ঢাকা ৯ চৈত্র ১৪৩১, রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫
English

শিক্ষার্থীবান্ধব ও গবেষণামুখী বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে চাই

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:১৬ পিএম
আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:১৮ পিএম
শিক্ষার্থীবান্ধব ও গবেষণামুখী বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে চাই
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ । ছবি: খবরের কাগজ

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ। দায়িত্ব গ্রহণের পাঁচ মাসের মধ্যেই তিনি নানা সংস্কারমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছেন। চলমান দায়িত্ব এবং বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানিয়ে তিনি কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মো. আরাফাত রহমান অভি

দেশের নতুন এক প্রেক্ষাপটে আপনি দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। দায়িত্ব গ্রহণের শুরুর দিকে অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? 

প্রায় এক মাস বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন-শূন্য ছিল, তারও আগে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আমাদের ক্যাম্পাসেও অস্থিরতা বিরাজ করছিল। দায়িত্ব গ্রহণের পর বিভিন্ন পক্ষ নানা দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করে, যার কিছু ছিল যৌক্তিক, কিছু নীতি-বহির্ভূত। যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণের চেষ্টা করেছি, বাকিগুলো আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি।

দায়িত্ব নিয়ে আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিষয়গুলোকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন? 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছিল, যা গতিশীল করাই ছিল প্রধান অগ্রাধিকার। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট সবাই একাডেমিক কার্যক্রম, গবেষণা এবং প্রশাসনে ইতিবাচক পরিবর্তন চেয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কিছু সংস্কার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি, যার মধ্যে কিছু ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে, আর কিছু প্রক্রিয়াধীন।

এই পাঁচ মাসে আপনি কী কী পরিবর্তন আনলেন?

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় আগে ১১ শতাংশ আসন কোটার জন্য বরাদ্দ ছিল। যার মধ্যে ৩ শতাংশ ছিল পোষ্য কোটা। পোষ্য কোটা বাতিলসহ কোটায় সংস্কার আনা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩ শতাংশ, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ১ শতাংশ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও উপজাতিদের জন্য ১ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। কোটায় প্রার্থী না থাকলে আসন মেধাতালিকা থেকে পূরণ হবে। আমরা দুইটি ক্লাস টেস্টের পরিবর্তে একটি মিডটার্ম পরীক্ষা চালু করেছি। ব্যবহারিক খাতা লেখার সংস্কৃতি বাদ দেওয়া হয়েছে। সব হলে ও রিডিং রুমে হাইস্পিড ইন্টারনেট সংযোগ দিয়েছি। সব শিক্ষার্থী প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল পেয়েছে। তিন সপ্তাহের মধ্যে সেমিস্টার ফাইনালের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে, যা ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত থাকবে। শিক্ষার্থীদের দাবিতে, মুজিব পরিবারের নামে রাখা ভবন ও হলগুলোর নাম পরিবর্তন করে নিরপেক্ষ এবং যোগ্য ব্যক্তিদের নামে নামকরণ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বস্তি গড়ে তুলে বহিরাগতদের ভাড়া দেওয়া হতো। এসব বস্তির ৮০ শতাংশ উচ্ছেদ করা হয়েছে, বাকিগুলোর উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে গাফিলতি দূর করতে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করছি। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক সমাবেশ আয়োজন ও আবাসিক হলে শতভাগ আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে র্যাগিং বন্ধ করা হয়েছে। 

বিগত সময়ে নিয়োগ, পদোন্নতি অনিয়ম এবং ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীদের বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন?

বিগত বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ ও পদোন্নতিতে অনিয়ম যাচাইয়ের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে অনিয়ম প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরোধিতাকারী শিক্ষার্থীদের বিচারের জন্য তদন্ত চলমান। ইতোমধ্যে আমরা শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। সিন্ডিকেট অনুমোদনের পর দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে আপনার পরিকল্পনা কী?

