ঢাকা ১০ চৈত্র ১৪৩১, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
English

চবিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতির সংস্কারের দাবিতে পদযাত্রা ও গণজমায়েত

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪০ পিএম
চবিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতির সংস্কারের দাবিতে পদযাত্রা ও গণজমায়েত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতির সংস্কারের দাবিতে পদযাত্রা ও গণজমায়েত। ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতির সংস্কারের দাবিতে পদযাত্রা ও গণজমায়েত কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এসময় জটিল প্রশাসনিক প্রক্রিয়া দূর করার পাশাপাশি টেকসই জ্বালানির জন্য একটি সুগম পথ তৈরির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চবি ক্যাম্পাসে আইএসডিই বাংলাদেশ, যুব ক্যাব চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর নেতৃত্বে এই প্রচারণা কর্মসূচি পালিত হয়। 

প্রচারণা কর্মসুচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, উন্নয়ন কর্মী, সামাজিক আন্দোলনের কর্মী ও জলবায়ু যোদ্ধারা অংশ নেন।

অংশগ্রহণকারীরা চবি জিরো পয়েন্ট থেকে বিভিন্ন প্লে কার্ড, ফেস্টুন ও দাবি সম্বলিত ব্যানার প্রদর্শন ও স্লোগান দিয়ে পদযাত্রা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও অনুষদের এলাকায় প্রদক্ষিণ করে। যেখানে পুরনো অবকাঠামো, অসংগঠিত নীতিমালা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অপর্যাপ্ত বিনিয়োগের মতো বাধাগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। 

ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আইএসডিই বাংলাদেশ’র নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইন বলেন, আসন্ন গ্রীষ্ম মৌসুম শুরু হবার আগেই বিদ্যুৎ সংকট চরমে পৌঁছেছে। তাই দ্রুত নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়ানো না হলে জ্বালানি সংকট সমাধান কঠিন হবে। আমাদের অবশ্যই নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের জন্য আরও অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। শুধুমাত্র কার্যকর নীতিগত পরিবর্তনের মাধ্যমেই আমরা সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য সবুজ জ্বালানিতে রূপান্তর নিশ্চিত করতে পারি।

এসময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি ও এনভায়রনমেন্ট শিক্ষক ড. খালেদ মিজবাহউজ্জমান, পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক ড. চন্দন কমার, যুব ক্যাব চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সভাপতি রাব্বি তৌহিদ, সাধারণ সম্পাদক মো. খাইরুল ইসলাম, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদের যুগ্ন সম্পাদক মোহাম্মদ জানে আলম, ইয়ুথ পিপলস অব বাংলাদেশ এর সমন্বয়ক সিরাতুল মুনতাহা, আইএসডিই বাংলাদেশ এর প্রকল্প সমন্বয়কারী আবু হাসান আজমীসহ স্থানীয় নেতা, শিক্ষার্থী এবং পরিবেশ কর্মীরা অংশগ্রহণ করে। 

মাহফুজ/

কৃষি সাংবাদিকতা বিভাগে পুরস্কার পেলেন খবরের কাগজের রায়হান আবিদ

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১২:৫০ পিএম
কৃষি সাংবাদিকতা বিভাগে পুরস্কার পেলেন খবরের কাগজের রায়হান আবিদ
পুরস্কার গ্রহণ করছেন আবিদ

গবেষণা যখন কেবল গবেষণাগারে সীমাবদ্ধ থাকে, তখন তার আলো খুব কম মানুষের কাছে পৌঁছায়। কিন্তু সেই আলো যদি ছড়িয়ে পড়ে সংবাদপত্রের পাতায়, তখন তা হয়ে ওঠে জনতার সম্পদ। গবেষণার তথ্য যখন সহজ ভাষায় মানুষের কাছে পৌঁছায়, তখন কৃষকের চাষাবাদে আসে নতুন দিগন্ত, নীতি-নির্ধারকদের চোখ খুলে যায়, বিজ্ঞানীরা পান অনুপ্রেরণা। আর এই অসাধারণ দায়িত্বই পালন করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. রায়হান আবিদ।সেই অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সেন্টারের (বাউরেস) কৃষি সাংবাদিকতা পুরস্কার পেলেন তিনি।

