
ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ আমলের শিক্ষক নিয়োগের সার্কুলার প্রত্যাহার এবং নীতিমালা সংস্কারের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ‘বাংলাদেশ গঠনতান্ত্রিক আন্দোলন’-এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
প্রায় ছয় বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ শুরু হতে যাচ্ছে। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ভাইভা নেওয়ার মাধ্যমে এ নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে।
সমাবেশে বক্তারা অনতিবিলম্বে এই সার্কুলার প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও মানবাধিকার কর্মী রাশেদ রাজন বলেন, ‘৫ আগস্ট বিপ্লবপরবর্তী সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি ছিল পূর্বের সার্কুলারে আর কোনো শিক্ষক নিয়োগ হবে না। কিন্তু বুধবার পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের জন্য যে ভাইভা হবে, সেটা যদি কার্যকর হয় তবে আমাদের বিজয় পরাজিত হবে। আওয়ামী ফ্যাসিজমের সময়ের যে সার্কুলার সেটা সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কোনো শিক্ষক নিয়োগ হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত সময়ের সার্কুলারে যারা যোগ্য, মেধাবী, পিএইচডিধারী তারা কেউই আবেদন করেননি। কারণ তারা জানত এই সার্কুলারে তাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হবে না। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন পুনরায় সেই সার্কুলারেই পদার্থবিজ্ঞান বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের ভাইভা নিতে যাচ্ছে। অবিলম্বে এই নিয়োগের সার্কুলার প্রত্যাখ্যান করতে হবে। তা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী ফ্যাসিজম পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হবে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, ‘বিগত সময়ে অর্থনৈতিক লেনদেন, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিসহ এমন কোনো অনিয়ম নেই যেগুলো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ঘটেনি। আওয়ামী লীগ শাসনামলের সার্কুলারে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ফ্যাসিবাদী দোসরদের আবার সুযোগ করে দিচ্ছে। বিপ্লব পরবর্তী প্রশাসন আগের ফ্যাসিস্ট প্রশাসনের দেখানো পথেই হাঁটছে।অনতিবিলম্বে এই শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে পুনরায় সার্কুলার ও নীতিমালা সংস্কার করে যোগ্যদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ দিতে হবে।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট আমলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরপেক্ষ অবস্থানে না থেকে দলীয় প্রশাসনে পরিণত হয়েছিল। দলীয়করণের প্রধান কারণ ছিল অনিয়মতান্ত্রিক দলীয় নিয়োগ প্রক্রিয়া। ফ্যাসিস্ট আমলের সেই নিয়ম ভেঙে নতুন বাংলাদেশে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে।’
এস আই সুমন/সুমন/