বর্তমান জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে মাঠপর্যায়ের চাহিদা পূরণে প্রয়োগিক শিক্ষার গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের মূল লক্ষ্য জ্ঞান সৃষ্টি, সংরক্ষণ ও বিতরণ নিশ্চিত করা। এ জন্য গবেষণার মানোন্নয়নসহ পাঠ্যক্রমে বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন। সব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রির মান সমান রাখতে প্রয়োজনীয় কোর্স ও ক্রেডিট সংখ্যায় সামঞ্জস্য আনতে আমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কৃষি একটি প্রায়োগিক বিজ্ঞান, তাই স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টার্নশিপ চালুর উদ্যোগ নিচ্ছি। ইন্টার্নশিপ বাস্তবায়নে ইউজিসির সহায়তা প্রয়োজন, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের ভাতা নিশ্চিত করতে। এটি তরুণদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ করে দেবে। কৃষি স্নাতকদের শুধু চাকরির জন্য তৈরি করার ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়টি ইউজিসির ‘এ-গ্রেড’ তালিকাভুক্ত হলেও আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে অবস্থান নেই কেন?

কোনো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে হলে প্রথমেই আবেদন করতে হয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের বিভিন্ন শর্ত পূরণ করলেও দুঃখজনকভাবে প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরে কোনো প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগ নেয়নি। আমরা এ অবস্থার পরিবর্তনে পদক্ষেপ নিয়েছি এবং ইতোমধ্যে কিউএস ও টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাংকিংয়ের জন্য আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই আমরা ভালো অবস্থানে পৌঁছাব।

বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে ভালো অবস্থানে নিতে আপনি কী উদ্যোগ নেবেন?

বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে উন্নতির জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কিছু বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। বাড়াতে হবে শিল্প-একাডেমিয়া সংযোগ। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের আন্তর্জাতিক গবেষণায় অংশগ্রহণ, বিদেশি গবেষকদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধিসহ নিয়মিত ওয়েবসাইটে তথ্য হালনাগাদ করতে হবে। ইতোমধ্যে শিক্ষকদের জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা বছরব্যাপী চলবে। এতে শিক্ষকরা প্রতিনিয়ত নিজেদের আপডেট রাখতে পারবেন। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাকেন্দ্র স্থাপন, পিএইচডি গবেষণা বৃদ্ধি, উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি, যৌথ গবেষণা কর্মসূচিসহ আন্তর্জাতিকভাবে প্রচার ও বিদেশি শিক্ষার্থী আকৃষ্ট করার উদ্যোগ নেব। এসব বাস্তবায়িত হলে আমরা দ্রুতই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারব।

পূর্ব প্রশাসনের সহশিক্ষা কার্যক্রমে সহায়তা না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, এ বিষয়ে আপনার অবস্থান কী?

পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষা কার্যক্রম জরুরি। গত বছর আকস্মিক বন্যায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন। বন্যা-পরবর্তী কৃষি পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে ধানের চারা, সবজির বীজ, মুরগির বাচ্চা, সার, কীটনাশক বিতরণ করে। যেখানে প্রশাসন সহযোগিতায় করেছে। এ ছাড়া, ‘জুলাই স্মৃতিচারণ ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, সেমিনার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো সিরাত মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজনও চলমান। প্রশাসন থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে, যা চলমান থাকবে।

শিক্ষার্থীদের কাছে আপনার প্রত্যাশা কী?