তার কলমে উঠে এসেছে গবেষণা ও বাস্তবতার মেলবন্ধন, যেখানে বিজ্ঞান শুধু গবেষণাগারের দেয়ালে বন্দি নয়- তা ছুঁয়ে গেছে মাঠে-ঘাটে, কৃষকের জীবনে। শিক্ষা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপদেষ্টা ও ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন। বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাম্মাদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফজলুল হক ভূঁইয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় বাউরেসের গবেষণা অগ্রগতির বার্ষিক কর্মশালা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।

রায়হান আবিদ জানান, ‘বিজ্ঞান সব সময় সহজ নয়, জটিল সূত্র, কঠিন শব্দ আর গবেষণার সংখ্যাতত্ত্ব, যা সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্যই থেকে যায়। কিন্তু আমি চেষ্টা করেছি বিজ্ঞানের ভাষাকে সহজবোধ্য করে মাটির মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। তার লেখাতে শুধু গবেষণার ফলাফলই ছিল না, ছিল মাঠপর্যায়ের বাস্তবচিত্র, 
গবেষকদের মতামত, কৃষকের অভিজ্ঞতা এবং সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নির্দেশনা।’

আবিদের কলমে ফুটে উঠেছে, উচ্চ ফলনশীল রঙবেরঙের গাজরের দেশের আবহাওয়া উপযোগী করে উৎপাদন, দেশেই ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে গবাদিপশুর প্রায় নির্ভুল রোগ নির্ণয়, ইঁদুরের ওপর ফোর-জি তরঙ্গের প্রভাব পর্যবেক্ষণ, উচ্চ অ্যান্থোসায়ানিন যুক্ত বিট রুটের উৎপাদন বৃদ্ধি (ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্যকারী), দেশি শিং মাছের জিনোম সিকুয়েন্স আবিষ্কারের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি, আমলকী ব্যবহারের মাধ্যমে ব্রয়লার মুরগির হিট স্ট্রেস কমানো, অপ্রচলিত উদ্ভিদ থেকে উন্নতমানের খাদ্যসামগ্রী তৈরি, পোলট্রির ব্যাকটেরিয়াঘটিত রোগের বিরুদ্ধে আদা-রসুনের নির্যাসের কার্যকারিতা, গবাদিপশুর ব্রুসেলোসিসের টিকা তৈরি, দেশে ঘোড়ার দেহে প্রাণঘাতী গ্ল্যান্ডার্স রোগের উপস্থিতি নির্ণয়, বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনসহ বিভিন্ন কৃষি গবেষণার সংবাদ। 
লেখালিখির অনুপ্রেরণার পেছনের গল্প জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার অনুপ্রেরণা ফসলের মাটিতে, কৃষকের হাসিতে, বিজ্ঞানীদের অদম্য প্রচেষ্টায়। আমি চাই, কৃষি গবেষণা শুধু পত্রিকার পাতায় না থেকে বাস্তব জীবনেও পরিবর্তন আনুক, টেকসই উন্নয়নের দুয়ার উন্মোচন করুক।’

তিনি মনে করেন, সত্যিকারের সাংবাদিকতা কেবল তথ্য পৌঁছে দেওয়া নয়, এটি সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার। গবেষণাগারে আবদ্ধ জ্ঞান যদি মাঠে-ময়দানে প্রয়োগ না হয়, তবে তা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। সেই শূন্যতা পূরণ করতে ও বিজ্ঞান আর বাস্তবতার মাঝে সেতুবন্ধন গড়তে তার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

ঢাবি অধ্যাপক জিনাত হুদাকে গ্রেপ্তারের দাবি সাদা দলের

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০:২১ এএম
আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০:২১ এএম
ঢাবি অধ্যাপক জিনাত হুদাকে গ্রেপ্তারের দাবি সাদা দলের
ছবি : খবরের কাগজ

ছাত্র-জনতার অভ্যত্থানে গণহত্যায় উৎসাহিত করার অভিযোগ তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সমাজ‌বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনাত হুদাকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। 

রবিবার (২৪ মার্চ) সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম ও অধ্যাপক ড. আবুল কালাম সরকার স্বাক্ষ‌রিত এক বিবৃ‌তি‌তে এ দাবি জানানো হয়েছে। 

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আমরা ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, চব্বিশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে নিঃশর্ত সমর্থন ও গণহত্যায় উৎসাহিত করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত ঢাবি শিক্ষক সমিতির কার্যকরী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ড. জিনাত হুদা শিক্ষক সমিতির নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ইস্যুতে বক্তব্য ও বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের পক্ষ থেকে আমরা ফ্যাসিস্টের দোসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত ড. জিনাত হুদার এ ধরনের অপতৎপরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

