে) ভাড়ায় থাকা- ১০০ থেকে ৪০০ ডলার (প্রতি সপ্তাহে) বোর্ডিং স্কুলে- ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ ডলার (প্রতি বছরে)
অন্যান্য খরচ খাওয়া ও দ্রব্যাদি- ৮০ থেকে ২০০ ডলার (প্রতি সপ্তাহে) ফোন ও ইন্টারনেট- ২০ থেকে ৫০ ডলার (প্রতি সপ্তাহে) যাতায়াত- ১০ থেকে ৫০ ডলার (প্রতি সপ্তাহে)
স্পাউস (স্বামী/স্ত্রী) শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে স্পাউসসহ আবেদন করা যায়। সেক্ষেত্রে তার স্ত্রীকে মাস্টারস ডিগ্রি প্রাপ্ত হতে হবে, তার জন্য সে ৫ পয়েন্ট পাবে।
স্কলারশিপ বা বৃত্তি সাধারণত উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বৃত্তি পাওয়ার জন্য তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করে আবেদন করতে হবে। সাধারণত স্কলারশিপ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় ৫% শিক্ষার্থী যেতে পারে।
পার্টটাইম কাজের সুযোগ অস্ট্রেলিয়ায় পড়ালেখার পাশাপাশি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা করে পার্টটাইম চাকরির সুযোগ রয়েছে। পার্টটাইম জব করে একজন ছাত্র তার খরচ চালাতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী বসবাসের সুযোগ অন্য রাষ্ট্রের তুলনায় এই দেশটিতে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ বেশ ভালোই। স্নাতক শেষ করার পর একজন প্রার্থী স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারে। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার ফল যদি ভালো হয় তা হলে সরকার তাকে স্থায়ী বসবাসের জন্য অনুমতি দিতে পারে।