শিক্ষার্থীরা কঠিন সময় পেরিয়েছে, বিপ্লবের সব উপাদান দেখেছে। এখন তাদের পড়াশোনায় মনোযোগী হতে হবে। তারা যেকোনো সমস্যা নিয়ে আমার দপ্তরে আসতে পারে, আমি সমাধানের সর্বাত্মক চেষ্টা করব। প্রশাসক নয়, আমি শিক্ষক হিসেবে তাদের পাশে থাকতে চাই। আমি চাই শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্তকে সামনে রেখে একটি গবেষণামুখী বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে। আমি চাই, যখন আমি চলে যাব, শিক্ষার্থীরা আমাকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করবে।

/ তাসনিম তাজিন

 

জাহাঙ্গীরনগরে বসন্তের পূর্ণতা আসে আগুনরাঙা পলাশে

প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৫, ১২:২৫ পিএম
আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫, ০১:০৫ পিএম
জাহাঙ্গীরনগরে বসন্তের পূর্ণতা আসে আগুনরাঙা পলাশে
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফুটেছে পলাশ ফুল। ছবি: খবরের কাগজ

‘ও পলাশ, ও শিমুল/ কেন এ মন মোর রাঙালে/ জানি না, জানি না/ আমার এ ঘুম কেন ভাঙালে…’ আগুনরাঙা বসন্ত এলেই মনে পড়ে লতা মঙ্গেশকরের এই কালজয়ী গান। বাংলার বসন্তের সাথে পলাশের উপস্থিতি সহজাত। আর পলাশ মানেই রক্তরঙা আভায় আলোর বিচ্ছুরণে পর্ণমোচী বনের নবনৃত্যকলা। 

আচমকা পলাশ ফুল দেখে মনে হতে পারে থোকা থোকা আগুনের শিখা। পলাশ যেন শীতের রিক্ততা কাটাতে বসন্ত-প্রকৃতির মন রাঙানোর দায় নিয়েছে। মাটির পরশে বেজে ওঠে মিষ্টি হারমোনির মর্মর ধ্বনি। আগুনরাঙা ফুলে ছেয়ে গেছে পুরো শিক্ষাঙ্গন। ফুলের পাপড়ি ঘাসের জমিনে পড়ে যেন লাল কার্পেটে রূপ নিয়েছে। পলাশদামে মুখ ডুবিয়ে মেটে শালিকের সে কি আনন্দ! পত্রহীন ডালের ফাঁক গলে নীলাকাশে শোভিত রঙের খেলা। এ যেন বসন্তের আগমনী বার্তা। শুধু বার্তা নয়, গাছে গাছে ফোটা নতুন কুঁড়ি আর নানা রঙের বাহারি ফুল জানান দিচ্ছে বসন্ত এসে গেছে।

বলছিলাম শীতের আড়মোড়া ভেঙে রুক্ষতা বিদায় করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বসন্তের প্রাণ আগুনরাঙা পলাশের কথা। এই রক্তরাঙা পলাশের রক্তিম রঙে পুরো ক্যাম্পাস রঙিন হয়ে উঠছে। পলাশদামে মুখ ডুবিয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছে পাখির ঝাঁক। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে প্রকৃতি সেজেছে নবরূপে। গাছে গাছে পাখির কলকাকলি। কুহু কুহু ধ্বনিতে শোনা যায় কোকিলের কুহুতান। সব মিলিয়ে এ যেন এক প্রকৃতির নবপ্রাণ।