সাদা দলের নেতৃবৃন্দরা আরও বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকদের দ্বারা প্রত্যাখাত এবং তদুপরি ঢাবি শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় ড. জিনাত হুদা আর শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নন। এরপরও সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে বক্তব্য ও বিবৃতি দিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল এবং প্রশাসনকে বিতর্কিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন বলে আমরা মনে করি। এমন অবস্থায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রজনতাকে নিয়ে বিষোদগার, নেতিবাচক মন্তব্য, গণঅভ্যুত্থানের বিরোধিতা এবং শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি হয়ে গণভবনে উপস্থিত হয়ে খুনি শেখ হাসিনার গণহত্যাকে সমর্থন দেওয়ায় ফ্যাসিবাদের দোসর ড. জিনাত হুদাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’

এ ব্যাপারে অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে একাধিকবার মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে, তার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

আরিফ জাওয়াদ/জোবাইদা/

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে গণআন্দোলনের ডাক, ২ সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৩ পিএম
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে গণআন্দোলনের ডাক, ২ সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন ‘জুলাই রিভাইভস’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ আন্দোলন’ প্লাটফর্মের সংগঠকরা। ছবি: খবরের কাগজ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবির আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে এবং গণআন্দোলন গড়ে তুলতে দুই সপ্তাহব্যাপী ‘জুলাই রিভাইভস’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ আন্দোলন’ প্লাটফর্মের সংগঠকরা। 

রবিবার (২৩ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন প্লাটফর্মটির অন্যতম সংগঠক বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলি ইবনে মোহাম্মদ।

মোসাদ্দেক বলেন, ‘আমরা গত কয়েকদিন যাবৎ গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ আন্দোলনগড়ে তুলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে এসেছি। এ পর্যায়ে আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করতে আমরা আগামী ২ সপ্তাহের জন্য জুলাই রিভাইভস কর্মসূচির ঘোষণা করছি।’

ঘোষিত এ কর্মসূচির আওতায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে ‘শহিদ ও আহত পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ, গণসংযোগ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, নাগরিক সমাজের ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, অনলাইন-অফলাইন প্রচার-প্রচারণা, দেয়াল লিখন’ শীর্ষক প্রচারণামূলক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্ল্যাটফর্মটির নেতারা।

এসময় ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সালাহউদ্দিন আম্মার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাসুদ রানা, ঢাকা কলেজের ইব্রাহিম খলিল, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের তাহমিদ হুজাইফাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 

আরিফ জাওয়াদ/মাহফুজ

 

আবারো হতে পারে ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪৬ পিএম
আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১০:০৩ পিএম
আবারো হতে পারে ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা আবারো অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে যারা এর আগে অংশগ্রহণ করেছেন, শুধু তারাই পরীক্ষায় বসতে পারবেন।

রবিবার (২৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির এক সভায় এ বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বলে জানা গেছে। তবে বিষয়টি এখনই চূড়ান্ত নয়, বিষয়টি এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে আদালাতের উপর।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ জানিয়েছেন, সভায় উপস্থিত বেশির ভাগ সদস্য বলেছেন, আদালতের রায়ের পর নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে তারা। তবে কোন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে সেটা আদালতের রায়ের উপর নির্ভর করছে।

এর আগে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি ওই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ‘একাধিক ভুল থাকায় সুষ্ঠু ফল প্রকাশের জন্য পুনরায় পরীক্ষার আবেদন’ শীর্ষক ভিসি বরাবর একটি আবেদন দেন এক পরীক্ষার্থী। কিন্তু তাতে সাড়া না পাওয়ায় কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে প্রশ্নপত্রে ভুলের কারণে পরীক্ষা বাতিলে কর্তৃপক্ষের কাছে রিটকারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন ‍তোলা হয়। একইসঙ্গে ২০ ফেব্রুয়ারি দেওয়া ওই আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পরবর্তী কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে গত বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বিকাল ৫টায় এই ইউনিটের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হবে বলে জানানো হয়েছিল। তবে তার আগের দিন শিক্ষার্থীর রিটের আলোকে ফলাফল প্রকাশ স্থগিত করে হাইকোর্ট।

আরিফ জাওয়াদ/মাহফুজ

 