প্রকৃতি আমাদের যাপিত জীবনের নিত্যসঙ্গী। মানুষ, সমাজ, সংস্কৃতির মতো পরিবেশ-প্রকৃতিও বদলায়। প্রকৃতির এই অদলবদলের খেলায় বিপুল ঐশ্বর্যধারী ঋতুরাজ বসন্তের হাওয়ায় যখন মুখরিত চারপাশ, তখন প্রকৃতির সাথে বাঙালিও বসন্ত-প্রেমের স্বাদ নিতে শুরু করে। দখিনা-বাতাসে নেওয়া শুরু করে নিঃশ্বাস। বনফুলের পল্লবে পাগলের ন্যায় উত্তরীয় উড়িয়ে আপন মনে গায় গান। প্রেমিকের হৃদয়ে লাগে প্রেমের দোলা।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমির নগরীখ্যাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাঙ্গন একেক ঋতুতে পায় একেক রূপ। শীতের সময় এই হিম নগরী মুগ্ধ থাকে অতিথি পাখির কলতানে, বসন্তে ফুলের সৌরভে মুখরিত করে চারপাশ আর পাখির কলকাকলিতে স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে স্তব্ধ রাখে কোলাহল। গ্রীষ্মে বাহারি ফলের ছড়াছড়িতে আকৃষ্ট করে যে কাউকে। সাংস্কৃতিক উৎসবের সেরা বিদ্যাপীঠ হিসেবে সাংস্কৃতিক রাজধানীখ্যাত জাহাঙ্গীরনগরে যখন বসন্তের আগমন ঘটে, তখন ক্যাম্পাস যেন সব ছাড়িয়ে তার নিজস্ব সত্তাটিকেই ধারণ করে। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বসন্তের মৌসুমে পলাশ ফুলের গাছগুলো এক চমৎকার দৃশ্য উপস্থাপন করে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অংশে সারি সারি পলাশগাছ ফুলে পূর্ণ হয়ে উঠেছে, আর তাদের উজ্জ্বল লাল রঙের ফুল যেন পুরো পরিবেশকে প্রাণবন্ত করে তোলে। পর্ণমোচী প্রতিটি গাছে বসন্তের হাওয়ায় পলাশ এক মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য অনুভূতির নাম এবং এর সুমিষ্টতা হয়তো পাখিদের বিশেষ আকর্ষণ সৃষ্টির কারণ, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। শাখা-প্রশাখা ও আঁকাবাঁকা কাণ্ডের গাছটির টকটকে লাল ছাড়াও জাহাঙ্গীরনগরে হলুদ ও লালচে রঙের ফুল দেখা যায়। এই সময়টাতে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী এবং দর্শনার্থীরা যেন ফুলের মাঝে হারিয়ে যায়, প্রকৃতির সাথে একাত্ম হতে চায়।

শহুরে জীবনের কোলাহলে ঋতুরাজ কিংবা গ্রীষ্ম তাপমাত্রার অসহ্যতা ছাড়া ঠিক আলাদাভাবে হয়তো প্রভাব ফেলে না। হয়তো গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরম জানান দেয় তার উপস্থিতি। ঋতুরাজ বসন্তের হয়তো সে সুযোগ নেই। কিন্তু ঢাকার অদূরে অবস্থিত এক নৈসর্গিক শিক্ষাঙ্গন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বসন্ত আসে মায়া ছড়িয়ে। প্রকৃতির শোভা ছড়িয়ে ভালোবাসার গান গেয়ে গেয়ে। মনের আনন্দে পাখিরা গান গাইতে শুরু করে। বসন্ত মানুষের হৃদয়ে তোলে ঢেউয়ের তাল। সে তাল পূর্ণতা পায় সুর শ্বাশতে। রবীন্দ্র-নজরুলেও এ বসন্ত ধরা দেয় কখনো বিরহী, কখনো আনন্দ, কখনো সৃষ্টি, কখনো প্রকৃতির অনবদ্য গানে।

কবি কাজী নজরুল ইসলাম বসন্তকে তুলে এনেছেন গানে, ‘বসন্ত আজ আসলো ধরায়/ ফুল ফুটেছে বনে বনে/ শীতের হাওয়া পালিয়ে বেড়ায় ফাল্গুনী মোর মন বনে।’ আর কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘মায়ার খেলা’ গীতিনাট্যে বসন্তকে তুলে ধরেছেন, ‘আহা, আজি এ বসন্তে এত ফুল ফুটে/ এত বাঁশি বাজে, এত পাখি গায়।’ এখানকার শিক্ষার্থীদের অবচেতন মনেও বসন্তের এই প্রভাব পড়ে। বসন্তের এই দিনে পর্ণমোচী বনের উদাসী বাতাসে শুকনো পাতার নূপুরের নিক্বণ আর দূর থেকে ভেসে আসা বসন্তদূত কোকিলের কুহুতানের ধ্বনিতে প্রেমিকযুগলের হৃদয় আকুল করে হৃদয়মন্দিরে গেয়ে ওঠে, ‘আজি, খুলিয়ো হৃদয়দল খুলিয়ো/ আজি, ভুলিয়ো আপনপর ভুলিয়ো/ এই সংগীত-মুখরিত গগনে/ তব গন্ধ করঙ্গিয়া তুলিয়ো।’ 

কেউ কেউ নিঃসঙ্গতায় হয়তো বলে ওঠে, ‘দূরে, গগনে কাহার পথ চাহিয়া/ আজি, ব্যাকুল বসুন্ধরা সাজে রে।’

আমানউল্লাহ/তাওফিক

‘ফিলিস্তিনের সংকট ইসলামী বিশ্বের সংকট’ মন্তব্য ইসলামি চিন্তাবিদদের

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম
‘ফিলিস্তিনের সংকট ইসলামী বিশ্বের সংকট’ মন্তব্য ইসলামি চিন্তাবিদদের
ছবি:সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের সংকট কেবল ফিলিস্তিনের জনগণের সংকট নয়, এটা গোটা ইসলামী বিশ্বের সংকট। তাই বিশ্বের সব মুসলমানকে এই সংকট নিরসনে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। 

আন্তর্জাতিক আল-কুদ্স দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেলে ‘কুদস ও ফিলিস্তিনের মুক্তি: অব্যাহত প্রতিরোধের অনিবার্যতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। আল-কুদ্স কমিটি বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মুজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
 
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাকিব মুহাম্মাদ নাসরুল্লাহ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ও আল-কুদ্স কমিটি বাংলাদেশ-এর সভাপতি অধ্যাপক ড. শাহ্ কাউছার মুস্তাফা আবুলউলায়ী। সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সিলর সাইয়্যেদ রেজা মীরমোহম্মদী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ কে এম বদরুদ্দোজা এবং  ইসলামি স্কলার ড. এ কে এম আনোয়ারুল কবীর। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিনিয়র সাংবাদিক আমীরুল মুমিনীন মানিক। 

বক্তারা বলেন, ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের বিজয় ফিলিস্তিন ইস্যুর পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় একটি টার্নিং পয়েন্ট হয়ে ওঠে এবং ইরানের বিপ্লবের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম খোমেইনী দখলদার ইহুদীবাদী সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রামের পতাকা উড্ডীন করেন। তিনি  কুদস শরীফ ও ফিলিস্তিনের ইসলামি ও পবিত্র ভূমির মুক্তির বিস্মৃত লক্ষ্য ও আদর্শকে পুনরুজ্জীবিত করেন। ইমাম খোমেইনীর পক্ষ থেকে রমজান মাসের শেষ দশকের শুক্রবারকে আল কুদস দিবস নামকরণ ছিল একটি বৃহৎ বুদ্ধিবৃক্তিক ও গঠনমূলক রাজনৈতিক উদ্যোগ। এই উদ্যোগ ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক মুক্তি সংগ্রামের পথকে পাল্টে দেয়। 

মাহফুজ/

 

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম
আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা। ছবি: খবরের কাগজ

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) একাধিক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনীতিতে নিষিদ্ধকরণের দাবিতে ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ মঞ্চ’ নামে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২১ মার্চ) জুমার নামাজ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা-কর্মীরা। সেখান থেকে মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এসে সমাবেশ করেন। এ সময় তারা আওয়ামী লীগ ও নৌকা প্রতীক দ্রুত নিষিদ্ধের দাবি জানান।

নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের বাংলাদেশে কোন রাজনীতি হবে না উল্লেখ করে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব জাহিদ আহসান বলেন, ‘বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি হবে না। নামে-বেনামে আওয়ামী লীগ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। সেটা যেখান থেকেই হোক। এর বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে। বাংলাদেশকে আমরা আরও একটি গণহত্যার দিকে ঠেলে দিতে পারি না।’