ক্যাম্পাসে ঈদ বাজার, যেখানে ক্রেতা-বিক্রতা সবাই শিক্ষার্থী

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০৫:৫৭ পিএম
ক্যাম্পাসে ঈদ বাজার, যেখানে ক্রেতা-বিক্রতা সবাই শিক্ষার্থী
ছবি: আদিব রহমান

মায়ের জন্য ঈদের আগে অবশ্যই একটা শাড়ি কিনতে হবে। এদিক-ওদিক ঘুরছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান। এত এত শাড়ির মধ্যে কোন ধরনের শাড়ি নেবেন সেটি ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না। এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন। একটু সময় নিয়ে জানালেন- টিউশনির টাকা দিয়ে মাকে কিছু একটা কিনে দিতে চাচ্ছেন কিন্তু পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।

আতিকুরের সঙ্গে কথা হচ্ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের সামনে ঠিক ইফতারের পর। চারদিকে অনেক মানুষের আনাগোনা। এলইডি হ্যালোজেন লাইটের আলোয় চারদিকটা বেশ স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে। রাস্তার দুই পাশে সারি সারি টেবিল পেতে বসে আছে কিছু মানুষ। মিটিমিটি আলো জ্বলছে দোকানগুলোতে। টেবিল নিয়ে ছোট পরিসরে কেউ বিক্রি করছেন শাড়ি, পাঞ্জাবি, প্যান্ট, টি-শার্ট আবার কেউবা খেজুর, মাঠা থেকে শুরু করে হরেক রকমের খাবার। রোজার ঈদের আগের এই সময় ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়াখ্যাত জায়গাটি এমন জমজমাট হতে কখনোই দেখা যায় না। বস্তুত ক্যাম্পাসে এভাবে দোকান বসাতে দিতে চায় না কর্তৃপক্ষ। এখন অবশ্য কোনো বাধা নেই। হয়তো বাধা দিলে কেউ মানতও না। মজার বিষয় হলো- এখানকার ক্রেতা-বিক্রেতার প্রায় সবাই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী। কর্তৃপক্ষের চুপ থাকার হয়তো এটাই কারণ। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেও চাকরি করার গৎবাঁধা ধারণা থেকে বের হয়ে বড় উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখে কিছু শিক্ষার্থী। ছোট ছোট টেবিল নিয়ে এই হরেক রকমের জিনিসপত্র বিক্রি করাটা হয়তো তাদের সেই স্বপ্নের অংশ। অবশ্য বিক্রেতার কেউ কেউ শুধু আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার কথা মাথায় রেখে এই সময়কে ব্যবসার জন্য বেছে নিয়েছেন।'

মায়ের জন্য শাড়ি খুঁজতে থাকা আতিকুরকে সাহায্য করার জন্য তাকে নিয়ে একটি শাড়ির দোকানের দিকে এগিয়ে গেলাম। ছোট্ট একটা টেবিল নিয়ে বসা চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফারজানা বেশ উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে হাসিমুখে জানতে চাইলেন কোন ধরনের শাড়ি নিতে চাই আমরা। সুতির শাড়ি নেবেন বলে জানান আতিকুর। কয়েকটা শাড়ি দেখেই একটা নিয়ে ফেললেন তিনি। বেশ খুশি মনে হলো আতিকুরকে। উদ্যোক্তা ফারজানাও খুশি হলেন। ব্যবসা নিয়ে অনেক সময় কথা বললাম ফারজানার সঙ্গে। তার ব্যবসা নিয়ে তিনি বলেন, ‘সব সময় স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় কিছু একটা করার ইচ্ছা ছিল। আমার বাড়ি যেহেতু সিরাজগঞ্জ তাই শাড়ি নিয়ে কাজ করাটা আমার জন্য কিছুটা সহজ হবে ভেবে আর অন্য কিছু নিয়ে চিন্তা করিনি। ঈদের আগের এই সময় যেহেতু আমাদের প্রতিষ্ঠানের আবাসিক ছাত্রছাত্রীরা ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে বাড়ি চলে যায়, তাই অনেকেই গ্রামে থাকা মা, বাবা, বা বোনের জন্য কিছু কেনাকাটা করে। অনেকেই বান্ধবীকে শাড়ি উপহার দেয়। সবমিলিয়ে এই সময় বিক্রি অনেক বেশি হয়। আমাদের স্বপ্নের দিকেও এগিয়ে যেতে যেটা সাহায্য করে। সঙ্গে কিছু আয়ও হয়।’