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র আশরেফা খাতুন বলে, ‘আমরা যখন গুলির সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছি, তখন একটা ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাও মুখ খোলেননি। তাদের রিফাইন্ড করে আওয়ামী লীগ ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই। ৫ আগস্টের পর ক্ষমতা কাঠামোর পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু সেটি হয়নি। আমরা আগস্টে যেভাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ছিলাম, এখনো তেমনই আছি। যতদিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হয়, ততদিন আমরা মাঠে থাকব।’

এদিকে একই সময় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা ও সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের ওপর গণহত্যা চালানোর প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে ইনকিলাব মঞ্চ। জুমার নামাজের পর তারাও কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে মিছিল শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে মিছিলের সমাপ্তি টানে।

এ সময় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী বলেন, ‘এবার লীগকে সুযোগ দেওয়া হলে তারা অল্প কয়টা আসন নিয়ে বিরোধী দলে থেকে যাবে। আর তারা বিরোধী দলে থেকে কূটকচাল চালবে। তাদের কারণে বিএনপি তিন বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।’

এ ছাড়া সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথম কাজ ছিল জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার করা কিন্তু তারা তা করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনে গণভোট আয়োজন করা যেতে পারে। যেখানে বাংলাদেশের মানুষ রায় দেবে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে কোন রাজনীতি করতে পারবে না।’

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ মঞ্চের পক্ষে থেকে শনিবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্ম

তিনি বলেন, ‘শনিবার (২২ মার্চ) বিকেল ৫টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে ইফতার ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে এ মঞ্চ। আমরা সবার প্রতি আহ্বান জানাব, আপনারা যদি সত্যিকার অর্থে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চান তাহলে এ প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত হোন।’

শুক্রবার মধ্যরাত ২টায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য প্রত্যাখান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে মিছিল বের করে একদল শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে স্মৃতি চিরন্তন হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে শেষ হয়।

আরিফ জাওয়াদ/সুমন/

ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফ্রেঞ্চ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৭:৪৪ পিএম
আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৭:৪৫ পিএম
ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফ্রেঞ্চ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত
ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফ্রেঞ্চ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (ডুফা) আয়োজনে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিল। ছবি: খবরের কাগজ

ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফ্রেঞ্চ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (ডুফা) আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

মাহফিলে ফরাসি ভাষা শিক্ষার বিভিন্ন সার্টিফিকেট কোর্স এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রসঙ্গ টেনে ডুফার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘সবাইকে একসঙ্গে দেখে বেশ ভালো লাগছে, বিশেষ করে এখানে আমার কিছু শিক্ষকও এসেছেন। সবমিলিয়ে আশা করব, প্রতি বছর এমন আয়োজন ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।’

আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট (আভাই) অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনছারুল আলম বলেন, ‘অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনে অর্থ, শ্রম, পরামর্শ সবই প্রয়োজন হয়। অনেকের মাঝে একটা ভুল ধারণা আছে যে, সদ্য পড়াশোনা শেষ হয়ছে কিন্তু টাকা-পয়সার কারণে অ্যালামনাইয়ের সঙ্গে যুক্ত হন না। আমরা চাই সবাইকে যুক্ত হবেন বিশেষ করে আমাদের কেন্দ্রীয় যে অ্যালামনাই রয়েছে, সেখানে আশা করব সবাই যুক্ত হবেন। আমরা সবাই এক হয়ে, এভাবেই অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনকে অনেকদূর এগিয়ে নিতে চাই।’

সভাপতির বক্তব্যে ফ্রেঞ্চ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত বিসিএস (কর) কর্মকর্তা লিয়াকত আলী খান বলেন, ‘আমি শুধু ফ্রেঞ্চই শিখেনি, অন্তত পাঁচটি ভাষা শিখেছি। আমার চীনে যাওয়ার সুযোগ ছিল একই সময়ে ফ্রান্স সরকারের একটি বৃত্তিও পেয়ে যাই। যেহেতু আমি ফ্রেঞ্চ আগে শিখেছি, তাই ফ্রান্সেই চলে যাই। এখন পর্যন্ত আমি যতগুলো দেশে ঘুরেছি, স্থাপত্য দেখেছি সবচেয়ে আর্কষণীয় স্থাপত্য শহর মনে হয়েছে প্যারিসকে। শুধু প্যারিস না, ফ্রান্সের অনেক শহরই বেশ দৃষ্টিনন্দন। আশা করব যারা, ফরাসি ভাষা শিখছেন তাদের এই ভাষাটি অনেক কাজে লাগবে। আমি বিদেশি ভাষা জানার কারণে অনেক সমস্যা সমাধান করতে পেরেছি।’

আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবছার কামাল বলেন, ‘আমরা আগামীতে এমন আয়োজন আরও বড় পরিসরে আয়োজন করতে চাই। বিশেষ করে, যারা সাবেক রয়েছেন তারা বর্তমানদের জন্য বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিতে পারেন এবং বর্তমানরাও বিভিন্ন অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন। যার ফলে, অনেক শিক্ষার্থীই ফ্রেঞ্চ নিয়ে আগ্রহী হবেন। হয়ত তখনই অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্দেশ্য সফল হবে।’

এ সময় ফ্রেঞ্চ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিপুল চন্দ্র দেবনাথের সঞ্চালনায় ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক আমিনুল ইসলাম, চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের আফিকুর রহমান নাহিদ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) প্রভাষক ইমদাদুল হক ইমনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

আরিফ জাওয়াদ/সুমন/

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ভিক্টোরিয়া পার্ক ঘুরে প্রধান ফটকের সামনে এসে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। ছবি: খবরের কাগজ

দেশের রাজনীতি থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। 

শুক্রবার (২১ মার্চ) জুম্মার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ভিক্টোরিয়া পার্ক ঘুরে প্রধান ফটকের সামনে এসে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়। 

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা রাজনীতিতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের জোর দাবি জানায়। 

বিক্ষোভে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি, বন্ধ করো, করতে হবে’, ‘ছাত্রলীগ বাংলাদেশ, একসাথে চলে না’, ‘এ্যাকশন টু এ্যাকশন, ডাইরেক্ট এ্যাকশন’, ‘গড়িমশি বন্ধ করো, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করো’, ‘চব্বিশের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

এ সময় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রায়হান হাসান রাব্বি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে পাখির মত গুলি করে যারা আমাদের ভাইদেরকে শহিদ করেছে, তারা কীভাবে এদেশে রাজনীতি করে। আজ আমাদের এই আন্দোলন আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবিতে। যতদিন বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না করা হবে, ততদিন আমাদের এই আন্দোলন চলবে।’

বক্তব্যে শাখা ছাত্র শিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘হাজার হাজার মায়ের কোল খালি করে নতুন বাংলাদেশে আমরা বসবাস করছি। শত সহস্র ভাইয়ের রক্তে এখনো আওয়ামী লীগের হাত রঞ্জিত। আওয়ামী লীগকে আমরা রাজনীতি করতে দিব না। আমরা ইন্টেরিম সরকারকে বলে দিতে চাই, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে তারা জাতির সঙ্গে বেইমানি করবে। তাদের ভুলে গেলে চলবে না, তারা আবু সাইদ, মুগ্ধের মতো শত শত শহিদের রক্তের উপর বসে আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দেশের শত্রু, জাতির শত্রু। সুতরাং আওয়ামী লীগকে পূনর্বাসনের চেষ্টা করবে তারাও আমাদের শত্রু হিসেবে গণ্য হবে। যারাই আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বলবে, তাদের বিরুদ্ধেও আমরা কথা বলব।’

মুজাহিদ বিল্লাহ/মাহফুজ