ফারজানার সঙ্গে কথা শেষ করে বেশ ভিড় দেখে এগিয়ে গেলাম রাস্তার পশ্চিম পাশে বিজয় একাত্তর হলের গেটের কাছে। শিক্ষার্থী আবদুর রহিম চামড়ার জুতাসহ এক্সপোর্টের প্যান্ট-শার্ট বিক্রি করছেন। বেশ ব্যস্ত থাকায় খানিকটা সময় অপেক্ষা শেষে কথা হলো তার সঙ্গে। ব্যবসা নিয়ে তিনি আমাদের সঙ্গে তার স্বপ্নের কথা জানালেন। তিনি একটা ব্র্যান্ড দাঁড় করাতে চান। চামড়ার জুতাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। হেমায়েতপুরের জুতার কারখানা থেকে সবচেয়ে ভালো মানের পণ্যগুলো অর্ডার দিয়ে নিয়ে আসেন বলে জানান আমাদের। তিনি হাসিমুখে একটা তথ্য জানালেন। কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে হওয়া উদ্যোক্তা মেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্যার তার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে আসেন। স্যারের স্ত্রী স্যারের জন্য আব্দুর রহিমের স্টল থেকে একটা বুট জুতা পছন্দ করেন। পরে নিজে স্যারের বাসভবনে গিয়ে সেই জুতা জোড়া দিয়ে আসেন আব্দুর রহিম। কথাগুলো জানানোর সময় তিনি বেশ গর্ব অনুভব করলেন বোঝা গেল। গর্ব করবেই বা না কেন? স্বয়ং ভিসি স্যার তার দোকানের জুতা ব্যবহার করছেন। 

আব্দুর রহিমের ফেসবুকে একটা পেজও আছে। সেখান থেকে মোটামুটি সাড়াও পান। তবে আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীরা তার থেকে নিয়মিত পণ্য নিচ্ছেন। ব্যবসা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় কম দামের মধ্যে সবচেয়ে ভালো জিনিস আনার চেষ্টা করি। পণ্যের কোয়ালিটি নিয়ে আমি ভীষণ সচেতন। যেহেতু এটা নিয়ে আমি স্বপ্ন বুনছি।’

বেশ পরিশ্রমী আর দৃঢ়চেতা মনে হলো আব্দুর রহিমকে। হয়তো ভবিষ্যতে কোনো একদিন দেশের বড় একজন সফল ব্যবসায়ী হয়ে উঠবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী।
এতক্ষণে ঠাণ্ডা কিছু খেতে ইচ্ছা হলো আমার। একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখতে পেলাম জসিম উদ্দিন হল মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনার দিকে মাঠা বিক্রি করছেন সাজিদ নামের এক শিক্ষার্থী। ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যায় এই মাঠা। দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও বেশ সুস্বাদু এই মাঠা নিয়ে কথা হলো সাজিদের সঙ্গে। তার কাছে জানতে চাইলাম, মাঠা নিয়ে ব্যবসা করার চিন্তা মাথায় এল কীভাবে। সাজিদ বললেন, ‘রমজান মাসে রোজা ছেড়ে অনেকেই ঠাণ্ডা এবং পুষ্টিকর কিছু খেতে চায়। মূলত চাহিদার কথা চিন্তা করেই এই ব্যবসা শুরু করেছি।’ মাঠা কোথা থেকে আনেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এই মাঠা সরাসরি খামারি থেকে সংগ্রহ করি। তাই এটা ভেজাল হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’

মাঠা খাওয়ার পর আমারও মনে হলো- দিনের মধ্যে সবচেয়ে সুস্বাদু একটা জিনিস খেলাম। কোনোভাবেই এটা ভেজাল হওয়া সম্ভব না। আশপাশে আরও দোকান ছিল যেমন- খেজুর, কসমেটিকস, সুগন্ধি ইত্যাদি। সময় স্বল্পতার কারণে সব দোকানে আর যাওয়া হলো না। অবশেষে বাসায় ফেরার জন্য মনস্থির করলাম। পাঞ্জাবি সাজানো একটা টেবিল চোখে পড়ল। চোখ আটকে গেল বোটল গ্রিন রঙের একটা পাঞ্জাবিতে। দামও তুলনামূলক কম। ভাবলাম- ঈদের জন্য পাঞ্জাবিটা নিলে মন্দ হয় না।

/রিয়াজ